দেশে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৮ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এটি চলতি বছরে এক দিনে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড। ২৮৮ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে বরগুনার এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২০২ জন। ডেঙ্গু পরিস্থিতির এমন তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এক দিনে ২৮৮ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে বরগুনায় একজনের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক

এদিকে বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুরে এক ব্যক্তির (৭৫) মৃত্যু হয়েছে। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ।
গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৬১ জন বরিশাল বিভাগে, এরপর ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে দুজন এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে একজন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কয়েক দিন ধরে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। গত ১০ জুন মঙ্গলবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৩৮ জন, এর আগের দিন ৯ জুন ২৮ জন, ৮ জুন ১৯ জন, ৭ জুন ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়।
এক দিনে ডেঙ্গু রোগীর এমন ঊর্ধ্বগতির কারণ জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, গত এক সপ্তাহ সরকারি ছুটি থাকায় সব হাসপাতাল তাদের তথ্য দেয়নি। আজ একসঙ্গে গত কয়েক দিনের তথ্য দিয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার কালের কণ্ঠকে বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে এডিস মশার ঘনত্ব আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। শুধু ঢাকা নয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, খুলনা, বরগুনা, পিরোজপুর, নরসিংদী, ময়মনসিংহ ও চাঁদপুরে এডিস মশার ঘনত্ব বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, মশার ঘনত্ব পরিমাপের একটি মাপকাঠি হচ্ছে ‘ব্রুটো ইনডেক্স’। কোনো এলাকায় এই ইনডেক্স যদি ২০ বা তার বেশি হয়, সেটিকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়। বর্তমানে ঢাকার অনেক এলাকায়ই এই ইনডেক্স ২০-এর ওপরে এবং কিছু এলাকায় তা ৫০ ছাড়িয়ে গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২০ মে ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১৫ জন, বরিশালে তিনজন, খুলনা ও চট্টগ্রামে দুজন করে ও ময়মনসিংহ একজন মারা গেছে।
এ বছর মোট পাঁচ হাজার ৩০৩ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে এক হাজার ১৯১ জন। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় চিকিৎসা নিয়েছে চার হাজার ১০২ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বরিশাল বিভাগে দুই হাজার ২৭৫ জন, এরপর চট্টগ্রামে ৮২৭ জন, ঢাকা বিভাগের (ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাদে) ৫২৪ জন ভর্তি হয়েছে। খুলনা বিভাগে ১৬৫ জন, ময়মনসিংহে ৯৬ জন, রাজশাহীতে ৮৭ জন, রংপুর ও সিলেট বিভাগে ১৯ জন করে রোগী পাওয়া গেছে।
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স