ঢাকা, সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২, ১১ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২, ১১ মহররম ১৪৪৭
গত বছরের লকডাউন নিয়ে বিআইজিডির জরিপ

সাহায্য পায়নি নিম্ন আয়ের ৬০% মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সাহায্য পায়নি নিম্ন আয়ের ৬০% মানুষ

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় গত বছর জারি করা কঠোর বিধি-নিষেধ বা লকডাউনে ৬০ শতাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো রকমের সাহায্য পায়নি। লকডাউনের প্রভাবে তাঁদের আয় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। ওই বছরে এপ্রিল ও জুন মাসের মধ্যে ৩৯ শতাংশ পরিবার সহায়তা পেয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ইউনিভার্সিটির অ্যাকাউন্টিং রিসার্চ সেন্টারের প্রকাশ করা জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে একটি ভার্চুয়াল আলোচনার আয়োজন করা হয়।

বিআইজিডির জরিপটি করা হয়েছে গত বছরের ২০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত। এই জরিপের প্রতিবেদনটি বিআইজিডির ফ্ল্যাগশিপ রিপোর্ট ‘স্টেট অব গভর্ন্যান্স ইন বাংলাদেশ ২০২০-২০২১’ নামে প্রকাশ করা হয়।

জরিপ প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ রাজনীতিক-সমাজতাত্ত্বিক নওমি হোসেন, বিআইজিডি হেড অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল ক্লাস্টার ড. মির্জা হাসান প্রমুখ।

তাঁদের আলোচনায় উঠে আসে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো নড়বড়ে। করোনা মহামারির কারণে ‘জীবন বনাম জীবিকা’ অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে। গত বছর লকডাউন তুলে দেওয়ার ছয় মাস পরও নিম্ন আয়ের কর্মজীবীরা আর্থিক দিক থেকে আগের অবস্থানে ফিরতে পারেননি। এ ছাড়া এ সময়ে প্রতিটি উপজেলায় গড়ে মাত্র পাঁচটি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল।

সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের জন্য ভেন্টিলেটর ছিল মাত্র দুুই হাজার ২৬৭টি। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার উপকরণ (পিপিই) ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপরকণের সরবরাহ প্রয়োজনের তুলনায় ছিল খুবই কম এবং এসব উপকরণ কেনার ক্ষেত্রেও ছিল ঢিলেমি।

এ ছাড়া অতিমারির সময়ে বর্তমান সরকারের ভূমিকার প্রসঙ্গ উঠে আসে জরিপ প্রতিবেদনে। করোনার সময় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। জনগণ সরকারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্ট।

তবে লকডাউনে সব রকমের ব্যবস্থাপনা, করোনা পরীক্ষা ও ত্রাণ কার্যক্রমের কার্যকারিতা নিয়ে জনগণের অসন্তুষ্টি প্রকাশ পেয়েছে।

গত বছর মার্চ-জুলাই মাসে যখন আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী, তখন করোনা মোকাবেলার সর্বোচ্চ কমিটি মাত্র তিনবার সভা করে। এতে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় দুর্বলতার চিত্র উঠে এসেছে। এ ছাড়া করোনা পরীক্ষার হার দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম।

করোনার সময় সরকারের শাসনসংক্রান্ত ব্যবস্থা, দুর্বলতা এবং এ ধরনের দুর্যোগ কিংবা মহামারিতে কিভাবে ভবিষ্যতে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ও আলোচনায় উঠে আসে। আলোচকরা বলেছেন, এ ধরনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে শাসনব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করে তোলা সম্ভব। সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে একটি সুস্পষ্ট ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন ৌশলে পৌঁছাতে চায়। এই প্রবৃদ্ধি সুরক্ষিত রাখার প্রচেষ্টা সরকার ঘোষিত প্রণোদনায় স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। বৃহৎ, মাঝারি ও রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ শতাংশ পর্যন্ত বরাদ্দ ছিল। সে তুলনায় আর্থিকভাবে দুর্বল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও কর্ম নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ ছিল ১ শতাংশের কম। রপ্তানিকারক, তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক ও তাঁদের সংগঠনগুলো প্রভাব খাটিয়ে প্রণোদনার মাধ্যমে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরব ছিল। অন্যদিকে তুলনামূলকভাবে দুর্বল শ্রমিক ইউনিয়ন, তৃণমূলের জনগণ ও তাদের সংগঠনগুলো সেভাবে সরব হতে পারেনি। এ ব্যাপারটিও প্রণোদনা নীতি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। ত্রাণ বা সামাজিক সুরক্ষা সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় কম ছিল। প্রশাসনিক দুর্বলতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির কারণে ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। ত্রাণ যাদের প্রয়োজন ছিল, তাদের কাছে ঠিকমতো পৌঁছেনি।

বিআইজিডির জরিপে অংশগ্রহণকারী বেশির ভাগই মনে করেন যে ত্রাণ ব্যবস্থাপনায় কিছু না কিছু দুর্নীতি অবশ্যই হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে সঠিকভাবে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এতে অনেকেই অর্থ উপার্জনের জন্য বাইরে গেছেন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ডেঙ্গু মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে...

শেয়ার
ডেঙ্গু মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে...

এডিস (ডেঙ্গু) মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে দিনের বেলায়ও মশারি টানিয়ে বাচ্চাকে ঘুম পাড়িয়েছেন মা। গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মেট্রো রেললাইনের নিচ থেকে তোলা। ছবি : শেখ হাসান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
মুরাদনগরে তিন খুন

দুই দিন পর মামলা প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান, গ্রেপ্তার ৮

কুমিল্লা ও কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
কুমিল্লা ও কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
শেয়ার
দুই দিন পর মামলা প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান, গ্রেপ্তার ৮

কুমিল্লার মুরাদনগরে মোবাইল ফোনসেট চুরি ও মাদক ব্যবসার অভিযোগে এক নারী ও তাঁর দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লালকে প্রধান করে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার পর যৌথ বাহিনী গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়াসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন কড়ইবাড়ী গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৮), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (৩২)। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৫), যিনি এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কড়ইবাড়ী গ্রামে মোবাইল ফোনসেট চুরির অভিযোগ তুলে শতাধিক গ্রামবাসী রুবি বেগমের বাড়িতে হামলা চালায়। রুবির বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার বলেন, হামলা চালানোর পর আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছিলাম।

পুলিশ বলছিল আসতেছি, কিন্তু তারা আসার আগেই আমার মা, ভাই ও বোনকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। আমি আমার সন্তানদের নিয়ে টয়লেটের ট্যাংকে লুকিয়ে কোনোমতে বেঁচে যাই।

গতকাল শনিবার বিকেলে র‌্যাব-১১ রাজধানীর কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানায়, এ ঘটনায় ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়াসহ ছয়জনকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন কড়ইবাড়ী গ্রামের রবিউল আউয়াল, আতিকুর রহমান, বায়েজ মাস্টার, হায়রাবাদ এলাকার দুলাল মিয়া ও তাঁর ছেলে আকাশ।

অন্যদিকে সেনাবাহিনী কড়ইবাড়ী গ্রাম থেকে আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন মো. সবির আহমেদ ও মো. নাজিমউদ্দীন বাবুল।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে নিহতদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে পুলিশ পাহারায়। জানাজায় এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিল না বললেই চলে। এদিকে মামলার পর থেকেই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামটি। দোকানপাট, বাজার বন্ধ, রাস্তাঘাট ফাঁকা। গ্রামটি যেন একেবারেই জনমানবহীন হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরাও চাই হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক। কিন্তু যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়, তাদের যেন হয়রানি করা না হয়।

পুলিশ জানায়, নিহত রুবি ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন থানায় রুবির নামে ১১টি, ছেলের নামে ৯টি, মেয়েদের নামে অন্তত ১২টি মামলা বিচারাধীন। রুবি নিজেও পুলিশের বিরুদ্ধে ৬১টি অভিযোগ করেছিলেন।

তবে নিহতের মেয়ে রিক্তা আক্তার অভিযোগ করেন, পুরো হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত ছিল। চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লালের নির্দেশেই সবাই হামলা চালিয়েছে। পুলিশ সময়মতো ব্যবস্থা নিলে মা, ভাই ও বোনকে বাঁচানো যেত। আমি এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, এই মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হবে না।

মন্তব্য
চবি উপাচার্যকে শিক্ষার্থী

আপনি নিজ যোগ্যতায় আসেননি, আমরা বসিয়েছি

চবি প্রতিনিধি
চবি প্রতিনিধি
শেয়ার
আপনি নিজ যোগ্যতায়  আসেননি, আমরা বসিয়েছি

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিতর্কিত শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতারের  কক্ষে পদোন্নতির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে তা বাতিল করা হয়।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সরাসরি উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করে প্রতিবাদ জানান। তাঁদের অভিযোগ, বিচারাধীন হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত একজন শিক্ষক কিভাবে পদোন্নতির সুযোগ পান?

এ সময় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক নেতা তাহসান হাবিব বিতর্কে জড়িয়ে উপাচার্যকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি নিজ যোগ্যতায় আসেননি, আপনাকে আমরা বসিয়েছি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদোন্নতি বোর্ডে শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্তীর উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতারের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী (তাহসান হাবিব) উপাচার্য ইয়াহিয়া আখতারকে বলছেন, আপনি নিজ যোগ্যতায় আসেননি, আপনাকে আমরা বসিয়েছি।

ভিডিওতে আরো দেখা যায়, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতারের কার্যালয়ে পদোন্নতির বিষয়ে কথা বলতে যান। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী উপস্থিত হন।

উপাচার্যের উপস্থিতিতেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন শিক্ষক কুশল বরণ। পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষক কুশল বরণকে প্রশাসনিক ভবনের অন্য একটি কক্ষে নিয়ে ওই ভবনের মূল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

পরে কুশল বরণ চক্রবর্তী বলেছেন, তিনি মবের শিকার হয়েছেন।

ভিডিওতে আরো দেখা গেছে, উপাচার্যের সঙ্গে কথোপকথনের শুরুতে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন শিক্ষার্থী বলেন, আপনাকে এখানে বসিয়েছি অবশ্যই যাতে আপনি আমাদের সঙ্গে কাজ করেন।

তখন উপাচার্য বলেন, না (তিনি মাথা নেড়ে অসম্মতি জানাতে থাকেন)।

এ বিষয়ে গতকাল শনিবার তাহসান হাবিব কালের কণ্ঠকে বলেন, শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে উপাচার্যের অনুমতি নিয়েই আমরা তাঁর কক্ষে যাই। কুশল বরণ প্রসঙ্গসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নানা ইস্যুতে কথা বলতে চাইলে উপাচার্য মুখ না খুলে নীরব থাকেন। তখনই আমি ওই মন্তব্য করি এবং বলি, আপনার দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের কথা শোনা ও সমস্যার সমাধান করা।

তাহসান বলেন, আমার ওই কথাটি বলা ঠিক হয়নি এবং সেটির জন্য আমি তৎক্ষণাৎ ক্ষমাও চেয়েছি।

তাঁর অবশ্যই যোগ্যতা আছে দেখেই তিনি ওই অবস্থানে এসেছেন। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তখন উত্তেজিত হয়ে মন্তব্যটি আমার করা।

তাহসান জানান, আলোচনার এক পর্যায়ে কুশল বরণ অনুমতি ছাড়াই কক্ষে প্রবেশ করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে উপস্থিত ছাত্রশিবিরের অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ কুশল বরণের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কাগজপত্র দেখিয়ে প্রশ্ন তোলেন হত্যাচেষ্টার আসামি কিভাবে এখানে আসে?

তিনি জানান, কুশল বরণ হঠাৎ অনুমতি ছাড়া কক্ষে প্রবেশ করে এবং বলেন, আমি কুশল বরণ। সে সময় শিক্ষার্থীরা সবাই চমকে ওঠে এবং এক পর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে কাগজ হাতে নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও সে সময় সবাইকে ভিডিও ধারণ করতে নিষেধ করা হয়েছিল।

তাহসান বলেন, তারপর কুশল বরণকে কক্ষ থেকে সরানোর পর উপ-উপাচার্য আমাদেরও বের হয়ে আসতে বলেন।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে একাধিকবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতারকে মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

মন্তব্য

নাসিরনগরে ছাত্রদল নেতা নিহত ছয় জেলায় আরো ছয় খুন

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
নাসিরনগরে ছাত্রদল নেতা নিহত ছয় জেলায় আরো ছয় খুন

দেশের বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ, জমি নিয়ে বিরোধ ও পারিবারিক দ্বন্দ্বে সাতজন নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার এবং আগের দিন শুক্রবার রাতে এসব ঘটনা ঘটে। কোথাও গোষ্ঠীগত বিরোধ, কোথাও জমি নিয়ে বিরোধ, আবার কোথাও পারিবারিক কলহে প্রাণ হারিয়েছে নিরীহ মানুষ। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের চাতলপাড় বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উল্টা ও মোল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে মো. সোহরাব হোসেন (২৮) নামের এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন।

তিনি চাতলপাড় ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উভয় গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপি ও যুবদলের স্থানীয় নেতারা। সংঘর্ষে আহত হয়েছে আরো অন্তত ৩০ জন। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি বাড়িঘরে লুটপাটের অভিযোগও পাওয়া গেছে।

কাপাসিয়ায় প্রবাসফেরত তরুণকে কুপিয়ে হত্যা : গাজীপুরের কাপাসিয়ার সনমানিয়া ইউনিয়নে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন সৌদি আরব ফেরত জাহিদুল ইসলাম (২৮)। গত শুক্রবার রাতে বাড়ির পাশে দোকানে বসা অবস্থায় ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত তাঁকে ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়।

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে, দুর্বৃত্তদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ ছিল। নিহতের পরিবারের দাবি, জাহিদুলের কোনো শত্রুতা ছিল না।

চট্টগ্রামে চাচাতো ভাইয়ের হাতে কিশোরী খুন : ফটিকছড়িতে চা শ্রমিক সুপ্তা মাজিকে (১৫) বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তার চাচাতো ভাই রতন দাশ (৩৭)।

গতকাল ভোরে উদালিয়া চা-বাগানে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জেরে রতন তাকে হত্যা করেছেন। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, সেলাইকাজ শেখা নিয়ে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

মেলান্দহে জমি নিয়ে বিরোধে হামলায় একজন নিহত : জামালপুরের মেলান্দহে জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় জিয়াউল হক (৫৫) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাঙ্গালিয়া এলাকায় এই হামলায় আরো আটজন আহত হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, বিরোধপূর্ণ জমিতে বাঁশ কাটতে গেলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে জিয়াউল হক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে গৃহবধূ খুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে খালেদা বেগম শুকমন (২৬) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন।

গতকাল সকালে চাচাতো ভাইয়েরা হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করলে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর মা, বাবা ও বোন। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে।

কালকিনিতে নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ পাটক্ষেতে

মাদারীপুরের কালকিনিতে নিখোঁজের এক দিন পর আব্দুল জলিল সিকদার (৭০) নামের এক বৃদ্ধের মরদেহ পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। গতকাল সকালে স্থানীয়রা তাঁর মরদেহ খুঁজে পায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এসব ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তদন্ত চলমান এবং মামলার প্রক্রিয়া চলছে। সামাজিক ও পারিবারিক বিরোধ, জমি নিয়ে বিবাদ এবং অপরাধপ্রবণ গোষ্ঠীগত সংঘর্ষ এখন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অভয়নগরে মাছ কাটা শ্রমিকের ঝুলন্ত লাশ

যশোরের অভয়নগরে ইমরান খাঁ (১৮) নামের এক মাছ কাটা শ্রমিকের অর্ধগলিত ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গতকাল বিকেলে নওয়াপাড়া মাছবাজার এলাকার একটি টিনের ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, তাঁকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড, তা নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের অপেক্ষা করা হচ্ছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ