পাহাড়ধসে গত এক যুগে আড়াই শতাধিক লোকের প্রাণহানি দেখেছে কক্সবাজার। দুই দিন আগে পাঁচ রোহিঙ্গাসহ ১২ জন একইভাবে মারা গেছে, তার মধ্যে পাঁচটি শিশু রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছে, বর্ষাকালে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটলেও এ সময়েই বেশি পাহাড় কাটা হয়। মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পাহাড় কাটার ‘যন্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
কক্সবাজারে বৃষ্টির সঙ্গে বাড়ে পাহাড় কাটা
- ৩০ হাজার পরিবারের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস
তোফায়েল আহমদ, কক্সবাজার

কক্সবাজার শহর ও শহরতলির পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। অথচ এখনো অনেক এলাকায় নির্বিচার পাহাড় কাটা চলছে। করোনার কারণে জারি করা লকডাউনও পাহাড় কাটার জন্য ‘আশীর্বাদ’ হয়ে এসেছে।
শীত ও বর্ষাকালেই বেশি পাহাড় কাটা হয়।
কক্সবাজারের সচেতন মহলের মতে, ২০১৭ সালে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা আসার পর থেকে কক্সাবাজার জেলাজুড়ে পাহাড় কাটার মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া-টেকনাফজুড়ে পাহাড়ি বনভূমিতে লাখ লাখ রোহিঙ্গার জন্য ৩৪টি শিবির করতে গিয়ে কমপক্ষে ১০ হাজার একর পাহাড়ি ভূমি উজাড় করা হয়। এতে স্থানীয় লোকজনও যুক্তি পেয়ে গেছে। তারা বলছে, রোহিঙ্গাদের জন্য যদি পাহাড় কাটা ‘জায়েজ’ হয়, তাহলে তারা কাটলে দোষ হবে কেন?
এক যুগে আড়াই শতাধিক প্রাণহানি : কক্সবাজারে গত এক যুগে পাহাড়ধসে ছয় সেনা সদস্যসহ আড়াই শতাধিক লোকের প্রাণহানির তথ্য দিয়েছেন কক্সবাজারের পরিবেশবাদী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলসের নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল মজিদ।
ঝুঁকিপূর্ণ বসতি, তবু পাহাড় কাটা চলছে : কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী, খুরুস্কুল, মহেশখালী, রামু, টেকনাফ ও উখিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতির সংখ্যা গত তিন বছরে দ্বিগুণ বেড়েছে। জেলা শহর ও শহরতলির পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করছে। কিন্তু লাইটহাউস, সৈকতপাড়া, সার্কিট হাউসসংলগ্ন এলাকা, মোহাজেরপাড়া, দক্ষিণ ঘোনারপাড়া, বাদশাঘোনা, বৈদ্যঘোনা, মধ্যম ঘোনারপাড়া, পাহাড়তলী, কলাতলী আদর্শগ্রাম, ঝরিঝরিকুয়া, সদর উপজেলা কার্যালয় সংলগ্ন ও লিংক রোড পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় কাটা চলছেই।
রোহিঙ্গারাই পাহাড় কাটার ‘যন্ত্র’ : শহরের একাধিক স্থানে পাহাড় কাটায় নেতৃত্ব দিচ্ছে রোহিঙ্গারা। তারাই শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। স্থানীয় লোকজন আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গাদের দৈনিক মজুরির চুক্তিতে পাহাড় কাটার কাজে লাগায়। জেল-জরিমানাকে স্থানীয় দিনমজুররা বাড়তি ঝামেলা মনে করে পাহাড় কাটার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে আগ্রহী হন না। তাই রোহিঙ্গাদের পাহাড় কাটার কাজে লাগানো হয়। এ ছাড়া স্থানীয় শ্রমিকদের চেয়ে রোহিঙ্গাদের মজুরিও দিতে হয় কম।
এ ছাড়া রোহিঙ্গারা নিজেরাই এখন পাহাড় কেটে বসতি গড়ে তুলছে। শহরতলির কয়েকটি এলাকায়ই রোহিঙ্গাদের শতভাগ বসতি হয়ে গেছে। শহরের পাহাড়তলী, সিরাজের ঘোনা, ইসলামপুর, শাহনুরনগর, হালিমাপাড়া, ইসুলুঘোনাসহ বেশ কিছু স্থানে রোহিঙ্গারা বেপরোয়াভাবে পাহাড় কাটছে।
কক্সবাজার পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাস্তবে নতুন রোহিঙ্গার চেয়ে পুরনো রোহিঙ্গারাই এ জনপদের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরনো রোহিঙ্গারা এখানকার সব কিছু সম্পর্কে জানে বলে তারা সহজেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে বেশি জড়ায়।’
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু কালের কণ্ঠকে বলেন, পাহাড়ি অঞ্চল হিসেবে কক্সবাজার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিবছরই বিপদ দেখা দিলেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তৎপর হয়ে ওঠে। এরপর কোনো খবর থাকে না।
কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা : কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির কালের কণ্ঠকে জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বসতিসহ পাহাড় দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তোহিদুল ইসলাম জানান, তাঁর এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ২৫টি পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের নির্দেশে কক্সবাজার শহর ও পাহাড়ি এলাকায় মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক বলেন, লকডাউন-পরবর্তী সময়ে জেলাব্যাপী পাহাড় কাটার ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফোরকান আহমদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসন, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পুলিশ বিভাগ, পৌরসভা, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছিল। কমিটি গঠনের পর কার্যক্রম ছিল প্রশংসনীয়। কিন্তু কমিটির কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে নাগরিকরা সমস্যা থেকে রেহাই পায় না।’
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাহাড় দখল ও পাহাড়ে বসবাস ঠেকাতে সমন্বিতভাবে কাজ করার ওপর জোর দেন তিনি।
সম্পর্কিত খবর

তৃতীয় জয়

শান্তি মার্দির (জার্সি নং-২০) হ্যাটট্রিকে গতকাল অনূর্ধ্ব-২০ সাফে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আসরে স্বাগতিকদের এটি টানা তৃতীয় জয়। ছবি : বাফুফে
।
বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক

বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন আয়কর ও পাঁচজন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা। এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করেন।
আদেশে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আয়কর কর্মকর্তারা হলেন মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা; মাসুমা খাতুন, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২; মুরাদ আহমেদ, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫; মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার, কুষ্টিয়া; মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী; আশরাফুল আলম প্রধান, যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার; শিহাবুল ইসলাম, উপকর কমিশনার, খুলনা; নুশরাত জাহান, উপকর কমিশনার, রংপুর এবং ইমাম তৌহিদ হাসান, উপকর কমিশনার, কুমিল্লা।
কাস্টমস বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর; সিফাত-ই-মরিয়ম, অতিরিক্ত কমিশনার; মো. শাহাদাত জামিল, দ্বিতীয় সচিব, এনবিআর; শফিউল বশর, রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সবুজ মিয়া, রাজস্ব কর্মকর্তা।
গত জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে ‘যৌক্তিক সংস্কারের’ দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের পর শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
এরই মধ্যে তিনজন এনবিআর সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এনবিআরের আরো দুই সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।
দুদক সূত্র জানায়, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

ছাত্রদলের আলোচনাসভায় বক্তারা
গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘গণ-অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন’ শীর্ষক এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ছাত্রদল, ডান-বাম ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
আলোচনাসভার প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আন্দোলনের মূলে ছিল ছাত্রসমাজের চেতনা।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো উল্লেখ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে এবং বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, কেননা মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘মিটফোর্ডের ঘটনার জেরে একটি গুপ্ত সংগঠন রাজনৈতিক ইন্ধন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বুয়েট ও চুয়েটে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাদের নিয়ে নোংরা স্লোগান দিয়েছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ‘জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে শহীদ পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। অথচ আমরা বিচার নিশ্চিত না করে বিভাজনের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছি।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী মুক্তা বাড়ই বলেন, “আজ রাজাকারদের পুনর্বাসন ও নরমালাইজেশন শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে গোটা দেশে ‘মবতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে।”
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘ছাত্রদলের সহযোদ্ধারা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। ১৫ জুলাই একাত্তর হলে প্রথম হামলায়ও ছাত্রদলের ভাইয়েরা আহত হয়েছিলেন। এখানে এককভাবে কোনো সংগঠনের কৃতিত্ব দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, ‘এই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব শহীদদের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমাদের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।’
আলোচনাসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের দপ্তর সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুভাশিষ চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সাইদুল হক নিশান, ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসু ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার—সবাই ছাত্ররাজনীতির মধ্যে বিভাজন অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করার আহবান জানান।

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ১৩১ জনকে আটকে দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মূলত ‘শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায়’ কারণ দেখিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।
দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানিয়েছে, ওই ১৩১ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯৬ জন বাংলাদেশের নাগরিক।
গত শুক্রবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালে মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির অভিযানে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়।
দ্য স্টারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৩০০ জনের বেশি যাত্রীর কাগজপত্র যাচাই করে ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘৯৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ৩০ জন পাকিস্তানি পুরুষ ও পাঁচজন ইন্দোনেশীয় নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ত পূরণে ঘাটতি পাওয়া গেছে।’
শর্ত পূরণ না হওয়া বলতে ‘সন্দেহজনক’ হোটেল বুকিং, ইমিগ্রেশন কাউন্টারে হাজির না হওয়া এবং পর্যাপ্ত অর্থ সঙ্গে না রাখার মতো কারণ দেখানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সাধারণত ভ্রমণকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে। কেউ যদি বলে যে সে এক মাস থাকবে, কিন্তু সঙ্গে মাত্র ৫০০ রিঙ্গিত আনে, তাহলে তার বক্তব্যে সন্দেহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।’
মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো পূরণ করেই যেন আগ্রহীরা ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়, বিবৃতিতে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি বলছে, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তিকে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা, আর্থিক সামর্থ্য এবং থাকা-খাওয়ার নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।
এদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, যাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, নিশ্চয়ই তাঁদের ট্যুরিস্ট হিসেবে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণে ব্যর্থ মনে করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।