২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরবেলা। বিরল পাখির সন্ধানে কুষ্টিয়া শহরের হরিপুরে, গড়াই নদীর কাছে, গ্রামীণ পরিবেশে বসে ছিলাম। তবে তেমন কোনো পাখির দেখা পাচ্ছিলাম না। যদিও শীতকাল, কিন্তু দুপুরের প্রচণ্ড রোদে শীতের কাপড় গায়ে রাখা যাচ্ছিল না।
বন্যপ্রাণী
কুষ্টিয়ায় বিপন্ন হানু বান্দর
- হনুমানের দেহ সরু এবং হাত-পা লম্বা। দেহের তুলনায় লেজ বেশ লম্বা। মাথা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৫০ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার এবং লেজ ৭০ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার লম্বা। ওজন ৮ থেকে ২০ কেজি। আকার ও ওজনে পুরুষ হনুমান বেশ বড়। এরা শুষ্ক বনভূমি, খোলামেলা জঙ্গল ও ঝোপঝাড়, গ্রাম ও শহরের মিশ্র তৃণভূমিতে বাস করে। গাছের কচি পাতা, কুঁড়ি, ফুল, ফল, মূল, শস্যদানা ইত্যাদি খেয়ে জীবন ধারণ করে
ড. আ ন ম আমিনুর রহমান

গাছ থেকে নেমে প্রাণীটি দৌড়ে সামনের আমবাগান পেরিয়ে পাশের সরষেক্ষেত দিয়ে কলাবাগানে গিয়ে থামল। ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারে চোখ রেখে আমি সমানে শাটারে ক্লিক করে গেলাম।
এতক্ষণ যে প্রাণীটির কথা বলছিলাম, সেটি অন্য কেউ নয়, বাংলাদেশের বিপন্ন এক স্তন্যপায়ী বন্যপ্রাণী হনুমান বা হানু বান্দর।
হনুমানের দেহ সরু এবং হাত-পা লম্বা। দেহের তুলনায় লেজ বেশ লম্বা। মাথা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৫০ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার এবং লেজ ৭০ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার লম্বা। ওজন ৮ থেকে ২০ কেজি। আকার ও ওজনে পুরুষ হনুমান বেশ বড়। চামড়ার রং কালচে। দেহের ওপরটা ধূসর, নিচের অংশ সাদাটে ধূসর থেকে হালকা বাদামি। মুখমণ্ডল, কান, হাত ও পায়ের পাতা কালো বা বাদামি। মাথার মাঝখানে হালকা রঙের চূড়া থাকে। চোখের ওপর কালো ভ্রু। অপ্রাপ্তবয়স্ক হনুমানের দেহের লোমের রং মা-বাবার চেয়ে কিছুটা হালকা।
বর্তমানে দেশের তিন প্রজাতির হনুমানের মধ্যে এই প্রজাতির হনুমান দিনের বেশির ভাগ সময় স্থলভূমিতে কাটায়। রাতে গাছে থাকে। একাধিক পুরুষ হনুমানের নেতৃত্বে একেকটি দলে ১৫ থেকে ২৫টি হনুমান বাস করে। নিজেদের দলের সীমানায় অন্য দলকে প্রবেশ করতে দেয় না। তরে প্রাণীটি বেশ শান্তিপ্রিয় হওয়ায় কখনো নিজেদের মধ্যে মারামারি করে না।
এরা শুষ্ক বনভূমি, খোলামেলা জঙ্গল ও ঝোপঝাড়, গ্রাম ও শহরের মিশ্র তৃণভূমিতে বাস করে। গাছের কচি পাতা, কুঁড়ি, ফুল, ফল, মূল, শস্যদানা ইত্যাদি খেয়ে জীবন ধারণ করে। তবে এই হনুমান আমাদের নাগরিক জীবনেও মিশে যাওয়ায় মানুষের দেওয়া বিভিন্ন খাবারও অনায়াসে খেয়ে নেয়। প্রাণীটি সাধারণত সকালে ও বিকালে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়। দুপুরে বিশ্রাম নেয়। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নামলে নিজেদের নির্দিষ্ট গাছে চলে যায় এবং রাত যাপন করে। দিনের অনেকটা সময় এরা একে অন্যের দেহ চুলকিয়ে কাটায়। ‘হুপ-হুপ-হুপ’ স্বরে ডাকে।
জানুয়ারি থেকে মে প্রাণীটির প্রজননকাল। স্ত্রী হনুমান ১৮০ থেকে ২০০ দিন গর্ভধারণের পর একটি বা কখনো দুটি বাচ্চা প্রসব করে। স্ত্রী হনুমান প্রতি দুই বছরে একবার বাচ্চা দেয়। বাচ্চারা ১৩ মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করে। পুরুষ হনুমান পাঁচ থেকে ছয় বছরে এবং স্ত্রী হনুমান তিন থেকে চার বছরে বয়ঃপ্রাপ্ত হয়। এদের আয়ুষ্কাল ১৮ থেকে ৩০ বছর।
নানা কারণে দিন দিন কমছে এই প্রাণীর সংখ্যা। বর্তমানে দেশে ৩০০টিরও কম হনুমান বেঁচে আছে। ফলে প্রাণীটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষায় এখনই সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে অচিরেই প্রাণীটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স