স্থাপত্যশিল্পে বাংলাদেশের সাফল্যের মুকুটে জুড়ল আরেকটি পালক। সম্মানজনক ‘আগা খান স্থাপত্য পুরস্কার ২০২২’ জিতেছে এ দেশের দুই স্থাপত্য। এগুলো হচ্ছে কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে নির্মিত ‘কমিউনিটি স্পেস’ ও ঝিনাইদহের ‘আরবান রিভার স্পেস’। গতকাল বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
পুরস্কার
আগা খান পুরস্কারজয়ী দুই স্থাপত্য
পিন্টু রঞ্জন অর্ক

স্থাপত্য ক্ষেত্রে আগা খান অ্যাওয়ার্ড খুব সম্মানজনক পুরস্কার। ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি তিন বছর অন্তর এই সম্মাননা দেওয়া হয়। নকশার সমকালীনতা, পরিবেশগত দিক ও উন্নয়ন, সামাজিক গৃহায়ণ ও সামাজিক অগ্রগতিতে অবদানসহ নানা দিক বিবেচনা করা হয় এতে।
অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি স্থাপত্যশিল্পের মাধ্যমে মানুষের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণেও কাজ করছে আগা খান ফাউন্ডেশন। ১৯৭৭ সাল থেকে ৪৫ বছরে প্রতিষ্ঠানটি ১২৮টি স্থাপত্য প্রকল্পকে পুরস্কৃত করেছে।
এবার সারা বিশ্বের ৪৬৩টি প্রকল্প থেকে বিজয়ীর সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছিল ২০টি। ৯ সদস্যের বিচারকদল তা থেকে পাঁচ দেশের ছয়টি প্রকল্পকে বিজয়ী ঘোষণা করে। বাংলাদেশের দুটি ছাড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্য প্রকল্পগুলো হলো লেবাননের নেইমেয়ার অতিথিশালার সংস্কারকাজ, সেনেগালের কামানার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ইরানের অ্যাগ্রো সমকালীন শিল্পকলা জাদুঘর ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং ইন্দোনেশিয়ার বানইউওয়াঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
আগামী অক্টোবরে ওমানের মাসকাটে এক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। বিজয়ীরা ১০ লাখ ডলার মূল্যমানের পুরস্কার ভাগাভাগি করে নেবেন।
প্রাণ ফিরেছে নদীর
পরিবেশের প্রতি সংবেদনশীলতার পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক নগরায়ণের অনন্য উদাহরণ বাংলাদেশের পুরস্কৃত প্রকল্প ঝিনাইদহের ‘আরবান রিভার স্পেস’। এর স্থপতি খন্দকার হাসিবুল কবির ও সুহাইলী ফারজানা। ঝিনাইদহ শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নবগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে হাঁটার পথ, আড্ডা ও সংস্কৃতিচর্চার জায়গা তৈরি করেছেন তাঁরা। প্রকল্পটি পুরো এলাকার চিত্রই বদলে দিয়েছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্যকলা বিভাগের শিক্ষক হাসিবুল কবির কো-ক্রিয়েশন আর্কিটেক্টসের প্রধান। তিনি বললেন, ‘সড়ক
পরিবহনকেন্দ্রিক উন্নয়ন করতে গিয়ে মানুষ নদীর কথা ভুলতে বসেছে। ২০১৫ সাল থেকে নগরবাসীকে নিয়ে নবগঙ্গার যৌবন ফেরাতে চেয়েছি। নদীকে কেন্দ্র করে নগর সাজাতে চেয়েছি। এ স্বীকৃতি নিশ্চিতভাবেই সবাইকে উজ্জীবিত করবে।’
স্থপতি সুহাইলী ফারজানা বললেন, “মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে স্থাপনা নির্মাণই আমাদের কাজের প্রধান দিক। নানাভাবে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে ‘সিটি ওয়াইড পিপলস নেটওয়ার্ক’ও গড়েছি। আমাদের স্লোগান ‘নদী ও পুকুরের দিকে করি মুখ/বাড়িয়ে দেই ঝিনেদার সুখ’।”
স্থপতি খন্দকার হাসিবুল কবির ও সুহাইলী ফারজানা দরিদ্র মানুষদের শেখান স্বল্পখরচে মানসম্মত বাসস্থান তৈরির প্রক্রিয়া।
শরণার্থীদের স্বস্তির জায়গা
পুরস্কৃত দ্বিতীয় বাংলাদেশি প্রকল্পটি হচ্ছে রোহিঙ্গা শিবিরের ‘কমিউনিটি স্পেস’। এর স্থপতি রিজভী হাসান, খাজা ফাতমী ও সাদ বিন মোস্তফা। ঘটনাক্রমে স্থপতি খন্দকার হাসিবুল কবিরই তাঁদের শিক্ষাগুরু। সাদ বিন মোস্তফা মজা করে বলছিলেন, ‘এবার গুরুর পুরস্কারে ভাগ বসাল শিষ্যরা।’
রিজভী হাসান চান গৎবাঁধা দালান তৈরির বাইরে গিয়ে গণমুখী কাজ করতে, যার মাধ্যমে পুরো জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে।
খাজা ফাতমী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রথাগত পদ্ধতিতে কোনো নকশা বা মডেল তৈরি না করে সরাসরি রোহিঙ্গা কারিগরদের সঙ্গে কাজ করেছি আমরা। বাঁশ, শণ, বেত ও গোলপাতার মতো স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা পরিবেশবান্ধব কাঁচামাল ব্যবহার করেছি।’ ব্র্যাক, এইচসিএমপি ও অ্যাকশন এইডের সহায়তায় ২০১৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিবিরে ছয়টি স্থাপনা নির্মাণ করেছেন ফাতমীরা। কিছু স্থাপনা এমনভাবে নকশা করা যে চাইলে তা খুলে নিয়ে অন্যত্র ব্যবহার করা যাবে।
স্থপতি সাদ বিন মোস্তফা জানালেন, একেকটি স্থাপনার আয়তন এক হাজার ২০০ থেকে পাঁচ হাজার বর্গফুটের মতো। প্রতি বর্গফুটে গড়ে খরচ হয়েছে ৭৫০ টাকার মতো। নারীবান্ধব এই প্রকল্পের মাধ্যমে রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীদের জন্য স্থাপত্যকর্মের সামনে আঙিনা তৈরি করা হয়েছে। তাদের কাউন্সেলিংসহ নানা দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে সেখানে।
বাংলাদেশিদের মধ্যে এর আগে স্থপতি সাইফ উল হক, মেরিনা তাবাসসুম ও কাশেফ মাহবুব চৌধুরী এই পুরস্কার পেয়েছেন।
সম্পর্কিত খবর

স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে

ক্রিকেট ম্যাচ, তার ওপর রবিবার। গতকাল তাই উদ্দাম পার্টির প্রস্তুতি ছিল রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উপড়ে পড়া গ্যালারির। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকে ডিজের মিউজিক, দর্শকদের ড্রাম পেটানো আর ট্রাম্পেটের চড়া সুরে কান পাতা দায়। সেই পার্টিই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় দারুণ ক্ষিপ্রতায় কুশল মেন্ডিসকে শামীম হোসেন রান আউট করতেই।
বিশ ওভারের ক্রিকেটে ছন্দ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতলয়ের ক্রিকেটে ছন্দের সেই গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে আর পেছনে তাকায়নি বাংলাদেশ দল।
অবশ্য ম্যাচজুড়েই শামীমের প্রতিপত্তি দেখা গেছে।
কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন লিটন ও শামীম। অধিনায়কের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তাওহিদ ফেরেন, একই ওভারে তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুমে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ধাক্কায় অবশ্য কাবু হওয়ার অবস্থায় নেই শামীম। আগের ম্যাচে ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি শুরু থেকে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। ওদিকে অধিনায়কও থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। তাঁরা জুটি বেঁধে ছোটান রানের গতি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটন ও শামীম মিলে তোলেন ৭৭ রান, তা-ও মাত্র ২১ বলে! ১৩ ম্যাচ পর ফিফটির দেখা পান লিটন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস। এক বাউন্ডারি আর পাঁচ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৬ রান করে যখন আউট হন অধিনায়ক, ততক্ষণে লড়াইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক পূঁজি এক রকম হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে স্ট্রাইক পেতে মরণপণ দৌড়েও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শামীম। তাতে ২৭ বলে তাঁর ৪৮ রানের ইনিংস পঞ্চাশ ছুঁতে না পারার আক্ষেপে শেষ হয়েছে। অবশ্য তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই, ‘দল জিতেছে। তাতে অবদান রাখতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি।’ শামীম আরো খুশি ১৬ জুলাই কলম্বোয় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা নয়, জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
ম্যাচ শুরুর আগের রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের চালচিত্র না বললেই নয়। হাজার তিরিশেক দর্শকের ঠাঁই হয় এ মাঠে। তবে দুই দিন ধরে টিকিটের জন্য আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল যে পর্যাপ্ত আসন নেই। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে গ্যালারি ভরে গেছে। বরাবরের মতো গ্যালারি লাগোয়া গাছেও চড়ে বসেন বিনা টিকিটের দর্শক। তাই বলে সিঁধ কেটে বিনা টিকিটের দর্শক ঢোকে ডাম্বুলায়, সেটি অজানা ছিল। গতকাল সেটিও দেখা হলো, বাংলাদেশ ইনিংসের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চলাকালে ভিআইপি স্ট্যান্ডের দিককার কাঁটাতারের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে অন্তত শ খানেক টিকিটহীন দর্শক ঢুকে পড়লেন স্টেডিয়াম চত্বরে। বিনা বাধায় যোগ দিলেন গ্যালারির উৎসবে। নিজ দলের ব্যাটিং ভরাডুবিতে ক্ষণে ক্ষণে লাউড স্পিকার থেমেছিল বটে। তবে পুরোপুরি থামেনি। পুরস্কার বিতরণীর পরও কিছু দর্শককে দেখা গেছে হাসিমুখে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তো বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেও গেলেন, ‘ওয়েল প্লেইড বাংলাদেশ!’

অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারির রিকশার দাপট বেড়েছে। সেগুলো জব্দে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মালিবাগে অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দ করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি : ফোকাস বাংলা
।
মানবতাবিরোধী অপরাধ
বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বাংলা-ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে। আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এর আগে ১০ জুলাই এই মামলার ২৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২২ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। যে দুজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাঁরা হলেন রাফিউল হাসান রাসেল ও মো. আনোয়ার পারভেজ।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই মামলার শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আট আসামির গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় প্রয়োজন। তখন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। আদেশের সময় মামলার ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

হত্যা মামলায় জামিন
আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার এনামুল হক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। গতকাল রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনয়শিল্পী। এটাই আমার পেশা।
এদিন অপু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি মুখে কালো মাস্ক, মাথায় সাদা ওড়না ও বোরকা পরেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এরপর অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না।’ এ সময় আইনজীবীরা আহা আহা সাধু বলতে থাকেন। অনেক আইনজীবী উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপু বিশ্বাস এমপি হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার দোসর তিনি। এ সময় অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে।’ এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করতে দেখা যায়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে অপু বিশ্বাস গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। পরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার শ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মামলায় অপু বিশ্বাস, আশ্না হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান তিনি।