রাজধানীর পল্লবীর আদর্শনগর এলাকার একটি বাসায় গত সোমবার রাতে পুলিশের অভিযানের সময় এক কিশোরীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ বলেছে, বৈশাখী (১৭) নামের ওই কিশোরী ও তার মা মাদক ব্যবসায়ী। অভিযানে তার মা লাভলী আক্তারকে আটক করা হয়। মাকে ছাড়িয়ে নিতে বৈশাখী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
পুলিশের অভিযান, কিশোরীর মৃত্যু, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক

মেয়েটির পরিবার অভিযোগ করেছে, লাভলী আক্তারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বৈশাখীর সামনে তার মাকে নির্যাতন করা হয়। মাকে চারতলা থেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর তিনতলার একটি ঘরে বৈশাখীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে বৈশাখীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন জানায়, পুলিশ ওই বাসায় সোমবার রাত ৯টায় ঢোকে। তারা বের হয় রাত পৌনে ১১টার দিকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, স্থানীয়রা রাতেই পল্লবী থানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি-মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এতে তাদের সঙ্গে পুলিশের মারামারিও হয়। স্থানীয় লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে, পুলিশও লাঠিপেটা করে।
পরিবারের অভিযোগ, পল্লবী থানার দুই উপপরিদর্শক (এসআই) রাত ৯টার দিকে লাভলীর বাড়িতে যান। এ সময় তাঁদের সঙ্গে পুলিশের কয়েকজন কথিত সোর্স ছিলেন। তাঁরা পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় লাভলীকে মারধর করেন। তাঁকে টেনেহিঁচড়ে চারতলা থেকে নিচে নামিয়ে আনেন। এ সময় বৈশাখী মাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে।
বৈশাখীর ভাই আতাউর রহমান বলেন, অভিযানের সময় মায়ের সঙ্গে তাঁর বোনকেও পুলিশ চারতলা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়েছে। তিনি (আতাউর) রাত ১১টায় তিনতলার একটি কক্ষের জানালা দিয়ে তাঁর বোনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। তখন ঘরটির দরজায় বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, বৈশাখীর মা লাভলী চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে আটটি মাদকের মামলা রয়েছে, আর বৈশাখীর বিরুদ্ধে চারটি।
ওসি বলেন, পুলিশ ওই বাসায় গিয়ে গাঁজা, ইয়াবাসহ লাভলীকে আটক করে। এ সময় লাভলীকে ছাড়িয়ে নিতে বৈশাখী বাসার তিনতলায় গিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশের উপকমিশনার (মিরপুর বিভাগ) জসিম উদ্দীন মোল্লা বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।’
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স