ঢাকা, শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩০ মহররম ১৪৪৭

গৃহহীনের ঘরের টাকায় জমি কিনলেন ইউএনও!

কুদ্দুস বিশ্বাস, কুড়িগ্রাম (আঞ্চলিক)
কুদ্দুস বিশ্বাস, কুড়িগ্রাম (আঞ্চলিক)
শেয়ার
গৃহহীনের ঘরের টাকায় জমি কিনলেন ইউএনও!

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে বর্তমানে গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগসহনীয় গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কাবিটা (গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার) ও টিআর (গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ) কর্মসূচির বিশেষ খাতের অর্থ দিয়ে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় গত ও চলতি অর্থবছরে ১২৪টি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় দুই লাখ ৫৮ হাজার থেকে দুই লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এসব ঘরের তালিকা তৈরি ও গৃহ নির্মাণ করে দেন রাজীবপুরের সদ্য বদলি হয়ে যাওয়া ইউএনও মেহেদী হাসান।

মেম্বার-চেয়ারম্যানদের না জানিয়ে তাঁদের নামে গৃহ নির্মাণ প্রকল্প দেখিয়ে বরাদ্দকৃত সব গৃহ নির্মাণ বাস্তবায়ন দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন তিনি। গৃহ নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ওই বাণিজ্য করেন বলে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন।

শুক্রবার উপজেলার তিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, বদলি হওয়া ইউএনও ঠাকুরগাঁওয়ে মেইন রাস্তার সঙ্গে বাড়ি করার জন্য গৃহহীনের টাকা দিয়ে কোটি টাকা খরচ করে জমি কিনেছেন। রাজীবপুরের ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গৃহহীনদের ঠকিয়ে অবৈধভাবে ওই টাকা তিনি নিয়ে গেছেন।

সদর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল আলম বাদল বলেন, ‘১৭ মে তাঁকে রাজীবপুর থেকে অবমুক্ত করা হলেও তিনি এখানে থেকে আগের তারিখে অনেক ফাইলে স্বাক্ষর করে টাকা তুলে কাউকে না জানিয়ে গতকাল জুমার নামাজের আগে বৃষ্টির মধ্যে রাজীবপুর ছেড়ে যান। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া গৃহহীনদের টাকা তিনি ভুয়া বিল-ভাউচারে তুলে নিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। এমন চারটি পরিবার রয়েছে যাঁদের নামে ঘর নির্মাণ দেখানো হয়েছে কিন্তু বাস্তবে তাঁদের বাড়িতে ঘর ওঠেনি। আমি এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে ইউএনওর ওই সব দুর্নীতির বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজীবপুর উপজেলা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী। উপজেলা ভূমিহীন সংগঠনের উদ্যোগে ওই মানববন্ধন কর্মসূচিতে ইউএনওর নানা দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য দেন ভূমিহীন নেত্রী হাফিজা বেগম, আব্দুর রশীদ, ফুল মিয়াসহ অনেকেই।

সদর ইউনিয়নের সদস্য ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার নামে গৃহ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে অথচ আমি কিছুই জানি না। আমার নামে ১৬ লাখ টাকার বিল তোলা হয়েছে।’ একই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাদশা মিয়া ও আবু বক্কর অভিযোগ করেন, গত ১৫ জানুয়ারি আমাদের নামের ছয় লাখ টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে তোলা হয়।

আব্দুল বারী নামে আরেক সদস্য বলেন, ‘আমার নামে গৃহ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে কয়েক দফায় ২০ লাখ টাকার বিল তোলা হয়েছে। ইউএনও তাঁর লোক দিয়ে ওই টাকা তুলে নিয়েছেন।’ সদর ইউনিয়নের সদস্যরা অভিযোগ করেন, ‘আমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে কোটি টাকার ব্যবসা করেছেন ইউএনও। নির্মাণ করে দেওয়া ঘরগুলো এক মাসেই ফেটে-ভেঙে যাচ্ছে। খুবই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এমনটা হয়েছে।’

কোদালকাটি ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু অভিযোগ করেন কুড়িগ্রামের প্রত্যাহার হওয়া ডিসি সুলতানা পারভীনের প্রভাব খাটিয়ে ইউএনও ওই দুর্নীতি করেছেন। তিনি নিজেই ঠিকাদার সেজে তাঁর নিজের এলাকার মিস্ত্রি ও নির্মাণ শ্রমিকদের রাজীবপুরে এসে নিম্নমানের কাজ করেন। যার বাড়িতে ঘর দেওয়া হয়েছে তার কাছ থেকে নির্মাণ শ্রমিকদের খাবারের ও নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের খরচও আদায় করেন ওই ইউএনও। একই ধরনের অভিযোগ করেন মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররাও।

রাজীবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কাবিটা (গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার) ও টিআর (গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ) কর্মসূচির বিশেষ খাতের অর্থ দিয়ে গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৫৫টি এবং চলতি অর্থবছরে ৬৯টি বরাদ্দ পাওয়া যায়। সব ঘর নির্মাণ বাস্তবায়ন শেষ হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুসারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে ঘরগুলো নির্মাণ করে দেওয়ার কথা থাকলেও ইউএনও তা করেননি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, ‘গৃহ নির্মাণ কাজগুলো ইউএনও স্যার একা করছেন। আমাকে বিল-ভাউচারে স্বাক্ষর দিতে বলেছেস আমি দিয়েছি। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।’

অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও মেহেদী হাসান বলেন, ‘চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ঘর নির্মাণের দায়িত্ব দিলে তাঁরা দুর্নীতি করতেন। এ কারণে ঘরগুলো আমি এবং আমার নিজস্ব কিছু লোক দ্বারা করে দিয়েছি।’ নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো বাণিজ্য করিনি। তালিকায় নাম রয়েছে কিন্তু ঘর নেই—এমন কয়েকজনের স্বজনদের বাড়িতে ওই ঘর করে দেওয়া হয়েছে।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

শেয়ার
রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা
রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। গতকাল রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক-বাঘাইহাই সড়ক থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য

কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

    চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।

কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।

ওই জমিতে সেচ দিতে গেলে রাজু মিয়ার লোকজন বাধা দেয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান।

রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।

এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে।

এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে খুলনায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ বলছে, ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যাময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।

ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

মন্তব্য

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

চট্টগ্রামে অবতরণের পর ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। এরপর হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

 

মন্তব্য

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।

এরপর তা খুঁজে বের করতে জরুরি তল্লাশি অভিযান চলছিল বলে জানান আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলোভ। কিন্তু পরে জানানো হয়, এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। তারা বিমানের ফিউজলেজের সন্ধান পেয়েছে।

ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।

এমআই-৮ হেলিকপ্টার বিমানটির ফিউজলেজ দেখতে পেয়েছে। এই হেলিকপ্টারটি পরিচালনা করে রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ রোসাভিয়াতসিয়া।

বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।

এটা হতে এটা হতে পারে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার একটি কারণ। সাইবেরিয়াভিত্তিক আঙ্গারা এয়ারলাইনস পরিচালিত বিমানটি চীনের সীমানা লাগোয়া আমুর অঞ্চলের তিন্দা শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এমন সময় এটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।

স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।

তার মধ্যে পাঁচজন শিশু। তাদের সঙ্গে ছয়জন ক্রু সদস্যও ছিলেন। তিনি বলেন, বিমান অনুসন্ধানে সব প্রয়োজনীয় বাহিনী ও সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়।

উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।

১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।

সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ