করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত পুঁজিবাজার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। করোনার কারণে পুঁজিবাজার নিয়ে যে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল, তা কাটতে শুরু করায় আশা দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। গতকাল রবিবার পুঁজিবাজারে লেনদেন এক হাজার ১২৮ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আর মূল্যসূচকের প্রায় ২০০ পয়েন্ট বৃদ্ধি চমক দেখিয়েছে।
আশা জাগাচ্ছে পুঁজিবাজার
- ► লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়াল
► মূল্যসূচক বেড়েছে ২০০ পয়েন্ট
► এক দিনে বাজার মূলধন ফিরল সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা
রফিকুল ইসলাম

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, পুঁজিবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা কেটে যাচ্ছে। বিশেষ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং ভালো কম্পানির আইপিও আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কড়া অবস্থান এই ক্ষেত্রে বড় সহায়ক হয়েছে। নতুন নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসায় লেনদেনে বড় উল্লম্ফন হয়েছে।
চলতি বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়।
পুঁজিবাজারের পতন ঠেকাতে তড়িঘড়ি করে ১৮ মার্চ শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন সীমা (ফ্লোর প্রাইস) বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি); যদিও দাম বেঁধে দেওয়ার পর শেয়ার লেনদেন হয়েছে মাত্র কয়েক দিন। এরপর সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে টানা ৬৬ দিন বন্ধ থাকে পুঁজিবাজার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ ছুটির সময়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার শীর্ষ পদে বড় রদবদল হয়।
চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। একই সঙ্গে কমিশনার হিসেবে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো দুই অধ্যাপক।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূত্রে জানা যায়, বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার মধ্যে পড়া পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কঠোর অবস্থান, কম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের যথাক্রমে ২ ও ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে কঠোরতা ও আল্টিমেটাম, দুর্বল কম্পানির আইপিও বাতিল এবং বন্ড মার্কেট সচল করতে উদ্যোগী হয় কমিশন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পুঁজিবাজার গতিশীল করতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারীর আস্থা ফেরাতে কাজ করছে কমিশন। বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা পুঁজি বিনিয়োগ করে যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হন, সে বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে।’
স্বাভাবিক সময়ে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত পুঁজিবাজারে চার ঘণ্টা লেনদেন হয়। তবে মন্দাবস্থা কাটিতে ওঠার প্রাক্কালে পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনাবেচা করতে বিনিয়োগকারীর আগ্রহ দেখা দেওয়ায় লেনদেনের সময় আধাঘণ্টা বাড়িযেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষ। সময় বাড়ানোর পর গতকাল বর্ধিত সময় শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এতে পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনাবেচায় বড় চমক দেখা গেছে। শেয়ার কেনার চাপে মূল্যসূচকে বড় উত্থান হয়েছে। লেনদেনও এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ৮২ শতাংশ কম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর শেয়ারের দাম বাড়ায় এক দিনে পুঁজিবাজারে ১১ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা বাজার মূলধন ফিরেছে।
পুঁজিবাজারে বড় চমকের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকে আমানতের সুদের হার এখন অনেক কম। আমানতে ৬ শতাংশ ও ঋণে ৯ শতাংশ সুদহার কার্যকর হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে ঢুকছে। কারণ তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলো অন্তত ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। অবশ্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে আয় কম হলে লভ্যাংশ কম দেওয়া হয়। তবে অনেক তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও কম্পানি ১০ শতাংশের চেয়ে বেশি লভ্যাংশও দিয়ে থাকে।
চলতি আগস্ট মাসে পুঁজিবাজারে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এই সময়ে বাজার মূলধন বেড়েছে ১৯ হাজার ৪০১ কোটি টাকা। আর মূল্যসূচক বেড়েছে ৩৩০ পয়েন্ট। গত ৩০ জুলাই ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। গতকাল এই মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার ১৩৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান-উর রশীদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীরা আস্থা ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘদিন মূলধন খোয়ানোর কারণে পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ব্যাংকিং খাতে সুদের হার কমে যাচ্ছে। এখন ব্যাংকের চেয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ অনেক বেশি সম্ভাবনাময়। দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করলে ভালো মুনাফা করতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা।
সম্পর্কিত খবর

শোভাযাত্রা

রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই কন্যারা রিকশা শোভাযাত্রার আয়োজন করেন। ছবি : কালের কণ্ঠ
।
রাতে ফেসবুক পোস্ট ভোরে মিলল ঢাবি শিক্ষার্থীর মরদেহ
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবনির্মিত রবীন্দ্র ভবনের নিচ থেকে সঞ্জু বারাইক (২৩) নামের এক শিক্ষার্থীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে।
পুলিশ ও হল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার ভোর পৌনে ৬টার দিকে রবীন্দ্র ভবনের নিচ থেকে সঞ্জু বারাইককে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
জগন্নাথ হলের স্টাফ মানিক কুমার দাস বলেন, ‘ভোরবেলা দেখি ভবনের নিচে একজন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে অন্য স্টাফদের সহযোগিতায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাঁকে মৃত বলে জানান।’
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মুনসুর বলেন, ‘রবীন্দ্র ভবনের পাশে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি।
ওসি আরো বলেন, ‘এ ঘটনায় আপাতত অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে রাত আড়াইটার দিকে সঞ্জুর নিজ ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে লেখা ছিল, ‘আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি, আমি দিনের পর দিন কাউকে ডিস্টার্ব করে গেছি, উল্টো মানুষকে দোষারোপ করা আমার একদম ঠিক হয়নি, আমি সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি দিনের পর দিন অন্যায় করেছি, নিজের দোষ ঢেকে অন্যজনকে দোষ দেওয়া আমার ঠিক হয়নি। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমার কারণে কারো কোনো ক্ষতি হলে সেই দায় একান্তই আমার, আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সঞ্জু মানসিকভাবে কিছুটা অস্থিরতায় ভুগছিলেন বলে সহপাঠীরা জানিয়েছে। দুই দিন ধরে সে হলে ছিল না। রবিবার ভোর ৪টার দিকে হলে ফিরে আসে, তবে কিছুক্ষণ পরই ছাদের দিকে চলে যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফরা তাকে ভবনের নিচ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন।’

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে বিকল্প প্রস্তাব
৭৬ আসনের উচ্চকক্ষ ও সরাসরি ভোট, এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রার্থী
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের স্বার্থে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, উচ্চকক্ষের আসনসংখ্যা হতে পারে ৭৬ এবং এসব আসনের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে। একই সঙ্গে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে বিরোধ থাকায় সেখানেও বিকল্প প্রস্তাব আনা হয়েছে। সেখানে সংরক্ষিত নারী আসন বাদ দিয়ে বিদ্যমান সংসদীয় আসনের নির্বাচনে দলগুলোকে এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের ১৩তম দিনে এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। আজ মঙ্গলবার আবারও আলোচনা চলবে। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া।
কমিশন সূত্র জানায়, সংসদের উচ্চকক্ষের নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলা ও প্রতিটি সিটি করপোরেশন এলাকা উচ্চকক্ষের একেকটি একেক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকা হিসেবে বিবেচিত বা চিহ্নিত হবে এবং প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকা থেকে সাধারণ ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে একজন করে উচ্চকক্ষের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। বর্তমানে দেশে ৬৪টি প্রশাসনিক জেলা ও ১২টি সিটি করপোরেশন রয়েছে বিধায় উচ্চকক্ষের আসনসংখ্যা হবে ৭৬। জাতীয় সংসদ (নিম্নকক্ষ) এবং উচ্চকক্ষের নির্বাচন একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষের নাম প্রস্তাব করা হয় সিনেট। রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকাংশই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে একমত হলেও উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনের বিষয়ে মতভেদ দেখা দেয়। যে কারণে নতুন এই প্রস্তাব আনা হয়েছে।
সংলাপ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সমাজের বিরাজমান বৈচিত্র্যকে প্রতিনিধিত্ব করতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু কী পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন হবে সে ব্যাপারে ঐকমত্য হওয়া যাচ্ছে না।
সংসদে নারীদের জন্য স্থায়ীভাবে ১০০ আসন করার ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন উল্লেখ করে কমিশনের সহসভাপতি বলেন, এ ক্ষেত্রেও পদ্ধতিগত প্রশ্ন এখনো রয়েছে। এ পদ্ধতি নির্ধারণে আমরা এখনো একমতের জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও নারী আসন বৃদ্ধির প্রশ্নে বিএনপি আগের অবস্থানে রয়েছে বলে জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, সংসদে নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাবে বিএনপি একমত। তবে ওই আসনগুলোতে নির্বাচন বিদ্যমান পদ্ধতিতে হতে হবে।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, আমরা উচ্চকক্ষের বিষয়ে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা চালুর পক্ষে। অধিকাংশ দল এ বিষয়ে একমত। নারী আসনের বিষয়েও আমরা ১০০ আসনে পিআর পদ্ধতির পক্ষে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করেছে কমিশন। আমরা এর বিরোধী। নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন হতে হবে। কমিশন এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারীদের মনোনয়ন বাধ্যবাধকতার কথা বলেছে। আমরা এটি সমর্থন করি। তবে এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। এ জন্য আরো সময় প্রয়োজন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, কমিশনের কর্মকাণ্ড সংগত মনে হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলো যেখানে দলের অভ্যন্তরে ৩০ শতাংশ নারীকে কমিটিতে রাখতে পারছে না, সেখানে ৩০ শতাংশ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার সামর্থ্য আছে বলে মনে করি না।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বর্তমান ৬৫ অনুচ্ছেদে সংরক্ষিত আসন চায় না কমিশন। আমরা বলেছি, সংরক্ষিত আসন ১০০ করতে। আর বর্তমান বাস্তবতায় ৩০ শতাংশ আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কঠিন বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, আমরা বলেছি এবার ৫ শতাংশ দেওয়া যেতে পারে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, কমিশন নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী সংরক্ষিত নারী আসন বাতিল ও ৩৩ আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা এই মুহূর্তে অসম্ভব।
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন সেলিম বলেন, সংরক্ষিত নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ দল একমত।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, নারীদের সংরক্ষিত আসন দরকার নেই; বরং তাদের নির্বাচিত হয়েই সংসদে আসা উচিত।
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নারীদের পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নারীদের আসনে সরাসরি নির্বাচন করতে হবে। তিনটি সাধারণ আসন মিলে একটি নারী আসনে ভোট হতে হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, নারীদের সরাসরি নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারলেই তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।

খুলনায় যুবদল নেতা হত্যা
আরো একজন তথ্যদাতা গ্রেপ্তার, কিলিং মিশনের তিনজন এখনো অধরা
খুলনা অফিস

খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আলাউদ্দিনকে (২২) গতকাল সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে রবিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাহবুবের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য খুনিদের কাছে সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
এদিকে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে কিলিং মিশনের যে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করছে, তাদের কেউ এখনো ধরা পড়েনি।
শনিবার রাতে প্রথমে গ্রেপ্তার করা সজল শেখ নামের চরমপন্থী সদস্য বর্তমানে পুলিশি রিমান্ডে রয়েছে। আজ মঙ্গলবার রিমান্ড শেষে তাঁকে আবার আদালতে তোলা হবে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কেএমপির দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী জানিয়েছেন।
যুবদল নেতা মাহবুবকে শুক্রবার দুপুরে দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা পশ্চিম পাড়ার নিজ বাড়ির সামনে তিন অস্ত্রধারী প্রথমে একাধিক গুলি করে এবং পরে দুই পায়ের রগ কেটে হত্যা করে।
দৌলতপুর থানার ওসি জানান, ওই এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের ছেলে আলাউদ্দিনকে রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পশ্চিম মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সজলের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা দুজনই নিহত মাহবুবের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য খুনিদের কাছে সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে খুনিরা এসে মাহবুব মোল্লাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে।
কিলিং মিশনের তিন সদস্যকে দ্রুতই গ্রেপ্তর করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে পুলিশ।