ভূমি পুনরুদ্ধার, মরুকরণ ও খরা প্রতিরোধের প্রতিপাদ্য সামনে রেখে চলতি বছর পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল নতুন করে মরুকরণ ও খরার ঝুঁকিতে রয়েছে। কমে যাচ্ছে দেশের ৭৬ শতাংশ জমির গুণগত মান। সেই সঙ্গে রয়েছে তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের নানা নেতিবাচক প্রভাব।
নতুন করে খরার ঝুঁকিতে উপকূলীয় ও মধ্যাঞ্চল
সাইদ শাহীন ও খায়রুল কবির চৌধুরী

জাতিসংঘের বিশ্ব পানি উন্নয়ন প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বাংলাদেশের সেচের পানির ৮৬ শতাংশ ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। সেচের ক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনে বাছাইকৃত দেশগুলোর শীর্ষ পাঁচে রয়েছে বাংলাদেশ। মোট সেচের পানির প্রায় ৯৪ শতাংশ ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও আজ বুধবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। জাতিসংঘের সঙ্গে মিলিয়ে সরকার এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ঠিক করেছে, ‘করব ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখব মরুময়তা/অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা’। এ বছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের স্লোগান ‘আমাদের ভূমি, আমাদের ভবিষ্যৎ’।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান মিলনের তত্ত্বাবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শাবিস্তা ইলদিজ সম্প্রতি দেশের খরার ভবিষ্যৎ চিত্র নিয়ে একটি গবেষণা করেন। এটি বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী স্প্রিঞ্জারের ‘আর্থ সিস্টেম অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’-এ প্রকাশিত হয়। গবেষণায় বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, সোলার রেডিয়েশন ও বাষ্পীভবনের উপাত্তের ভিত্তিতে গ্লোবাল ক্লাইমেট মডেলের ডাটা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের খরার চিত্র কেমন হতে পারে তা তুলে ধরা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সুদূর ভবিষ্যতে (২০৬০-৭৯) খরার বিস্তৃতি ও সংখ্যা বাড়তে পারে। সুদূর ভবিষ্যতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে খরার হার বাড়তে পারে, যা সম্ভাব্যভাবে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
গবেষণায় ১৯৮৫ থেকে ২০১৪ সালের মোট ৩০ বছরের আবহাওয়া ও খরার উপাত্তকে ভিত্তি ধরা হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে খরার চিত্র কেমন হতে পারে তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, অদূর ভবিষ্যতে (২০২০-৪৯) বাংলাদেশে খরার হার কমার ইঙ্গিত থাকলেও সুদূর ভবিষ্যতে (২০৬০-৭৯) আবার তা বাড়তে পারে।
খরার বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন
ঐতিহ্যগতভাবে খরাপ্রবণ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও উল্লেখযোগ্য হারে খরা বাড়বে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি খরা বাড়তে পারে। দক্ষিণাঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি খরা বাড়তে পারে। দূর ভবিষ্যতে দেশের উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে খরার তীব্রতা বাড়বে। খরা সংঘটন ও এর তীব্রতা বাড়লে তা ভূগর্ভস্থ পানির স্তর, স্রোত প্রবাহ, কৃষি-সংস্কৃতি, প্রতিবেশ ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
তাপমাত্রার পরিবর্তন
২০২০ থেকে ২০৭৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেশি হারে বাড়তে পারে। ফলে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসবে। এর ফলে মানুষের মধ্যে তাপজনিত অস্বস্তি বাড়বে, যা স্বাস্থ্য ও কৃষির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি বাড়বে। অন্যদিকে উপকূলীয় অঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উচ্চহারে বাড়তে পারে। ২০২০ থেকে ২০৭৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বাষ্পীভবনের হার সামগ্রিকভাবে বাড়বে। সুদূর ভবিষ্যতে এটি উচ্চহারে বাড়তে পারে, বিশেষ করে দেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এটি সামান্য কমতে পারে।
এ বিষয়ে মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান মিলন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমাদের যেসব অঞ্চলে নতুন করে খরার আশঙ্কা রয়েছে সেসব অঞ্চলের, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষির জন্য পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা সাজাতে হবে। উত্তরাঞ্চলের খরা ব্যবস্থাপনা উপকূলীয় অঞ্চলের প্রতিবেশ ও পরিবেশে কাজ না-ও করতে পারে। খরা নিয়ে তাই আরো গবেষণা করে তা মোকাবেলার জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।’
মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান আরো বলেন, ‘যে দেশে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত দুই হাজার ২০০ মিলিমিটারের ওপর সেখানে খরা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমাদের সমস্যা হচ্ছে সঠিক পানি ব্যবস্থাপনার অভাব। অঞ্চলভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবনে তাই জোর দিতে হবে।’
ভূমি অবক্ষয় ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর
বাংলাদেশের ভূমির গুণগত মান কমা নিয়ে সরকারি সংস্থা মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট ‘বাংলাদেশ ভূমি অবক্ষয়, ২০২০’ শীর্ষক একটি গবেষণা চালায়। গবেষণাটি প্রকাশিত হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। ওই গবেষণা বলছে, দেশের মোট এক কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার হেক্টর ভূমির মধ্যে এক কোটি ১২ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিই অবক্ষয়ের শিকার, যা মোট ভূমির ৭৬.১ শতাংশ। প্রতিবছর গড়ে ২৭ হাজার হেক্টর ভূমির অবক্ষয় হচ্ছে। গবেষণাটি বলছে, মূলত মাটির রাসায়নিক গুণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, পানির স্তর নেমে যাওয়া, জলাবদ্ধতা, খরা ইত্যাদি কারণে ভূমি অবক্ষয় হয়ে থাকে। মাত্রাতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট রিসার্চের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘উজানের পানির অভাবে আমাদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল লবণাক্ত হয়ে পড়ছে। এর সমাধান করতে হবে। জমিতে বারবার একই ফসল চাষ করায় উর্বরতা কমে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। পাহাড়ি অঞ্চলের ভূমিক্ষয় নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। খরাসহিষ্ণুতা তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের সম্পূরক সেচ প্রকল্প নিয়েও ভাবতে হবে। আমাদের শতকরা ৭০ ভাগ সেচ হয় ভূগর্ভস্থ পানি থেকে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ পড়ছে এবং স্তর নেমে যাচ্ছে।’
ভূমি পুনরুদ্ধার ও বনায়নে সরকারের পদক্ষেপ
সরকার বনায়ন ও বন সংরক্ষণ, অবক্ষয়িত বন পুনরুদ্ধার এবং টেকসই বন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ২০০৯-১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত মোট দুই লাখ ১৭ হাজার ৪০২ হেক্টর ব্লক এবং ৩০ হাজার ২৫২ সিডলিং কিলোমিটার স্ট্রিপ বাগান সৃজন এবং ১১ কোটি ২১ লাখ চারা বিতরণ ও রোপণ করা হয়েছে। চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে দেশজুড়ে আট কোটি ৩৩ লাখ ২৭ হাজার চারা রোপণ করা হবে।
সম্পর্কিত খবর

জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবুল বারকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুদকের মামলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, আবুল বারকাতের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা থাকায় ধানমণ্ডির ৩ নম্বর সড়কের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আবুল বারকাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। পাশাপাশি তিনি হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অবৈতনিক প্রধান উপদেষ্টা।
অ্যাননটেক্স গ্রুপের নামে ২৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল বারকাত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের মামলার অন্য আসামিরা হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান, সাবেক সহকারী পরিচালক ইসমত আরা বেগম, জনতা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালাম আজাদ, সাবেক পরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ, মো. ইমদাদুল হক, নাগিবুল ইসলাম দিপু, আর এম দেবনাথ, মো. আবু নাসের, সঙ্গীতা আহমেদ, নিতাই চন্দ্র নাথ এবং অ্যাননটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. ইউনূস বাদল।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আতিউর রহমান, আবুল বারকাত এবং তাঁর সহযোগীরা বিভিন্ন অনৈতিক উপায়ে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তবে ২০২২ সালে ঋণ অনিয়ম নিয়ে দুদকের তদন্তে পর্যাপ্ত প্রমাণ না পাওয়ায় তখন মামলার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয় আবুল বারকাতকে। ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি পাঁচ বছর এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

বাঁশ শিল্পের প্রদর্শনী


যানজট


চট্টগ্রামে নারীকে ১১ টুকরা করে হত্যা স্বামী পলাতক
- দেশজুড়ে অপঘাতে মৃত্যু ৮
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

চট্টগ্রামে এক নারীকে ১১ টুকরো করে স্বামী পালিয়ে গেছে। এছাড়া দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন ধরনের অপঘাতে ৮ ব্যক্তি মারা গেছেন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন:
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির এক বাসায় ফাতেমা বেগম (৩২) নামের এক নারীকে ১১ টুকরা করে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে তাঁর স্বামী মো. সুমনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী মোহাম্মদ মাহফুজ হাসান সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ১০ বছর আগে ফাতেমার সঙ্গে সুমনের বিয়ে হয়েছিল।
রাউজান : চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব মো. সেলিম উদ্দিনকে গুলি করে হত্যার পাঁচ দিনের মাথায় এবার তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবদলকর্মী দিদারুল আলম নুংকুর (৪০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার পশ্চিম বেতবুনিয়ার লুঙ্গিপাড়া এলাকার পাহাড়ি চরা থেকে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়। বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর প্রায় সাড়ে ১৫ ঘণ্টার পর তার এ মরদেহ উদ্ধার হয়। নুংকুর বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সমশের পাড়ায়। তিনি মৃত জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
যশোর : যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ঘোষনগর গ্রামে স্টিলের বাক্সের ভেতর থেকে সুচিত্রা দেবনাথ (৫৮) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে নিজ ঘরের কাপড়ের বাক্সে লুকিয়ে রাখা হয় বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী তপন দেবনাথকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে ৯ জুলাই রাত ১১টার দিকে। নিহত সুচিত্রা দেবনাথ বাঘারপাড়া উপজেলার বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের ঘোষনগর গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় তপন দেবনাথকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা থেকে ঢেনা মুর্মু (৫৫) নামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক ব্যক্তির পানিতে ভাসমান প্রায় অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি নাচোল সদর ইউনিয়নের পীরপুর সাহানাপাড়া গ্রামের বুদ্ধাই মুর্মুর ছেলে। স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, ঢেনা মুর্মু গত সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে একই ইউনিয়নের প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরের ঝিকরা গ্রামে তাঁর নাতনির বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরে বুধবার (৯জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঝিকড়া গ্রামসংলগ্ন একটি বিলের কচুরিপানার মধ্যে ঢেনার ভাসমান মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় মাদকাসক্ত ছেলে মাহাবুর ইসলাম বাবু (২৮) মারধর ও ইট দিয়ে আঘাত করে মা হেনা বেগমকে আহত করে। স্ত্রীকে রক্ষা করতে গেলে বাবা শিশ মোহাম্মদকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টার পর স্বজন ও প্রতিবেশীদের প্রহারে বাবু নিহত হন। নিহত বাবুর বাড়ি রানীহাটী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের রামচন্দ্রপুরহাট বগিপাড়া গ্রামে। অভিযোগ রয়েছে, বাবু মাদক সেবনের টাকার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে অত্যাচার করে আসছিল।
পীরগঞ্জ : রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় আখিরা নদী থেকে আক্তার প্রধান সুজন (৩৬) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার আখিরা নদীতে ভাসমান অবস্থায় কাপড়বিহীন লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। নিহত আক্তার প্রধান সুজন উপজেলার থানাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহগী ইউনিয়নের হাটুলিয়া গ্রামের বসতঘর থেকে এক তরুণের গলা কাটা ও ক্ষতক্ষিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই সময় লাশটি ছিল খাটের ওপর মশারির নিচে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছে রাতে বন্ধুদের নিয়ে ওই তরুণ মা-বাবাহীন ঘরে আড্ডায় মত্ত ছিল। নিহত মো. রাকিবুল ইসলাম (১৯) ওই গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাটুলিয়া গ্রাম থেকে জুবায়ের (১৯, রাকিব মিয়া (২১) ও কাউসার (১৮) নামে তিন তরম্নণকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।
কালিয়াকৈর : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শালবনের ভেতর থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বড় গোবিন্দপুর বিন্নার চালা ফুটবল খেলার মাঠের পাশে শাল বনের ভেতর থেকে লাশটি উদ্ধার করে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ। নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। তার বয়স আনুমানিক (৪০)। তার পরনে জিন্সের প্যান্ট ও খয়েরি রঙের টি শার্ট ছিল।
টঙ্গী : ফ্লাইওভার থেকে টঙ্গীতে নামার সময় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত মাহফুজুর রহমান (২১) বরিশাল সরকারি হাতেম আলী কলেজে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। বুধবার (৯ জুলাই) রাত ১২ টার পর ঢাকা-ময়মনসিংহগামী মহাসড়কের আব্দুল্লাহপুর ফ্লাইওভার থেকে টঙ্গীর সেনা কল্যাণ ভবনগামী সংযোগ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাহফুজুর রহমান বরিশাল সদর উপজেলার হায়াতসার গ্রামের ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি টঙ্গী পূর্ব থানাধীন ব্লু ফ্যাশনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।