করোনাভাইরাস দুর্যোগের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ও অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন মৃত্যুবরণ করেন। তাঁদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া সভাপতিমণ্ডলীর এই দুটি পদ পেতে আগ্রহী দলটির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী এই ফোরামে প্রবেশের সুযোগ চান তাঁরা। ফলে এই দুর্যোগের মধ্যেও কেন্দ্রীয় নেতারা সংগঠনের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি নানা চেষ্টা-তদবির করছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলী
দুই শূন্যপদ নিয়ে যত হিসাব-নিকাশ
আবদুল্লাহ আল মামুন

কবে নাগাদ আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এই দুই শূন্যপদে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে, তা অবশ্য কেউ বলতে পারছেন না। বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে সংগঠনের সভাপতি শেখ হাসিনার ওপর।
সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য পদ ছাড়াও ধর্ম এবং শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক পদ দুটি শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য পদের তিনটি পদও শূন্য রয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় কাউন্সিলের পর পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে মনোনীত নেতাদের নাম ঘোষণা করা হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সভাপতিমণ্ডলীর শূন্যপদ পূরণের বিষয়ে সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা হয়নি। মাত্র কয়েক দিন আগে তাঁরা দুজন মারা গেছেন। চিন্তা-ভাবনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সভাপতিমণ্ডলীর শূন্যপদ পূরণের এখতিয়ার সম্পূর্ণ দলের সভাপতির। সভাপতি শেখ হাসিনা যখন প্রয়োজন মনে করবেন তখনই কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতিমণ্ডলীর শূন্যপদে নিয়োগ দিতে পারবেন। তবে আমি মনে করি না সহসাই তিনি এ পদে নিয়োগ দেবেন।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সভাপতিমণ্ডলীর দুই শূন্য পদের একটিতে রাজশাহী বিভাগের যেকোনো একজন দলীয় নেতার আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীতে বর্তমানে রাজশাহী বিভাগের কোনো প্রতিনিধি নেই। অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একজন প্রতিনিধি বর্তমানে সভাপতিমণ্ডলীতে রয়েছেন। রাজশাহীর মতো বরিশালেও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীতে কোনো প্রতিনিধি নেই। তাই আরেকটিতে বরিশাল বিভাগের যেকোনো একজন নেতা নিয়োগ পেতে পারেন।
জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে রাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল ইসলাম ঠান্ডুর নাম আলোচনায় রয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য। জাতীয় নেতা এম মনসুর আলীর সন্তান প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমকে ১৯৬৭ সালে পাবনার এডওয়ার্ড কলেজের এক অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগে যোগদান করান নুরুল ইসলাম ঠান্ডু। এর আগে ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। পঁচাত্তর-পরবর্তী দুঃসময়ে সমগ্র উত্তরাঞ্চলে সংগঠন গড়ে তোলার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন নুরুল ইসলাম ঠান্ডু।
অন্যদিকে সভাপতিমণ্ডলীতে বরিশাল বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর নাম আলোচনায় রয়েছে। এর আগেও তিনি আলোচনায় ছিলেন।
সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের পদাধিকারবলে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। তাঁদের নিয়ে মোট ১৯ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে বর্তমানে ১৭ জন রয়েছেন। অন্যরা হলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্যাহ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান।
সম্পর্কিত খবর

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠক
জঙ্গি সন্দেহে বাংলাদেশি গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

জঙ্গি সন্দেহে মালয়েশিয়ায় সম্প্রতি কয়েকজন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। জঙ্গি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জোরালো অবস্থান তুলে ধরে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশিদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
মালয়েশিয়া সফররত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গতকাল শুক্রবার কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো মোহাম্মদ বিন হাজি হাসানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামে (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার পুলিশ সম্প্রতি জঙ্গিবাদের অভিযোগে যে বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করেছে তাঁদের ব্যাপারে তদন্তে বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়ার সঙ্গে কাজ করবে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গতকাল মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তথ্য ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে অভিযোগের তদন্তে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চান। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ ও সহযোগিতা সহজতর করার আশ্বাস দেন।
এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে দুই নেতা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় পক্ষ বাংলাদেশে চলমান সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট, এলডিসি-পরবর্তী সহায়তা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের উপমন্ত্রী ও প্রতিনিধিদলের প্রধানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০০৬ সালে এআরএফের সদস্য পদ লাভ করে। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৭টি সদস্যের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই ফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ এআরএফের দুটি অগ্রাধিকার খাত ‘সন্ত্রাসবাদ দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ’ এবং ‘দুর্যোগ ত্রাণ’-এর সহসভাপতিত্ব করছে। এআরএফ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরবর্তী অধিবেশন আগামী বছর ফিলিপিন্সের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গতকাল বিকেলে আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন। তিনি জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রভাব বিবেচনা করে রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি আরো বেশি মনোযোগ দেওয়ার আহবান জানান। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আসিয়ান সদস্যদের বাংলাদেশের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার প্রচেষ্টাকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার আহবান জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. ফরহাদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সরকারের অন্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

জাতিসংঘের তথ্য
১৮ মাসে আরো দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও নির্যাতনের কারণে গত ১৮ মাসে বাংলাদেশে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ২০১৭ সালে মায়ানমার থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর এটি সর্বোচ্চসংখ্যক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা। নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
ইউএনএইচসিআর জানায়, গত জুন পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নতুন এক লাখ ২১ হাজার রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে অনেককে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি, যদিও তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করছে।
কক্সবাজারের মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটার জায়গায় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের কারণে এটি এরই মধ্যে বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, নতুন করে আরো রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ায় বিদ্যমান সহায়তাব্যবস্থার ওপর চরম চাপ পড়ছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ভারতে বাঙালিবিরোধী ষড়যন্ত্র
দিল্লির কাছে কারণ জানতে চেয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে দিল্লিতে বাঙালি উচ্ছেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। ভারতজুড়ে ‘বাঙালিবিরোধী’ এক ‘অপচেষ্টা’ চলছে বলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তোলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই উদ্যোগ নিলেন।
দক্ষিণ দিল্লির বসন্ত কুঞ্জে সম্প্রতি চলা উচ্ছেদ অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে এই আবেদন করা হয়। এই উচ্ছেদ অভিযান এমন জায়গায় হচ্ছে, যেখানে মূলত পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি অভিবাসী শ্রমিকরা থাকেন।
মমতার অভিযোগের পরেই আদালতে ওই ঘটনার বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে। তবে সেটি তিনি করেননি।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিবকেও এ বিষয়ে আদালতকে পৃথকভাবে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে দিল্লির মুখ্য সচিবের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথাবার্তা বলতে হবে।
সূত্র : টেলিগ্রাফ

হেফাজতের বিক্ষোভ
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এটি স্পষ্ট হুমকি বলে মন্তব্য করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল শুক্রবার সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, ‘জাতিসংঘ বা কোনো বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে মানবাধিকার ইস্যুতে হস্তক্ষেপ দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী। এ ধরনের কার্যালয় স্থাপন সরকারের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্নতার প্রতিফলন। দেশীয় ইসলামী মূল্যবোধ, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি দীর্ঘমেয়াদে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে এ মন্তব্য করেন হেফাজতের সিনিয়র নেতারা। সমাবেশে বক্তারা জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের আঞ্চলিক কার্যালয় ঢাকায় স্থাপনের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো—ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, দেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেশের স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে দিতে হবে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম-খুনের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা জোবায়ের রশীদ, মাওলানা এহতেশামুল হক সাকী প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমরা আপনাদের সহযোগিতা করেছি। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত এই সরকারকে জনগণের মতামত উপেক্ষা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো অধিকার দেওয়া হয়নি।
হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা শুধু প্রাথমিক প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরে না আসে, তাহলে হেফাজতে ইসলাম সারা দেশে তীব্র আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও আমরা এই মানবাধিকার কার্যালয় ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হতে দেব না।
মামুনুল হক বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এজেন্ডা ও ইতিহাস আমরা জানি। তাই বাংলাদেশে তাদের ডেকে আনার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। জনগণ তা মেনে নেবে না।’
হেফাজতের নায়েবে আমির মুফতি আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সুযোগের অপব্যবহার করছে। বিশ টাকার নোট থেকে মসজিদের ছবি সরিয়ে মন্দিরের ছবি দিয়েছে। দেশে মানবাধিকার কার্যালয় করার ম্যান্ডেট এ সরকারকে দেওয়া হয়নি।’
তিনি জানান, প্রয়োজনে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও এবং ঢাকা ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন।