ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

৪ মেগাপ্রকল্পের একটিও বাস্তবায়িত হয়নি

নূপুর দেব, চট্টগ্রাম
নূপুর দেব, চট্টগ্রাম
শেয়ার
৪ মেগাপ্রকল্পের একটিও বাস্তবায়িত হয়নি

চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প ১৪ বছর আগে নেওয়া। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিন বছর মেয়াদের ৮৫৬ কোটি টাকার এই মেগাপ্রকল্প ওই সরকারের সময় চার দফায় ব্যয় বাড়িয়ে দাঁড়িয়েছিল তিন হাজার ৩২৪ কোটি টাকায়। সেই সঙ্গে কয়েক দফায় সময় বাড়িয়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। গত ১৪ বছরে (জানুয়ারি ২০১১ থেকে ডিসেম্বর ২০২৪) প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৮৯ শতাংশ।

অর্থাৎ মেগা এই প্রকল্পের এখনো ১১ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে।

শুধু এই প্রকল্পই নয়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ আরো তিনটি মেগাপ্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলমান। ক্ষমতাচ্যুতির আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত সাড়ে সাত বছরে রিং রোডসহ চারটি মেগাপ্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। একনেকে অনুমোদনের সময় এসব মেগাপ্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা।

আর প্রত্যেক প্রকল্পের মেয়াদ ছিল তিন বছর।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব প্রকল্পের উন্নয়নকাজ শেষ না হলেও একের পর এক সময় ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। সাত হাজার কোটি টাকা বেড়ে বর্তমানে এই চার মেগাপ্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে।

প্রকল্পগুলোর কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা-ও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না।

জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুতির আগে আওয়ামী লীগের গত সাড়ে ১৫ বছরে রাজনৈতিক বিবেচনায় সিডিএতে একে একে তিনজন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। সবচেয়ে বেশি সময় পার করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আব্দুচ ছালাম। অপর দুজন হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম জহিরুল আলম দোভাষ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুস।

ওই চার মেগাপ্রকল্প কবে নাগাদ বাস্তবায়ন হবে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, যেহেতু প্রকল্পগুলো হয়েছে সেহেতু যত দ্রুত সম্ভব কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, তবে প্রকল্পগুলোর সময় ও ব্যয় বেড়েছে। এতে অযৌক্তিকভাবে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে কি না তা তদন্ত করছে মন্ত্রণালয়।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, সিডিএ তাদের মূল কাজ বাদ দিয়ে এসব মেগাপ্রকল্প গ্রহণ করেছিল। প্রকল্পগুলো যখন তারা হাতে নিয়েছিল তখন তাদের এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষমতা ছিল না। যথাযথ ফিজিবিলিটি করা হয়নি। ডিজাইনে ত্রুটি, বাস্তবায়নে ত্রুটি, অর্থছাড় কম থাকাসহ নানা সংকটে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে।

চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পটি ২০১১ সালের জানুয়ারিতে একনেকে অনুমোদন হয়। ওই সময় প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৮৫৬ কোটি টাকা। এরপর কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পাশাপাশি চারবার ব্যয় বেড়ে বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে সময় আরেক দফায় শেষ হয়েছে। এই পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৯ শতাংশ। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা জানান, সময় আরো এক দফা বাড়বে। প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুলাই থেকে শুরু হয়। প্রথমে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল দুই হাজার ২৭৫ কোটি ৫২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। ২০২০ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর দুই দফায় ব্যয় বেড়ে দুই হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা করা হয়েছে। কয়েক দফায় বেড়েছে সময়ও। আগামী জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। এর মধ্যে গত মাস পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৮২ শতাংশ অর্থাৎ এখনো ১৮ শতাংশ কাজ বাকি।

চট্টগ্রাম শহরের লালখান  বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল ২০১৭ সালের জুলাইয়ে। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল তিন হাজার ২৫০ কোটি টাকা। এরপর আরো এক দফা ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। একাধিকবার সময় বেড়ে আগামী জুন মাসে আরেক দফা সময় শেষ হচ্ছে। আর প্রকল্পের শুরু থেকে এই পর্যন্ত (গত ডিসেম্বর) ভৌত অগ্রগতি ৯২ শতাংশ।

এদিকে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুলাইয়ে একনেকে অনুমোদন হয়। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে প্রকল্পে কাজ বেড়েছে। কয়েক দফায় সময় বাড়ানোর পাশাপাশি এক দফায় ব্যয়ও বেড়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটিতে ব্যয় হচ্ছে আট হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়সীমা হয়েছে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তৃতীয় জয়

শেয়ার
তৃতীয় জয়

শান্তি মার্দির (জার্সি নং-২০) হ্যাটট্রিকে গতকাল অনূর্ধ্ব-২০ সাফে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আসরে স্বাগতিকদের এটি টানা তৃতীয় জয়। ছবি : বাফুফে

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন আয়কর ও পাঁচজন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা। এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করেন।

আদেশে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।

বিষয়টি তদন্ত করে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময়ে তাঁরা বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আয়কর কর্মকর্তারা হলেন মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা; মাসুমা খাতুন, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২; মুরাদ আহমেদ, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫; মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার, কুষ্টিয়া; মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী; আশরাফুল আলম প্রধান, যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার; শিহাবুল ইসলাম, উপকর কমিশনার, খুলনা; নুশরাত জাহান, উপকর কমিশনার, রংপুর এবং ইমাম তৌহিদ হাসান, উপকর কমিশনার, কুমিল্লা।

কাস্টমস বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর; সিফাত-ই-মরিয়ম, অতিরিক্ত কমিশনার; মো. শাহাদাত জামিল, দ্বিতীয় সচিব, এনবিআর; শফিউল বশর, রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সবুজ মিয়া, রাজস্ব কর্মকর্তা।

গত জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের পর শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

এরই মধ্যে তিনজন এনবিআর সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এনবিআরের আরো দুই সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।

দুদক সূত্র জানায়, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

মন্তব্য
ছাত্রদলের আলোচনাসভায় বক্তারা

গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে গণ-অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন শীর্ষক এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ছাত্রদল, ডান-বাম ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আলোচনাসভার প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্দোলনের মূলে ছিল ছাত্রসমাজের চেতনা।

আজ সেই চেতনাকে বিকৃত করার চেষ্টা হচ্ছে, যা আত্মত্যাগের অবমূল্যায়ন। তিনি আরো বলেন, যে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য ১৯৭১ সালে লাখো শহীদ জীবন দিয়েছিলেন, তা ভুলে গিয়ে শেখ মুজিব চার বছরের মাথায় গণতন্ত্রকেই ভ্যানিশ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলেন, তাঁর কন্যা (শেখ হাসিনা) তো ডাবল ফ্যাসিস্ট হয়েছেন। তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কখনো প্রত্যাবর্তন করুক, তা বাংলাদেশের মানুষ চায় না।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো উল্লেখ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে এবং বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, কেননা মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনার জেরে একটি গুপ্ত সংগঠন রাজনৈতিক ইন্ধন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বুয়েট ও চুয়েটে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাদের নিয়ে নোংরা স্লোগান দিয়েছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, জামায়াতের এক নায়েবে আমিরের ভাগ্নি জামাইয়ের নেতৃত্বে তারেক রহমানবিরোধী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সমালোচনা গ্রহণ করি, তবে মনে রাখা উচিতআমাদেরও সহ্যের সীমা আছে। একাত্তর ও চব্বিশের পরাজিত শক্তি ছাড়া বাকি সবার সঙ্গে আমাদের ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে শহীদ পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। অথচ আমরা বিচার নিশ্চিত না করে বিভাজনের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছি।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী মুক্তা বাড়ই বলেন, আজ রাজাকারদের পুনর্বাসন ও নরমালাইজেশন শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে গোটা দেশে মবতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ছাত্রদলের সহযোদ্ধারা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। ১৫ জুলাই একাত্তর হলে প্রথম হামলায়ও ছাত্রদলের ভাইয়েরা আহত হয়েছিলেন। এখানে এককভাবে কোনো সংগঠনের কৃতিত্ব দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, এই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব শহীদদের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমাদের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনাসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের দপ্তর সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুভাশিষ চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সাইদুল হক নিশান, ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসু ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদারসবাই ছাত্ররাজনীতির মধ্যে বিভাজন অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করার আহবান জানান।

মন্তব্য

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ১৩১ জনকে আটকে দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মূলত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কারণ দেখিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।

দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানিয়েছে, ওই ১৩১ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯৬ জন বাংলাদেশের নাগরিক।

গত শুক্রবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালে মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির অভিযানে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়।

দ্য স্টারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৩০০ জনের বেশি যাত্রীর কাগজপত্র যাচাই করে ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ৯৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ৩০ জন পাকিস্তানি পুরুষ ও পাঁচজন ইন্দোনেশীয় নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ত পূরণে ঘাটতি পাওয়া গেছে।

শর্ত পূরণ না হওয়া বলতে সন্দেহজনক হোটেল বুকিং, ইমিগ্রেশন কাউন্টারে হাজির না হওয়া এবং পর্যাপ্ত অর্থ সঙ্গে না রাখার মতো কারণ দেখানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সাধারণত ভ্রমণকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে। কেউ যদি বলে যে সে এক মাস থাকবে, কিন্তু সঙ্গে মাত্র ৫০০ রিঙ্গিত আনে, তাহলে তার বক্তব্যে সন্দেহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো পূরণ করেই যেন আগ্রহীরা ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়, বিবৃতিতে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি বলছে, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তিকে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা, আর্থিক সামর্থ্য এবং থাকা-খাওয়ার নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।

এদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, যাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, নিশ্চয়ই তাঁদের ট্যুরিস্ট হিসেবে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণে ব্যর্থ মনে করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ