ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭
শ্রমজীবীদের হাহাকার

অনেকের বাড়ি ফেরা হয়নি ছিল না ঈদের আনন্দ

নিখিল ভদ্র
নিখিল ভদ্র
শেয়ার
অনেকের বাড়ি ফেরা হয়নি ছিল না ঈদের আনন্দ

ঈদে বাড়ি ফিরে আপনজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের সাধ তো সবারই থাকে। কিন্তু আর্থিক টানাপড়েন অনেক ক্ষেত্রে বাদ সাধে। পোশাগত দায়িত্ব পালনের কারণেও ঈদে বাড়ি যেতে পারেন না অনেকে। তাঁদের ঈদ কাটে নিরানন্দে।

বকেয়া বেতন-বোনাস সময়মতো না পেয়ে এবার বাড়ি যেতে পারেননি হাজারো পোশাক শ্রমিক। শ্রমিকদের বড় একটি অংশকে বিমর্ষ মনে ঈদ কাটাতে হয়েছে আংশিক পাওনা নিয়ে।

প্রতিবছরই ঈদের আগে পাওনা আদায়ে বিপুলসংখ্যক পোশাককর্মীকে আন্দোলন করতে হয়। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।

ঈদের আগের সাত দিন বকেয়া বেতন-বোনাসের দাবিতে তাঁদের আন্দোলন করতে হয়েছে। টিএনজেড গ্রুপের কারখানার শ্রমিকরা শ্রম ভবনের সামনে ইফতার ও সাহরি করেছেন। টানা আন্দোলনের পরও মালিকপক্ষ তাঁদের বেতন-বোনাস দেয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও সমাধান সেভাবে হয়নি।

টিএনজেড গ্রুপের পোশাক শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আপাতত তিন কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানান। অথচ গ্রুপটির তিনটি কারখানার তিন হাজার ১৬৬ জন শ্রমিকের পাওনা প্রায় ১৭ কোটি টাকা। শ্রমিকরা শুরুতে ওই তিন কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও পরে মেনে নিয়ে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন।

একই সময়ে শ্রম ভবনের সামনে আন্দোলনে ছিলেন স্টাইল ক্রাফট ও ইয়াং ওয়ানস কারখানার কর্মীরা। আন্দোলন চলাকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পুলিশের হামলায় অর্ধশতাধিক আহত হন। কিন্তু তাঁরাও বকেয়া পুরোটা পাননি। ফলে যে সামান্য অর্থ শ্রমিকরা পেয়েছেন, তা বাড়িতে পাঠিয়ে নিরুপায় অনেকে থেকে গেছেন রাজধানীতে। শূন্য পকেটে কাটাতে হয়েছে নিরানন্দ ঈদ।

আন্দোলন চলাকালে স্টাইল ক্রাফটের শ্রমিক হোসনে আরা বলেন, আমরা কী অপরাধ করছি? আমাদের পুলিশ গুঁতায় ক্যান? আমাদের কি পরিজন নাই, আমাদের ঈদ নাই? আমার বাচ্চাটা একটা জামা চাইছে, তারে কী জবাব দিমু? আমরা তো খয়রাত চাইতেছি না, আমাদের পাওনা চাইতেছি।

ঈদের দিন মোহাম্মদপুরে বসিলা চার রাস্তার মোড়ে চল্লিশোর্ধ্ব হাফিজা বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তাঁর ভাষ্য, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই মিরপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তিন মাসের বেতন বাকি রেখে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর স্বামী আমিনবাজারে আরেকটি কারখানায় কাজ নিয়েছেন। তিনি এখন কাজ খুঁজছেন। তাই তাঁদের ঈদে দেশের বাড়ি যাওয়া হয়নি।

দায়িত্ব পালনের কারণেও ঈদে বাড়ি ফিরতে পারেন না অনেক শ্রমজীবী। হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন, পরিবহনসহ জরুরি সেবা খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের একাকী ঈদ কাটাতে হয়। ব্যাংকের গ্রাহকদের নিরাপদ লেনদেনের স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে ঈদের দিনেও দায়িত্ব পালন করেন ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শত শত কর্মী। ঈদের সময় যখন নগদ অর্থের প্রয়োজনীয়তা বাড়ে, তখন গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফলে এই কর্মীদের ঈদের দিনেও দায়িত্ব পালন করতে হয়।

ঈদের দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছেন তাঁরা।

ইচ্ছা থাকলেও বাড়ি যাওয়ার উপায় নেই বলে জানান রাজধানীর ধানমণ্ডি সাতমসজিদ রোডের একটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী আক্কাস আলী। তিনি বলেন, প্রতিবছর ঈদে পরিবারের সবাই একসঙ্গে আনন্দ করে, কিন্তু আমি পারি না। আমাদের কাছে দায়িত্বটাই বড়। তিনি জানান, ঈদের আগেই বেতন পেয়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করেছেন। প্রতিবেশী একজনকে দিয়ে তা বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। ঈদের দিন সকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদে শ্রমজীবী নারীদের কষ্টটা একটু বেশি। বিশেষ করে গৃহশ্রমে নিয়োজিত নারীদের কষ্ট নিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। যে বাসায় কাজ করেন, সেই বাসার মানুষের তুষ্টিতে তাঁদের থেকে যেতে হয়।

গৃহকর্মী হালিমা খাতুনের ভাষ্য, ঈদের দিন বাসাবাড়ির কাজে মাফ নাই। বরং ঈদের কয়েক দিন কাজের চাপ বেশি থাকে। এ সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ থাকে না। মালিক ভালো হলে কিছু বকশিশ পাওয়া যায়। অন্যথায় শুধু খাবার খেয়েই বিদায় নিতে হয়।

ঈদের দিনও রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে বুট-বাদাম বিক্রি করতে দেখা যায় গাইবান্ধা জেলার সাঘাটার আকমল হোসেনকে। ঈদের দিন মানুষ আনন্দ করার জন্য বাইরে বের হবে পরিবার নিয়ে, তখন একটু বাড়তি বিক্রি হবে, এমন আশায় রাজধানীতে থেকে গেছেন তিনি। তিনি বলেন, প্রতিদিন যদি বেচাকেনা না করতে পারি, তাহলে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারব না। নিজেও ঢাকা শহরে থাকতে পারব না। গত এক-দুই মাস ব্যবসা তেমন ভালো না হওয়ায় বাড়ি যেতে পারিনি।

ঈদের দিনও ইজি বাইক নিয়ে বেরিয়েছিলেন মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকার মোতালেব মিয়া। তিনি একসময় বাসের চালক ছিলেন। দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে ইঞ্জিন রিকশা ও পরে ইজি বাইক চালান। দুই ছেলে ও বউ গ্রামের বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়ায় থাকেন। ইজি বাইক মালিককে প্রতিদিন ৫০০ টাকা জমা (ভাড়া) দিতে হয়। কিন্তু গত কয়েক মাসে আয় কমেছে। তাই এবার বাড়ি যাওয়া হয়নি। ছেলেরা বাড়িতে ঈদ করছে। আর ঈদের আগে বউ ঢাকায় এসেছেন। তাঁরা ঢাকায় ঈদ করছেন।

রিকশা শ্রমিক মোতালেব মিয়া বলেন, ঈদ বলতে আমাদের বিশেষ কিছু নাই। ঈদের দিনও রিকশা চালাই। কাজ করি, খাই। পরিচিতজনরা অনেক সময় কাপড় দেয়। বাড়িতে দুইটা বাচ্চা আছে। এবারের ঈদে তাদের জন্য কিছু কিনতে পারি নাই।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

শেয়ার
রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা
রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। গতকাল রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক-বাঘাইহাই সড়ক থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য

কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

    চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।

কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।

ওই জমিতে সেচ দিতে গেলে রাজু মিয়ার লোকজন বাধা দেয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান।

রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।

এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে।

এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে খুলনায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ বলছে, ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যাময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।

ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

মন্তব্য

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

চট্টগ্রামে অবতরণের পর ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। এরপর হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

 

মন্তব্য

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।

এরপর তা খুঁজে বের করতে জরুরি তল্লাশি অভিযান চলছিল বলে জানান আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলোভ। কিন্তু পরে জানানো হয়, এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। তারা বিমানের ফিউজলেজের সন্ধান পেয়েছে।

ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।

এমআই-৮ হেলিকপ্টার বিমানটির ফিউজলেজ দেখতে পেয়েছে। এই হেলিকপ্টারটি পরিচালনা করে রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ রোসাভিয়াতসিয়া।

বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।

এটা হতে এটা হতে পারে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার একটি কারণ। সাইবেরিয়াভিত্তিক আঙ্গারা এয়ারলাইনস পরিচালিত বিমানটি চীনের সীমানা লাগোয়া আমুর অঞ্চলের তিন্দা শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এমন সময় এটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।

স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।

তার মধ্যে পাঁচজন শিশু। তাদের সঙ্গে ছয়জন ক্রু সদস্যও ছিলেন। তিনি বলেন, বিমান অনুসন্ধানে সব প্রয়োজনীয় বাহিনী ও সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়।

উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।

১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।

সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ