ঢাকা, বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫
১৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৫ সফর ১৪৪৭

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫
১৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৫ সফর ১৪৪৭

লবণের মাঠে কাজ করতে গিয়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
শেয়ার
লবণের মাঠে কাজ করতে গিয়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু

ঘূর্ণিঝড় মোখার উপকূল অতিক্রমের সময় গত রবিবার কক্সবাজারের মহেশখালীতে লবণের মাঠে কাজ করতে গিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অভুক্ত অবস্থায় বৃষ্টিতে ভিজে লবণের মাঠে কাজ করতে গিয়ে ঠাণ্ডায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।

উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর কাশেম চৌধুরী গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন, মারা যাওয়া তিনজনই বর্গাচাষি ও দিনমজুর ছিলেন। তাঁরা ঘূর্ণিঝড় থেকে লবণ নিরাপদে সরাতে গিয়ে অভুক্ত অবস্থায় কাজ করছিলেন।

ঠাণ্ডাজনিত কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তাঁরা হলেন ইউনিয়নের কালাগাজির পাড়া গ্রামের রিদোয়ান (৩৫), পানিরছড়া গ্রামের মোহাম্মদ নেছার (৩৮) ও পানিরছড়া বারঘর পাড়ার মো. আনছার (৪৩)।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহফুজুল হক গতকাল সোমবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, লবণ মাঠ থেকে অসুস্থ অবস্থায় রবিবার বিকেলে ১৬ জন শ্রমিককে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে আনার পর রিদোয়ান নামের একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

একজন এখনো চিকিৎসাধীন। বাকি ১৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

চিকিৎসক মাহফুজুল হক বলেন, আমি অসুস্থ শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ করে জেনেছি, তাঁরা সবাই রবিবার ভোরে খালি পেটে গ্রাম থেকে দূরের লবণ মাঠে কাজ করতে যান। দুপুরের দিকে বর্ষণসহ ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে।

বৃষ্টিতে ভিজে বাতাসের সময় লবণ তুলতে গিয়ে তাঁরা ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হন। সন্ধ্যায় বৃষ্টি ও বাতাস থামা পর্যন্ত তাঁরা মাঠেই ছিলেন। এক পর্যায়ে ঠাণ্ডায় অভুক্ত লোকগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর কাশেম জানান, রবিবার সকালে পলিথিন ও লবণ তোলার জন্য ৪০ থেকে ৫০ জন শ্রমিক মাঠে যান। এর মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়।

শ্রমিকরা বৃষ্টির মধ্যেও কাজ করছিলেন। তাঁদের মধ্যে ঠাণ্ডা লেগে বেশ কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ১৬ জনকে মহেশখালী

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে রিদোয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। তিনি আরো জানান, লবণ মাঠে পলিথিন তুলতে গিয়ে রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মুহাম্মদ নেছার ও আনছার নামের দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইয়াসিন কালের কণ্ঠকে বলেন, দ্বীপের লবণ মাঠে কাজ করতে গিয়ে তিন লবণ শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মুরাদনগরে আসিফ মাহমুদের সমর্থকদের ওপর হামলা সাংবাদিকসহ আহত ২০

কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
শেয়ার
মুরাদনগরে আসিফ মাহমুদের সমর্থকদের ওপর হামলা সাংবাদিকসহ আহত ২০

কুমিল্লার মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বের করা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। এতে ছয় সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সদরের আল্লাহ চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

মিছিল থেকে সাম্প্রতিক সময়ে আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানানো হয়। মিছিল চলাকালে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে বেশ কয়েকটি ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এর পরই দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এ সময় আসিফ মাহমুদ সমর্থকদের মধ্যে ১০ থেকে ১২ জন আহত হন, এর মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছেন।
হামলার জন্য স্থানীয় বিএনপিকে দায়ী করেছেন আসিফ সমর্থক নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মো. মিনাজুল হক।

আহত ইউপি সদস্য মো. শেখর জানান, আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আল্লাহ চত্বরে এসে সমাবেশ শুরু করার পরপরই সমাবেশ লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এ সময় আমাকে ব্যাপক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।

মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

হামলায় প্রায় অর্ধশত সমর্থক আহত হন। এ ছাড়া শেখর মেম্বারের অবস্থা খুবই গুরুতর।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, মিছিল নিয়ে এসে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের লোকজন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। তাঁদের মধ্যে ওমর আলী নামের যুবদলকর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কর্মকর্তা আমিন কাদের খান বলেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কর্মী-সমর্থকরা আগেই আমাদের কাছ থেকে বিক্ষোভ মিছিলের লিখিত অনুমতি নিয়েছেন। তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছিলেন, এ সময় পাশে অবস্থানকৃত কিছু লোক বিনা উসকানিতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এর পরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে। এতে কিছু লোক আহত হয়েছে। উপজেলা সদরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা আছে।

 

মন্তব্য
রংপুরে হিন্দুপল্লীতে হামলা

গ্রেপ্তার ৫ জনই নীলফামারীর, আজ রিমান্ড শুনানি

রংপুর অফিস ও গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুর অফিস ও গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
গ্রেপ্তার ৫ জনই নীলফামারীর, আজ রিমান্ড শুনানি
বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়কে প্রত্যাখ্যান করে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে লাল কার্ড সমাবেশ করেন একদল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। ছবি : কালের কণ্ঠ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের রংপুর আমলি আদালতে (গঙ্গাচড়া) শুনানি শেষে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ওই পাঁচজনই ঘটনাস্থলের পাশে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে ওই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন দক্ষিণ সিংগেরগাড়ি গ্রামের লাভলু মিয়ার ছেলে ইয়াছিন আলী (২৫), একই গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২), মাগুড়া ধনিপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে স্বাধীন মিয়া ( ২৮), দক্ষিণ চাঁদখানা মাঝপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৮) এবং  উত্তর সিংগেরগাড়ি পাঠানপাড়া গ্রামের মৃত বাবুল খানের ছেলে এম এম আতিকুর রহমান খান।

আদালত পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, গতকাল রংপুর আমলি আদালতের (গঙ্গাচড়া) বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় শুনানি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজ  বৃহস্পতিবার তাঁদের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আল এমরান কালের কণ্ঠকে বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে আমরা আদালতে রিমান্ড আবেদন করব। ওই পাঁচজন ছাড়াও যারা অভিযুক্ত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

গতকাল দুপুরে আসামিদের রংপুর সদর কোর্টে হাজির করা হলে আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, রঞ্জন রায় নামের এক কিশোর তার ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করে পোস্ট করে।

শনিবার ওই কিশোরকে থানায় নেওয়ার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতা শনিবার রাত ও রবিবার বিকেলে ওই কিশোরের বাড়িসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িগুলোতে ভাঙচুর চালায়। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে রঞ্জন রায়কে আটক করে পুলিশ। পরে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করে রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে সম্মিলিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

 

মন্তব্য

জামায়াত আমিরের হৃদযন্ত্রে ৩টি গুরুতর ব্লক জরুরি বাইপাসের সিদ্ধান্ত

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
জামায়াত আমিরের হৃদযন্ত্রে ৩টি গুরুতর ব্লক জরুরি বাইপাসের সিদ্ধান্ত
শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের হৃদযন্ত্রে তিনটি গুরুতর ব্লক ধরা পড়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, সে জন্য জরুরি বাইপাস সার্জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আমিরের ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের জাতীয় সমাবেশে বক্তৃতা করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মঞ্চেই পড়ে যান ডা. শফিকুর রহমান। এর পর থেকে তিনি চিকিৎসকদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে ছিলেন।

তারই অংশ হিসেবে গতকাল জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এনজিওগ্রাম করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, তাঁর হৃদযন্ত্রে তিনটি মেজর ব্লক রয়েছে।

চিকিৎসকরা বাইপাস সার্জারির পাশাপাশি বিদেশে চিকিৎসার কথাও বিবেচনার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, দেশের চিকিৎসকদের ওপর তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে।

তাই তিনি দেশেই চিকিৎসা করাতে আগ্রহী।

এই বাইপাস সার্জারি কবে কোথায় এবং কার তত্ত্বাবধানে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই। এ বিষয়ে পারিবারিক ও দলীয় পর্যায়ে আলোচনা চলছে।

ডা. শফিকুর রহমান এবং তাঁর পরিবার দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন, যেন মহান আল্লাহ তাঁকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন, তিনি যেন আবারও দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন।

 

মন্তব্য
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

এখনো পরিবেশ থমথমে মানসিক চিকিৎসা চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এখনো পরিবেশ থমথমে মানসিক চিকিৎসা চলছে

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর কেটে গেছে ১০ দিন। তবে শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে এখনো আতঙ্কের  রেশ রয়ে গেছে। পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ, থমথমে ক্যাম্পাসের পরিবেশ। চিকিৎসা নিতে প্রতিদিনের মতো গতকাল বুধবারও ক্যাম্পাসে ছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মচারীর আনাগোনা।

গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে তিনটি কক্ষজুড়ে চলছে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। কক্ষগুলোতে চিকিৎসকের পাশাপাশি রয়েছেন শিক্ষক ও কাউন্সেলর। সেবা নিতে বসে আছেন শিশুশিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরাও। লোকজনের সমাগম থাকলেও সবার মুখ ছিল ফ্যাকাসে।

এখনো যেন তারা একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে।

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আল আমীনের বাবা রুহুল আমীন কালের কণ্ঠকে বলেন, বিমানে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠা আগুন, কয়লার মতো মানুষ, বাতাসে পোড়া গন্ধএই দুর্বিষহ স্মৃতি কিছুতেই ভুলতে পারছি না। রাতে মাঝেমধ্যে আতঙ্কে ঘুম ভেঙে যায়। খেতে গেলে বমি বমি লাগে।

এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে এসেছি।

চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় সবাই একই সমস্যায় ভুগছে। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা তাদের মানসিকভাবে যন্ত্রণা দিচ্ছে। শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি। তারা তাদের খেলার সাথীদের চোখের সামনে হারিয়েছে।

ক্যাম্পাসের আরো একটি ভবনে চলছে বিমানবাহিনীর স্বাস্থ্যসেবা। সেখানে দুটি কক্ষে সেবাদান চলছে। বিমান দুর্ঘটনায় যাদের হাত-পা বা শরীরের বিভিন্ন অংশ সামান্য পুড়েছে, তারা সেখানে চিকিৎসা নিতে আসছে। বিনামূল্যে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা, ড্রেসিং ও ওষুধ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

গত ২১ জুলাই ওই বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩৪ জন। বর্তমানে রাজধানীর তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ৪৫ জন। এর মধ্যে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৩৩ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১১ জন এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে একজন ভর্তি আছে।

চিকিৎসকরা জানান, বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি রোগীদের মধ্যে দুজন আইসিইউতে, তিনজনের অবস্থা সংকটাপন্ন।

বার্ন ইনস্টিটিউট পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাছির উদ্দীন বলেন, আহতদের চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি নেই। প্রতিটি রোগীকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আজ পর্যন্ত মোট ১২৮টি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে অনেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। সিঙ্গাপুর ও চীনের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত পরামর্শ করছি।

গতকাল বার্ন ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, মাইলস্টোন ইস্যুতে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে আর আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং হবে না। সংবাদকর্মীরা প্রয়োজনীয় তথ্য চাইলে তা দেওয়া হবে।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ