ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২১ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২১ মহররম ১৪৪৭

বান্দরবানে প্রবারণা উৎসব শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান
শেয়ার
বান্দরবানে প্রবারণা উৎসব শুরু

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের মারমা জনগোষ্ঠীর মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ বা প্রবারণা উৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় বান্দরবান কেন্দ্রীয় রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে এবং সন্ধ্যা ৭টায় উজানীপাড়া মহা বৌদ্ধ বিহারে ফানুস উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে চার দিনব্যাপী এ উৎসবমালার সূচনা ঘটে। আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে শুরু করে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত টানা তিন মাস বর্ষাবাস (ওয়া) পালন শেষে উপষদব্রত গ্রহণকারীদের বৌদ্ধ বিহার থেকে বেরিয়ে আসা উপলক্ষে প্রবারণা উৎসব উদযাপন করা হয়।

অন্যবার ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়।

তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর থেকে এই উৎসব সংক্ষিপ্ত করে উদযাপন করা হচ্ছে।

উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি থেওয়াং মার্মা জানান, বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার দ্বিতীয় দিন বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রথ টেনে শহরের রাজগুরু বৌদ্ধবিহার এবং উজানিপাড়া মহা বৌদ্ধবিহারে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে উপষদব্রত পালনকারীরা বিহার প্রাঙ্গণে এসে রথে প্রদীপ পূজা দেবেন। এ ছাড়া রাতে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে রাজগুরু বিহারসংলগ্ন মহাবোধি বৃক্ষতলসহ বান্দরবান পৌর এলাকার পাঁচটি স্থানে পিঠা তৈরি উৎসব হবে।

বৃহস্পতিবার ভোরে বৌদ্ধ ভিক্ষু, উপষদব্রত পালনকারী ও প্রবীণদের জন্য পিঠা নিয়ে যাওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বান্দরবান শহরের পুরনো রাজবাড়ী প্রাঙ্গণ থেকে রথ টেনে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করবে। এ সময় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ প্রদীপ পূজা, দান এবং প্রণাম করবেন। এরপর সুসজ্জিত রথ দুটিকে উজানিপাড়া ঘাটে অরহত উপগুপ্তের (উপবু আশাং) উদ্দেশে শঙ্খ নদের জলে ভাসিয়ে দেওয়া হবে।

এদিকে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট অনলাইনে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় ‘প্রবারণার শিক্ষা’ শীর্ষক আলোচনাসভা ও শুক্রবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ইনস্টিটিউটের পরিচালক মং নু চিং এ তথ্য জানান।

বৌদ্ধ ধর্মানুসারীরা বিশ্বাস করেন, রাজকুমার সিদ্ধার্থ ‘বুদ্ধত্ব’ লাভের উদ্দেশে সংসার ত্যাগ করে রাজবাড়ী থেকে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বেরিয়ে আসেন। কিছুটা পথ পেরিয়ে নদীর তীরে এসে ঘোড়ার গাড়ি ও সারথীকে বিদায় দিয়ে একা পথ চলতে শুরু করেন। হঠাৎ সিদ্ধার্থের মনে হয়, তিনি ঠিক পথে বেরিয়েছেন কি না কিংবা তাঁর উদ্দেশ্য সফল হবে কি না তা পরখ করে দেখা দরকার।

সিদ্ধার্থ সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁর মাথার চুল কেঁটে ওপর দিকে ছুড়ে দেবেন। তাঁর উদ্দেশ্য সঠিক হলে চুলগুলো আকাশে উড়ে যাবে। পথ সঠিক না হলে কর্তিত চুল মাটিতে পড়বে। এরপর সিদ্ধার্থ মাথার লম্বা চুল তরবারি দিয়ে কেটে আকাশের দিকে ছুড়ে দেন। এ সময় দেবতারা মর্ত্যে নেমে এসে সিদ্ধার্থের কর্তিত চুল বুকে ধরে মহাকাশে চুলামনি মন্দিরে নিয়ে যান।

এরপর সিদ্ধার্থ রাজবেশ, তরবারি ও অন্য মূল্যবান সামগ্রী খুলে রেখে সংসার ধর্ম ত্যাগ করে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে পা বাড়ান এবং দীর্ঘ সাধনা শেষে ‘বুদ্ধত্ব’ লাভ করে ফিরে আসেন। সিদ্ধার্থের চুল ছেদন ও আকাশে উঠে যাওয়ার ঘটনা স্মরণে ফানুসে ঘি-এর বাতি জ্বালিয়ে চুলামনি মন্দিরের উদ্দেশে প্রদীপ পূজা পাঠানো হয়। সে কারণেই প্রবারণা পূর্ণিমার প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠে ফানুস উড়ানো।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

এক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীতে দুজনসহ

    তিন জেলায় চার খুন
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
এক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীতে দুজনসহ

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনকে হত্যা করা হয়েছে। কুমিল্লায় ঘুমন্ত নারীর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও খুঁচিয়ে খুন করা হয়েছে। দিনাজপুরে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত :

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান ও আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি ইফতেখার হাসান বলেন, চাঁদ উদ্যান সড়কের লাউতলায় আল আমিন (৩০) নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

এর এক ঘণ্টা পর আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ে ইব্রাহিম নামের একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আদাবর থানার এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় সজীব ও রুবেল নামের দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

কুমিল্লা : দেবীদ্বার পৌর এলাকার সাইলচর গ্রামে মঙ্গলবার রাতে ঘুমন্ত নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

নিহত ঝরনা বেগম (৪৮) সাইলচর গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আব্দুল করিমের স্ত্রী।

ঝরনা বেগমের স্বামী আব্দুল করিম জানান, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর পারিবারিক নানা বিষয়ে দূরত্ব ছিল। স্বামীর অসুস্থতার কারণে স্ত্রী তাঁকে প্রায়ই ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেন। আগের রাতে ঝরনা তাঁকে আটটি ঘুমের বড়ি খাওয়ালে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।

সকালে উঠে দেখেন স্ত্রীর লাশ। তাঁর মাথা থেঁতলানো এবং রক্তাক্ত।

দেবীদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহীন বলেন, ‘ওই নারীর মাথায় তিনটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে, যেগুলো ইলেকট্রিক প্লায়ার্স বা স্ক্রু ড্রাইভারের আঘাত হতে পারে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নানামুখী, আমরা তদন্ত করছি।’

দিনাজপুর : দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৩ নম্বর ধামইর ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

গতকাল সকালে রাস্তা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত আসাদুল ইসলাম (৩৫) উপজেলার যুগীহারীখাড়িপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে।

নিহতের বড় ভাই মকবুল হোসেন জানান, কয়েক দিন আগে পুরনো ভ্যান বিক্রি করে নতুন ভ্যান কেনেন আসাদুল ইসলাম। মঙ্গলবার সেই ভ্যান চালাতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি।

রাজশাহী : রাজশাহীর পুঠিয়ায় নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার আগলা গ্রামে ঘাসের ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত মো. আবরার (৬) ওই এলাকার ডা. শওকত শরীফের ছেলে। ডা. শওকত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিশেষজ্ঞ।

এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কিশোরী হেফাজতে রাখা হয়েছে। আরএমপির বেলপুকুর থানার ওসি সুমন কাদেরী এসব তথ্য কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।

 

মন্তব্য

সিরিজ জিতে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ

শেয়ার
সিরিজ জিতে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ
গতকাল শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ দল। আজ সকালে দেশে ফেরার আগে এই ট্রফি হাতে উদযাপনটাও সেরে নিয়েছেন লিটন দাস, তানজিদ হাসানরা। ছবি : মীর ফরিদ, কলম্বো থেকে

বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়, ১৯৮৬ এশিয়া কাপ দিয়ে। তখন পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এরপর সময় গড়িয়েছে, কালের বিবর্তনে শ্রীলঙ্কায় টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। সব ফরম্যাটে জয়ও আছে।

কিন্তু কোনো ফরম্যাটে সিরিজ জেতা হয়নি। গতকাল প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ৮ উইকেটের জয়ে নতুন ইতিহাস লিখল লিটন দাসের বাংলাদেশ। ইতিহাস গড়েও বাড়তি কোনো উচ্ছ্বাস নেই। জয় নিশ্চিত হওয়ার পর বাতাসে মুষ্টিবদ্ধ হাত ছুড়েছেন তানজিদ হাসান তামিম।
তবে ডাগ আউট সিরিজ জিতে দেশে ফিরছে বাংলাদেশথেকে ছুটে কেউ মাঠে ঢুকে পড়েননি। আনন্দের প্রকাশ আছে, তবে তাতে যেন মিশে দূর ভবিষ্যতের প্রত্যয়। আজ ঢাকায় ফিরেই যে ঢুকে পড়তে হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে!

জেতার জন্য ১৩৩ রান টি-টোয়েন্টিতে বড় লক্ষ্য নয়। তবে অলিখিত ফাইনালের চাপ, ব্যাটিংয়ের ফাঁকফোকর আর প্রেমাদাসার উইকেট বিবেচনায় এটা আবার আয়েশে পাড়ি দেওয়া দূরত্বেরও নয়।

কিছুটা ধাঁধার মতো। সতর্ক শুরু করলে আকস্মিক রানের চাপ বাড়তে পারে। আবার উড়িয়ে মারার ঝুঁকি আছে প্রেমাদাসায়। তাই মধ্যপন্থায় এগিয়েছে বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম বলে পারভেজ হোসেনকে হারানোর পর তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস আক্রমণ করেছেন, তবে নিজেদের রক্ষণ আলগা করে নয়।
তাতে এই দুজনের গড়া ৮৪ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি অজানা আশঙ্কা দূর করে দিয়েছে। কামিন্ডু মেন্ডিসকে সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ না দিলে হয়তো ম্যাচ শেষ করেই মাঠ ছাড়তে পারতেন লিটন। টস হেরে ফিল্ডিংয়ে দল পরিচালনা এবং শুরুতে উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলানোর জন্য এটুকু তাঁর প্রাপ্য ছিল। যাওয়ার আগে অবশ্য দলকে ভরসা দিয়ে গেছেন নুয়ান থুসারাকে র‌্যাম্প শটে বাউন্ডারি মেরে। তবে ম্যাচের সেরা শট তানজিদের। মাহিশ থিকশানাকে এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে মারা তাঁর ছক্কার শটটি ইউটিউবে বিপুল ভিউ পাবে নিশ্চিত! এর আগে-পরে আরো চার, ছক্কা এবং এক বাউন্ডারিতে ২৭ বলে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে নিজের পঞ্চম ফিফটি পূর্ণ করেছেন তানজিদ। বাঁহাতি এই ওপেনারের এমন দাপুটে ব্যাটিংয়ের কারণে কোনো ঝুঁকি নিতে হয়নি তাওহিদ হৃদয়কে। ওদিকে চাপের মুখে যাচ্ছেতাই ফিল্ডিং করেছে লঙ্কানরা, ব্যক্তিগত ৬০ রানে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান তানজিদ। এরপর আর আউটই হননি তিনি। ৪৭ বলে ১ বাউন্ডারি আর ৬ ছক্কায় ৭৩ রান করে অপরাজিত থেকেছেন তানজিদ। আর উইনিং স্ট্রোক খেলেছেন ২৭ রানে অপরাজিত থাকা তাওহীদ হৃদয়।

মাস তিনেক আগে ঘটা করে তাঁকে টি-টোয়েন্টির সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম সফরে নীরবে নতুন দায়িত্বের সঙ্গে একাদশেও জায়গা হারিয়েছিলেন শেখ মেহেদী। তাই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটায় আর সবার চেয়ে তাঁর ওপর চাপ ছিল বেশি। যদিও মাঠে সে রকম কিছু মনে হয়নি। বরং মাত্র ১১ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন মেহেদী, যা তাঁর ক্যারিয়ারসেরা টি-টোয়েন্টি বোলিংও। এর মধ্যে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে করা ২ ওভারে ২ উইকেট নিয়েছেন। নিজের কোটা পূর্ণ করেছেন ফিল্ডিং বিধি-নিষেধ উঠে যাওয়ার পর। সে স্পেলেও জোড়া শিকার মেহেদীর। আর উইকেটগুলো যথাক্রমে কুশল পেরেরা, দীনেশ চান্ডিমাল, চারিথ আশালঙ্কা ও পাথুম নিশাঙ্কারবকলমে যাঁরা শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপের মেরুদণ্ড। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাদ পড়া মুস্তাফিজুর রহমান গতকালও উজাড় করে দিয়েছেন। পাওয়ার প্লেতে নিখুঁত নিশানায় দুই ওভার করেছেন। পরের স্পেলে স্লোয়ার আর কাটারে ধন্দে রেখেছেন লঙ্কান ব্যাটারদের। তাতে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান গুনেছেন মুস্তাফিজ, সঙ্গে আঁটসাঁট বোলিংয়ের পুরস্কার হিসেবে একটি শিকার। এর মধ্যে শামীম হোসেনকে দিয়ে দুই ওভার বোলিং করিয়ে নিয়েছেন লিটন দাস। এই সিরিজে যেন অধিনায়ককে বিমুখ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শামীম! ১০ রানের বিনিময়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মুখে কামিন্ডু মেন্ডিসকে থামিয়েছেন তিনি। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে কাচটি দারুণ দক্ষতায় নিয়েছেন এক ম্যাচ বিরতির পর একাদশে ফেরা তানজিম হাসান। রিশাদ হোসেন ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়েছেন। তবে এক দিনে সবার তো আর সব হয় না। বাংলাদেশের বোলিং বিভাগে যেমন শরিফুল ইসলাম রান গুনেছেন ৫০! তাতে শ্রীলঙ্কার ইনিংসও শেষ দিকে দাসুন শানাকার ঝটকায় এক শ ছাড়িয়ে যায়। ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার।

অবশ্য ম্যাচের নির্ঘণ্ট করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চারিথ আশালঙ্কা একটা কথাই বারবার করেছেন, মেহেদী দারুণ বোলিং করেছে। টি-টোয়েন্টির একাদশে প্রত্যাবর্তনের রোমাঞ্চকর গল্প লিখলেন এই অফস্পিনার অলরাউন্ডার।

 

মন্তব্য

সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এক দিনে ৫৫ জনকে পুশ ইন

নিজস্ব প্রতি‌বেদক ও মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা
নিজস্ব প্রতি‌বেদক ও মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা
শেয়ার
সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এক দিনে ৫৫ জনকে পুশ ইন

ভারত থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার তিনটি সীমান্তপথে ৫৫ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ, ৩৩ জন নারী এবং ১০টি শিশু।

গতকাল বুধবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে এই পুশ ইনের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট ৪৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক।

এর আগে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তের ভারতীয় অংশে অবৈধভাবে অবস্থান করা সাত বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক আবু হানিফ মো. সিহানুক স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিজিবি।সিলেট বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা যায়, নোয়াকোট, কালাইরাগ, তামাবিল ও শ্রীপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত দিয়ে চারটি গ্রুপে এসব বাংলাদেশিকে পুশ ইন করা হয়। পরে সীমান্ত এলাকায় টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদের সবাইকে আটক করেন।

 

বিজিবি সূত্র জানায়, সিলেট জেলার কালাইরাগ সীমান্তে সাতটি পরিবারের ১৯ জনকে আটক করা হয়। শ্রীপুর সীমান্তের মোকামপুঞ্জি এলাকা দিয়ে পুশ ইন করা হয় ১৩ জনকে। তামাবিল বিওপির নলজুরি থেকে দুজনকে আটক করা হয়। অন্যদিকে সুনামগঞ্জ জেলার নোয়াকোট বিওপি এলাকার ছনবাড়ী সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করা হয় ২১ জনকে।

পুশ ইন হওয়া ৫৫ জনের মধ্যে নড়াইলের ২৩ জন, যশোরের ১২ জন, সাতক্ষীরার ১০ জন, সিলেটের চারজন, বরিশালের দুজন এবং কুষ্টিয়া, খুলনা, হবিগঞ্জ ও নরসিংদী এলাকার একজন করে রয়েছে। সিলেট ৪৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক  জানান,  আটককৃত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

মহেশপুর সীমান্তে ৭ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর  : ঝিনাইদহের মহেশপুর বিজিবির পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশ আসার সময় বিএসএফ তাদের আটক করে। পরে মহেশপুর সীমান্তের বাগাডাঙ্গা বিওপিকে অবগত করে তারা। আটক ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিকেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফের কাছ থেকে তাদের গ্রহণ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, এই সাতজনের মধ্যে দুজন পুরুষ, দুজন নারী এবং তিনটি শিশু রয়েছে। সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তাদের মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

 

মন্তব্য

মাদানী এভিনিউ ১০০ ফুট সড়ক বেহাল

    ঠিকাদারের গড়িমসি দ্রুত সড়ক ঠিক না করলে ব্যবস্থা নেবে রাজউক
জহিরুল ইসলাম
জহিরুল ইসলাম
শেয়ার
মাদানী এভিনিউ ১০০ ফুট সড়ক বেহাল
রাজধানীর মাদানী এভিনিউ ১০০ ফুট সড়কের খানাখন্দের কারণে যান চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ছবি : কালের কণ্ঠ

রাজধানীর নতুনবাজার (মাদানী এভিনিউ ১০০ ফুট) থেকে বালু নদীর দিকে চলে যাওয়া সড়কটির করুণ দশা কাটছে না। ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের অধীন ঢাকা ওয়াসার উন্নয়নকাজ শেষ হয়েছে। তবে সড়ক মেরামতে ভিন্ন প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে না। ঢাকা ওয়াসার উন্নয়নকাজের কারণে খোঁড়াখুঁড়িতে সড়কটি এখনো ব্যবহারের অনুপযোগী রয়েছে।

প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বৃষ্টি হলে সড়কের খানাখন্দগুলো হয়ে ওঠে দুর্ঘটনার ফাঁদ। সাধারণ সময়ে ধুলাবালিতে ছেয়ে যায়।

জানা যায়, ঢাকা ওয়াসার নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার বিষনন্দী পয়েন্টে মেঘনা নদীর পশ্চিম তীরে গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগারটি অবস্থিত।

ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের আওতায় এটি নির্মাণ করা হয়েছে। মাদানী এভিনিউ ১০০ ফুট সড়কটির এক পাশ গভীর গর্ত করে প্রায় ছয় ফুটের দুটি পাইপ বসানো হয়। সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুনবাজার থেকে বালু নদীমুখী সড়কের ভাটারা থানার সামনে থেকে নূরেরচালার সংযোগ সড়ক পার হয়ে আরো অন্তত ২০০ ফুট পর্যন্ত খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। মডার্ন ডেন্টাল কেয়ার নামে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনের রাস্তার ঠিক অন্য পাশে গভীর এক গর্তে পানি জমে আছে।
প্রাইভেট কার থেকে শুরু করে রিকশা, অটোরিকশাসহ কোনো বাহনই চালকরা স্বস্তিতে চালাতে পারছেন না। গাড়ি বাধ্য হয়ে উল্টো পথে বালু নদীর দিকে চলাচল করছে। অটোচালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, আমি যাত্রাবাড়ী থেকে যাত্রী নিয়ে বেরাইদ যাচ্ছিলাম। রাস্তার এমন অবস্থা জানা ছিল না। অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছি।

অটোতে থাকা যাত্রী আলী আশরাফ হাওলাদার বলেন, এই সড়কটা কবে যে ঠিক হবে, আল্লাহ জানে। দিনে দিনে মৃত্যুকূপের মতো হয়ে যাচ্ছে। মানুষ মারা না গেলেও দুর্ঘটনা তো ঘটছে। আপনি নিজেই তো দেখলেন অল্পের জন্য পরিবার নিয়ে এখন বিপদে পড়ে যেতাম।

সড়কটির করুণ অবস্থা নিয়ে স্থানীয়দের অনেককে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনা করতে দেখা গেছে। রিনা আক্তার নামের একজন তাঁর ফেসবুকে ভিডিও শেয়ার করে টাইমলাইনে লেখেন, আপনারা দ্রুত সংস্কার করে নিন, আর ভিডিওটা সবাই শেয়ার করে দিবেন। দেখেন একটা ব্যস্ততম সড়ক, যার কী বেহাল দশা। এখানে মেডিক্যাল কলেজ আছে, ইউনিভার্সিটি আছে, স্কুল আছে, মাদরাসা আছে, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ কেউ দেখেও কিছু দেখছে না।

ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ওঅ্যান্ডএম) প্রকৌশলী এ কে এম সহিদ উদ্দিন বলেন, ঢাকা ওয়াসা কোনো প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিটি করপোরেশন বা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে সংস্কারকাজের অর্থ আগেই দিয়ে দেয়।

ঢাকা ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্টের ডিরেক্টর মো. ওয়াহিদুল ইসলাম মুরাদ বলেন, আমাদের প্রজেক্টের কাজ শেষ। এখন রাজউক সড়ক সংস্কারের কাজ করবে অন্য একটি প্রকল্পের অধীন। কবে থেকে কাজ শুরু করবে, সেটা রাজউক ভালো বলতে পারবে। তবে শুনেছি দ্রুত শুরু হবে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) এবং মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদী পর্যন্ত (মেজর রোড-৫) প্রশস্তকরণ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কাইছার কালের কণ্ঠকে বলেন, সড়কটির অবস্থা অনেক খারাপ। উন্নয়নকাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজ শুরু করতে কেন জানি গড়িমসি করছে। আমরা আর কিছুদিন দেখব। এর মধ্যে কাজ শুরু না করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ