ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নির্যাতন বন্ধের দাবি

  • ► দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ
  • ► রাজধানী থেকে ৪ দাবি উত্থাপন
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নির্যাতন বন্ধের দাবি
বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নির্যাতন, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে হাজারো মানুষ। ছবি : কালের কণ্ঠ

কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠছে দেশ। দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল শনিবার উত্তাল ছিল রাজধানীর শাহবাগ। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীসহ হিন্দু ধর্মাবলম্বী নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়।

কালের কণ্ঠর প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, ময়মনসিংহ, নাটোর, কুড়িগ্রাম, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার, পঞ্চগড়, ফরিদপুর, বরিশাল ও নীলফামারীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিলিছ হয়েছে।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল বিকেল ৩টার পর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় বিক্ষুব্ধরা। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে শাহবাগ হয়ে ফার্মগেট, মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ হয়ে এলিফ্যান্ট রোড এবং ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল থেকে শাহবাগ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশে হিন্দু নাগরিকদের ওপর বৈষম্য ও নিপীড়ন মেনে নেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

বিকেল ৩টায় কর্মসূচি পালনের ঘোষণা থাকলেও দুপুর ২টা থেকে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিবাদী ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে শাহবাগে জড়ো হতে থাকে। আগের দিনের বিক্ষোভ সমাবেশে শুধু হিন্দু সংগঠনের নেতাকর্মীরা থাকলেও গতকালের বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সদস্যরাও অংশ নেয়। বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে পুলিশ না থাকলেও সেনা সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।

বিক্ষোভ সমাবেশে চার দফা দাবি উত্থাপন করে তা দ্রুত বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। চার দফা দাবিতে বলা হয়, সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও বৈষম্য নিরসনের পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ শতাংশ সংসদীয় আসন বরাদ্দ করতে হবে। সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব ধরনের হামলা প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

সমাবেশে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ সচিবালয় সনাতন কমিউনিটির আহ্বায়ক মিঠু কুমার রায় বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হচ্ছে। কিন্তু নিরাপত্তা দেওয়ার কেউ নেই। প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিতে অনেকে বর্ডারে গিয়ে বসে আছে। তাদের সম্মানের সঙ্গে বাড়ি ফিরে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। আজ থেকে যেন আর হিন্দু বাড়ি, মন্দির পাহারা দিতে না হয়। মসজিদের মতো মন্দিরও যেন নিরাপদ থাকে।

সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়টি কোনো ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পুষ্পিতা মল্লিক। তিনি বলেন, আমরাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। সেখানে বিজয়ী হলেও আমাদের মুক্তি নেই। তাই আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা নিরাপত্তা চাই।

https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/08.August/11-08-2024/2/kalerkantho-ft-1a.jpg

এদিকে গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়েছে। তাতে বক্তারা অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির, হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসবের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্যদিকে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে গতকাল বরিশালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। কালের কণ্ঠর বরিশালের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, গতকাল সকাল ১০টায় অশ্বিনী কুমার হল প্রাঙ্গণে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। সনাতনী বিদ্যার্থী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, ইসকনসহ সমমনা সংগঠন কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

গতকাল বিকেল ৪টার দিকে কক্সবাজারের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা নানা স্লোগানের পাশাপাশি হামলা, ভাঙচুরের বিচারের দাবি জানায়।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে হবিগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকেলে হবিগঞ্জ শহরের আরডি হল প্রাঙ্গণে হবিগঞ্জের সনাতনী সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

গতকাল দুপুরে কুড়িগ্রাম শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছে সারা দেশে হিন্দু নাগরিকদের ওপর নির্যাতন, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদে ও হিন্দু সুরক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ ছাড়া গতকাল বিকেলে ময়মনসিংহের ফিরোজ জাহাঙ্গীর চত্বরে এবং নাটোর শহরের কানাইখালী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল দুপুরে পঞ্চগড় শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে হিন্দু ছাত্র-জনতা কিছু সময় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

গতকাল বিকেলে ফরিদপুরের পৌর শহরের আলীপুর-টেপাখোলা সড়কে বিক্ষোভ শেষে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী সম্মিলিত হিন্দু সমাজের ব্যানারে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়।

এদিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় শুক্রবার থেকে বসতভিটাসহ সব ফেলে রেখে ভারতীয় সীমান্তে অবস্থান করছে হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ। এমন পরিস্থিতির পর গতকাল বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে সীমান্ত বর্তমানে শান্ত উল্লেখ করে গুজবে কান না দেওয়ার আহবান জানানো হয়।

গতকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ বলেন, সীমান্তে হঠাৎ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জড়ো হয়। তারা ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করে। সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। এই দেশ সবার, কেউ গুজবে কান দেবেন না। আমরা আপনাদের নিরাপত্তায় সর্বদা কাজ করছি।

[প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা তথ্য দিয়েছেন]

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ

সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে
সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে
শেয়ার
স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
পঞ্চম উইকেটে ৭৭ রানের দারুণ এক জুটিতে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের মঞ্চ সাজিয়ে দেন লিটন দাস ও শামিম হোসেন। পরে বোলারদের দাপটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।ছবি : মীর ফরিদ, ডাম্বুলা থেকে

ক্রিকেট ম্যাচ, তার ওপর রবিবার। গতকাল তাই উদ্দাম পার্টির প্রস্তুতি ছিল রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উপড়ে পড়া গ্যালারির। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকে ডিজের মিউজিক, দর্শকদের ড্রাম পেটানো আর ট্রাম্পেটের চড়া সুরে কান পাতা দায়। সেই পার্টিই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় দারুণ ক্ষিপ্রতায় কুশল মেন্ডিসকে শামীম হোসেন রান আউট করতেই।

এর পরও ফুর্তিবাজ লঙ্কানরা দুলেছে। তবে ১৭৭ রানের পূঁজি গড়া বাংলাদেশ দল ওই রান আউটে রক্তের স্বাদ পেয়ে গেছে। স্বাগতিকদের ৯৪ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে ৮৩ রানের দাপুটে জয়ে সিরিজে ফেরা তাই একরকম নির্ধারিতই ছিল!

বিশ ওভারের ক্রিকেটে ছন্দ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতলয়ের ক্রিকেটে ছন্দের সেই গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে আর পেছনে তাকায়নি বাংলাদেশ দল।

প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে প্রতিপক্ষ বোলারদের তুলাধোনা করা লঙ্কান সিংহকে বাংলাদেশ খাঁচাবন্দি করে ফেলে ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ওই বলে তুলে নেন শ্রীলঙ্কার শেষ ভরসা অধিনায়ক চারিথ আসালঙ্কাকে। স্বাগতিকরা থমকে যায় ৩০ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে। এমন অবস্থায় এক প্রান্ত আগলে রেখে পাথুম নিশাঙ্কা শেষ চেষ্টা করেছিলেন দাসুন শানাকাকে সঙ্গী করে।
কিন্তু বাংলাদেশকে এদিন কে রোখে! এই ম্যাচে একাদশে জায়গা করে নেওয়া শরিফুল ইসলামের সুইং, মোস্তাফিজুর রহমানের কাটার আর রিশাদ হোসেনের লেগস্পিন সামলানোর সক্ষমতা ততক্ষণে হারিয়ে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। এঁদের মধ্যে শেষোক্তজনের কথা ম্যাচ শেষে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক। তবে ঘুরেফিরে দুই অধিনায়কের মুখেও উচ্চারিত হয়েছে শামীম হোসেনের সেই রান আউটের ঘটনাটি। বাংলাদেশের বোলার আর ফিল্ডারদের দক্ষতায় দুজন ছাড়া শ্রীলঙ্কার আর কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি।

অবশ্য ম্যাচজুড়েই শামীমের প্রতিপত্তি দেখা গেছে।

ব্যাটিং পাওয়ার প্লে যাঁদের কাজে লাগানোর কথা, সেই দুই ওপেনারতানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন একযোগে ব্যর্থ হয়েছেন গতকাল। এরপর রানখরায় ভোগা অধিনায়ক লিটন দাস ও তাওহিদ হৃদয়ের রক্ষণশীল ব্যাটিংয়ে মনে হচ্ছিল, বেশিদূর যাওয়া হবে না বাংলাদেশ দলের।

কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন লিটন ও শামীম। অধিনায়কের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তাওহিদ ফেরেন, একই ওভারে তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুমে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ধাক্কায় অবশ্য কাবু হওয়ার অবস্থায় নেই শামীম। আগের ম্যাচে ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি শুরু থেকে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। ওদিকে অধিনায়কও থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। তাঁরা জুটি বেঁধে ছোটান রানের গতি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটন ও শামীম মিলে তোলেন ৭৭ রান, তা-ও মাত্র ২১ বলে! ১৩ ম্যাচ পর ফিফটির দেখা পান লিটন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস। এক বাউন্ডারি আর পাঁচ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৬ রান করে যখন আউট হন অধিনায়ক, ততক্ষণে লড়াইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক পূঁজি এক রকম হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে স্ট্রাইক পেতে মরণপণ দৌড়েও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শামীম। তাতে ২৭ বলে তাঁর ৪৮ রানের ইনিংস পঞ্চাশ ছুঁতে না পারার আক্ষেপে শেষ হয়েছে। অবশ্য তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই, দল জিতেছে। তাতে অবদান রাখতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি। শামীম আরো খুশি ১৬ জুলাই কলম্বোয় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা নয়, জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। 

ম্যাচ শুরুর আগের রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের চালচিত্র না বললেই নয়। হাজার তিরিশেক দর্শকের ঠাঁই হয় এ মাঠে। তবে দুই দিন ধরে টিকিটের জন্য আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল যে পর্যাপ্ত আসন নেই। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে গ্যালারি ভরে গেছে। বরাবরের মতো গ্যালারি লাগোয়া গাছেও চড়ে বসেন বিনা টিকিটের দর্শক। তাই বলে সিঁধ কেটে বিনা টিকিটের দর্শক ঢোকে ডাম্বুলায়, সেটি অজানা ছিল। গতকাল সেটিও দেখা হলো, বাংলাদেশ ইনিংসের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চলাকালে ভিআইপি স্ট্যান্ডের দিককার কাঁটাতারের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে অন্তত শ খানেক টিকিটহীন দর্শক ঢুকে পড়লেন স্টেডিয়াম চত্বরে। বিনা বাধায় যোগ দিলেন গ্যালারির উৎসবে। নিজ দলের ব্যাটিং ভরাডুবিতে ক্ষণে ক্ষণে লাউড স্পিকার থেমেছিল বটে। তবে পুরোপুরি থামেনি। পুরস্কার বিতরণীর পরও কিছু দর্শককে দেখা গেছে হাসিমুখে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তো বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেও গেলেন, ওয়েল প্লেইড বাংলাদেশ!

মন্তব্য

অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

শেয়ার
অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারির রিকশার দাপট বেড়েছে। সেগুলো জব্দে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মালিবাগে অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দ করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি : ফোকাস বাংলা

মন্তব্য
মানবতাবিরোধী অপরাধ

বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বাংলা-ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে। আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।

শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, এর আগে ১০ জুলাই এই মামলার ২৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

পরে জানা যায়, এই মামলার দুজন আসামি এরই মধ্যে অন্য দুটি মামলায় গ্রেপ্তার আছেন। সে কারণে ট্রাইব্যুনাল মৌখিকভাবে আদেশ দিলেও তাতে স্বাক্ষর করেননি। তবে আগের আদেশ উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। আগের আদেশটি পরিমার্জন করা হলো।
২৬ জন আসামির মধ্যে যে দুজন গ্রেপ্তার আছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য নয়।

পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২২ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। যে দুজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাঁরা হলেন রাফিউল হাসান রাসেল ও মো. আনোয়ার পারভেজ।

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।

এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই মামলার শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আট আসামির গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় প্রয়োজন। তখন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। আদেশের সময় মামলার ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

মন্তব্য
হত্যা মামলায় জামিন

আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস
অপু বিশ্বাস

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার এনামুল হক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। গতকাল রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে অপু বিশ্বাস বলেন, আমি একজন অভিনয়শিল্পী। এটাই আমার পেশা।

আমি রাজনীতি বুঝি না, আমি রাজনীতি করতে চাই না।

এদিন অপু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি মুখে কালো মাস্ক, মাথায় সাদা ওড়না ও বোরকা পরেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, আসামি যে অর্থের জোগান দিয়েছেন, তা এজাহারে বলা নেই। নুসরাত ফারিয়াকে জামিন দেওয়া হয়েছে। বাদী হলফনামা দিয়ে বলেছেন, আমার ভুল হয়েছে। আসামির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
আসামি একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তাঁর জামিন চাই। এ সময় বিচারক আসামি অপু বিশ্বাসের কাছে তাঁর বক্তব্য জানতে চান। কিন্তু তিনি দুইবার মাথা নেড়ে না উত্তর দেন। এ সময় তাঁর মুখে হাসিও দেখা যায়।
তখন পাশ থেকে আইনজীবীরা বলতে থাকেন, অপু বিশ্বাস ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী। টাকার বিনিময়ে মঞ্চে স্টেজে নেচে-গেয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে এগিয়ে দিতেন। তিনি আবার হাসেন। এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখে-মুখে ভীতি দেখা যায়। তখন তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেন, আমি কিছু বলতে চাই। তখন তাঁকে থামিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, র‌্যাব-পুলিশ সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। লাশের বন্যা বয়ে যায়। এ দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যাঁরা ছিলেন সবাই শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করেছেন। এই অপু বিশ্বাসরা ফেরদৌসের নেতৃত্বে শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করেন। শেখ হাসিনা আবার আসবে বলে তাঁরা মনে করেন।

এরপর অপু বিশ্বাস বলেন, আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না। এ সময় আইনজীবীরা আহা আহা সাধু বলতে থাকেন। অনেক আইনজীবী উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপু বিশ্বাস এমপি হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার দোসর তিনি। এ সময় অপু বিশ্বাস বলেন, আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে। এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করতে দেখা যায়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে অপু বিশ্বাস গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। পরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার শ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মামলায় অপু বিশ্বাস, আশ্না হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান তিনি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ