ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

অগ্নিনির্বাপণ মহড়া বসুন্ধরা সিটিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
অগ্নিনির্বাপণ মহড়া বসুন্ধরা সিটিতে

বসুন্ধরা সিটির আটতলা থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। মুহূর্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। তবে অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের দক্ষতায় অতি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ভেতরে আটকে পড়া নারী, শিশুসহ ব্যবসায়ী, ক্রেতাদের একে একে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়।

রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত দেশের সেরা গ্রাহকপ্রিয় শপিং মল বসুন্ধরা সিটিতে গতকাল মঙ্গলবার অগ্নিনির্বাপণ ও প্রতিরোধ মহড়ার চিত্র এটি। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং বসুন্ধরা সিটি কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এর আয়োজন করে। সেখানে প্রতীকী অর্থে আগুন লাগার পর তা নিয়ন্ত্রণে আনার সফলতা তুলে ধরা হয়।

বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের (বিসিডিএল) ফায়ার অ্যান্ড সেফটি, নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, যান্ত্রিক, সিভিল এবং কেয়ার অ্যান্ড ক্লিন ডিপার্টমেন্টের কর্মীরাসহ ফায়ার সার্ভিসের শতাধিক সদস্য মহড়ায় অংশ নেন।

অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধের পদক্ষেপের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজন অন্যান্য বহুতল ভবনেও আবশ্যিক অগ্নিনির্বাপণ মহড়া আয়োজনে উৎসাহিত করবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করেন। বসুন্ধরা সিটিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু প্রতীকী অর্থে নয়, বাস্তবেও অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ এই শপিং কমপ্লেক্স। যেকোনো পরিস্থিতিতে সেখানে আগুন লাগলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটি শনাক্ত করে দ্রুততম সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব।

বিসিডিএলের পক্ষে মহড়ায় নেতৃত্ব দেন ক্যাপ্টেন (অব.) ফাহিম আহমেদ খান, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও নিরাপত্তা) এবং তত্ত্বাবধানে ছিলেন ফায়ার অ্যান্ড সেফটি শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর কবির। আরো উপস্থিত ছিলেন বিসিডিএলের ইনচার্জ মেজর (অব.) মো. মোহসিনুল করিম ও মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান সাদ তানভীর, বিসিডিএলের নির্বাহী পরিচালক (মেকানিক্যাল) মাহবুব মোর্শেদ খানসহ অন্যান্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মহড়া শেষে ফায়ার সার্ভিস দলের নেতৃত্বদানকারী উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবুল বাশার বসুন্ধরা সিটির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই স্থাপনার অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থার ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখা যায়। সম্প্রতি বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমরা দেখেছি। সেসব স্থাপনার তুলনায় এখানকার অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা খুবই ভালো।

এখানকার কর্মীরাও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।’ সচেতনতা তৈরি করে আগুনের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।  

বিসিডিএলের ইনচার্জ মেজর (অব.) মোহসিনুল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের এখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও পুরো স্থাপনা নিরাপদ। যাঁরা এখানে আসেন, দর্শনার্থী, ক্রেতা বা ব্যবসায়ী, তাঁরা সবাই এখানে নিরাপদ।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কখনো অগ্নিকাণ্ড ঘটবে না, এটা কখনোই বলা যায় না। তবে আগুন লাগলেও দ্রুততম সময়ে ‘রেসকিউ অপারেশন’ শুরু করে সবাইকে বের করে আনা সম্ভব। অগ্নিকাণ্ড ঘটলে আমাদের ‘ইলেকট্রিক্যাল’ প্যানেল স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করবে। এখানকার জরুরি সাইনগুলো আইপিএসে চলে, ফলে বিদ্যুৎ চলে গেলেও সেগুলো সচল থেকে জ্বলবে। ফলে মানুষ সেগুলো দেখে শপিং মল থেকে বের হয়ে যাবেন। আগুন নেভাতে এক লাখ গ্যালন পানি রিজার্ভ আছে। প্রয়োজন হলে নিরবচ্ছিন্ন পানির সরবরাহ দেওয়া যাবে। আমাদের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ টিমে দুজন কর্মকর্তাসহ ৫৭ জন সদস্য রয়েছে।”

বিসিডিএলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন (অব.) ফাহিম আহমেদ খান বলেন, ‘ফায়ার সেফটি প্রশিক্ষণ পাওয়া কর্মীদের আলাদা একটি দল আছে এখানে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে তাঁরা প্রশিক্ষণ পাওয়া। আবার মার্কেটের ব্যবসায়ী ও অন্য কর্মচারীদের অগ্নি নিরাপত্তায় প্রশিক্ষণ দেন এই কর্মীরা। ফলে মাইক্রো লেভেলে কোনো অগ্নিকাণ্ড ঘটলে, তাঁরাই নিভিয়ে ফেলতে পারবেন।’

প্রতি শিফটে ৩১ জন করে ফায়ার সার্ভিসকর্মী নিয়োজিত থাকেন জানিয়ে তিনি বলেন, তিন ধরনের পাম্প রয়েছে। দোকানের আকারভেদে প্রতিটি দোকানে কমপক্ষে দুটি করে ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে একবার এবং প্রতি মাসে একবার ফায়ার ড্রিল করা হয়।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে পাট চাষ

শেয়ার
তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে  পাট চাষ

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে করা হয়েছে পাট চাষ। সেই পাট কেটে মহিষের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পানিতে জাগ দেওয়ার জন্য। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের চর বাঘমারা থেকে তোলা। ছবি : মো. আসাদুজ্জামান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

শেয়ার
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী মুগদা হাসপাতালে

খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকার আড়াই বছর বয়সী নূরজাহান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল তোলা। ছবি : মঞ্জুরুল করিম

মন্তব্য

২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৩টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দলটি আগামী জাতীয় সংসদে নিম্নকক্ষে আংশিক আনুপাতিক ও উচ্চকক্ষে পূর্ণ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক দ্বিকক্ষীয় সাংবিধানিক কাঠামোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দলের নেতারা বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ।

আনুপাতিক পদ্ধতির মাধ্যমেই সব শ্রেণি ও মতধারার সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া আত্মঘাতী। এতে ফ্যাসিবাদের দোসররা আরো উৎসাহী হচ্ছে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তবে ফ্যাসিবাদ ফের মাথা চাড়া দেবে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী শৈথিল্য দেখালেও পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতকারীরা দ্রুত প্রতিহত হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনদলের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ। এ ছাড়া ছিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা হারুনুর রশীদ, মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা হাসান জুনাইদ, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও মাওলানা মুহসিন বেলালী।

মন্তব্য

রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
শেয়ার
রামেকে ইন্টার্ননির্ভর চিকিৎসায় ঝুঁকিতে মুমূর্ষু রোগীরা

পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার ওয়াহেদুজ্জামান (৭১) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে পরিবারের সদস্যরা গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। রোগীকে জরুরি বিভাগ থেকে পাঠানো হয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (মেডিসিন ওয়ার্ড)। ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করে নেন।

সেখানে বারান্দায় একটি শয্যায় রেখে চলতে থাকে রোগীর চিকিৎসা। পরের দিন ১৪ জুলাই সকালে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত স্থায়ী অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা গিয়ে রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন।

পরের দিন ১৫ জুলাই সকালের দিকে রোগী কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তাঁকে ছুটি দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দুপুর গড়াতে না গড়াতেই রোগী আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তখন কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীকে প্রথমে অক্সিজেন এবং পরবর্তীতে স্যালাইন দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রোগীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত একটা অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর বাকির মোড়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে দ্রুত তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ধরা পড়ে তাঁর শরীরে ডেঙ্গুসহ নানা জটিলতা। তবে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা পাওয়ায় রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন।

এটি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। চিকিৎসকসংকটে দিনের প্রায় ১৮ ঘণ্টাই ইন্টার্ন চিকিৎসকনির্ভরতার মাধ্যমে চলছে এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা।

খুব জরুরি প্রয়োজনে ফোনে পরামর্শ নেওয়া হয় অভিজ্ঞ ডাক্তারদের। এর বাইরে এফসিপিএস ডিগ্রিধারী বা এফসিপিএস করছেন এমন মধ্যম মানের চিকিৎসকরা থাকেন ভর্তির দিন ধার্য থাকা ওয়ার্ডগুলোতে। এ ছাড়া দিনের ২৪ ঘণ্টা প্রতিটি ওয়ার্ডেই চার থেকে ছয়জন করে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই ইন্টার্নদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। 

পাবনার ঈশ্বদীর রোগী ওয়াহেদুজ্জামানের ছেলে হামিম আবেদীন বলেন, রামেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দিনে একবার করে আসার কারণে আমার বাবার সমস্যাগুলো জটিল হয়ে গিয়েছিল, যা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বুঝে উঠতে পারেননি।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করি রোগীর সেবা দেওয়ার। কিন্তু যে পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়, সে পরিমাণ ইন্টার্ন চিকিৎসকও নেই।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত আনসার সদস্যও নেই। অন্যদিকে যেসংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে, সেসংখ্যক অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাসামগ্রী ও ওষুধপথ্যও আমরা দিতে পারছি না। কারণ সব কিছু বরাদ্দ হচ্ছে ৫০০ শয্যার বিপরীতে। কিন্তু এখানে শয্যাই আছে এক হাজার ২০০টি। এর বাইরেও অতিরিক্ত আরো দুই থেকে আড়াই হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।    

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ