‘শাহবাগের দিক থেকে দ্রুতগতিতে এসে বাসটি প্রথমে ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করে। এরপর পেছন থেকে ধাক্কা দেয় একটি মোটরসাইকেলকে। এতে মোটরসাইকেলের চালক ও পেছনে থাকা আরোহী দুই দিকে ছিটকে পড়েন। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের আরোহীর শরীরের ওপর সামনের চাকা উঠিয়ে দেয় বাসটি।
বাংলামোটরে দুজনকে পিষে মারল বাস
- ►আবারও অভিযুক্ত সেই লক্কড়ঝক্কড় বাস
► গ্রেপ্তার চালকের দাবি ‘ব্রেক ফেল’
নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি যখন কালের কণ্ঠকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন তখন বাংলামোটর এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। তবে এর ঘণ্টাখানেক আগে, অর্থাৎ সকাল সোয়া ১১টার দিকে দুর্ঘটনার সময় সেখানে বৃষ্টি ছিল না। ফলে বিহঙ্গ পরিবহনের বাসের চাকায় পিষ্ট দুই হতভাগ্যের রক্তের দাগ ততক্ষণে ধুয়ে গেছে।
নিহত দুজন হলেন ঢাকার একটি কুরিয়ার সার্ভিসের (এমজিএম) কর্মী মোকছেদুর রহমান (৪৫) এবং পথচারী কাজী বেলায়েত হোসেন (৫০)।
মোকছেদুরের বাবার নাম আবু আসাদ মিয়া। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। থাকতেন শান্তিবাগে। তাঁর স্ত্রী এবং তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
বেলায়েতের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদী। থাকতেন বাংলামোটর এলাকায়। কাজ করতেন একটি সরিষা ভাঙানোর কারখানায়। স্ত্রী ও দুই ছেলে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। বড় ছেলে রাজন ও ছোট ছেলে তানহা মুলাদী কলেজে অনার্সে পড়েন। গতকাল বিকেলে সরেজমিনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে গিয়ে নিহত মোকছেদুরের ভাগ্নে হাবিব এবং বেলায়েতের ভায়রা জসিম উদ্দিনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা আক্ষেপ নিয়ে বলেন, এই ‘হত্যাকাণ্ডে’রও হয়তো বিচার হবে না। মোকছেদুর ও বেলায়েত দুজনই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন বলে জানান তাঁরা। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক জাকির হোসেনের (৪০) তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তিনি ঢামেক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে গেছেন বলে জানান শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান। শাহবাগ থানায় তিনি যখন কালের কণ্ঠকে এ কথা বলছিলেন, তখন সেখানকার থানাহাজতে ছিলেন দুর্ঘটনার জন্য অভিযুক্ত বিহঙ্গ পরিবহনের বাসটির চালক মো. জাফর। তাঁর বরাত দিয়ে ওসি আবুল হাসান বলেন, ‘বাসচালক জাফর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, ব্রেক ফেল করায় ট্রাফিক সিগন্যাল দেওয়ার পরও তিনি গাড়ি থামাতে পারছিলেন না। তবে দুর্ঘটনার আগ পর্যন্ত তিনি চেষ্টা করেছেন থামানোর। শেষ পর্যন্ত একটি দেয়ালের সঙ্গে ঠেকানোর চেষ্টা ছিল। ঘটনার জন্য তিনি পুলিশের কাছে অনুশোচনা করেছেন।’ তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির কাগজপত্র ঠিক ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। চালক জাফরের গ্রামের বাড়িও মাদারীপুরের পিয়ারপুরে।
প্রত্যক্ষদর্শী ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর সংগ্রাম দেবনাথ বলেন, মোটরসাইকেলটি দক্ষিণ দিকের লিংক রোডের দিক থেকে আসছিল। ঠিক তখনই বাংলামোটর ট্রাফিক সিগন্যালের দক্ষিণ দিকের সিগন্যাল বন্ধ করলে মোটরসাইকেলটিসহ গুটিকয়েক লোক রাস্তা পার হওয়ার মুহূর্তেই বাসটি সিগন্যাল অমান্য করে ওই পথে ঢুকে পড়ে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো এক পথচারী। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বিহঙ্গ পরিবহনের বাসটিতে যাত্রী কম ছিল বলে জানান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য দিনের মতো গতকালও রাস্তায় খুব একটা যানবাহন ছিল না। এর মধ্যেই দ্রুতগতিতে ছুটে চলা বিহঙ্গ পরিবহনের বাসটি মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে আরোহী বাসের সামনে ছিটকে পড়ে যান। পরে বাসটি তাঁর ও পথচারীর ওপর দিয়েই চলে যায়। এতে দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। দুটি মরদেহ সড়কে পড়ে ছিল অনেকক্ষণ। যান চলাচলও কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার রেফাতুল ইসলাম বলেন, শাহবাগ থেকে বাংলামোটর সিগন্যাল অমান্য করে পার হয়েই বিহঙ্গ পরিবহনের বাসটি (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-১৯৯০) পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাত ঘেঁষে চলা একটি মোটরসাইকেল ও একজন পথচারীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান পথচারী ও মোটরসাইকেল আরোহী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ঘটনার পরপরই বাংলামোটর ট্রাফিক বক্স থেকে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে বাসটি জব্দ করেন এবং চালককে আটক করে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। লাশ উদ্ধার করে ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাংলামোটর ট্রাফিক সিগন্যালে এমনিতেই প্রচুর গাড়ির চাপ থাকে। ফুট ওভারব্রিজ থাকলেও তা ব্যবহারে পথচারীদের আগ্রহ কম। এ কারণে প্রায়ই সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে। করোনার সময়ে এ পর্যন্ত ২৩০ জন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। রোড সেফটির সাইদুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
সম্পর্কিত খবর

স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে

ক্রিকেট ম্যাচ, তার ওপর রবিবার। গতকাল তাই উদ্দাম পার্টির প্রস্তুতি ছিল রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উপড়ে পড়া গ্যালারির। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকে ডিজের মিউজিক, দর্শকদের ড্রাম পেটানো আর ট্রাম্পেটের চড়া সুরে কান পাতা দায়। সেই পার্টিই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় দারুণ ক্ষিপ্রতায় কুশল মেন্ডিসকে শামীম হোসেন রান আউট করতেই।
বিশ ওভারের ক্রিকেটে ছন্দ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতলয়ের ক্রিকেটে ছন্দের সেই গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে আর পেছনে তাকায়নি বাংলাদেশ দল।
অবশ্য ম্যাচজুড়েই শামীমের প্রতিপত্তি দেখা গেছে।
কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন লিটন ও শামীম। অধিনায়কের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তাওহিদ ফেরেন, একই ওভারে তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুমে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ধাক্কায় অবশ্য কাবু হওয়ার অবস্থায় নেই শামীম। আগের ম্যাচে ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি শুরু থেকে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। ওদিকে অধিনায়কও থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। তাঁরা জুটি বেঁধে ছোটান রানের গতি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটন ও শামীম মিলে তোলেন ৭৭ রান, তা-ও মাত্র ২১ বলে! ১৩ ম্যাচ পর ফিফটির দেখা পান লিটন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস। এক বাউন্ডারি আর পাঁচ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৬ রান করে যখন আউট হন অধিনায়ক, ততক্ষণে লড়াইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক পূঁজি এক রকম হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে স্ট্রাইক পেতে মরণপণ দৌড়েও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শামীম। তাতে ২৭ বলে তাঁর ৪৮ রানের ইনিংস পঞ্চাশ ছুঁতে না পারার আক্ষেপে শেষ হয়েছে। অবশ্য তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই, ‘দল জিতেছে। তাতে অবদান রাখতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি।’ শামীম আরো খুশি ১৬ জুলাই কলম্বোয় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা নয়, জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
ম্যাচ শুরুর আগের রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের চালচিত্র না বললেই নয়। হাজার তিরিশেক দর্শকের ঠাঁই হয় এ মাঠে। তবে দুই দিন ধরে টিকিটের জন্য আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল যে পর্যাপ্ত আসন নেই। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে গ্যালারি ভরে গেছে। বরাবরের মতো গ্যালারি লাগোয়া গাছেও চড়ে বসেন বিনা টিকিটের দর্শক। তাই বলে সিঁধ কেটে বিনা টিকিটের দর্শক ঢোকে ডাম্বুলায়, সেটি অজানা ছিল। গতকাল সেটিও দেখা হলো, বাংলাদেশ ইনিংসের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চলাকালে ভিআইপি স্ট্যান্ডের দিককার কাঁটাতারের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে অন্তত শ খানেক টিকিটহীন দর্শক ঢুকে পড়লেন স্টেডিয়াম চত্বরে। বিনা বাধায় যোগ দিলেন গ্যালারির উৎসবে। নিজ দলের ব্যাটিং ভরাডুবিতে ক্ষণে ক্ষণে লাউড স্পিকার থেমেছিল বটে। তবে পুরোপুরি থামেনি। পুরস্কার বিতরণীর পরও কিছু দর্শককে দেখা গেছে হাসিমুখে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তো বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেও গেলেন, ‘ওয়েল প্লেইড বাংলাদেশ!’

অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারির রিকশার দাপট বেড়েছে। সেগুলো জব্দে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মালিবাগে অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দ করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি : ফোকাস বাংলা
।
মানবতাবিরোধী অপরাধ
বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বাংলা-ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে। আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এর আগে ১০ জুলাই এই মামলার ২৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২২ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। যে দুজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাঁরা হলেন রাফিউল হাসান রাসেল ও মো. আনোয়ার পারভেজ।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই মামলার শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আট আসামির গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় প্রয়োজন। তখন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। আদেশের সময় মামলার ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

হত্যা মামলায় জামিন
আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার এনামুল হক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। গতকাল রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনয়শিল্পী। এটাই আমার পেশা।
এদিন অপু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি মুখে কালো মাস্ক, মাথায় সাদা ওড়না ও বোরকা পরেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এরপর অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না।’ এ সময় আইনজীবীরা আহা আহা সাধু বলতে থাকেন। অনেক আইনজীবী উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপু বিশ্বাস এমপি হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার দোসর তিনি। এ সময় অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে।’ এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করতে দেখা যায়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে অপু বিশ্বাস গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। পরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার শ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মামলায় অপু বিশ্বাস, আশ্না হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান তিনি।