ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

দীর্ঘদিন বন্ধের সুযোগে স্কুল মাঠে গরুর হাট

  • পরিচালনা পর্ষদের যোগসাজশেই বসছে এসব হাট । অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবে মাউশি
শরীফুল আলম সুমন
শরীফুল আলম সুমন
শেয়ার
দীর্ঘদিন বন্ধের সুযোগে স্কুল মাঠে গরুর হাট

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে প্রায় দেড় বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই সুযোগে ঈদুল আজহা উপলক্ষে একাধিক স্কুল মাঠেই বসানো হয়েছে গরুর হাট। আগে এতসংখ্যক স্কুলের মাঠে গরুর হাট বসেনি বলে জানা গেছে।

জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সমঝোতায় এসব হাট বসছে।

খোদ রাজধানীর কয়েকটি স্কুলেও বসানো হয়েছে এই হাট। অথচ স্কুল আঙিনায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যতীত অন্য কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না বলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠেও গরুর হাট বসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিছু গরু স্কুল মাঠে ঢোকানোর পর গত শুক্রবার রাতে অভিভাবকদের হস্তক্ষেপে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী মাঠ খালি করে।

স্কুলটির অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মজিদ সুজন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা শুক্রবার সন্ধ্যায় গিয়ে স্কুল মাঠে প্রায় ৩০০ গরু ও অর্ধশতাধিক ছাগল দেখতে পেয়েছি। ফখরুদ্দিন বিরিয়ানি এবং স্কুলের কিছু কর্মচারী এখানে গরুর হাট বসাতে চেয়েছিলেন। আমরা জেনেছি, এই গরুর হাট বসানোর পেছনে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। অধ্যক্ষ নিজে স্কুল কম্পাউন্ডে থাকেন, তিনি কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারেন না।

ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুন নাহার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ফখরুদ্দিন বিরিয়ানি স্কুলের একাংশ ভাড়া নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারাই তাদের ভাড়া নেওয়া অংশে গরু বিক্রির চেষ্টা করছিল, ব্যানারও টানিয়েছিল। জানার সঙ্গে সঙ্গেই রমনা থানাকে জানিয়েছি এবং জিডি করেছি। এ ছাড়া স্কুলের শিক্ষকরা কয়েকটা গরু কিনে দেখভালের জন্য কর্মচারীদের দিয়েছিলেন। সেগুলোও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজের পাশে খোলা জায়গায় গরুর হাটের ইজারা দিয়েছে, কিন্তু সেই গরুর হাট গিয়ে পৌঁছেছে ধলপুরে সিটি করপোরেশন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে।

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় ১৯৩৫ সালে স্থাপিত হয়েছে বকশীগঞ্জ এনএম উচ্চ বিদ্যালয়। বকশীগঞ্জ উপজেলায় ইজারা দেওয়া পাঁচটি হাট থাকলেও এই স্কুল মাঠে ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে যোগসাজশে বৃহস্পতিবার থেকে অবৈধভাবে বসানো হয়েছে গরুর হাট। এতে স্কুল কম্পাউন্ডে থাকা মুক্তিযুদ্ধকালীন গণকবর, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ, মসজিদ, মুক্তমঞ্চ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

জানা যায়, বর্তমানে স্কুল বন্ধ থাকলেও চলছে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া-নেওয়া। এতে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে স্কুলে আসতে হচ্ছে, ক্লাসরুমে বসতে হচ্ছে। কিন্তু গরুর হাট বসানোয় সেই কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া হাট শেষ হয়ে গেলেও বর্জ্য কেউ পরিষ্কার করে না, খানাখন্দে ভরে যায় স্কুল মাঠ। এতে ঈদের পরও কয়েক মাস প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক মো. বেলাল হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোনো অবস্থায়ই স্কুল প্রাঙ্গণে শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে অন্য কিছু করা যাবে না। আর গরুর হাট বসানোর তো প্রশ্নই আসে না। আমরা এ ব্যাপারে খোঁজ নেব। এ ছাড়া যদি কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বান্দরবান পৌর এলাকার বালাঘাটা বিলকিছ বেগম উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেটের বিয়ানীবাজারে পিএইচজি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কু?ড়িগ্রা?মের উ?লিপু?রে দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, কুমিল্লার চান্দিনায় নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ধেরেরা উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রীমন্তপুর উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠ, নরসিংদীর মনোহরদীতে ছাদত আলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এবং হাতিরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গরুর হাট বসেছে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১৪টি হাটের মধ্যে ছয়টিই বসেছে বিভিন্ন স্কুলের মাঠে। সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গরুর হাট বসানো হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফয়জুর রহমান বলেন, ‘স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মহোদয় পৌর কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল মাঠে হাট বসানোর অনুমোদন দিয়েছেন।’ তবে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হাটের ইজারা দেয় পৌরসভা। পৌর কর্তৃপক্ষই স্কুল কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে হাটটি বসিয়েছে।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আছিম শাহাবুদ্দীন ডিগ্রি কলেজ, পুটিজানা শিবগঞ্জ আল আমিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কোরবানির পশুর বিশাল হাট বসেছে। শাহাবুদ্দীন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মকবুল হোসাইন বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন  কলেজের জমি দিয়েছেন, তাঁরা হাট বসাবে, আমি না করতে পারি?’ তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল ছিদ্দিক বলেন, ‘অধ্যক্ষকে নিষেধ করেছি কলেজ মাঠে যেন কোরবানির পশুর হাট না বসে।’ [প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা।]

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তৃতীয় জয়

শেয়ার
তৃতীয় জয়

শান্তি মার্দির (জার্সি নং-২০) হ্যাটট্রিকে গতকাল অনূর্ধ্ব-২০ সাফে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আসরে স্বাগতিকদের এটি টানা তৃতীয় জয়। ছবি : বাফুফে

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন আয়কর ও পাঁচজন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা। এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করেন।

আদেশে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।

বিষয়টি তদন্ত করে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময়ে তাঁরা বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আয়কর কর্মকর্তারা হলেন মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা; মাসুমা খাতুন, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২; মুরাদ আহমেদ, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫; মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার, কুষ্টিয়া; মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী; আশরাফুল আলম প্রধান, যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার; শিহাবুল ইসলাম, উপকর কমিশনার, খুলনা; নুশরাত জাহান, উপকর কমিশনার, রংপুর এবং ইমাম তৌহিদ হাসান, উপকর কমিশনার, কুমিল্লা।

কাস্টমস বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর; সিফাত-ই-মরিয়ম, অতিরিক্ত কমিশনার; মো. শাহাদাত জামিল, দ্বিতীয় সচিব, এনবিআর; শফিউল বশর, রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সবুজ মিয়া, রাজস্ব কর্মকর্তা।

গত জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের পর শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

এরই মধ্যে তিনজন এনবিআর সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এনবিআরের আরো দুই সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।

দুদক সূত্র জানায়, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

মন্তব্য
ছাত্রদলের আলোচনাসভায় বক্তারা

গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে গণ-অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন শীর্ষক এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ছাত্রদল, ডান-বাম ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আলোচনাসভার প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্দোলনের মূলে ছিল ছাত্রসমাজের চেতনা।

আজ সেই চেতনাকে বিকৃত করার চেষ্টা হচ্ছে, যা আত্মত্যাগের অবমূল্যায়ন। তিনি আরো বলেন, যে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য ১৯৭১ সালে লাখো শহীদ জীবন দিয়েছিলেন, তা ভুলে গিয়ে শেখ মুজিব চার বছরের মাথায় গণতন্ত্রকেই ভ্যানিশ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলেন, তাঁর কন্যা (শেখ হাসিনা) তো ডাবল ফ্যাসিস্ট হয়েছেন। তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কখনো প্রত্যাবর্তন করুক, তা বাংলাদেশের মানুষ চায় না।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো উল্লেখ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে এবং বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, কেননা মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনার জেরে একটি গুপ্ত সংগঠন রাজনৈতিক ইন্ধন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বুয়েট ও চুয়েটে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাদের নিয়ে নোংরা স্লোগান দিয়েছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, জামায়াতের এক নায়েবে আমিরের ভাগ্নি জামাইয়ের নেতৃত্বে তারেক রহমানবিরোধী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সমালোচনা গ্রহণ করি, তবে মনে রাখা উচিতআমাদেরও সহ্যের সীমা আছে। একাত্তর ও চব্বিশের পরাজিত শক্তি ছাড়া বাকি সবার সঙ্গে আমাদের ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে শহীদ পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। অথচ আমরা বিচার নিশ্চিত না করে বিভাজনের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছি।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী মুক্তা বাড়ই বলেন, আজ রাজাকারদের পুনর্বাসন ও নরমালাইজেশন শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে গোটা দেশে মবতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ছাত্রদলের সহযোদ্ধারা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। ১৫ জুলাই একাত্তর হলে প্রথম হামলায়ও ছাত্রদলের ভাইয়েরা আহত হয়েছিলেন। এখানে এককভাবে কোনো সংগঠনের কৃতিত্ব দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, এই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব শহীদদের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমাদের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনাসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের দপ্তর সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুভাশিষ চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সাইদুল হক নিশান, ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসু ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদারসবাই ছাত্ররাজনীতির মধ্যে বিভাজন অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করার আহবান জানান।

মন্তব্য

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ১৩১ জনকে আটকে দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মূলত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কারণ দেখিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।

দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানিয়েছে, ওই ১৩১ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯৬ জন বাংলাদেশের নাগরিক।

গত শুক্রবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালে মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির অভিযানে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়।

দ্য স্টারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৩০০ জনের বেশি যাত্রীর কাগজপত্র যাচাই করে ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ৯৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ৩০ জন পাকিস্তানি পুরুষ ও পাঁচজন ইন্দোনেশীয় নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ত পূরণে ঘাটতি পাওয়া গেছে।

শর্ত পূরণ না হওয়া বলতে সন্দেহজনক হোটেল বুকিং, ইমিগ্রেশন কাউন্টারে হাজির না হওয়া এবং পর্যাপ্ত অর্থ সঙ্গে না রাখার মতো কারণ দেখানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সাধারণত ভ্রমণকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে। কেউ যদি বলে যে সে এক মাস থাকবে, কিন্তু সঙ্গে মাত্র ৫০০ রিঙ্গিত আনে, তাহলে তার বক্তব্যে সন্দেহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো পূরণ করেই যেন আগ্রহীরা ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়, বিবৃতিতে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি বলছে, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তিকে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা, আর্থিক সামর্থ্য এবং থাকা-খাওয়ার নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।

এদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, যাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, নিশ্চয়ই তাঁদের ট্যুরিস্ট হিসেবে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণে ব্যর্থ মনে করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ