প্রায় ১৫ বছর পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও পাকিস্তান পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠক (এফওসি) করবে। আজ বুধবার দুপুরে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। আগামীকাল বৃহস্পতিবারের বৈঠকে পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে শেষ এফওসি ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। কোনো নির্দিষ্ট এজেন্ডা নির্ধারণ করা না হলেও আলোচনার সময় পারস্পরিক স্বার্থের সব বিষয় আলোচনায় আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। এমন দীর্ঘ বিরতির পর, আগে থেকে বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া কঠিন, তবে ব্যাপকভিত্তিক আলোচনা হবে।
পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হুসেন খান বলেন, ইসলামাবাদ ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে আগ্রহী। তিনি বলেন, পাকিস্তান বিশেষ করে তাদের পণ্যের দাম প্রতিযোগিতামূলক বিবেচনায় বাংলাদেশে রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে। তুলাকে প্রধান পণ্য হিসেবে উল্লেখ করে পাকিস্তান তুলা সরবরাহ করতে আগ্রহী।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, পাকিস্তান যেহেতু আফগানিস্তান ও ইরান থেকে পণ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে, তাই পরিবহন খরচ কম হলে বাংলাদেশের জন্য পাকিস্তানের মাধ্যমে আমদানি অন্বেষণ করার সুযোগ রয়েছে।
সরাসরি বিমান যোগাযোগের বিষয়ে হাইকমিশনার খান বলেন, ফ্লাই জিন্নাহ ছাড়াও শিয়ালকোটে অবস্থিত আরেকটি পাকিস্তানি বেসরকারি বিমান সংস্থা এয়ার সিয়াল ঢাকায় ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের কাছে আবেদন করেছে।
তিনি বলেন, ফ্লাই জিন্নাহ বর্তমানে ঢাকায় কার্যক্রম শুরু করার অপেক্ষা করছে। অন্যদিকে এয়ার সিয়াল অনুমোদন পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরাসরি বিমান সংযোগ পর্যটন বৃদ্ধি এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত ঐতিহাসিক সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে হাইকমিশনার বলেন, সারা বিশ্বে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ ধরনের বিষয় বিদ্যমান থাকে, তবে বর্তমান সম্পর্ক বা অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করা উচিত নয়।
ঢাকায় অবস্থানকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব বালুচ আগামীকাল এফওসির পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এ মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফর করবেন। ২০১২ সালের পর বাংলাদেশে এটি হবে কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।