নেপালে করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ ছিল গত বছর অক্টোবর মাসে। সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ৪৭৩ জন শনাক্ত ছিল ২১ অক্টোবর। এর পরই পর্বতের ঢালের মতোই নিচে নামতে থাকে নেপালের করোনার প্রথম ঢেউ। এ বছরের মার্চে এসে দৈনিক শনাক্ত ১০০ জনের নিচে নেমে যায়।
নেপালের পরিণতিতে শঙ্কা বাংলাদেশে
- ► ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, আসাম ও বিহারেও নতুন করে সংক্রমণ, মৃত্যু বাড়তে থাকায় দেশে উৎকণ্ঠা বাড়ছে
► বন্ধ সীমান্ত দিয়েও প্রতিদিন দেশে ঢুকছে শত শত মানুষ, ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ঢুকে পড়ার ঝুঁকি
নিজস্ব প্রতিবেদক

কাছের দেশটিতে শনাক্ত ১০০ জনের নিচে নেমে গিয়েও কেন মাত্র দু-তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আবার তা আগের চেয়েও দ্রুতগতিতে চূড়ায় উঠছে, তা নিয়ে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ভারত থেকে যাতে দেশে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে, সে জন্য ২৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশও ভারতের সঙ্গে স্থলপথে যাতায়াত বন্ধ করেছে। তবে বিভিন্ন পণ্যবাহী পরিবহনে আমদানি-রপ্তানি চালু থাকায় পরিবহন শ্রমিকদের মাধ্যমে দেশে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, নেপালে এমন বিপর্যয় প্রতিবেশী দেশ ভারতের সংক্রমণের প্রভাব। করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট অবাধে নেপালে ছাড়ানোর সুযোগ পেয়েছে বলেই এমন দুরবস্থার কবলে পড়েছে দেশটি। এ ক্ষেত্রে নেপাল থেকে ভারতে অবাধে যাতায়াত, ভারতে কাজ করা নেপালি শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার বিষয়গুলোও রয়েছে। ড. মুশতাক বলেন, ‘নেপালের বিষয়টি আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত। যদিও আমাদের সীমান্ত এখন কড়াকড়িভাবেই বন্ধ করা আছে। যারা ফিরছে তাদের কোয়ারেন্টিনও যথাযথভাবেই হচ্ছে। তাদের কারো মাধ্যমে দেশে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে পাওয়া গেলে তা অবাক করার বিষয় হবে না। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে দেশে ভারতের সঙ্গে ১৮টি স্থলবন্দর দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে কোনোটি পুরোপুরি বন্ধ, কোনোটিতে শুধু পণ্য পরিবহনের সুযোগ রাখা হয়েছে, আবার কোনো কোনোটি দিয়ে জরুরি কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশিরা দেশে আসার সুযোগ পাচ্ছে। এই সুযোগ নিয়ে প্রতিদিনই শত শত মানুষ ভারত থেকে দেশে ঢুকছে। এ সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত ১ মে থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ভারত থেকে স্থলপথে দেশে ঢুকেছে দুই হাজার ৩২২ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৬৯ জন এসেছে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায়। বৈধভাবে আসা এই যাত্রীরা ছাড়াও অবৈধভাবে বিভিন্ন সীমান্ত হয়ে প্রতিদিনই আরো কিছু মানুষ দেশে ঢুকছে বলে কালের কণ্ঠ’র স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানান।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর কালের কণ্ঠকে বলেন, যাঁরা অসতর্কভাবে চলাফেরা করেন, তাঁদের নেপালের পরিস্থিতি দেখা দরকার। ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ঢুকেছে বলে হয়তো নেপালে করোনার বিস্তার দ্রুত ঘটেছে। এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত ভারতীয় ভেরিয়েন্ট এসেছে কি না তা আমাদের জানা নেই। তবে ভেরিয়েন্ট নিয়ে সাধারণ মানুষের বেশি ভাবনার দরকার নেই; এগুলো গবেষকরা ভাবলেই চলবে। সাধারণ মানুষের কেবল তিনটি কাজ করলেই সুরক্ষা মিলবে—সেটা যে ভেরিয়েন্টের করোনাভাইরাসই হোক না কেন। এই কাজ তিনটি হচ্ছে সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং টিকা নেওয়া। এই তিনটি যেকোনো ভেরিয়েন্ট থেকেই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সুরক্ষা পদ্ধতি বলে প্রমাণিত।’
ড. আলমগীর বলেন, ‘যেকোনো দেশেই যেকোনো সময় নিত্যনতুন ভেরিয়েন্ট তৈরি হতে পারে। আমাদের দেশেও তো মিউটেশন হচ্ছে। এর মধ্যে যেকোনো সময় কোনো একটি মিউটেশন হয়তো ভারতীয় বা আফ্রিকান ভেরিয়েন্টের চেয়ে ভয়ানক হতে পারে। তবে সতর্কতার জন্য অবশ্যই এক দেশ থেকে যাতে অন্য দেশে কোনো ভেরিয়েন্ট না ছড়াতে পারে, সে ব্যবস্থা রাখতেই হবে; যেমনটা আমাদের দেশে সীমান্ত বন্ধ রয়েছে আর আকাশপথও সীমিত করা হয়েছে।’
আমাদের বেনাপোল প্রতিনিধি জানান, চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যবসা, কূটনীতি, সাংবাদিকতাসহ পেশাভিত্তিক ভিসায় ভারতে গিয়ে যেসব বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন, তাঁরা এখন বাংলাদেশ হাইকমিশনের বিশেষ অনুমতিপত্র নিয়ে দেশে ফিরে আসছেন। আসার পরই তাঁদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। কোয়ারেন্টিনে থাকা কিছু যাত্রী চিকিৎসা ভিসায় চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন।
প্রশাসন থেকে কঠোরভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন পালন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি মনিটর করছে। ভারত থেকে ফেরা যাত্রীদের পাসপোর্ট নিয়ে নেওয়া হচ্ছে, ১৪ দিন পর করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এলে পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
যশোর জেলা প্রশাসন ও বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ২৬ এপ্রিল থেকে স্থলবন্দর সাময়িক বন্ধ করার পর প্রথম দিনে ছয়জন দেশে ফেরে। এরপর এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার যাত্রী দেশে ফিরেছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ভিসার মেয়াদ ১৫ দিনের কম থাকা যাত্রীরা দেশে ফিরতে পারবে। কিন্তু যারা দেশে ফিরেছে, তাদের বেশির ভাগের ভিসার মেয়াদ ১৫ দিনের বেশি রয়েছে। তাই বেশিসংখ্যক যাত্রীকে কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ কঠিন অবস্থায় পড়েছে।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, ২৬ এপ্রিল থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল বন্দরের জন্য ১৪ নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনার পর এখন পণ্যবাহী ট্রাকের ভারতীয়সহ বিদেশি চালকরা মাস্ক পরে আলাদা শেডে অবস্থান করেন। নির্ধারিত টয়লেট ব্যবহার এবং নির্ধারিত দোকানে মালপত্র ক্রয় করছেন। বন্দর এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন্দরের শ্রমিকদের আলাদা পোশাক দেওয়া হয়েছে এবং বন্দরসংশ্লিষ্ট অন্যরা পরিচয়পত্র ব্যবহার করছেন।
সম্পর্কিত খবর

বিজিবি মোতায়েন


পালিয়েছেন ঠিকাদাররা ইতিহাসের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন
এম আর মাসফি

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নেমে এসেছে ইতিহাসের সবচেয়ে নিচে। সদ্য শেষ হওয়া এই অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার হয়েছে মাত্র ৬৭.৮৫ শতাংশ, যা গত দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এই চিত্র।
অর্থবছরের শুরু থেকেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি ছিল মন্থর।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অযাচিত ব্যয় বন্ধে কঠোরতা আরোপ প্রকল্প যাচাই-বাছাই ও অপ্রয়োজনীয় খাতগুলোতে অর্থছাড় বন্ধ বা সীমিত করে দেওয়া হয়। এর ফলে একদিকে উন্নয়ন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে এলেও অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে শ্লথ হয়ে পড়ে।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে এক হাজার ৪৬৮টি প্রকল্প ছিল এডিপির আওতায়।
অর্থবছরের শেষ মাস জুনেও দেখা গেছে ব্যয় কমে যাওয়ার প্রবণতা। এ মাসে খরচ হয়েছে ৪২ হাজার ৪৪৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা সংশোধিত বরাদ্দের মাত্র ১৮.৭৭ শতাংশ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় ধস দেখা গেছে বিদেশি সহায়তানির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে। সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি ঋণ ছিল ৮১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬৫.৫৩ শতাংশ। এই হারও ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এমনকি কভিড মহামারির মধ্যেও এই খাতে ব্যয় হয়েছিল ৯২ শতাংশের বেশি।
আইএমইডির ওয়েবসাইট বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০০৪-০৫ অর্থবছর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোনো অর্থবছরেই এডিপি বাস্তবায়নের হার ৮০ শতাংশের নিচে নামেনি। করোনাকালে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাস্তবায়নের হার ছিল ৮০.৩৯ শতাংশ, যা এবারকার তুলনায় ১২.৫৪ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৯৪.৬৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৯৪.০২ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯২.৭২ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯২.৭৪ শতাংশ এবং ২০১১-১২, ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও ৯৩ শতাংশের ওপরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। এককথায়, কোনো অর্থবছরেই বর্তমান অর্থবছরের মতো এত খারাপ হয়নি।
এডিপি বাস্তবায়নে খাতভিত্তিক চিত্রেও ব্যাপক বৈষম্য লক্ষ করা গেছে। কিছু কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য খাত। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বাস্তবায়ন হার ছিল মাত্র ১৫.৩৬ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খরচ করেছে ২১.৭৪ শতাংশ। এ ছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয় ৩৭.৪৬ শতাংশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৩২.০২ শতাংশ, জননিরাপত্তা বিভাগ ৩৯.৫৫ শতাংশ এবং সরকারি কর্ম কমিশন ৩৭.৪৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।
অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৯৯.৫৪ শতাংশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ৯৮.১০ শতাংশ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ৯৮ শতাংশ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৯৪.৭৭ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় ৯১.০৭ শতাংশ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৯১.৫৮ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে। সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, তারা তাদের বরাদ্দকৃত ৩৬ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় করেছে ৩০ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা ৮৪.৫০ শতাংশ।
এ বিষয়ে আইএমইডির সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অন্য অর্থবছরগুলোর তুলনায় এবারের এডিপি বাস্তবায়ন কম হয়েছে, এটা ঠিক। তবে সরাসরি তুলনা সঠিক হবে না, কারণ গত অর্থবছরের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। মূলত রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাবে এমনটি হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘পরে অন্তর্বর্তী সরকার অযাচিত অর্থ খরচে কঠোর হয়। এ কারণে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’
বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বাজেট বরাদ্দ দিলেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পরিকল্পনা, দক্ষতা ও প্রশাসনিক সক্ষমতা—এই তিনের সমন্বয় না হলে এডিপি বার্ষিক টার্গেটের নিচেই থেকে যাবে। প্রতিবছর এডিপি বাস্তবায়নে গতিশীলতা আনতে সরকারের তরফ থেকে চাপ দেওয়া হলেও বাস্তব ফলাফল দৃশ্যমান নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়ানো, দীর্ঘসূত্রতা কমানো এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর জবাবদিহির আওতায় আনাই হতে পারে ভবিষ্যতের বাস্তবায়ন সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির
কোনো মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা মানব না
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

নির্বাচন বিলম্বিত হলে জটিলতা সৃষ্টি হবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘তবে আমরা কোনো প্রি-ম্যাচিউর ডেলিভারি চাচ্ছি না। যে বাচ্চা ছয় মাসের মাথায় জন্ম নেয় তাকে ইনকিউবেটরে রাখতে হয়। ওই বাচ্চা সারা জীবন দুর্বল থাকে। আমরা এ রকম কোনো দুর্বল ও ইমম্যাচিউর গণতন্ত্র ও নির্বাচন চাচ্ছি না।
গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তি ও সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘অবশ্যই দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থানে আনতে আমাদের একটি কার্যকর নির্বাচন লাগবে। আমরা আশা করছি, আগামী বছরের প্রথম অংশে এ নির্বাচন হবে। কিন্তু নির্বাচন কেমন চাই? আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য—অতীতের বস্তাপচা ধারার কোনো নির্বাচন আমরা চাই না এবং মেনে নেব না।
স্থানীয় নির্বাচন আগে দেওয়ার বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলেছি দুর্ভোগ কমানোর জন্য। বহু জায়গায় জনপ্রতিনিধি নেই—জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই গণ-অভ্যুত্থান আমরা একা করিনি। আমাদের প্রবাসীরাও এতে সমান কৃতিত্বের দাবিদার। তাঁদের ভোটাধিকার কেন থাকবে না? প্রবাসীদের ভোটাধিকার নেই বলে সরকারও তাঁদের গুরুত্ব দেয় না। তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয় কেবল এক জায়গায়—রেমিট্যান্স পাঠাতে বলে।’ আল্লাহর ইচ্ছায় আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জমিনের দায়িত্ব ও কৃতিত্ব বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।
তরুণদের কাজে লাগানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক দেশে ৪২ শতাংশের বেশি জনশক্তি রয়েছে, যাদের বয়স ৭০ বছরের বেশি। আমাদের দেশে ৩৫ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের সংখ্যা বেশি। এরাই একটি সমাজকে গড়ে দিতে পারে। এটি বিশাল একটি শক্তি আমাদের দেশের। আমাদের মাটির নিচে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন। মাটির ওপরেও দিয়েছেন, সমুদ্রের তলেও দিয়েছেন। কিন্তু এত সম্পদ দেওয়ার পরও কেন আমরা দেশটা গড়তে পারলাম না? উত্তর একটিই—চারিত্রিক সম্পদের অভাব।’ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যাঁরাই যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বে গেছেন তাঁরা প্রথমে চিন্তা করেছেন—আমার সুবিধাটা কোথায়? এরপর চিন্তা করেছেন—আমার দলের সুবিধা কোথায়? এই দুই সুবিধা নিতে গিয়ে তারা হাঁপিয়ে উঠেছেন। এরপর জনগণের দিকে ভালোভাবে ফিরে তাকানোর সময় তারা পাননি।’ তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘এরা দুদককে ভয় পায়, আল্লাহকে ভয় পায় না। যদি তারা আল্লাহকে ভয় পেত, তাহলে জনগণের সম্পদে হাত দিত না।’

মমতাময়ী শিক্ষিকা মেহরিনের প্রশংসা করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শোক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত ও হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। পাশাপাশি প্রশংসা করেছেন ২০ শিশুকে বাঁচানো শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর।
গতকাল বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন আনোয়ার ইব্রাহিম।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ঢাকার স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা শোনার পর বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার খারাপ লাগছে।