ঢাকা, রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১৭ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১৭ মহররম ১৪৪৭
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন রবিবার

সভাপতি ও সম্পাদক হতে চান দুই ডজন নেতা

  • তৃণমূলের দাবি নেতৃত্ব নির্বাচিত হোক ভোটের মাধ্যমে
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
শেয়ার
সভাপতি ও সম্পাদক হতে চান দুই ডজন নেতা

পাঁচ বছরের বেশি সময় পর হতে যাচ্ছে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এই সম্মেলন ঘিরে নানা সমীকরণ কষছেন দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। পদাগ্রহী নেতারা ছুটছেন দলের শীর্ষ নেতাদের দরবারে। বিশেষ করে, জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে যাঁদের ভূমিকা থাকবে, কেন্দ্রীয় সেসব নেতার দ্বারে ছুটছেন তাঁরা।

এরই মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ দুই পদ পেতে এবার আগ্রহীদের তালিকা বেশ লম্বা হয়ে গেছে। এই তালিকা দীর্ঘ হতে হতে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই ডজনে গিয়ে ঠেকেছে। 

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ক্ষমতাসীন দলটির রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগের দিন পর্যন্ত এ তালিকা বাড়তে থাকবে। আবার তৃণমূলের নেতারা কাকে সভাপতি-সম্পাদক নির্বাচন করবেন, নাকি দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এসে এবারও এ দুটি পদে দুজনকে মনোনীত চলে যাবেন—এ নিয়েও চলছে নানা গুঞ্জন।

তবে তৃণমূলের অনেক নেতার দাবি, এবার দুটি শীর্ষ পদে নেতৃত্ব নির্ধারণ হোক ভোটের মাধ্যমে। আবার কেউ কেউ বলছেন উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন কাউন্সিলও হয়নি দীর্ঘদিন ধরে। বর্তমান জেলা কমিটির নেতাদের পছন্দমতোই হয়েছে এসব কমিটি। ফলে জেলা কমিটির সম্মেলনে নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি-সম্পাদক করা হলে পুরনোরাই আবার আসার সুযোগ পাবেন বেশি।
কাজেই আগামী দিনে দলের প্রয়োজনে যোগ্য নেতা কেন্দ্রীয় নেতারাই নির্বাচন করুন—এমনটিও দাবি করেছেন নতুন করে নেতৃত্ব পেতে আগ্রহী নেতারা।

তিনবার আগে-পিছে করে শেষ পর্যন্ত আগামী রবিবার রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন নির্ধারণ করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগে প্রথমে ৪ ডিসেম্বর সম্মেলনের তারিখ ছিল। পরে সেটিকে ৮ ডিসেম্বর এবং আরো পিছিয়ে ১২ ডিসেম্বর করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাঝের ৮ ডিসেম্বরই সম্মেলনের তারিখ পাকা করা হয়।

রাজশাহী মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এ সম্মেলনে অংশ নেবেন ৩৫০ জন কাউন্সিলর। এর মধ্যে জেলা কমিটির নেতা রয়েছেন ৬৪ জন। আর উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন কমিটি থেকে থাকবেন বাকি কাউন্সিলররা। 

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর। ওই সম্মেলনে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে চলে যান কেন্দ্রীয় নেতারা। এর প্রায় এক বছর পরে নানা কাঠখড় পুড়িয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। গত সম্মেলনে সভাপতি-সম্পাদক পদ পেতে আগ্রহীদের তালিকা ছিল সর্বসাকল্যে ডজনখানেক। কিন্তু এবার তালিকা বেশ লম্বা। এবার সভাপতি পদে রয়েছেন প্রায় ডজনখানেক নেতা। সম্পাদক পদে আছেন আরো এক ডজন।

জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এবার সভাপতি পদে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনাই বেশি। পাঁচ বছর ধরে নানা বিষয়ে বিতর্কের শীর্ষে থাকা রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও এমপি ফারুক চৌধুরীর এবার কপাল পুড়তে পারে। সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদকে নিয়েও নানা বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষাকারী এ নেতাকে এবার সভাপতি-সম্পাদকের মধ্যে অন্তত একটি পদে রাখা হতে পারে। এ কারণে তাঁর অনুসারীরা চাচ্ছে ভোটে হোক নেতৃত্ব নির্বাচন। কিন্তু আসাদবিরোধী নেতাকর্মীরা চাচ্ছেন ভোটের মাধ্যমে নয়, বিতর্ক সরাতে এবার নতুন নেতৃত্ব বেছে নিক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। 

দলীয় সূত্র মতে, এবার রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি পদে প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন বর্তমান সভাপতি ও তানোর-গোদাগাড়ী আসনের এমপি ফারুক চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাবেক ভিপি নূরুল ইসলাম ঠাণ্ডু, বর্তমান জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, সাবেক এমপি রায়হানুল ইসলাম রায়হান, সাবেক এমপি জিন্নাতুন নেছা তালুকদার, সাবেক এমপি কাজী আব্দুল ওয়াদুদ দারা ও বর্তমান সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল খান। এ ছাড়া আরো কয়েকজন নতুন মুখ শেষ পর্যন্ত আসতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। 

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মজিদ বলেন, ‘এবার আমাদের চাওয়া অন্তত দুটি পদে কাউন্সিলরদের ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হোক। তাহলে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ এবার সভাপতি নির্বাচিত হবেন। কিন্তু ভোট না হলে হয়তো তিনি সভাপতি হতে পারবেন না।’ 

সাধারণ সম্পাদক পদে যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক এমপি কাজী আব্দুল ওয়াদুদ দারা, এমপি আদিবা আঞ্জুম মিতা, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও আহসানুল হক মাসুদ, সহসভাপতি আব্দুল মজিদ, বাগমারা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু ও চারঘাট উপজেলার চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ডেঙ্গু রোগী বেড়েই চলেছে

শেয়ার
ডেঙ্গু রোগী বেড়েই চলেছে

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগী বেড়েই চলেছে। বড়দের পাশাপাশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। এক সপ্তাহ ধরে মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে ১০ মাস বয়সী মরিয়ম। গতকাল তোলা।

ছবি : মঞ্জুরুল করিম

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ঠাকুরগাঁও ও সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলি দুই বাংলাদেশি নিহত

ঠাকুরগাঁও ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
ঠাকুরগাঁও ও সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলি দুই বাংলাদেশি নিহত

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মো. রাসেল (১৫) নামে এক বাংলাদেশি কিশোর নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার ভোরে উপজেলার মিনাপুর সীমান্তের ৩৫৩ নম্বর প্রধান পিলারের কাছে ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জের বাগানবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের আরেকজন বাংলাদেশি।

নিহত রাসেল ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার নিয়াজ উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানায়, গতকাল ভোর ৪টার দিকে রাসেলসহ কয়েকজন মিনাপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতের ভেতরে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে যায়। এ সময় ভারতের কিষানগঞ্জ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে রাসেল ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।

দিনাজপুর ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করেছে। নিহত যুবকের লাশ ফেরত আনার জন্য পতাকা বৈঠকে বসার আহবান জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে সুনামগঞ্জে নিহত শফিকুল ইসলাম দোয়ারাবাজার উপজেলার ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে শফিকুলসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু আনতে যায়। তখন বিএসএফ টহল দলের নজরে পড়লে তারা চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিতে গুরুতর আহত শফিকুলকে সঙ্গীরা বাড়িতে নিয়ে আসে।

পরে  স্বজনরা তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত আড়াইটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গুলিটি সরাসরি শফিকুলের বুকে লেগেছে।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. ক. জাকারিয়া কাদির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা এ ঘটনায় বিবৃতি ও পতাকা বৈঠক আহবান করে প্রতিবাদ জানিয়েছি। পাশাপাশি সীমান্তে নজরদারি আরো জোরদার করা হয়েছে।

আড়াই মাস পর যুবকের মরদেহ ফেরত

ঝিনাইদহ থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত যুবক ওবাইদুল হোসেনের মরদেহ প্রায় আড়াই মাস পর হস্তান্তর করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার বিকেলে গোপালপুর সীমান্ত এলাকায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাঁর মরদেহ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। এ সময় নিহত যুবকের পিতা হানেফ আলী, মহেশপুর থানার ওসি তদন্ত সাজ্জাদুর রহমান, স্থানীয় যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দীন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ২৮ এপ্রিল মহেশপুর সীমান্তে ওবাইদুল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ।

মন্তব্য
ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব

ফ্যাসিজমমুক্ত করতেই নতুন টেলিকম নীতিমালা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ফ্যাসিজমমুক্ত করতেই নতুন টেলিকম নীতিমালা

বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিজম থেকে টেলিকম খাতকে মুক্ত করতেই অন্তর্বর্তী সরকার নতুন নীতিমালা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব। তিনি বলেছেন, টেলিকম খাতকে করমুক্ত করার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের দাবি পূরণে নতুন নীতিমালা করা হচ্ছে। দ্রুতই প্রস্তাবিত নীতিমালা উপদেষ্টা পরিষদে উত্থাপিত হবে। নীতিমালাকে সমৃদ্ধ করতে যৌক্তিক পরামর্শগুলো বিবেচনা করা হবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং লাইসেন্সিং নীতি সংস্কারবিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। টিআরএনবি সভাপতি সমীর কুমার দের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এমটব সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ জুলফিকার। তিনি জানান, ডিজিটাল অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে টেলিকম অপারেটররা।

  মোবাইল নেটওয়ার্কে সাড়ে ছয় কোটি সোশ্যাল মিডিয়ায় সংযুক্ত। তার পরও দেশের ৯ কোটির মতো মানুষ এখনো আমাদের নেটওয়ার্কে সংযুক্ত নয়। তারা ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে না।  বিদ্যমান নীতিমালায় স্থানীয় পর্যায়ে ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ ও লক্ষ্য পূরণে সময় বেঁধে দেওয়া রীতিমতো ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।

প্রস্তাবিত নীতিমালাকে স্বাগত জানিয়ে মোহাম্মদ জুলফিকার বলেন, নতুন লাইসেন্সিং কাঠামো প্রযুক্তি নিরপেক্ষ করার পাশাপাশি নীতিমালায় লাইসেন্স তিনটিতে নামিয়ে আনা হচ্ছে। একই লাইসেন্সের আওতায় একাধিক ধরনের সেবা দিতে পারবেন অপারেটররা। ভয়েস, ডেটা (ইন্টারনেট), ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (ভ্যাস) ও ওভার-দ্য-টপ (ওটিটি) সার্ভিস দেওয়ার সুযোগ থাকছে নতুন লাইসেন্স নীতিমালায়। এটি এই খাতের বিকাশে সহায়তা করবে। তবে শতভাগ বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ না রাখায় উন্নয়নের গতি স্লথ হবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, প্রজন্মের দাবি পূরণে কানেক্টিভিটি থেকে জেনারেশন সার্ভিস ট্রান্সফরমেশনের জন্য নতুন নীতিমালা হচ্ছে। অনেক বেশি জঞ্জালের ওপর থেকে এই নীতিমালা করতে যাওয়ায় এটিকে অনেকটা বিবরণমূলক করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেশের কল্যাণে কারো কারো স্বার্থে আঘাত আসতে পারে। কেননা আমরা নেটওয়ার্কের জঞ্জাল ছেঁটে ফেলব। নীতিমালাকে সমৃদ্ধ করতে যৌক্তিক পরামর্শগুলো বিবেচনা করা হবে। একই সঙ্গে সরকারের ভালো উদ্যোগকেও সবার স্বাগত জানানো উচিত।

বিশেষ সহকারী আরো বলেন, নীতিমালায় লাইসেন্সের সংখ্যা কতগুলো হবে তা নির্ভর করবে লাইসেন্স অবলিগেশন অ্যান্ড কেপিআই পারফরম্যান্সের ওপর। তবে বিটিআরসি বেসরকারি গবেষণা সংস্থার মাধ্যমে জানতে পারে কী পরিমাণ লাইসেন্স লাগবে বা কী পরিমাণ লাইসেন্স থাকলে অপটিমাল হয়। তবে এই লাইসেন্স সংখ্যার নাম করে নতুন বিনিয়োগকারীদের বাধা দেওয়া যাবে না। তা ছাড়া টোল কালেক্টর হিসেবে যে লাইসেন্সগুলো বিগত সরকারের সময় দেওয়া হয়েছিল সেগুলো কন্টিনিউ করা হবে না। বিদেশি কম্পানির দেশীয় প্রতিনিধিদের দেশের বৃহত্তম স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার আহবান জানান তিনি।

নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে তা অন্তত ১৫ বছরের জন্য টেলিযোগাযোগ খাতকে সুরক্ষা দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. জহুরুল ইসলাম।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, বিগত সময়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা পেশিশক্তি খাটিয়েছেন। এখনো ৯ কোটি মানুষ ও আড়াই কোটির মতো হাউসহোল্ড আনকানেক্টেড। এই অবস্থার উত্তরণ করতে, সেবার ব্যবহার সুফল বাড়াতে গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। সে কারণে সবাইকে সম্পৃক্ত করতে পলিসিটা ধীরে ধীরে করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, টেলিকম পলিসি সরকারের এখতিয়ার। অরাজক পরিস্থিতির উত্তরণ থেকে সরকার এই পরিবর্তন আনছে। তাই অংশীজনদের নিয়েই এরপর গাইডলাইন করবে। লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কাউকে নতুন নীতিমালায় বঞ্চিত করা হবে না।

বিশ্বব্যাংক পরামর্শক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, মন্ত্রণালয়ের বর্তমান লিডারশিপ গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে যোগ্য। তারা একটি যুগোপযোগী পলিসি উপহার দেবেন বলে সবার প্রত্যাশা।

ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির বলেন, আমি মনে করি, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কনসিস্টিন্সি, ক্যাপাসিটি, কোলাবরেশন ও কো-অর্ডিনেশন দরকার। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ থাকা দরকার। প্রতিবছর মোবাইল অপারেটররা নেটওয়ার্ক চালু রাখতে ৬০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। সে কারণে দেশে টেলিকম রোডম্যাপ দরকার।

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, দেশের মানুষের মোট চাহিদা ৭.৫ টেরাবাইট। এর ৬৫-৭০ শতাংশ প্রয়োজন মেটায় আইএসপিরা। এ জন্য ১৫ শতাংশ কর দিতে হয়। কিন্তু মোবাইল অপারেটরদের ৩৫ শতাংশ বাজার শেয়ার থাকলেও তাদের কর দিতে হচ্ছে না। এই বৈষম্য দূর করা দরকার। পলিসির মাধ্যমে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যে নীতিমালা করা হচ্ছে, তা রাজনৈতিক সরকারের সময় টিকবে কি নাতা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

ফাইবার অ্যাট হোম সিআইও সুমন আহমেদ সাবির বলেন, গত সাত বছরে এই খাতে কত টাকা বিনিয়োগ হয়েছে, তা হিসাব করা দরকার। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ খরচ সাশ্রয়ী পথ বেছে নিতে হবে।

বৈঠকে আরো বক্তৃতা করেন গ্রামীণফোন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান, রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) (ভারপ্রাপ্ত) রিয়াজ রশীদ, বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইওহান বুসে, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল মাবুদ প্রমুখ।

মন্তব্য
ফেনীতে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম

বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সহায়তায় টেকসই বাঁধ নির্মাণের চিন্তা সরকারের

ফেনী প্রতিনিধি
ফেনী প্রতিনিধি
শেয়ার
বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সহায়তায় টেকসই বাঁধ নির্মাণের চিন্তা সরকারের

টানা বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গতকাল শনিবার সকালে ফেনীর ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম (বীরপ্রতীক)।

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা দুর্গত মানুষের খোঁজখবর নেন তিনি। অনেকে খাদ্য সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ তুলে ধরেন। উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শুধু খাদ্য নয়, প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, অতি দরিদ্র মানুষগুলো এখন অসহায়। তাদের ঘরবাড়ি নেই, খাবার নেই। প্রথমে তাদের বাঁচাতে হবে। এরপর ধাপে ধাপে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে।

বন্যা নিয়ন্ত্রণে টেকসই বাঁধ নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধ যেন সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন হয়, সে জন্য আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়ার চিন্তা করছি। এটি একটি বৃহৎ প্রকল্পকারিগরি দক্ষতাসহ সব বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, কেউ কেউ বলছেন ত্রাণ নয়, শুধু টেকসই বেড়িবাঁধ চাই। তবে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প, বাস্তবায়নে সময় লাগবে।

আর এখন মানুষকে বাঁচানো জরুরি। তাই ত্রাণ সহায়তা অত্যাবশ্যক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মিরাজ হোসেনের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ত্রাণ কার্যক্রমে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। সবাইকেই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমিও একজন সেবক।

এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ফেনীর মানুষ যেন বারবার এই দুর্ভোগে না পড়ে, সে জন্য একটি স্থায়ী, টেকসই পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। কাজের মান খারাপ হলে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।

তিনি জানান, আগামী সপ্তাহে তিনি আবার বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে আসবেন।

এদিকে গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফেনী বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণ পরিষদ-এর ব্যানারে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর তীরে টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণের দাবিতে এই কর্মসূচি হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, টানা বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে মানুষের জানমাল ও জীবিকা বিপন্ন হয়েছে। এই অবস্থায় টেকসই বাঁধ নির্মাণই একমাত্র সমাধান।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ