পুরান ঢাকার বংশাল এলাকার সিক্কাটুলি শহীদ বুদ্ধিজীবী খালেক সরদার পার্ক ও ইংলিশ রোডের মালিটোলা পার্ক এখন বেহাল। এই দুই পার্কের উন্নয়নে ব্যয় করা হয় প্রায় সাত কোটি টাকা। কিন্তু দুই বছরের মাথায় পার্কের সৌন্দর্যবর্ধনকারী ঘাস, গাছপালা ও রাইডগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে বেঞ্চের টাইলস।
ঠিকাদারের গাফিলতি বেহাল দুই পার্ক
জহিরুল ইসলাম

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বলেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের গাফিলতির কারণে এই দুই পার্কের এমন পরিস্থিতি হয়েছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, ডিএসসিসি যদি বুঝে নেওয়ার পর সঠিকভাবে পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ করত তবে এমন হতো না।
ডিএসসিসি সূত্রে জানা যায়, ঢাকাকে পরিবেশবান্ধব ও সবুজ নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে ২০১৬ সালে ‘জল সবুজে ঢাকা’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নেয় করপোরেশন। এর আওতায় ডিএসসিসির ১৯টি পার্ক ও ১২টি মাঠ সংস্কার বা আধুনিকায়নের কাজ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই দুটি পার্কের সংস্কারের দায়িত্ব পেয়েছিল এইচএমএইচ ও এইচসি (জেবি) নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাদের নামে কাজটি বাস্তবায়ন করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নোয়াব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আমিনুল হক বিপ্লব।
ডিএসসিসির প্রকৌশল দপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের জুনে খালেক সরদার পার্কের সংস্কারকাজ শুরু হয়। ২০১৯ সালের ১৬ মে পার্কটির উদ্বোধন করা হয়। গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, সিক্কাটুলি শহীদ বুদ্ধিজীবী খালেক সরদার পার্কটি ত্রিভুজ আকৃতির। চারপাশ উন্মুক্ত। ফলে সব দিক থেকেই পার্কে ঢোকা যায়।
পার্কসংলগ্ন সিক্কাটুলির বাসিন্দা ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘এ পার্ক সংস্কারে তিন কোটি টাকা কোথায়, কিভাবে খরচ করা হলো তা বুঝে আসে না। এত টাকা যদি খরচ করেই থাকে, তাহলে কেন এখন এমন অবস্থা?’
ডিএসসিসির প্রকৌশল দপ্তর সূত্র জানায়, মালিটোলা পার্কের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। গত বছরের ৭ এপ্রিল এই পার্কটি উদ্বোধন করা হয়।
ইংলিশ রোডের মালিটোলা পার্কে সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, তিন কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পার্কটি আধুনিকায়ন করা হলেও কিছুই শুরুর মতো নেই। পার্কে নাগরিকদের জন্য দেওয়া পানির ফোয়ারা বন্ধ, কফিশপ, নারী-পুরুষদের জন্য পৃথক টয়লেট, হাঁটাচলার পথ থাকলেও অপরিচ্ছন্ন। পানি নিষ্কাশনের নালার ভঙ্গুর দশা। এলইডি বাতি নষ্ট হওয়ায় সন্ধ্যার পর অন্ধকার নেমে আসে। এই সুযোগে ভবঘুরে মাদকসেবীদের আনাগোনা বাড়ে।
পার্কটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা রুবেল মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পার্কের আজকে এইটা তো কালকে ওইটা নষ্ট হয়। এলইডিগুলা জ্বলে না। রাতে কে কোন দিক দিয়ে কী করছে বোঝা যায় না।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) মুন্সি মো. আবুল হাসেম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দুটি পার্কের কাজ একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের করা। তাদের কাজে গাফিলতি ছিল বলে সাড়ে তিন কোটি টাকার বিল আটকানো হয়েছে। তারা বিলের জন্য চাপ দিচ্ছে। সিটি করপোরেশন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পার্কগুলো সরেজমিন দেখে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নোয়াব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আমিনুল হক বিপ্লব বলেন, ‘সব কাজ শেষ করে সঠিকভাবে সিটি করপোরেশনকে দুটি পার্কই বুঝিয়ে দিয়েছি। মেয়র সাহেব বলেছেন বাকি টাকা দিয়ে দেবেন। বুঝিয়ে দেওয়ার পর যদি সিটি করপোরেশন রক্ষণাবেক্ষণ না করে তাহলে সেটি আমরা কী করতে পারি।’
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স