ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

২৩ কোটি তথ্যের দেখভালে একজন

জহিরুল ইসলাম
জহিরুল ইসলাম
শেয়ার
২৩ কোটি তথ্যের দেখভালে একজন

সারা দেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় ও দক্ষ জনবলের অভাব। এতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে ধীরগতিতে। সেবাগ্রহীতারা প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা না পেয়ে বরং হয়রানিতে পড়ছেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সংস্থাটির অধীনে প্রায় ২২ কোটি জন্ম নিবন্ধন ও এক কোটি মৃত্যু নিবন্ধনের তথ্য রয়েছে।

অথচ এই বিশালসংখ্যক তথ্যে নজরদারি বা দেখভালের জন্য কাজ করেন মাত্র একজন প্রগ্রামার। এই একজনের ওপরই প্রায় ২৩ কোটি তথ্যের বোঝা। এ ব্যাপারে প্রগ্রামার ফাহমিদা শিরিন কালের কণ্ঠকে বলেন, টেকনিক্যাল দিকগুলো একা দেখা একটু কঠিন। সব কাজ একা করতে পারছি না।

রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় সূত্র জানায়, দপ্তরের বিভিন্ন বিষয়ে পরিচালনার জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী মাত্র ২২ জন। এর মধ্যে কর্মকর্তা ১৬ জন। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিয়োগ বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী ২৫ জনের নিয়োগের বিষয় উল্লেখ ছিল। পরে আরো নতুন ১২টি পদ সৃষ্টি হলেও সেগুলো নিয়োগ বিধিমালায় নেই।

বিধিমালা অনুযায়ী, ২৫ জনকে নিয়োগের মধ্যে আটজনকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নেওয়ার কথা ছিল। পরে তিনজনকে বাদ দেওয়া হয়। নতুন তিনটি পদসিস্টেম অ্যানালিস্ট, সহকারী হিসাবরক্ষক, অফিস সহকারীর নিয়োগের বিষয়টি বিধিমালায় নেই। এই তিনটি পদের জন্য নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন হয়ে জনপ্রশাসনে রয়েছে। বর্তমানে ২২ জন দিয়ে চলছে কার্যালয়ের সব কাজ।

উপ-রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আবু নছর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (যুগ্ম সচিব) কালের কণ্ঠকে বলেন, নিয়োগের বিষয়টি লম্বা প্রক্রিয়া। এটি মন্ত্রণালয় থেকে (স্থানীয় সরকার) জনপ্রশাসনে পাঠানো হয়েছে। এই প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে, আশা করছি পেয়ে যাব। আমাদের একজন প্রগ্রামার রয়েছেন। তবে দুই সপ্তাহ আগে অ্যাসিস্ট্যান্ট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগদান করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা পথশিশুদের জন্ম নিবন্ধনসহ কিছু কাজ করতে চাই। কিন্তু বর্তমান জনবল দিয়ে কাজগুলো করা সম্ভব না। আসলে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সিস্টেমটাকে চালু রাখা। ২০১১ সালে কাজ শুরু হলেও আমাদের অফিস করা হয়েছে ২০১৬ সালে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, এই সিস্টেমের দেখভাল। এ জন্য পর্যাপ্ত লোকবলও দরকার। অথচ এত বড় একটি সিস্টেম চালু রাখার জন্য লোকবল খুব কম।

ড. আবু নছর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, প্রগ্রামারসহ বিভিন্ন বিভাগে জনবল বাড়ানো জরুরি। আমরা অন্তত আরো তিনজন প্রগ্রামার ও সহকারী প্রগ্রামার চেয়েছি। ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেনারেল, সিস্টেম অ্যানালিস্টসহ বিভিন্ন পদে আমরা ১৬৫ জন চেয়েছি।

তিনি বলেন, প্রায় ২২ কোটি জন্ম নিবন্ধন ও এক কোটি মৃত্যু নিবন্ধন রয়েছে। সংশোধন, নতুন নিবন্ধন, কারো মৃত্যু নিবন্ধন করা হলে জন্ম নিবন্ধন বাতিল করা, তথ্য হালনাগাদ এবং দেখভালের জন্য পর্যাপ্ত জনবল জরুরি। এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) কার্যক্রম যেভাবে চলে, আমরা যে সে রকম একটি অর্গানোগ্রাম চাচ্ছি।

জানা গেছে, জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ অনুযায়ী বর্তমানে দেশে জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। জন্ম নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ২১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৩ হাজার জন্ম নিবন্ধন রয়েছে। মৃত্যু নিবন্ধন রয়েছে এক কোটি তিন লাখ দুই হাজার পাঁচটি।

জনশুমারির সঙ্গে জনসংখ্যার এই পার্থক্যের বিষয়ে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় জানিয়েছে, একই ব্যক্তির একাধিক জন্ম নিবন্ধন করা হচ্ছে। এসব নিবন্ধন বাতিল না করাসহ কিছু কারণে এমন পার্থক্য হয়েছে। তবে ওয়েবসাইট উন্নয়ন করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে কেউ একাধিক জন্ম নিবন্ধন চাইলেও পারবে না।

দেখা গেছে, ২০২৩ সালের শুধু জানুয়ারি মাসে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন জমা পড়ে ১৯ লাখ দুই হাজার ৮৫৬টি। এর মধ্যে ১৫ লাখ পাঁচ হাজার ১৬০টি নিবন্ধন করা হয়। সেখান থেকে ১৪ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪টি জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রিন্ট দেওয়া হয়। একই সময় জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের আবেদন জমা পড়ে ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৪৬টি। সংশোধন করা হয় পাঁচ লাখ ৩৪ হাজার ৬৭৯টি, চলমান বা দেওয়া হয়নি পাঁচ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৭টি আবেদন।

জানা যায়, সারা দেশে ১২টি সিটি করপোরেশনের ১২৪টি আঞ্চলিক কার্যালয়, ৩২৯টি পৌরসভা, চার হাজার ৫৭৩টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১৫টি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এবং ৪৪টি দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের ৫৫টি দূতাবাস বা মিশনসহ প্রায় ছয় হাজার নিবন্ধন কার্যালয়ে সরাসরি ও নিয়মিত যোগাযোগ সমন্বয় করে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রম চলছে। ২০২৩ সালে অফিশিয়াল ইউজার আইডি দিয়ে একাধিক ডিভাইস থেকে লগইন এবং জালিয়াতি করে জন্ম সনদ তৈরির কয়েকটি ঘটনার পর সিস্টেমের পরিবর্তন করে অফিশিয়াল ইউজারের মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি দিয়ে একটি ডিভাইস নিশ্চিত করার কাজ শুরু হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।

 

রাজধানীতে ভুগছে মানুষ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে ব্যয় করা অর্থ উঠছে না দাবি করে গত বছরের জুন মাস থেকে আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতে কার্যক্রম বন্ধ রাখে। বিষয়টি জানিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠিও দেওয়া হয়। সমঝোতার জন্য সভা করেও কার্যত পরিবর্তন ঘটেনি। উল্টো নিজস্ব সার্ভার দিয়ে জন্ম নিবন্ধন দেওয়া শুরু করে সংস্থাটি। তবে এই নিবন্ধন কোনো কাজে আসছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দক্ষিণের বাসিন্দারা।

উত্তর সিটি করপোরেশনের সবকটি অঞ্চলে কার্যক্রম চালু থাকলেও ভোগান্তি রয়ে গেছে। নতুন ওয়ার্ডগুলোতে এই জটিলতা আরো বেশি।

সম্প্রতি ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইসার আলী নিজের এবং সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে গেলে নতুন জন্ম সনদ করতে অপারগতা জানান। তিনি আঞ্চলিক (অঞ্চল-১০) অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে যোগাযোগ করলেও কোনো কাজ হয়নি। ইসার আলী বলেন, ছেলের রেজিস্ট্রেশনের জন্য জন্ম নিবন্ধনটা দ্রুত প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এখনো পাচ্ছি না।

এ বিষয়ে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খানম জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। তাই বিস্তারিত কিছু বলতে পারছেন না। তবে নতুন ওয়ার্ডগুলোতে ইউজার আইডি পাসওয়ার্ড না দেওয়াতে কাজ করায় জটিলতা হচ্ছে।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ

সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে
সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে
শেয়ার
স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
পঞ্চম উইকেটে ৭৭ রানের দারুণ এক জুটিতে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের মঞ্চ সাজিয়ে দেন লিটন দাস ও শামিম হোসেন। পরে বোলারদের দাপটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।ছবি : মীর ফরিদ, ডাম্বুলা থেকে

ক্রিকেট ম্যাচ, তার ওপর রবিবার। গতকাল তাই উদ্দাম পার্টির প্রস্তুতি ছিল রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উপড়ে পড়া গ্যালারির। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকে ডিজের মিউজিক, দর্শকদের ড্রাম পেটানো আর ট্রাম্পেটের চড়া সুরে কান পাতা দায়। সেই পার্টিই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় দারুণ ক্ষিপ্রতায় কুশল মেন্ডিসকে শামীম হোসেন রান আউট করতেই।

এর পরও ফুর্তিবাজ লঙ্কানরা দুলেছে। তবে ১৭৭ রানের পূঁজি গড়া বাংলাদেশ দল ওই রান আউটে রক্তের স্বাদ পেয়ে গেছে। স্বাগতিকদের ৯৪ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে ৮৩ রানের দাপুটে জয়ে সিরিজে ফেরা তাই একরকম নির্ধারিতই ছিল!

বিশ ওভারের ক্রিকেটে ছন্দ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতলয়ের ক্রিকেটে ছন্দের সেই গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে আর পেছনে তাকায়নি বাংলাদেশ দল।

প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে প্রতিপক্ষ বোলারদের তুলাধোনা করা লঙ্কান সিংহকে বাংলাদেশ খাঁচাবন্দি করে ফেলে ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ওই বলে তুলে নেন শ্রীলঙ্কার শেষ ভরসা অধিনায়ক চারিথ আসালঙ্কাকে। স্বাগতিকরা থমকে যায় ৩০ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে। এমন অবস্থায় এক প্রান্ত আগলে রেখে পাথুম নিশাঙ্কা শেষ চেষ্টা করেছিলেন দাসুন শানাকাকে সঙ্গী করে।
কিন্তু বাংলাদেশকে এদিন কে রোখে! এই ম্যাচে একাদশে জায়গা করে নেওয়া শরিফুল ইসলামের সুইং, মোস্তাফিজুর রহমানের কাটার আর রিশাদ হোসেনের লেগস্পিন সামলানোর সক্ষমতা ততক্ষণে হারিয়ে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। এঁদের মধ্যে শেষোক্তজনের কথা ম্যাচ শেষে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক। তবে ঘুরেফিরে দুই অধিনায়কের মুখেও উচ্চারিত হয়েছে শামীম হোসেনের সেই রান আউটের ঘটনাটি। বাংলাদেশের বোলার আর ফিল্ডারদের দক্ষতায় দুজন ছাড়া শ্রীলঙ্কার আর কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি।

অবশ্য ম্যাচজুড়েই শামীমের প্রতিপত্তি দেখা গেছে।

ব্যাটিং পাওয়ার প্লে যাঁদের কাজে লাগানোর কথা, সেই দুই ওপেনারতানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন একযোগে ব্যর্থ হয়েছেন গতকাল। এরপর রানখরায় ভোগা অধিনায়ক লিটন দাস ও তাওহিদ হৃদয়ের রক্ষণশীল ব্যাটিংয়ে মনে হচ্ছিল, বেশিদূর যাওয়া হবে না বাংলাদেশ দলের।

কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন লিটন ও শামীম। অধিনায়কের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তাওহিদ ফেরেন, একই ওভারে তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুমে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ধাক্কায় অবশ্য কাবু হওয়ার অবস্থায় নেই শামীম। আগের ম্যাচে ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি শুরু থেকে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। ওদিকে অধিনায়কও থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। তাঁরা জুটি বেঁধে ছোটান রানের গতি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটন ও শামীম মিলে তোলেন ৭৭ রান, তা-ও মাত্র ২১ বলে! ১৩ ম্যাচ পর ফিফটির দেখা পান লিটন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস। এক বাউন্ডারি আর পাঁচ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৬ রান করে যখন আউট হন অধিনায়ক, ততক্ষণে লড়াইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক পূঁজি এক রকম হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে স্ট্রাইক পেতে মরণপণ দৌড়েও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শামীম। তাতে ২৭ বলে তাঁর ৪৮ রানের ইনিংস পঞ্চাশ ছুঁতে না পারার আক্ষেপে শেষ হয়েছে। অবশ্য তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই, দল জিতেছে। তাতে অবদান রাখতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি। শামীম আরো খুশি ১৬ জুলাই কলম্বোয় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা নয়, জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। 

ম্যাচ শুরুর আগের রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের চালচিত্র না বললেই নয়। হাজার তিরিশেক দর্শকের ঠাঁই হয় এ মাঠে। তবে দুই দিন ধরে টিকিটের জন্য আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল যে পর্যাপ্ত আসন নেই। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে গ্যালারি ভরে গেছে। বরাবরের মতো গ্যালারি লাগোয়া গাছেও চড়ে বসেন বিনা টিকিটের দর্শক। তাই বলে সিঁধ কেটে বিনা টিকিটের দর্শক ঢোকে ডাম্বুলায়, সেটি অজানা ছিল। গতকাল সেটিও দেখা হলো, বাংলাদেশ ইনিংসের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চলাকালে ভিআইপি স্ট্যান্ডের দিককার কাঁটাতারের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে অন্তত শ খানেক টিকিটহীন দর্শক ঢুকে পড়লেন স্টেডিয়াম চত্বরে। বিনা বাধায় যোগ দিলেন গ্যালারির উৎসবে। নিজ দলের ব্যাটিং ভরাডুবিতে ক্ষণে ক্ষণে লাউড স্পিকার থেমেছিল বটে। তবে পুরোপুরি থামেনি। পুরস্কার বিতরণীর পরও কিছু দর্শককে দেখা গেছে হাসিমুখে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তো বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেও গেলেন, ওয়েল প্লেইড বাংলাদেশ!

মন্তব্য

অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

শেয়ার
অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারির রিকশার দাপট বেড়েছে। সেগুলো জব্দে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মালিবাগে অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দ করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি : ফোকাস বাংলা

মন্তব্য
মানবতাবিরোধী অপরাধ

বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বাংলা-ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে। আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।

শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, এর আগে ১০ জুলাই এই মামলার ২৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

পরে জানা যায়, এই মামলার দুজন আসামি এরই মধ্যে অন্য দুটি মামলায় গ্রেপ্তার আছেন। সে কারণে ট্রাইব্যুনাল মৌখিকভাবে আদেশ দিলেও তাতে স্বাক্ষর করেননি। তবে আগের আদেশ উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। আগের আদেশটি পরিমার্জন করা হলো।
২৬ জন আসামির মধ্যে যে দুজন গ্রেপ্তার আছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য নয়।

পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২২ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। যে দুজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাঁরা হলেন রাফিউল হাসান রাসেল ও মো. আনোয়ার পারভেজ।

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।

এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই মামলার শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আট আসামির গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় প্রয়োজন। তখন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। আদেশের সময় মামলার ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

মন্তব্য
হত্যা মামলায় জামিন

আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস
অপু বিশ্বাস

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার এনামুল হক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। গতকাল রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে অপু বিশ্বাস বলেন, আমি একজন অভিনয়শিল্পী। এটাই আমার পেশা।

আমি রাজনীতি বুঝি না, আমি রাজনীতি করতে চাই না।

এদিন অপু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি মুখে কালো মাস্ক, মাথায় সাদা ওড়না ও বোরকা পরেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, আসামি যে অর্থের জোগান দিয়েছেন, তা এজাহারে বলা নেই। নুসরাত ফারিয়াকে জামিন দেওয়া হয়েছে। বাদী হলফনামা দিয়ে বলেছেন, আমার ভুল হয়েছে। আসামির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
আসামি একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তাঁর জামিন চাই। এ সময় বিচারক আসামি অপু বিশ্বাসের কাছে তাঁর বক্তব্য জানতে চান। কিন্তু তিনি দুইবার মাথা নেড়ে না উত্তর দেন। এ সময় তাঁর মুখে হাসিও দেখা যায়।
তখন পাশ থেকে আইনজীবীরা বলতে থাকেন, অপু বিশ্বাস ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী। টাকার বিনিময়ে মঞ্চে স্টেজে নেচে-গেয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে এগিয়ে দিতেন। তিনি আবার হাসেন। এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখে-মুখে ভীতি দেখা যায়। তখন তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেন, আমি কিছু বলতে চাই। তখন তাঁকে থামিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, র‌্যাব-পুলিশ সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। লাশের বন্যা বয়ে যায়। এ দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যাঁরা ছিলেন সবাই শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করেছেন। এই অপু বিশ্বাসরা ফেরদৌসের নেতৃত্বে শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করেন। শেখ হাসিনা আবার আসবে বলে তাঁরা মনে করেন।

এরপর অপু বিশ্বাস বলেন, আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না। এ সময় আইনজীবীরা আহা আহা সাধু বলতে থাকেন। অনেক আইনজীবী উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপু বিশ্বাস এমপি হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার দোসর তিনি। এ সময় অপু বিশ্বাস বলেন, আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে। এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করতে দেখা যায়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে অপু বিশ্বাস গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। পরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার শ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মামলায় অপু বিশ্বাস, আশ্না হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান তিনি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ