কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আফজাল হোসেনকে মেহেরপুর শহর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার ভোররাতে তাহের ক্লিনিকপাড়ার জনৈক মামুন হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মেহেরপুর জেলার পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম সন্ধ্যায় জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) রিকুইজিশনের (অধিযাচন) ভিত্তিতে গতকাল সাবেক এমপি আফজাল হোসেনকে মেহেরপুর সদর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ডিবির একটি দল ঢাকা থেকে মেহেরপুরে আসছে।
রাতেই তাঁকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, আশ্রয়দাতা মামুন হোসেন সাবেক এমপি আফজালের মালিকানাধীন ‘আফজাল সুজ’ কম্পানির কর্মচারী। পুলিশ একই সঙ্গে ইবনে মামুন নামের মেহেরপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক একজন নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে মেহেরপুর সদর থানায় নিয়েছে। সূত্রমতে, শহরের হোটেল বাজার এলাকার ইবনে মামুনের ভাইয়েরা মেহেরপুরে জুতার ব্যবসা করেন।
‘আফজাল সুজ’ কম্পানির সঙ্গে ইবনে মামুনের ভাইদের ব্যাবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। সে সূত্রেই ওই নেতার সঙ্গে আফজাল হোসেনের সখ্য ছিল।
মেহেরপুর সদর থানার পরিদর্শক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানান, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাবেক এমপি আফজালের অবস্থান শনাক্ত করে ডিবি। রবিবার স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ইবনে মামুনকে প্রথমে আটক করে পুলিশ।
এরপর তারা তাঁকে নিয়ে সাবেক এমপি আফজালকে গ্রেপ্তার অভিযানে নামে।
সূত্র জানায়, রবিবার দিবাগত রাতে পুলিশ আফজাল হোসেনকে গ্রেপ্তারে মেহেরপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ সালিকা গ্রামে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানে তাঁকে না পেয়ে গতকাল ভোররাতে পুলিশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ইবনে মামুনের সহায়তায় আফজাল সুজের কর্মচারী মামুন হোসেনের তাহের ক্লিনিকপাড়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে সাবেক এমপিকে গ্রেপ্তার করে।
তবে মেহেরপুরের স্থানীয় একাধিক সূত্রের তথ্যমতে, গতকাল ভোরের দিকে জেলার মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন আফজাল হোসেন।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে জানান, গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক এমপি আফজাল হোসেনকে তাঁর থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে।
বাজিতপুর থানার ওসি মো. মুরাদ হোসেন জানান, বাজিতপুর থানায় সাবেক এমপি আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাসহ অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই গত বছরের ৪ আগস্ট বাজিতপুর উপজেলা সদরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক আইনে করা হয়। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ সদর থানায় গত আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হতাহতের ঘটনায় আফজাল হোসেনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়।