ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭
রাজনীতি

আ. লীগের মসনদ দখল করবে জনগণ : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আ. লীগের মসনদ দখল করবে জনগণ : ফখরুল
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : কালের কণ্ঠ

সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে তৃণমূলের জনগণকে সম্পৃক্ত করতে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এবার ইউনিয়ন পর্যায় থেকে আমরা পদযাত্রা শুরু করব। এরপর  উপজেলা-জেলা ও মহানগর কর্মসূচি পালন হবে। এভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার মসনদ জনগণ দখল করে জনগণের সরকার গঠন করা হবে।

গতকাল শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের আয়োজনে এই সমাবেশ হয়। ঢাকা ছাড়াও অন্য ৯টি বিভাগীয় শহরে একযোগে এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘আমরা ধীরে ধীরে চলছি।

ঢাকায় এরই মধ্যে পদযাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা সব মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি। মানুষকে নিয়ে এগিয়ে চলার মধ্য দিয়ে যে একটা লং মার্চ হচ্ছে, সেই লং মার্চের মধ্য দিয়ে আমরা এদের পরাজিত করে সত্যিকার অর্থেই জনগণের একটা রাষ্ট্র বানাতে চাই।’

ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচি সফল করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান রেখে তিনি বলেন, গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার মানুষকে নিয়ে সরকারের পতন ঘটানোর জন্য এগিয়ে যেতে হবে।

গতকাল ঢাকায় গণতন্ত্র মঞ্চ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, গণফোরাম-পিপলস পার্টি পৃথক সমাবেশ করে ১১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। এবারের উপনির্বাচনে তা আবার প্রমাণিত হয়েছে। এই নির্বাচনে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ হিরো আলমের মতো প্রার্থীর কাছে কতটা অসহায়। সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তাঁকে ছয়-সাত শ ভোটে হারিয়েছে।

গতকাল বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কের এক পাশে সমাবেশ করার কথা থাকলেও একসময় অন্য পাশও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

সমাবেশ উপলক্ষে দুপুরের আগে থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে হাজির হন। দুপুর গড়াতেই বিজয়নগর থেকে ফকিরেরপুল মোড় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা গেছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ ও উত্তরের সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল হকের পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, আমানউল্লাহ আমান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আসাদুজ্জামান রিপন প্রমুখ। 

‘সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে’ : চট্টগ্রামে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জনগণের ভোটের অধিকার লুট করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা এই অবৈধ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। এ জন্য আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হবে।

চট্টগ্রাম নগরে নাসিমন ভবনের সামনে আয়োজিত এই বিভাগীয় সমাবেশে নজরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

সমাবেশে প্রধান বক্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে প্রতিটি নেতাকর্মীকে সুশৃঙ্খলভাবে রাজপথে সক্রিয় থাকার আহবান জানান।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির আহ্বায়ক শাহদাত হোসেন। সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নেতা জয়নাল আবদিন ফারুক প্রমুখ। বিএনপির প্রয়াত নেতা মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।

‘এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’ : খুলনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। দেশের বিশিষ্টজনদের নিয়ে একটা নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে সবার অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

কেসিসি মার্কেটের সামনে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এস এম শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও নিতাই রায় চৌধুরী।

তত্ত্বাবধায়কের দাবি ছিল আ. লীগ-জামায়াতের : রাজশাহীতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, একসময় এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ছিল জামায়াত ও আওয়ামী লীগের। আজকের প্রধানমন্ত্রী একসময় বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে চিরদিনের জন্য থাকতে হবে। কিন্তু তাদের মুখে আজ অন্য কথা। কেননা তাদের ক্ষমতায় জোর করে থাকতে হবে।

রাজশাহী নগরের সোনাদীঘির মোড়ে আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. মিজানুর রহমান মিনু। সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. এরশাদ আলী ঈশা।

‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে’ : বরিশালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তারা কখনো স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি হতে পারে না। আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় অগণতান্ত্রিক এই সরকারকে অনতিবিলম্বে বিদায় নিতে হবে।

বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে মঈন খান এসব কথা বলেন। বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মজিবর রহমান সরোয়ার প্রমুখ।

‘দেশ চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে’ : সিলেটে বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, দেশ এখন চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা দখল, লুণ্ঠন ও দুর্নীতিতে বিশ্বাসী।

নগরের ঐতিহ্যবাহী রেজিস্ট্রারি মাঠে আয়োজিত এই সমাবেশে সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকির সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, মো. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির প্রমুখ।

এ ছাড়া রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও ফরিদপুরে বিভাগীয় সমাবেশ করেছে বিএনপি।

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার কালের কণ্ঠ’র নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা)

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তৃতীয় জয়

শেয়ার
তৃতীয় জয়

শান্তি মার্দির (জার্সি নং-২০) হ্যাটট্রিকে গতকাল অনূর্ধ্ব-২০ সাফে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আসরে স্বাগতিকদের এটি টানা তৃতীয় জয়। ছবি : বাফুফে

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন আয়কর ও পাঁচজন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা। এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করেন।

আদেশে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।

বিষয়টি তদন্ত করে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময়ে তাঁরা বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আয়কর কর্মকর্তারা হলেন মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা; মাসুমা খাতুন, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২; মুরাদ আহমেদ, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫; মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার, কুষ্টিয়া; মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী; আশরাফুল আলম প্রধান, যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার; শিহাবুল ইসলাম, উপকর কমিশনার, খুলনা; নুশরাত জাহান, উপকর কমিশনার, রংপুর এবং ইমাম তৌহিদ হাসান, উপকর কমিশনার, কুমিল্লা।

কাস্টমস বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর; সিফাত-ই-মরিয়ম, অতিরিক্ত কমিশনার; মো. শাহাদাত জামিল, দ্বিতীয় সচিব, এনবিআর; শফিউল বশর, রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সবুজ মিয়া, রাজস্ব কর্মকর্তা।

গত জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের পর শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

এরই মধ্যে তিনজন এনবিআর সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এনবিআরের আরো দুই সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।

দুদক সূত্র জানায়, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

মন্তব্য
ছাত্রদলের আলোচনাসভায় বক্তারা

গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে গণ-অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন শীর্ষক এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ছাত্রদল, ডান-বাম ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আলোচনাসভার প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্দোলনের মূলে ছিল ছাত্রসমাজের চেতনা।

আজ সেই চেতনাকে বিকৃত করার চেষ্টা হচ্ছে, যা আত্মত্যাগের অবমূল্যায়ন। তিনি আরো বলেন, যে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য ১৯৭১ সালে লাখো শহীদ জীবন দিয়েছিলেন, তা ভুলে গিয়ে শেখ মুজিব চার বছরের মাথায় গণতন্ত্রকেই ভ্যানিশ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলেন, তাঁর কন্যা (শেখ হাসিনা) তো ডাবল ফ্যাসিস্ট হয়েছেন। তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কখনো প্রত্যাবর্তন করুক, তা বাংলাদেশের মানুষ চায় না।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো উল্লেখ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে এবং বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, কেননা মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনার জেরে একটি গুপ্ত সংগঠন রাজনৈতিক ইন্ধন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বুয়েট ও চুয়েটে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাদের নিয়ে নোংরা স্লোগান দিয়েছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, জামায়াতের এক নায়েবে আমিরের ভাগ্নি জামাইয়ের নেতৃত্বে তারেক রহমানবিরোধী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সমালোচনা গ্রহণ করি, তবে মনে রাখা উচিতআমাদেরও সহ্যের সীমা আছে। একাত্তর ও চব্বিশের পরাজিত শক্তি ছাড়া বাকি সবার সঙ্গে আমাদের ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে শহীদ পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। অথচ আমরা বিচার নিশ্চিত না করে বিভাজনের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছি।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী মুক্তা বাড়ই বলেন, আজ রাজাকারদের পুনর্বাসন ও নরমালাইজেশন শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে গোটা দেশে মবতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ছাত্রদলের সহযোদ্ধারা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। ১৫ জুলাই একাত্তর হলে প্রথম হামলায়ও ছাত্রদলের ভাইয়েরা আহত হয়েছিলেন। এখানে এককভাবে কোনো সংগঠনের কৃতিত্ব দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, এই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব শহীদদের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমাদের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনাসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের দপ্তর সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুভাশিষ চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সাইদুল হক নিশান, ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসু ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদারসবাই ছাত্ররাজনীতির মধ্যে বিভাজন অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করার আহবান জানান।

মন্তব্য

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ১৩১ জনকে আটকে দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মূলত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কারণ দেখিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।

দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানিয়েছে, ওই ১৩১ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯৬ জন বাংলাদেশের নাগরিক।

গত শুক্রবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালে মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির অভিযানে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়।

দ্য স্টারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৩০০ জনের বেশি যাত্রীর কাগজপত্র যাচাই করে ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ৯৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ৩০ জন পাকিস্তানি পুরুষ ও পাঁচজন ইন্দোনেশীয় নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ত পূরণে ঘাটতি পাওয়া গেছে।

শর্ত পূরণ না হওয়া বলতে সন্দেহজনক হোটেল বুকিং, ইমিগ্রেশন কাউন্টারে হাজির না হওয়া এবং পর্যাপ্ত অর্থ সঙ্গে না রাখার মতো কারণ দেখানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সাধারণত ভ্রমণকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে। কেউ যদি বলে যে সে এক মাস থাকবে, কিন্তু সঙ্গে মাত্র ৫০০ রিঙ্গিত আনে, তাহলে তার বক্তব্যে সন্দেহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো পূরণ করেই যেন আগ্রহীরা ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়, বিবৃতিতে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি বলছে, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তিকে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা, আর্থিক সামর্থ্য এবং থাকা-খাওয়ার নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।

এদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, যাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, নিশ্চয়ই তাঁদের ট্যুরিস্ট হিসেবে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণে ব্যর্থ মনে করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ