রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজ ও আলুর দাম আরেক দফা বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। আমদানীকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। গত সপ্তাহেও রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯৫ থেকে ১০০ টাকা এবং আমদানীকৃত পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
আলু-পেঁয়াজের দাম আবার লাগামহীন
সজীব আহমেদ

আলুর দাম আরেক দফা বেড়ে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরকার প্রথমবারের মতো গত ১৪ সেপ্টেম্বর ডিমসহ তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দেয়। এর মধ্যে আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা (হিমাগার পর্যায়ে ২৬-২৭) এবং দেশি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয় ৬৪-৬৫ টাকা। শুরু থেকেই ব্যবসায়ীরা এই দামের তোয়াক্কা করছেন না।
আবার আলু ও পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর বিষয়ে গতকাল জানতে চাইলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে টানা সাত দিন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহ সংকট দেখা দেয়। এতে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়াতে হয়েছে। তা ছাড়া সরবরাহ কমে যাওয়ায় আলুর দামও বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী ও বাড্ডার খুচরা বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এক বছরের বাজারদর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত রাজধানীর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৯২ থেকে ১১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গত বছরের অক্টোবরে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৮২ থেকে ১০০ শতাংশ বেড়ে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশি রসুন কেজিতে ১৪৪ থেকে ১৮৬ শতাংশ দাম বেড়ে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সময়ের ব্যবধানে আমদানীকৃত রসুন ২৮ থেকে ৫৪ শতাংশ দাম বেড়ে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (পাঁচ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। পাইকারি পর্যায়ে আমদানীকৃত পেঁয়াজের পাল্লা মানভেদে ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু প্রতি পাল্লা বিক্রি হচ্ছে ২৬৫ থেকে ২৭০ টাকা। দেশি রসুনের পাল্লা ৯৮০ থেকে এক হাজার টাকা এবং আমদানি করা রসুন ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে কারওয়ান বাজারের খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা এবং আমদানীকৃত পেঁয়াজ ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় দেশি রসুন প্রতি কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকা এবং আমদানীকৃত রসুন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। খুচরায় আলু প্রতি কেজি ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ও রসুনের পাইকারি বিক্রেতা মো. কামরুল হাসান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কয়েক দিনের ব্যবধানে রসুনের দাম কিছুটা কমলেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। একদিকে দেশি পেঁয়াজের সংকট, অন্যদিকে কিছুদিন পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহে টান পড়েছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে।’
কারওয়ান বাজারের পাইকারি আলু বিক্রেতা আব্দুল মালেক বলেন, ‘মাত্র দুই দিন আগেও আমরা পাইকারিতে প্রতি পাল্লা আলু ২৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজ (গতকাল) বিক্রি করতে হচ্ছে ২৭০ টাকায়। প্রতিদিনই বাজারে আলুর দাম বাড়ছে।’
রাজধানীর বাড্ডার মোদি দোকানি মো. আবু রায়হান বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ এখন প্রতি কেজি ১১৫ টাকা বিক্রি করলেও আমাদের লাভ থাকছে না। কারণ পরিবহন খরচসহ প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে ১১২ টাকার মতো। তবে আমদানীকৃত পেঁয়াজ প্রতি কেজি মানভেদে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করছি। পাইকারিতে প্রতি কেজি আলু কিনতে আমাদের খরচ হচ্ছে ৫৪ টাকা, বিক্রি করছি ৬০ টাকা।’
এদিকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা সাত দিন বন্ধের পর গতাকল দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স