চলতি অর্থবছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছার পর তিন মাস ধরে কমছে। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমার পর নভেম্বর মাসেও সেই প্রবণতা দেখা গেছে।
গতকাল সোমবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাস শেষে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮.৮৫ শতাংশে, যা গত মাসে ছিল ৮.৯১ শতাংশ।
সেপ্টেম্বরে এ হার ছিল ৯.১০ ও আগস্টে ছিল ৯.৫২ শতাংশ।
সবজিসহ খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে বলে দাবি করেছে বিবিএস। সংস্থাটি বলছে, নভেম্বরে খাদ্যপণ্যের দাম কমে মূল্যস্ফীতি ৮.১৪ শতাংশ হয়েছে, যা গত মাসে ছিল ৮.৫০ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নভেম্বর মাসে অত্যন্ত ভালো খবর পেয়েছি।
মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বরে আরো কমার সম্ভাবনা আছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান ও শাক-সবজির উৎপাদন হওয়ার পাশাপাশি তেল-গ্যাসের দামও বিশ্বব্যাপী কমছে। সার্বিকভাবে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশে যাবে বলে আশা করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে ৪২২টি পণ্যের ওপর মূল্যস্ফীতি যাচাই করা হয়।
সেগুলো পুনর্বিবেচনা করা হবে। এখানে সোনার দামও ধরা হয়েছে। সোনার দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া মাখন, কফিসহ এ রকম অনেক পণ্যের দামও ধরা হয়। এগুলো সংশোধন করা হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে মূল্যস্ফীতি বাড়ার খবরকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। আমাদের সরকারের বাজার তদারকিসহ নানা পদক্ষেপের কারণে মূল্যস্ফীতি কমেছে। সামনের দিনে তা আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা বিবিএসের হিসাব নিয়ে সন্দেহ করে, তাদের অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে। পারলে তারা এই হিসাব ভুল প্রমাণ করুক। বিবিএস আইন দ্বারা পরিবেষ্টিত একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে অভিন্ন লোকজন কাজ করে।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.৯৪ শতাংশ, যা এর আগের মাসে ছিল ৮.৯২ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮.২৩ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৮.৩৮ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.৩১ শতাংশ, যা এর আগের মাসে ছিল ৯.৯৮ শতাংশ।
এ ছাড়া শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে কমে দাঁড়িয়েছে ৮.৭০ শতাংশে, যা এর আগের মাসে ছিল ৮.৯০ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৭.৯৫ শতাংশে, যা এর আগের মাসে ছিল ৮.৭৫ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৫৪ শতাংশ, যা এর আগের মাসে ছিল ৯.০৭ শতাংশ।
সামান্য বেড়েছে মজুরি : নভেম্বরে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.৯৮ শতাংশ, আগের মাসে যা ছিল ৬.৯১ শতাংশ। কৃষি খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.৯০ শতাংশ, আগের মাসে যা ছিল ৬.৮৫ শতাংশ। শিল্প খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.০৬ শতাংশ, আগের মাসে যা ছিল ৬.৯৭ শতাংশ। সেবা খাতে মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৭.১৭ শতাংশ, আগের মাসে যা ছিল ৭.১১ শতাংশ।