সময় তখন সকাল ১১টা। গত বুধবার মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে সেখানকার বাসিন্দাদের নানা ধরনের ব্যস্ততা। একটু এগোতেই একটি ঝুপড়ির ভেতর বসে থাকা দুজন বর্ষীয়ান পুরুষের কণ্ঠ ভেসে আসে, ‘আমরার বস্তিতে প্রায়ই আগুন লাগে। আতঙ্ক আর কাডে না।
কড়াইল বস্তিতে আগুন
দুই বছরে আটটি বড় আগুনের ঘটনায় পুড়েছে কয়েক শ ঘর
তৌফিক হাসান

সরেজমিনে কড়াইল বস্তিতে গেলে আব্দুল হক ও আলামিন হোসেন নামের দুজন বয়স্ক পুরুষকে এভাবে আগুন নিয়ে তাঁদের আতঙ্কে থাকার কথা বলতে দেখা গেছে। বস্তিতে আরো কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তাঁরাও একইভাবে আগুন লাগা নিয়ে তাঁদের ভীতির কথা জানান। তাঁদের একজন শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই বস্তিতে প্রায়ই ছোট ছোট আগুনের ঘটনা ঘটে।
কড়াইল বস্তিবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালীরা অনেক সময় ইচ্ছা করে আগুন লাগিয়ে দেয়।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কড়াইল বস্তিতে কাঠ ও বাঁশের তৈরি ছোট ছোট অনেক ঘর রয়েছে। এ কারণে অনেক সময় ছোট আগুন লাগার ঘটনা বড় আকার ধারণ করে।
ফায়ার সার্ভিস ও বস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগার অন্যতম কারণ অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ।
২৬ বছর ধরে কড়াইল বস্তিতে বসবাস করছেন আব্দুল হক। এই সময়ে ছোট-বড় ১২ থেকে ১৪টি আগুন লাগার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি। কেন এসব আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে—জানতে চাইলে আব্দুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যখন যে ক্ষমতায় আসে আমাদের এলাকায় সে প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের লাইন তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। কিন্তু কেউ এসব লাইনের সংস্কার করে না। অনেক দিন ধরে একই লাইন ব্যবহার করায় এগুলো দুর্বল হয়ে গেছে। এ কারণে আগুন লাগার ঘটনা বেশি ঘটছে।’
একই ধরনের অভিযোগ করেন আরেক বাসিন্দা জহিরুদ্দিন। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘এখানে ছোট আগুন তো ঘন ঘন লাগছে। আর বড় আগুন কম লাগলেও ছয় মাস, এক বছরে দুই-তিনবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বস্তিতে বিদ্যুতের তার একটার সঙ্গে আরেকটা লাগানো। তার ওপর তারগুলো অনেক পুরনো। বস্তিতে একটা ঘরের সঙ্গে আরেকটা ঘর লাগানো। দেখা যায়, একটা ঘরে আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে অন্য ঘরগুলোয় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।’
৩২ বছর ধরে কড়াইল বস্তিতে বসবাস করছেন আলামিন হোসেন। কালের কণ্ঠকে আলামিন বলেন, ‘এখানে বিদ্যুতের তার অথবা গ্যাসের কিংবা মাটির চুলা থেকে আগুন লাগার সূত্রপাত হয়। অন্য কোনো কারণ আমি দেখি না।’
মঙ্গলবারের আগুনে পুড়েছে ছয়টি ঘর
গত মঙ্গলবার কড়াইল বস্তির বেলতলা আদর্শনগর এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ওই অগ্নিকাণ্ডে বস্তির একটি বাড়ির দোতলার ছয়টি ঘর পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বাড়ির পাশের বিদ্যুৎ বোর্ড থেকে হয়েছে বলে জানান বাড়ির মালিক রুবেল হোসেন। কালের কণ্ঠকে রুবেল বলেন, ‘বিদ্যুতের বোর্ড থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। বিদ্যুতের তার জ্বলে আগুন লেগেছে। ওপরে ছয়টা ঘর ছিল। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বস্তিতে অনেক আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বেশির ভাগ সময় বিদ্যুতের তার ও গ্যাসের চুলা থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। তবে আমার বাসায় এই প্রথমবার আগুন লাগল।’
অন্যদিকে আগুন লাগার পেছনে বস্তির বাসিন্দাদের অসচেতনতাকেই দায়ী করলেন আরেক বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন আহমেদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে কড়াইল বস্তিতে বাস করছি। এই দুই বছরে তিন-চারটা আগুনের ঘটনা ঘটেছে। আগুন লাগার বড় কারণ এখানকার বাসিন্দাদের অসচেতনতা। বস্তিটি খুব ঘনবসতিপূর্ণ। একটা ছোট আকারে আগুন লাগলেও তা বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ে। মানুষজন বের হতে পারে না। মালামালও বের করতে পারে না। এ কারণে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়।’
ঘনবসতি হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি
ঘনবসতি হওয়ায় সামান্য আগুনও অনেক সময় বড় আকার ধারণ করে। বস্তিতে সামান্য আগুনও নেভানোর ব্যবস্থা না থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রতিবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। যথারীতি তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করে। কিন্তু একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগলে নেভানোটা অনেক কঠিন। রাস্তা সরু। যার কারণে ফায়ার সার্ভিসের বড় বড় গাড়ি সেখানে পৌঁছতে পারে না। আর তাই নৌকা দিয়ে পাম্পের মাধ্যমে পানি দিতে হয়। সেই সঙ্গে দমকা বাতাসে আগুন ছড়িয়ে যায় সব জায়গায়।
সম্পর্কিত খবর

স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে

ক্রিকেট ম্যাচ, তার ওপর রবিবার। গতকাল তাই উদ্দাম পার্টির প্রস্তুতি ছিল রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উপড়ে পড়া গ্যালারির। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকে ডিজের মিউজিক, দর্শকদের ড্রাম পেটানো আর ট্রাম্পেটের চড়া সুরে কান পাতা দায়। সেই পার্টিই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় দারুণ ক্ষিপ্রতায় কুশল মেন্ডিসকে শামীম হোসেন রান আউট করতেই।
বিশ ওভারের ক্রিকেটে ছন্দ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতলয়ের ক্রিকেটে ছন্দের সেই গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে আর পেছনে তাকায়নি বাংলাদেশ দল।
অবশ্য ম্যাচজুড়েই শামীমের প্রতিপত্তি দেখা গেছে।
কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন লিটন ও শামীম। অধিনায়কের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তাওহিদ ফেরেন, একই ওভারে তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুমে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ধাক্কায় অবশ্য কাবু হওয়ার অবস্থায় নেই শামীম। আগের ম্যাচে ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি শুরু থেকে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। ওদিকে অধিনায়কও থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। তাঁরা জুটি বেঁধে ছোটান রানের গতি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটন ও শামীম মিলে তোলেন ৭৭ রান, তা-ও মাত্র ২১ বলে! ১৩ ম্যাচ পর ফিফটির দেখা পান লিটন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস। এক বাউন্ডারি আর পাঁচ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৬ রান করে যখন আউট হন অধিনায়ক, ততক্ষণে লড়াইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক পূঁজি এক রকম হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে স্ট্রাইক পেতে মরণপণ দৌড়েও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শামীম। তাতে ২৭ বলে তাঁর ৪৮ রানের ইনিংস পঞ্চাশ ছুঁতে না পারার আক্ষেপে শেষ হয়েছে। অবশ্য তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই, ‘দল জিতেছে। তাতে অবদান রাখতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি।’ শামীম আরো খুশি ১৬ জুলাই কলম্বোয় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা নয়, জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
ম্যাচ শুরুর আগের রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের চালচিত্র না বললেই নয়। হাজার তিরিশেক দর্শকের ঠাঁই হয় এ মাঠে। তবে দুই দিন ধরে টিকিটের জন্য আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল যে পর্যাপ্ত আসন নেই। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে গ্যালারি ভরে গেছে। বরাবরের মতো গ্যালারি লাগোয়া গাছেও চড়ে বসেন বিনা টিকিটের দর্শক। তাই বলে সিঁধ কেটে বিনা টিকিটের দর্শক ঢোকে ডাম্বুলায়, সেটি অজানা ছিল। গতকাল সেটিও দেখা হলো, বাংলাদেশ ইনিংসের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চলাকালে ভিআইপি স্ট্যান্ডের দিককার কাঁটাতারের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে অন্তত শ খানেক টিকিটহীন দর্শক ঢুকে পড়লেন স্টেডিয়াম চত্বরে। বিনা বাধায় যোগ দিলেন গ্যালারির উৎসবে। নিজ দলের ব্যাটিং ভরাডুবিতে ক্ষণে ক্ষণে লাউড স্পিকার থেমেছিল বটে। তবে পুরোপুরি থামেনি। পুরস্কার বিতরণীর পরও কিছু দর্শককে দেখা গেছে হাসিমুখে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তো বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেও গেলেন, ‘ওয়েল প্লেইড বাংলাদেশ!’

অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারির রিকশার দাপট বেড়েছে। সেগুলো জব্দে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মালিবাগে অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দ করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি : ফোকাস বাংলা
।
মানবতাবিরোধী অপরাধ
বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বাংলা-ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে। আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এর আগে ১০ জুলাই এই মামলার ২৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২২ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। যে দুজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাঁরা হলেন রাফিউল হাসান রাসেল ও মো. আনোয়ার পারভেজ।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই মামলার শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আট আসামির গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় প্রয়োজন। তখন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। আদেশের সময় মামলার ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

হত্যা মামলায় জামিন
আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার এনামুল হক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। গতকাল রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনয়শিল্পী। এটাই আমার পেশা।
এদিন অপু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি মুখে কালো মাস্ক, মাথায় সাদা ওড়না ও বোরকা পরেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এরপর অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না।’ এ সময় আইনজীবীরা আহা আহা সাধু বলতে থাকেন। অনেক আইনজীবী উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপু বিশ্বাস এমপি হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার দোসর তিনি। এ সময় অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে।’ এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করতে দেখা যায়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে অপু বিশ্বাস গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। পরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার শ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মামলায় অপু বিশ্বাস, আশ্না হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান তিনি।