<p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে অট্টালিকা। যেখানে একসময় ছিল কৃষিজমি, বাড়ির বাগান কিংবা গাছগাছালি, সেখানে এখন দাঁড়িয়ে যাচ্ছে বিশাল বিশাল ভবন। এর মাঝেই একটু ভিন্নতার খোঁজ পেলাম কমলাপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন একটি বাড়িতে। চারপাশের বড় বড় অট্টালিকার ভেতর ছিমছাম এক আঙিনাসমেত তিনতলা বাড়ি। শরিফ আজিজ ও তাঁর পরিবার কৃষি ও প্রকৃতিকে ভালোবেসে অট্টালিকার মোহকে দূরে ঠেলে বছরের পর বছর এ বাড়িতেই বসবাস করছে। পূর্বপুরুষের হাতে গড়া টিনশেড ঘরটি পর্যন্ত এখনো অপরিবর্তিত। বাড়ির সামনে বেশ খানিকটা খোলা জায়গা। তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে বিরাটাকার এক ছাতিমগাছ। এখনো এই বাড়ির মানুষের প্রতিদিন ঘুম ভাঙে পাখির ডাকে, দৃষ্টিতে উঁকি দেয় নানা গাছ-ফুল-লতাপাতা।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাড়ির ভেতরে রয়েছে কাঠের সিঁড়ি। সিঁড়ির বাঁকে বাঁকে প্যাসেজে রয়েছে নানা রকম শৌখিন গাছ। আছে একটি আধুনিক টেরোরিয়াম। টেরোরিয়াম হচ্ছে এমন একটি ক্ষুদ্র আকৃতির বদ্ধ কাচের কিংবা কনটেইনারের স্থাপনা, যা আর্দ্রতা ধরে রেখে উদ্ভিদ ও গাছপালা জন্মাতে সহায়তা করে। আজকাল অনেকেই বাসস্থানের সৌন্দর্যবর্ধনে এ শিল্পের চর্চা করছেন। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে দেখা গেল তিনতলায় মাত্র ৮০০ বর্গফুটে মনোরম এক ছাদকৃষির আয়োজন। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে শরিফ আজিজ এখন পুরোটা সময় উপভোগ করছেন এই ছাদকৃষিকে ঘিরেই। শরিফ আজিজ একা নন, তাঁর স্ত্রী, সন্তানদেরও এই প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় সখ্য। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"><span style="letter-spacing:.1pt">ছাদের এক কোণে ছোট একটি ঘর। ঘরের এক কোণ থেকে উঠে গেছে সোর্ড লিলি আর অন্য পাশে পানের গাছ। দেয়ালের পাশে ঝুলছে বাবুই পাখির বাসা, দেয়ালে সাঁটানো গরুর গাড়ির চাকা! সুরুচি ও সৃজনশীলতার ছাপ জায়গাটা জুড়ে। ছাদকৃষিটা নানা জাতের ফল-ফসলের গাছে সমৃদ্ধও বটে। শরিফ আজিজ জানালেন, নিরাপদ খাদ্যের তাগিদ আর পারিবারিক মুহূর্তগুলো আরো আনন্দঘন করতেই তাঁর এই ছাদকৃষির আয়োজন। হয়তো বড় ভবন গড়ে বাসা ভাড়া থেকে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারতেন, কিন্তু পরিবার নিয়ে এমন পরিবেশ পাওয়া যেত না। টাকার চেয়েও অনেক বড় কিছু পাচ্ছেন তিনি মানসিক প্রশান্তির মাধ্যমে। </span></span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শরিফ আজিজ, তাঁর স্ত্রী, তিন ছেলে, বড় ছেলের বউ আর নাতিকে নিয়ে সুখের হাট রচিত হয়েছে এই বাড়িতে। সবাই এক বাড়িতে থাকেন, রান্না হয় এক হাঁড়িতে। খাওয়াও সারেন এক বৈঠকে। শহরের ফ্ল্যাটবাড়িগুলো মূলত অণু পরিবারে ঠাসা। বড় পরিবারে সবাই মিলেমিশে থাকা এমনকি গ্রামেও আজকাল খুব একটা দেখা যায় না।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span lang="EN-US" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আসলেই শরীর ও মন ভালো রাখতে কৃষি বা সবুজের পাশে বসবাসের বিকল্প নেই। এ রকম জীবনধারার সাক্ষাত্ উপকারিতা ভোগ করছে শরিফ আজিজের পরিবার। বসবাসের জায়গাটিকে সুরম্য কিন্তু রুক্ষ, প্রাণহীন অট্টালিকা বানানোর গড্ডলিকায় গা না ভাসিয়ে তাঁরা নিজেদের আবাসনকে সাজিয়েছেন প্রকৃতির মায়া দিয়ে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p> </p>