উইকেট পেয়ে উল্লাস

সম্পর্কিত খবর

আশুলিয়ায় শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, ১৫ কারখানায় ছুটি
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি

সাভারের আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। পরে পুলিশের অনুরোধে সড়ক ছেড়ে দেন তাঁরা। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় পার্শ্ববর্তী অন্তত ১৫টি কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
শিল্প পুলিশ ও আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় নাসা গ্রুপের ‘নাসা বেসিক কমপ্লেক্স’ কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের অনুরোধে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যান। তবে পরে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একটি অংশ পাশের অন্যান্য কারখানায় গিয়ে সেখানকার শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ।
শিল্প পুলিশ জানায়, নাসা গ্রুপের শ্রমিকদের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর দ্রুত আশপাশের কারখানাগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।
শ্রমিকরা জানান, ১০ থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত চার দিনের ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ১৩ আগস্ট বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও সে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করে নতুন করে আরো চার দিনের সাধারণ ছুটির নোটিশ টানানো হয়।
নাসা বেসিক কমপ্লেক্স কারখানায় টাঙানো সর্বশেষ নোটিশে বলা হয়, ‘অনিবার্য কারণে আগামী ১৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার থেকে ১৮ আগস্ট সোমবার পর্যন্ত কারখানার সব বিভাগ ও শাখা (জরুরি কাজে নিয়োজিত কর্মী ব্যতীত) সাধারণ ছুটির আওতায় থাকবে। ১৯ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে কারখানার সব বিভাগ ও শাখা যথারীতি খোলা থাকবে।’
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে নিরাপত্তাজনিত কারণে ওই এলাকার ১৫টি পোশাক কারখানা বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।

সিএমপি কমিশনার
পুলিশের সামনে কেউ অস্ত্র বের করলেই গুলির নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরে অভিযানের সময় পুলিশের সামনে কেউ অস্ত্র বের করলে আত্মরক্ষার্থে তাৎক্ষণিকভাবে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ।
গত মঙ্গলবার রাতে সিএমপির ওয়্যারলেসে দেওয়া এক মৌখিক বার্তায় সিএমপি কমিশনার এ নির্দেশ দেন। এর আগে চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ রানা আহত হন। ওই ঘটনার পরপরই কমিশনার এ নির্দেশনা দেন বলে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
ওয়্যারলেস বার্তায় পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে অস্ত্রের প্রাধিকার ছিল, ওই অস্ত্র গুলাবারুদের প্রাধিকার অনুযায়ী থানার মোবাইল পার্টি, প্যাট্রল পার্টি, ডিবির টিমগুলো ও সব ফোর্স অস্ত্র ক্যারি করবে। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া আই রিপিট আগ্নেয়াস্ত্র এবং লাইভ অ্যামুনিশন ছাড়া কোনো প্যাট্রল পার্টি, মোবাইল পার্টি, টহল পার্টি, চেকপোস্ট পার্টি, ডিবির পার্টি তাদের ডিউটিতে বের হবে না। অবশ্যই ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের অস্ত্রের প্রাধিকার অনুযায়ী লাইভ অ্যামুনিশনসহ তাদের বের হতে হবে। প্রাধিকার অনুযায়ী অস্ত্র, গোলাবারুদ ও স্যুট পরে তারপর ডিউটিতে যাবে।
তিনি আরো বলেন, ‘শুধু রাবার বুলেট দিয়ে আমাদের কাজ হচ্ছে না। আই রিপিট, শুধু রবার বুলেট দিয়ে আমাদের কাজ হচ্ছে না। বন্দরে (বন্দর থানা) আমার একজন সাব-ইন্সপেক্টর গুরুতর আহত হয়েছেন। আরেক দিন আরো বড় দুর্ঘটনা ঘটবে।
হাসিব আজিজ বলেন, ‘সোজা কথা, পুলিশের কোনো টহল পার্টির সামনে অস্ত্র বের করা মাত্র, আই রিপিট, অস্ত্র বের করা মাত্র, সেটা আগ্নেয়াস্ত্র হতে পারে বা ধারালো অস্ত্র। অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই, এটা সবাইকে বলে দিচ্ছি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার সল্টগোলা এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল বের করছেন—এমন তথ্য পেয়ে অভিযানে গিয়েছিলেন বন্দর থানার এসআই রানার নেতৃত্বে একটি টিম। এ সময় তল্লাশি চলাকালে রানার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। পরবর্তী সময়ে বন্দর থানা এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ছুরি, ধারালো অস্ত্রসহ ১৮ জনকে আটক করে। এর পরই মঙ্গলবার রাতে পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ এক ওয়্যারলেস বার্তায় এসব নির্দেশনা দেন।
সার্বিক বিষয়ে জানার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এক্সে টিউলিপের ক্ষোভ
ঢাকার বিচার প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় বাংলাদেশের আদালতে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিচার শুরু হয়েছে। এই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে পূর্বাচলে মা, ভাই, বোনকে অনিয়মের মাধ্যমে প্লট পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। নিজের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বিচার নিয়ে মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে একটি পোস্ট করেছেন টিউলিপ। সেখানে নিজেকে নির্দোষ এবং এই বিচারকে প্রহসন হিসেবে দাবি করেছেন সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ভাগনি।
তিনি লিখেছেন, ‘ঢাকায় এখন যে তথাকথিত বিচার চলছে, তা একটি প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি বানানো অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দ্বারা পরিচালিত। গত এক বছরে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো বারবার পরিবর্তিত হয়েছে, তবু বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ একবারও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমি কখনো কোনো আদালতের সমন পাইনি, বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া পাইনি।
তিনি আরো লিখেছেন, ‘যদি এটি একটি প্রকৃত আইনি প্রক্রিয়া হতো, তাহলে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমার বা আমার আইনি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করত, আমাদের আনুষ্ঠানিক চিঠিপত্রের জবাব দিত এবং তাদের কাছে থাকা প্রমাণ পেশ করত। এর পরিবর্তে তারা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক অভিযোগ ছড়িয়েছে, যা সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, কিন্তু তদন্তকারীরা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আমার কাছে উপস্থাপন করেনি।’
৪২ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অধ্যাপক ইউনূস এতে সাড়া দেননি।
এদিকে দুদকের তদন্তে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং তাঁদের সন্তানদের নামে মোট ছয়টি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

জামায়াত আমির
প্রিজন সেলে অবহেলায় আল্লামা সাঈদীর মৃত্যু হয়
বিশেষ প্রতিনিধি ও খুলনা অফিস

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দলটির সাবেক নায়েবে আমির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর স্বপ্ন ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক কল্যাণমূলক ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এ লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির ও দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট রাতে পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসায় অবহেলার কারণে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ইন্তেকাল করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মৃত্যুর পর ঢাকায় তাঁর জানাজা আদায় করতে দেওয়া হয়নি। লাখো তৌহিদী জনতা জানাজা আদায়ের জন্য রাজপথে নেমে এলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছুড়ে অনেককে আহত করে। পরে তাঁর মরদেহ পিরোজপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হয়।
বিবৃতিতে জামায়াত আমির আরো বলেন, ‘আল্লামা সাঈদী আজ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তিনি তাঁর জীবন ও কর্ম দিয়ে যে আদর্শ রেখে গেছেন, তা আমাদের পথ দেখায়। অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে তিনি দেশে-বিদেশে কোরআনের তাফসির করেছেন। তাঁর অসংখ্য বক্তব্য ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে রয়েছে, যা মানুষকে ইসলামী আদর্শে উদ্বুদ্ধ করছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করছি আল্লামা সাঈদীর ইলম, দাওয়াত ও ত্যাগময় জীবনকে। তিনি ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের এক নির্ভীক কণ্ঠস্বর, যিনি আজীবন আল্লাহর দ্বিন প্রতিষ্ঠা ও মানবতার কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তিনি আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করেছেন, কিন্তু তাঁর কর্ম ও আদর্শ আজও আমাদের মাঝে জীবিত রয়েছে। তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করে ন্যায়, ইনসাফ ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে আমরা এগিয়ে যাব।’
ইসলামী রাষ্ট্র হলে ভিন্ন ধর্মের উপাসনালয়ে পাহারা দিতে হবে না: গোলাম পরওয়ার
এদিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালনের নিশ্চয়তা পাবে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে।
গতকাল সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নে আয়োজিত হিন্দু সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বান্দা স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির উদ্যোগে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, সবাই রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সমান মর্যাদার অধিকারী। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের “সংখ্যালঘু” বানিয়ে নাগরিক অধিকার খর্ব করার চেষ্টা যারা করেছে, তারাই মূলত রাজনৈতিক ফায়দা লুটেছে। ইসলামের ছায়াতলে সব মানুষ নিরাপদে ও স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করতে পারে। ইসলাম কারও ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেয় না, বরং এতে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, নতুন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে দল, মত, ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগত পরিচয় নির্বিশেষে সবাইকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির সভাপতি ডা. নিত্যরঞ্জন রায়। সাধারণ সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। সমাবেশে জামায়াত নেতাসহ বক্তব্য দেন উপজেলা হিন্দু কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ মণ্ডল, বান্দা কলেজের অধ্যক্ষ সৌমেন মণ্ডল, অধ্যাপক ডা. প্রকাশ চন্দ্র মজুমদার, অ্যাডভোকেট বিপুল মণ্ডল, অধ্যাপক রমেশ চন্দ্র, অধ্যাপক গৌতম রায়, দীপংকর ঢালী, প্রীতিশ মণ্ডল, দূর্বাদল বিশ্বাস, সঞ্জয় বৈরাগী প্রমুখ।