ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭
বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টির আত্মপ্রকাশ

মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিতে ৯ দফা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিতে ৯ দফা

দেশের মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি (বিএজেপি)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে শেরাটন হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দলটি আত্মপ্রকাশ করে। আত্মপ্রকাশকালে দলের নাম এবং ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির আহবায়ক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন। এ সময় দলটির সদস্যসচিব ফাতিমা তাসনিমের নামসহ ২৯৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।

দলটির নাম, কর্মসূচি ও সদস্যদের নাম ঘোষণার পর প্রশ্ন-উত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়। সে সময় কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে দলটির ভাবনা কী তা জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে বিএজেপির আহবায়ক রফিকুল আমীন বলেন, আমরা আগে সংস্কার চাই। রাষ্ট্রের অবকাঠামো ঠিক না হলে নির্বাচন করে লাভ কী।

জুলাইয়ের আন্দোলন কি শুধু একটা নির্বাচনের জন্য হয়েছে? না। জুলাইয়ের আন্দোলন শুধু একটা নির্বাচনের জন্য হয়নি। জুলাইয়ের আন্দোলন হয়েছে সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য। তাই আমরা সংস্কারের পক্ষে রয়েছি।

প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে রফিকুল আমীন বলেন, বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই চব্বিশের চেতনাকে ধারণ করে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ এবং সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে চায়। পাশাপাশি আইনের শাসন, সবার জন্য শিক্ষা, দুর্নীতিমুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ, জেন্ডার সমতা ও আয়বৈষম্য নিরসন বিএজেপির মূল ভিত্তি। উৎপাদনমুখী কৃষিব্যবস্থা, কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা ও মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জনে বিএজেপি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকবে। একই সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ ও আধিপত্যবাদ থেকে বাংলাদেশকে সুরক্ষার জন্য শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি এবং বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান উন্নীত করতে বিএজেপি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

অনুষ্ঠানে দলের সদস্যসচিব ফাতিমা তাসনিম বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে আমরা নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্য দিয়ে এসেছি।

সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল ওই ফ্যাসিস্ট সরকার, যাকে চব্বিশের ছাত্র ও জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা বিদায় করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা এই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা। সেই লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই আজ বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি আত্মপ্রকাশ করল।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জনতার দলের সদস্যসচিব আজম খান, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব খন্দকার মিরাজ ইসলাম ও জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম ভূইয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

আত্মপ্রকাশের দিনেই বিক্ষোভে ডেসটিনির বিনিয়োগকারীরা

নতুন দলের নিবন্ধন না দিতে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন ডেসটিনির ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা। গতকাল নির্বাচন কমিশনের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়।

এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বলেন, বিনিয়োগের টাকা ফেরত না দিয়ে দল গঠন মানে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে তামাশা করা। রফিকুল আমীন আমাদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই টাকা দ্রুত ফেরত দিতে হবে। কম্পানি বন্ধ করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন রফিকুল। আমাদের টাকা ফেরত না দিয়ে নতুন দল বানানোর তীব্র নিন্দা জানাই। নির্বাচন কমিশনের কাছে আহবানরফিকুলের মতো জালিয়াতকে যেন নিবন্ধন না দেওয়া হয়।

তবে এটি ভুল ব্যাখ্যা বলে মন্তব্য করেছেন রফিকুল আমীন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার কাছে কেউ টাকা পায় না। এটা ভুল ব্যাখ্যা। যাঁরা ডেসটিনির বর্তমান ম্যানেজমেন্টে আছেন তাঁরা টাকা দেবেন। তাঁরা উদ্যোগ নেবেন টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য। আমাকে বোর্ড থেকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। আমি কিভাবে টাকা ফেরত দেব? আমাকে টাকা ফেরত দিতে হলে আমাকে বোর্ডে নিতে হবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে পাট চাষ

শেয়ার
তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে  পাট চাষ

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে করা হয়েছে পাট চাষ। সেই পাট কেটে মহিষের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পানিতে জাগ দেওয়ার জন্য। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের চর বাঘমারা থেকে তোলা। ছবি : মো. আসাদুজ্জামান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

শেয়ার
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকার আড়াই বছর বয়সী নূরজাহান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল তোলা। ছবি : মঞ্জুরুল করিম

মন্তব্য

২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৩টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দলটি আগামী জাতীয় সংসদে নিম্নকক্ষে আংশিক আনুপাতিক ও উচ্চকক্ষে পূর্ণ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক দ্বিকক্ষীয় সাংবিধানিক কাঠামোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দলের নেতারা বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ।

আনুপাতিক পদ্ধতির মাধ্যমেই সব শ্রেণি ও মতধারার সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া আত্মঘাতী। এতে ফ্যাসিবাদের দোসররা আরো উৎসাহী হচ্ছে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তবে ফ্যাসিবাদ ফের মাথা চাড়া দেবে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী শৈথিল্য দেখালেও পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা দ্রুত প্রতিহত হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনদলের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ। এ ছাড়া ছিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা হারুনুর রশীদ, মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা হাসান জুনাইদ, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও মাওলানা মুহসিন বেলালী।

মন্তব্য

রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
শেয়ার
রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার ওয়াহেদুজ্জামান (৭১) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে পরিবারের সদস্যরা গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। রোগীকে জরুরি বিভাগ থেকে পাঠানো হয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (মেডিসিন ওয়ার্ড)। ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করে নেন।

সেখানে বারান্দায় একটি শয্যায় রেখে চলতে থাকে রোগীর চিকিৎসা। পরের দিন ১৪ জুলাই সকালে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত স্থায়ী অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা গিয়ে রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন।

পরের দিন ১৫ জুলাই সকালের দিকে রোগী কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তাঁকে ছুটি দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দুপুর গড়াতে না গড়াতেই রোগী আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তখন কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীকে প্রথমে অক্সিজেন এবং পরবর্তীতে স্যালাইন দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত একটা অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর বাকির মোড়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে দ্রুত তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ধরা পড়ে তাঁর শরীরে ডেঙ্গুসহ নানা জটিলতা। তবে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা পাওয়ায় রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন।

এটি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। চিকিৎসকসংকটে দিনের প্রায় ১৮ ঘণ্টাই ইন্টার্ন চিকিৎসকনির্ভরতার মাধ্যমে চলছে এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা।

খুব জরুরি প্রয়োজনে ফোনে পরামর্শ নেওয়া হয় অভিজ্ঞ ডাক্তারদের। এর বাইরে এফসিপিএস ডিগ্রিধারী বা এফসিপিএস করছেন এমন মধ্যম মানের চিকিৎসকরা থাকেন ভর্তির দিন ধার্য থাকা ওয়ার্ডগুলোতে। এ ছাড়া দিনের ২৪ ঘণ্টা প্রতিটি ওয়ার্ডেই চার থেকে ছয়জন করে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ইন্টার্নদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। 

পাবনার ঈশ্বদীর রোগী ওয়াহেদুজ্জামানের ছেলে হামিম আবেদীন বলেন, রামেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দিনে একবার করে আসার কারণে আমার বাবার সমস্যাগুলো জটিল হয়ে গিয়েছিল, যা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বুঝে উঠতে পারেননি।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করি রোগীর সেবা দেওয়ার। কিন্তু যে পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়, সে পরিমাণ ইন্টার্ন চিকিৎসকও নেই।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত আনসার সদস্যও নেই। অন্যদিকে যেসংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে, সেসংখ্যক অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাসামগ্রী ও ওষুধপথ্যও আমরা দিতে পারছি না। কারণ সব কিছু বরাদ্দ হচ্ছে ৫০০ শয্যার বিপরীতে। কিন্তু এখানে শয্যাই আছে এক হাজার ২০০টি। এর বাইরেও অতিরিক্ত আরো দুই থেকে আড়াই হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।    

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ