ঢাকা, শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫
২৭ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫
২৭ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ মহররম ১৪৪৭
ঐতিহ্য

কখনো না শুকানো এক দিঘি

রোকনুজ্জামান মানু, চিলমারী-রাজারহাট
রোকনুজ্জামান মানু, চিলমারী-রাজারহাট
শেয়ার
কখনো না শুকানো এক দিঘি
চোখ-জুড়ানো সিন্দুর মতি দিঘি। ছবি : কালের কণ্ঠ

জনশ্রুতিটা সেই মোগল আমলের এবং তা বাংলার আরো অনেক প্রাচীন দিঘির কাহিনির মতোই। বাংলার উত্তরাঞ্চলের এক রাজ্যে দেখা দি‌য়ে‌ছে চরম খরা। তখন ইঁদারা অর্থাৎ সাবেক কালের কূপের পা‌নি ব্যবহার কর‌ত মানুষ। প্রচণ্ড খরার কা‌রণে খাল-বিল, পুকুর তো বটেই, কূপের পা‌নিও শু‌কি‌য়ে যায়।

পা‌নির অভা‌বে প্রজা‌দের কষ্টে ব্যথিতরাজা নারায়ণ চক্রবর্তী উদ্যোগ নেন দিঘি খননের। ক‌য়েক শ শ্রমিক দিয়ে শুরু হয় ‌বিশাল জলাশয় খননের কাজ। তবে অনেক খননের পরও দিঘিতে পা‌নি না ওঠায় চিন্তায় প‌ড়ে যান। এক‌দিন তিনি স্ব‌প্নে দেখেন, দুই কুমা‌রী মে‌য়ে‌কে‌ দি‌য়ে দিঘির তলায় পূজা কর‌লে মিল‌বে পা‌নির দেখা।

প‌রের দিনই রাজা দুই মেয়ে‌কে লাল ও সাদা শাড়ি প‌রি‌য়ে শুকনো দিঘিতে নামিয়ে পূজা শুরু ক‌রান। পূজার কিছু সরঞ্জা‌ম বা‌কি থাকায় পুরোহিত তা রাজা‌কে আন‌তে ব‌লেন। রাজা সরঞ্জাম আনতে প্রাসা‌দে যান। ঠিক তখনই দিঘির তলায় অদ্ভুত শব্দ শুনতে পায় চারপাশে উপ‌স্থিত লোকজন।

কিছুক্ষণের ম‌ধ্যেই শুকনো দিঘি পানিতে টইটম্বুর হয়ে ওঠে। ডু‌বে করুণ মৃত্যু হয় রাজার দুই মে‌য়ে সিন্দুর আর ম‌তির। প্রজা‌দের পা‌নির কষ্ট লাঘব হ‌লেও দুই মে‌য়ে‌কে হারা‌নোর শো‌কে কাতর হয়ে পড়েন রাজা-রানি। তখন থে‌কে ওই পুকু‌রের নাম হয় সিন্দুর মতির দি‌ঘি। এই নামে আজও সবার কা‌ছে পরি‌চিত মনোরম জলাশয়টি।

সিন্দুর মতি‌ দি‌ঘির অবস্থান কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপ‌জেলার হ‌রিশ্বর তালুক ও লালমনিরহাটের পঞ্চগ্রামের সীমানা লাগোয়া। প্রায় ১৫ একর আয়তনের এই দি‌ঘি‌র চারপা‌শে র‌য়ে‌ছে পুরনো বট-পাকুড়, আম, তেঁতুল ও বেলগাছ। একদি‌কে রয়েছে সিন্দুর ম‌তির প্রতিমূর্তিসংবলিত এক‌টি ম‌ন্দির। এ ছাড়া দি‌ঘির পা‌রে রয়েছে আরো কয়েকটি মন্দির ও এক‌টি শ্মশানঘাট। 

সিন্দুর ম‌তি ম‌ন্দির পরিষ‌দের সভাপ‌তি অতুল কৃষ্ণ রায় কা‌লের কণ্ঠ‌কে ব‌লেন, প্রতিবছর চৈ‌ত্র মা‌সের নবমী‌তে সিন্দুর ম‌তির পূজা আয়োজিত হয়। এ উপ‌ল‌ক্ষে দি‌ঘির পা‌রে বিরাট মেলার আয়োজন করে পূজা ক‌মি‌টি। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ দূর-দূরান্ত থে‌কে এসে শা‌ন্তি লা‌ভের আশায় দি‌ঘি‌তে স্নান ক‌রে। মানত হিসে‌বে অনেকে পাঁঠা ব‌লি দেয়। বহুকাল ধরে এই প্রথা চ‌লে আস‌ছে।

১৯৭৫ সা‌লে সিন্দুর মতি দিঘিটি সরকারি উদ্যোগে সংস্কা‌রের সময় সেখানে ‌কিছু মূল্যবান মুদ্রা, মূর্তি ও পাথর পাওয়া যায়। নিদর্শনগুলো জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে দি‌ঘির উত্তর পা‌শের ঘাট পাকা করার সময় প্রাচীন একটি ঘাটের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়। কয়েকটি অক্ষত সাদা পাথরও উদ্ধার করা হয় তখন।

স্থানীয় জনশ্রুতিতে বলা হয়, রাজা নারায়ণ চক্রবর্তী নিঃসন্তান থাকার সময় সন্তান লাভের আশায় স্ত্রী মেনকা দেবী‌কে নি‌য়ে তীর্থস্থান ভ্রমণে বর্তমান সিন্দুর ম‌তি দি‌ঘির পূর্ব পা‌শে অবস্থিত দেউল সাগর মন্দিরে যান। তখনকার বড় তীর্থস্থান দেউল সাগর মন্দির বর্তমানে বিলুপ্ত। পরবর্তী সময়ে রাজা নারায়ণ চক্রবর্তী  সেখানেই আবাসস্থল গড়ে তোলেন। দিনে দিনে বড় হয় তাঁর রাজত্ব।

লোককথায় আরো বলা হয়, মেয়েদের দিঘির পানিতে ডুবে মৃত্যুর পর সে রাতেই আবার এক স্বপ্ন দেখেন রাজা। স্বপ্ন থেকে তিনি জানতে পারেন, তাঁর কন্যাদের আসলে মৃত্যু হয়নি। তারা দিঘির তলায় দেবত্বপ্রাপ্ত হয়ে অমরত্ব লাভ করেছে। রাজা তাঁর মে‌য়ে‌দের দেখার অভিপ্রায় ব‌্যক্ত করেন। ক‌য়েক ‌দিন প‌র ম‌তি তার বোন সিন্দু‌রের লাল শা‌ড়ির আঁচল এবং সিন্দুর তার ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল পা‌নির ওপর তুলে ধরে। তখন থেকে যুগ যুগ ধরে সিন্দুর মতির এমন দুটি মূর্তিতে প্রতিবছর পূজা করে আসছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ।

স্থানীয় বা‌সিন্দা মোহন্ত কুমার, নি‌খিল চন্দ্র ও  মুকুল চন্দ্র ব‌লেন, এই দি‌ঘির পা‌নি কখনো শুকায়‌নি ব‌লে তাঁরা বাপ-দাদা‌দের কা‌ছে শুনেছেন। সারা বছর দিঘি পানিতে ভরা থা‌কে। তাঁরা শু‌নে‌ছেন, একবার দিঘি শুকা‌নোর জন‌্য ২২টি শ‌্যা‌লো মে‌শিন লা‌গি‌য়ে কয়েক ‌দিন চেষ্টা ক‌রেও পা‌নি তুলে শেষ করা যায়নি।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠক

জঙ্গি সন্দেহে বাংলাদেশি গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
শেয়ার
জঙ্গি সন্দেহে বাংলাদেশি গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ

জঙ্গি সন্দেহে মালয়েশিয়ায় সম্প্রতি কয়েকজন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। জঙ্গি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জোরালো অবস্থান তুলে ধরে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশিদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

মালয়েশিয়া সফররত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গতকাল শুক্রবার কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো মোহাম্মদ বিন হাজি হাসানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামে (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার পুলিশ সম্প্রতি জঙ্গিবাদের অভিযোগে যে বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করেছে তাঁদের ব্যাপারে তদন্তে বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়ার সঙ্গে কাজ করবে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গতকাল মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তথ্য ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে অভিযোগের তদন্তে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চান। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ ও সহযোগিতা সহজতর করার আশ্বাস দেন।

এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে দুই নেতা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় পক্ষ বাংলাদেশে চলমান সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট, এলডিসি-পরবর্তী সহায়তা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের উপমন্ত্রী ও প্রতিনিধিদলের প্রধানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।

সেখানে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০০৬ সালে এআরএফের সদস্য পদ লাভ করে। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৭টি সদস্যের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই ফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ এআরএফের দুটি অগ্রাধিকার খাত সন্ত্রাসবাদ দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং দুর্যোগ ত্রাণ-এর সহসভাপতিত্ব করছে। এআরএফ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরবর্তী অধিবেশন আগামী বছর ফিলিপিন্সের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গতকাল বিকেলে আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন। তিনি জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রভাব বিবেচনা করে রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি আরো বেশি মনোযোগ দেওয়ার আহবান জানান। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আসিয়ান সদস্যদের বাংলাদেশের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার প্রচেষ্টাকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার আহবান জানান।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. ফরহাদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সরকারের অন্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

মন্তব্য
মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী খুন

মহিন ও রবিন রিমান্ডে দুই নেতা আজীবন বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মহিন ও রবিন রিমান্ডে দুই নেতা আজীবন বহিষ্কার

পুরান ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী ও যুবদল নেতা লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মাহমুদুল হাসান মহিনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই ঘটনায় করা অস্ত্র মামলায় আসামি তারেক রহমান রবিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন। গতকাল শুক্রবার আদালতের কোতোয়ালি থানার প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী এ তথ্য জানান।

এদিকে এ ঘটনায় দুই নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে যুবদল।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, হত্যা মামলায় মাহমুদুল হাসান মহিনের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক নাসির উদ্দিন। আর অস্ত্র মামলায় তারেক রহমান রবিনের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন একই থানার উপপরিদর্শক মো. মনির। আসামিদের পক্ষে তাঁদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে।

গ্রেপ্তার ৪ আসামি : ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ দুজনকে ও র‌্যাব দুজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত তারেক রহমান রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ব্যাবসায়িক দ্বন্দ্ব এবং পূর্বশত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

২ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করল যুবদল

লালচাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যার ঘটনায় দুই নেতা রজ্জব আলী পিন্টু ও সাবাহ করিম লাকিকে আজীবন বহিষ্কার করেছে যুবদল। পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছে সংগঠনটি।

গত রাতে যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি এনসিপির

লাল চাঁদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব উইং জাতীয় যুবশক্তি। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।

জাতীয় যুবশক্তির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) আসাদুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চকবাজারের (মিটফোর্ডের সামনে) নির্মম হত্যাকাণ্ডে আমরা স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ এবং গভীরভাবে শোকাহত। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে জাতীয় যুবশক্তি। এই ধরনের ঘটনা কোনো একজন ব্যক্তির ওপরে হামলা নয়, এটা মানবতা, আইন, ন্যায়বিচার এবং রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার ওপর সরাসরি আঘাত। জনসমক্ষে প্রকাশ্য দিবালোকে এভাবে একজন মানুষকে হত্যা করা শুধু নৃশংসতা নয়, এটি আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের ভিতকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, আমরা মনে করি, এ এক ভয়াবহ সামাজিক বার্তা, যেখানে অপরাধীরা মনে করে, তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এমন বার্তা রাষ্ট্র ও সমাজ কোনোভাবেই বহন করতে পারে না। আমরা এই পাশবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব ঘাতক ও তাদের মদদদাতাদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, গত বুধবার সন্ধ্যায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তায় একদল লোক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। আর পুলিশ অস্ত্র মামলা করে।

মন্তব্য
জাতিসংঘের তথ্য

১৮ মাসে আরো দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
১৮ মাসে আরো দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও নির্যাতনের কারণে গত ১৮ মাসে বাংলাদেশে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, ২০১৭ সালে মায়ানমার থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর এটি সর্বোচ্চসংখ্যক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা। নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

ইউএনএইচসিআর জানায়, গত জুন পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নতুন এক লাখ ২১ হাজার রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে অনেককে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি, যদিও তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করছে।

কক্সবাজারের মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটার জায়গায় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের কারণে এটি এরই মধ্যে বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে পরিণত হয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, নতুন করে আরো রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ায় বিদ্যমান সহায়তাব্যবস্থার ওপর চরম চাপ পড়ছে।

খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও আশ্রয়ের জন্য নতুন করে আগতরা অনেকাংশেই আগের রোহিঙ্গাদের ওপর নির্ভরশীল। এরই মধ্যে দাতাগোষ্ঠী তহবিল সংকটে পড়ায় গুরুত্বপূর্ণ সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এ ছাড়া দুই লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে।

মন্তব্য
ভারতে বাঙালিবিরোধী ষড়যন্ত্র

দিল্লির কাছে কারণ জানতে চেয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
দিল্লির কাছে কারণ জানতে চেয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে দিল্লিতে বাঙালি উচ্ছেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। ভারতজুড়ে বাঙালিবিরোধী এক অপচেষ্টা চলছে বলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তোলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই উদ্যোগ নিলেন।

দক্ষিণ দিল্লির বসন্ত কুঞ্জে সম্প্রতি চলা উচ্ছেদ অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে এই আবেদন করা হয়। এই উচ্ছেদ অভিযান এমন জায়গায় হচ্ছে, যেখানে মূলত পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি অভিবাসী শ্রমিকরা থাকেন।

তাঁদের মধ্য থেকে বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণের নামে উচ্ছেদ অভিযান চলছে বলে অভিযোগ। গত বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অভিযোগ করেছেন।

মমতার অভিযোগের পরেই আদালতে ওই ঘটনার বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে। তবে সেটি তিনি করেননি।

এ বিষয়ে ওড়িশা রাজ্য থেকে বাঙালি উচ্ছেদ নিয়ে আরেকটি মামলাও হাইকোর্টে চলছিল।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিবকেও এ বিষয়ে আদালতকে পৃথকভাবে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে দিল্লির মুখ্য সচিবের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথাবার্তা বলতে হবে।

সূত্র : টেলিগ্রাফ

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ