ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭
ডিবি অফিসে খাওয়ানো নিয়ে হাইকোর্ট

এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে, জাতিকে নিয়ে মসকরা কইরেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে, জাতিকে নিয়ে মসকরা কইরেন না

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের এক টেবিলে বসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে খাবার খাওয়ানো জাতিকে নিয়ে মসকরা বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর লাইভ রাউন্ড (তাজা গুলি) ব্যবহার না করার নির্দেশনা চাওয়ার রিটের শুনানিতে গতকাল সোমবার হাইকোর্ট এ মন্তব্য করেন।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চে রিটটির শুনানি চলছিল। শুনানির এক পর্যায়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ডিবি হেফাজতে নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের বিষয়ে বলেন, টিভিতে আমরা দেখেছি, ডিবি অফিসে এই ছয়জন কাঁটাচামচ দিয়ে খাচ্ছে।

তখন আদালত বলেন, এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেউ বলেনি। কেন করছেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মসকরা কইরেন না।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি লাইভ রাউন্ড (তাজা গুলি) ব্যবহার না করার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন এবং আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। রিটে নিরাপত্তার কথা বলে হেফাজতে নেওয়া সমন্বয়কদের দ্রুত মুক্তির নির্দেশনাও চাওয়া হয়।

আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিচালক, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানকে বিবাদী করা হয়েছে রিটে। এতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরাসরি তাজা গুলির ব্যবহার কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাজা গুলি ব্যবহার না করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানাতে বিবাদীদের প্রতি রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।

রিটের শুনানির শুরুতেই আবেদনকারী আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন বলেন, আন্দোলনকারীদের ওপরে অবাধে গুলি ছোড়া হয়েছে। বিবিসি, আলজাজিরাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজ আছে।

আন্দোলনকারীদের হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১৪৭ জনের মুত্যুর কথা বলেছেন।

হাইকোর্ট তখন বলেন, অনেক বিদেশি মিডিয়া নিউজ বিকৃত করে থাকে। সুতরাং ওই সব নিউজ অকাট্য ধরে নেওয়ার সুযোগ নেই।

আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়ার বিষয়ে আইনজীবী মানজুর বলেন, নিরাপত্তার কথা বলে হাসপাতাল থেকে তাঁদের তুলে নেওয়া হয়েছে।

এখন তাঁদের খাওয়াদাওয়ার ছবি দেওয়া হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন, ইন্টারনেট কেন বন্ধ ছিল? এ পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, এখানে অনেক রাজনৈতিক বিষয় আছে। সুতরাং কোর্টকে নষ্ট (বিতর্কিত) করবেন না। সংবিধানের ৩৪ অনুচ্ছেদের কথা বলতে পারেন।

এরপর আইনজীবী অনীক আর হক শুনানিতে বলেন, আমাদের আরজি হলো তাজা গুলি ছোড়া বন্ধ করা। এতে প্রাণহানি হতে পারে। আমরা চাই না দেশের সম্পদ নষ্ট হোক। এই ছাত্ররা কি দেশের সম্পদ নয়? তবে কোনো সহিংসতা হলে পুলিশ কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে? অবশ্যই না। পুলিশের অধিকার আছে সহিংসতা বন্ধ করার। কিন্তু সেটা তাজা গুলি ছুড়ে না।

এরপর শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন। তিনি বলেন, বলা হচ্ছে ছয় সমন্বয়ককে তাঁদের নিরাপত্তার জন্য তুলে নেওয়া হয়েছে। ডিবি বলছে তাঁরা তাদের হেফাজতে আছে। কিন্তু সংবিধান বা আইনে এভাবে হেফাজতে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান পান্না শুনানিতে বলেন, দরজায় নক করে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে ছাত্র আছে কি না। তাদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে চেক করা হচ্ছে। এটা কি আইনসংগত?

এরপর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে এসে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কিভাবে আইনের প্রয়োগ করবে, সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়। যাঁরা রিট আবেদন করেছেন তাঁরা কি নিশ্চয়তা দিতে পারবেন যে বিটিভি, সেতু ভবন, মেট্রো রেল বা এক্সপ্রেস ওয়েতে আর হামলা হবে না? নরসিংদীর জেলে হামলা করা হয়েছে। সেখান থেকে জঙ্গিসহ বন্দিরা পালিয়েছে।

তখন আদালত বলেন, এ ঘটনার আগে মিছিলে একটি ছেলে গুলিতে মারা গেছে। তারপর একটি গ্রুপ হামলা করেছে।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, প্রতিটি ছাত্রের মৃত্যুর জন্য কমিশন গঠন করা হবে, হয়েছে। দেশে যদি মব (বিশৃঙ্খল জনতা) হয়, সেখানে কি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী আইন প্রয়োগ করতে পারবে না? যারা মারা গেছে, তাদের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ যদি বেআইনিভাবে গুলি করে থাকে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিটি ঘটনার তদন্ত হবে। তাহলে এই রিট আবেদনের উদ্দেশ্য কী? ভুক্তভোগী বা তাদের পরিবার কেউ এসে এই রিট আবেদন করেনি। 

ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে রাখার বিষয়ে এই সরকারি আইন কর্মকর্তা বলেন, টিভিতে আমরা দেখেছি, ডিবি অফিসে এই ছয়জন কাটা চামচ দিয়ে খাচ্ছেন।

তখন আদালত বলেন, এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেউ বলেনি। কেন করছেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মসকরা কইরেন না। যাকে ধরে নেন, নিয়েই একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন। জাতিকে নিয়ে মসকরা কইরেন না।

শুনানির এ পর্যায়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, দুই পক্ষেই হতাহত হয়েছে। ২০০ লোক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গুলিতে মারা গেছে, এই তথ্যের ভিত্তি কী?

আদালত বলেন, যদি ছয় (সমন্বয়ক) ছাত্রকে আটক করে না থাকেন, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করেন।

শুনানির এ পর্যায়ে রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী অনীক আর হক আদালতের কাছে মৌখিক আদেশ চান। আদালত তখন বলেন, মৌখিক আদেশে তো কোনো কাজ হবে না। রিট আবেদনের আরজি সংশোধন (আটক রাখা হয়নি মর্মে ছয় সমন্বয়ককে আদালতের সামনে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে) করে নিয়ে আসুন। কাল শুনানি করে আদেশ দেব।

তখন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা দেশে শান্তি চাই। আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলন নেই। তার পরও আন্দোলন হচ্ছে। বাংলাদেশের সংবিধান, আইন এবং সার্বিক বিবেচনা করে একটি আদেশ দেওয়া প্রয়োজন।

এ আইনজীবীর শুনানির পর আদালত মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে পাট চাষ

শেয়ার
তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে  পাট চাষ

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে করা হয়েছে পাট চাষ। সেই পাট কেটে মহিষের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পানিতে জাগ দেওয়ার জন্য। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের চর বাঘমারা থেকে তোলা। ছবি : মো. আসাদুজ্জামান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

শেয়ার
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকার আড়াই বছর বয়সী নূরজাহান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল তোলা। ছবি : মঞ্জুরুল করিম

মন্তব্য

২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৩টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দলটি আগামী জাতীয় সংসদে নিম্নকক্ষে আংশিক আনুপাতিক ও উচ্চকক্ষে পূর্ণ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক দ্বিকক্ষীয় সাংবিধানিক কাঠামোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দলের নেতারা বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ।

আনুপাতিক পদ্ধতির মাধ্যমেই সব শ্রেণি ও মতধারার সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া আত্মঘাতী। এতে ফ্যাসিবাদের দোসররা আরো উৎসাহী হচ্ছে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তবে ফ্যাসিবাদ ফের মাথা চাড়া দেবে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী শৈথিল্য দেখালেও পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা দ্রুত প্রতিহত হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনদলের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ। এ ছাড়া ছিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা হারুনুর রশীদ, মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা হাসান জুনাইদ, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও মাওলানা মুহসিন বেলালী।

মন্তব্য

রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
শেয়ার
রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার ওয়াহেদুজ্জামান (৭১) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে পরিবারের সদস্যরা গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। রোগীকে জরুরি বিভাগ থেকে পাঠানো হয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (মেডিসিন ওয়ার্ড)। ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করে নেন।

সেখানে বারান্দায় একটি শয্যায় রেখে চলতে থাকে রোগীর চিকিৎসা। পরের দিন ১৪ জুলাই সকালে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত স্থায়ী অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা গিয়ে রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন।

পরের দিন ১৫ জুলাই সকালের দিকে রোগী কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তাঁকে ছুটি দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দুপুর গড়াতে না গড়াতেই রোগী আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তখন কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীকে প্রথমে অক্সিজেন এবং পরবর্তীতে স্যালাইন দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত একটা অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর বাকির মোড়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে দ্রুত তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ধরা পড়ে তাঁর শরীরে ডেঙ্গুসহ নানা জটিলতা। তবে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা পাওয়ায় রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন।

এটি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। চিকিৎসকসংকটে দিনের প্রায় ১৮ ঘণ্টাই ইন্টার্ন চিকিৎসকনির্ভরতার মাধ্যমে চলছে এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা।

খুব জরুরি প্রয়োজনে ফোনে পরামর্শ নেওয়া হয় অভিজ্ঞ ডাক্তারদের। এর বাইরে এফসিপিএস ডিগ্রিধারী বা এফসিপিএস করছেন এমন মধ্যম মানের চিকিৎসকরা থাকেন ভর্তির দিন ধার্য থাকা ওয়ার্ডগুলোতে। এ ছাড়া দিনের ২৪ ঘণ্টা প্রতিটি ওয়ার্ডেই চার থেকে ছয়জন করে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ইন্টার্নদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। 

পাবনার ঈশ্বদীর রোগী ওয়াহেদুজ্জামানের ছেলে হামিম আবেদীন বলেন, রামেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দিনে একবার করে আসার কারণে আমার বাবার সমস্যাগুলো জটিল হয়ে গিয়েছিল, যা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বুঝে উঠতে পারেননি।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করি রোগীর সেবা দেওয়ার। কিন্তু যে পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়, সে পরিমাণ ইন্টার্ন চিকিৎসকও নেই।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত আনসার সদস্যও নেই। অন্যদিকে যেসংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে, সেসংখ্যক অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাসামগ্রী ও ওষুধপথ্যও আমরা দিতে পারছি না। কারণ সব কিছু বরাদ্দ হচ্ছে ৫০০ শয্যার বিপরীতে। কিন্তু এখানে শয্যাই আছে এক হাজার ২০০টি। এর বাইরেও অতিরিক্ত আরো দুই থেকে আড়াই হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।    

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ