দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত এবং আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরো দুটি বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বাতিল করেছে বোর্ড। তবে পরীক্ষা দুটি নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া প্রশ্ন ফাঁসের কারণে বোর্ডের স্থগিত হওয়া চারটি বিষয়ের পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
শিক্ষা কর্মকর্তা বরখাস্ত আরো গ্রেপ্তার ৩
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

গতকাল বৃহস্পতিবার মাধ?্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বরখাস্ত, গ্রেপ্তার, রিমান্ড আবেদন
দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গতকাল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাধারণ প্রশাসন বিভাগের উপপরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার আরো তিনজন হলেন ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক সোহেল আল মামুন, পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক হামিদুল ইসলাম ও অফিস সহায়ক সুজন মিয়া। বুধবার তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হলেও পরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গতকাল দুপুরে তাঁদের কুড়িগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
আদালতে গতকাল প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলার ১ নম্বর আসামি নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুত্ফর রহমানের তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ভূরুঙ্গামারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজাহার আলী। অন্যদিকে আসামিপক্ষে জামিনের আবেদন করা হয় আদালতে। কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভূরুঙ্গামারী কোর্টের বিচারক মো. সুমন আলী রিমান্ড ও জামিন শুনানির জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করে আদেশ দেন। ভূরুঙ্গামারী কোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেনারেল রেজিস্ট্রার অফিসার সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
প্রশ্নপত্র বাতিল ও পরীক্ষার নতুন তারিখ
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার উচ্চতর গণিত ও জীববিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্নপত্র বাতিল করা হয়।
তদন্ত শুরু
প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামছুল ইসলাম গতকাল সকালে ভূরুঙ্গামারীর নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রাথমিক (বিভাগীয়) তদন্ত শুরু করেন। তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমানসহ অন্য শিক্ষকদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তিনি জানান, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে শিক্ষা বিভাগের কেউ জড়িত আছেন কি না বা গ্রেপ্তার হয়েছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মো. ফারাজ উদ্দিন তালুকদারকে আহ্বায়ক করে বোর্ডের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গতকাল ভূরুঙ্গামারী পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে।
কুড়গ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, বোর্ডের তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে যে সুপারিশমালা দেবে, তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরবর্তী পরীক্ষাগুলো শিক্ষার্থীরা যাতে নিঃশঙ্ক চিত্তে দিতে পারে, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের মানববন্ধন
নেহাল উদ্দিন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রতিবাদে এবং যথাসময়ে পরীক্ষা শেষের দাবিতে মানববন্ধন করেছে পরীক্ষার্থীরা। গতকাল সকালে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য দেয় কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাকিউল ইসলাম, মাহিন হাবীব ও রাফিউল ইসলাম। বক্তারা বলে, কার গাফিলতি ও দুর্নীতির কারণে ভূরুঙ্গামারীতে প্রশ্ন ফাঁস হলো, তা দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে।
উল্লেখ্য, এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় গত মঙ্গলবার ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুত্ফর রহমানসহ তিন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গণিত, কৃষি শিক্ষা, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নবিজ্ঞানের প্রশ্নপত্র উদ্ধার করা হয়। পরে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড এই চার বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন কালের কণ্ঠের কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর ও ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি।]
সম্পর্কিত খবর

স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে

ক্রিকেট ম্যাচ, তার ওপর রবিবার। গতকাল তাই উদ্দাম পার্টির প্রস্তুতি ছিল রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উপড়ে পড়া গ্যালারির। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকে ডিজের মিউজিক, দর্শকদের ড্রাম পেটানো আর ট্রাম্পেটের চড়া সুরে কান পাতা দায়। সেই পার্টিই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় দারুণ ক্ষিপ্রতায় কুশল মেন্ডিসকে শামীম হোসেন রান আউট করতেই।
বিশ ওভারের ক্রিকেটে ছন্দ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতলয়ের ক্রিকেটে ছন্দের সেই গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে আর পেছনে তাকায়নি বাংলাদেশ দল।
অবশ্য ম্যাচজুড়েই শামীমের প্রতিপত্তি দেখা গেছে।
কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন লিটন ও শামীম। অধিনায়কের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তাওহিদ ফেরেন, একই ওভারে তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুমে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ধাক্কায় অবশ্য কাবু হওয়ার অবস্থায় নেই শামীম। আগের ম্যাচে ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি শুরু থেকে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। ওদিকে অধিনায়কও থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। তাঁরা জুটি বেঁধে ছোটান রানের গতি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটন ও শামীম মিলে তোলেন ৭৭ রান, তা-ও মাত্র ২১ বলে! ১৩ ম্যাচ পর ফিফটির দেখা পান লিটন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস। এক বাউন্ডারি আর পাঁচ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৬ রান করে যখন আউট হন অধিনায়ক, ততক্ষণে লড়াইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক পূঁজি এক রকম হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে স্ট্রাইক পেতে মরণপণ দৌড়েও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শামীম। তাতে ২৭ বলে তাঁর ৪৮ রানের ইনিংস পঞ্চাশ ছুঁতে না পারার আক্ষেপে শেষ হয়েছে। অবশ্য তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই, ‘দল জিতেছে। তাতে অবদান রাখতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি।’ শামীম আরো খুশি ১৬ জুলাই কলম্বোয় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা নয়, জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
ম্যাচ শুরুর আগের রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের চালচিত্র না বললেই নয়। হাজার তিরিশেক দর্শকের ঠাঁই হয় এ মাঠে। তবে দুই দিন ধরে টিকিটের জন্য আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল যে পর্যাপ্ত আসন নেই। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে গ্যালারি ভরে গেছে। বরাবরের মতো গ্যালারি লাগোয়া গাছেও চড়ে বসেন বিনা টিকিটের দর্শক। তাই বলে সিঁধ কেটে বিনা টিকিটের দর্শক ঢোকে ডাম্বুলায়, সেটি অজানা ছিল। গতকাল সেটিও দেখা হলো, বাংলাদেশ ইনিংসের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চলাকালে ভিআইপি স্ট্যান্ডের দিককার কাঁটাতারের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে অন্তত শ খানেক টিকিটহীন দর্শক ঢুকে পড়লেন স্টেডিয়াম চত্বরে। বিনা বাধায় যোগ দিলেন গ্যালারির উৎসবে। নিজ দলের ব্যাটিং ভরাডুবিতে ক্ষণে ক্ষণে লাউড স্পিকার থেমেছিল বটে। তবে পুরোপুরি থামেনি। পুরস্কার বিতরণীর পরও কিছু দর্শককে দেখা গেছে হাসিমুখে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তো বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেও গেলেন, ‘ওয়েল প্লেইড বাংলাদেশ!’

অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারির রিকশার দাপট বেড়েছে। সেগুলো জব্দে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মালিবাগে অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দ করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি : ফোকাস বাংলা
।
মানবতাবিরোধী অপরাধ
বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বাংলা-ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে। আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এর আগে ১০ জুলাই এই মামলার ২৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২২ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। যে দুজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাঁরা হলেন রাফিউল হাসান রাসেল ও মো. আনোয়ার পারভেজ।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই মামলার শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আট আসামির গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় প্রয়োজন। তখন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। আদেশের সময় মামলার ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

হত্যা মামলায় জামিন
আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার এনামুল হক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। গতকাল রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনয়শিল্পী। এটাই আমার পেশা।
এদিন অপু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি মুখে কালো মাস্ক, মাথায় সাদা ওড়না ও বোরকা পরেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এরপর অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না।’ এ সময় আইনজীবীরা আহা আহা সাধু বলতে থাকেন। অনেক আইনজীবী উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপু বিশ্বাস এমপি হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার দোসর তিনি। এ সময় অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে।’ এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করতে দেখা যায়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে অপু বিশ্বাস গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। পরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার শ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মামলায় অপু বিশ্বাস, আশ্না হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান তিনি।