মোবাইল ফোন গ্রাহকদের ইমার্জেন্সি ব্যালান্সের নামে ঋণ দেওয়ার পরিমাণ সর্বোচ্চ ২০০ টাকার পরিবর্তে পাঁচ টাকা নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। মোবাইল ফোন অপারেটররা এই ঋণ দেওয়ার নামে গ্রাহকদের কাছে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে—এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মোবাইল ফোন অপারেটররা ৫০টির বেশি প্যাকেজ বা অফার দিতে পারবে না। অপ্রত্যাশিত এসএমএস বা কল নিয়ন্ত্রণ এবং গ্রাহকের সিম নিষ্ক্রিয় করার পরও ইমো, ভাইবারের মতো অ্যাপস চালু থাকাসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানেও উপায় অনুসন্ধান চলছে।
টেলিযোগাযোগসেবা নিয়ে গণশুনানিতে অভিযোগ
বিটিআরসি গ্রাহক নয় ব্যবসাবান্ধব সংস্থা
- ইমার্জেন্সি ব্যালান্স সর্বোচ্চ পাঁচ টাকা এবং অফার ৫০টির বেশি নয়
বিশেষ প্রতিনিধি

রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে গতকাল বুধবার টেলিযোগাযোগসেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম বিষয়ে বিটিআরসির গণশুনানিতে এসব তথ্য জানানো হয়। গণশুনানিতে অংশ নিয়ে কয়েকজন অভিযোগ করেন, দেশের টেলিযোগাযোগসেবায় নৈরাজ্য চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
শুনানিতে বিটিআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়, মোবাইল ফোন অপারেটরদের ফোরজি সেবার মান সম্পর্কে অভিযোগ আমলে নেওয়ার সময় এখনো আসেনি। ২০১৮ সালে এই সেবার লাইসেন্স দেওয়ার পর সারা দেশে তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তারের জন্য পাঁচ বছর সময় দেওয়া আছে।
গণশুনানি উপলক্ষে বিটিআরসি আগ্রহীদের আগে থেকে নিবন্ধনের এবং প্রশ্ন, অভিযোগ বা মতামত সংগ্রহের ব্যবস্থা করে। বিটিআরসির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিবন্ধন নেন ২০২ জন গ্রাহক। তাঁদের মোট এক হাজার ৩১৯টি প্রশ্ন, অভিযোগ বা মতামত ছিল।
বিটিআরসি এদের মধ্যে বাছাই করে ১৬৫ জনকে শুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। উপস্থিত হন ১৭ জন। গণশুনানির প্রথমেই বিটিআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এর আগে ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর এ ধরনের গণশুনানি হয়েছিল। সে সময় গ্রাহকরা যেসব অভিযোগ ও সমস্যার কথা জানিয়েছিল তা সমাধানে চেষ্টা করা হয়েছে এবং হচ্ছে।
গ্রাহকদের পক্ষ থেকে প্রথম অভিযোগ করেন হোসেন সাজ্জাদ নামের একজন। তিনি বলেন, ‘আমি ভয়েস মেইল সেবা পাচ্ছি না। এ ছাড়া নির্ধারিত মেয়াদ ও পরিমাণের ডাটা কিনেও ফেনীর ছাগলনাইয়া থেকে তা ব্যবহার করতে পারিনি। সেখানে টুজি নেটওয়ার্কই ঠিকমতো কাজ করে না।’ রবির এক গ্রাহকের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ডাটা কিনতে পারেননি। এ ছাড়া ভ্যালু অ্যাডেড সেবা নিয়েছেন তিনবার, কিন্তু চার্জ করা হয়েছে সাতবারের।
ঢাকার মোহাম্মদপুরের একজন বলেন, ‘যে অবস্থা চলছে তাতে এটাকে সেবা না বলে আমি ব্যবসা বলতে চাই।’ নারায়ণগঞ্জের আব্দুস সালাম বলেন, মাঝরাতেও কম্পিউটারাইজড বিজ্ঞাপনী কল আসে। এটা বিরক্তিকর। হেলালুদ্দীন নামের একজন গ্রাহক টেলিটকের সেবাকেন্দ্রগুলোকে আরো কার্যকর করার প্রস্তাব রাখেন। আব্দুস সালাম নামের এক গ্রাহকের অভিযোগ, গ্রামীণফোনে ১০৯ টাকা রিচার্জ করে প্রতি সেকেন্ডে এক পয়সা কলরেটের প্যাকেজ নিয়েও পাঁচ সেকেন্ডে ১৭ পয়সা চার্জ দিতে হচ্ছে। উম্মে কুলসুম নামের আরেক গ্রাহকের অভিযোগ, তিনি ওয়াইম্যাক্স সেবা পাওয়ার জন্য কিউবিকে টাকা দিয়েও সেই সেবা পাননি। এখন তাদের সেবাও বন্ধ রয়েছে। বিটিআরসি চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি।
এসব প্রশ্ন ও অভিযোগের বিষয়ে বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জবাব দেন। সেবা ও ব্যবসাসংক্রান্ত প্রশ্নে বলা হয়, মোবাইল ফোন অপারেটররা ব্যবসা করতে না পারলে সেবা দেবে কিভাবে? আর সর্বনিম্ন তিন দিন প্যাকেজের মেয়াদটিই যুক্তিসংগত।
গণশুনানিতে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক ছাড়াও কমিশনার আমিনুল হাসান, রেজাউল কাদের, প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ এবং কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর মহাপরিচালকরা নিবন্ধিত অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের উত্তর এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে মতামত দেন।
অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা, ভোক্তা অধিকার সংঘ, মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন, বিটিআরসির লাইসেন্সধারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও তাদের অ্যাসোসিয়েশনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পর্কিত খবর

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে


সবিশেষ
কেন সিডনি সুইনির জিন্স নিয়ে বিতর্ক?
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

নতুন আমেরিকান ইগলের বিজ্ঞাপন প্রচারণায় মার্কিন অভিনেত্রী সিডনি সুইনির ‘দুর্দান্ত জিন্স’ বেশ নজর কেড়েছে। অথচ ট্রাম্পের আমেরিকায় এটি নাকি একটি সমস্যা। সুইনি জবাবে বলেছেন, ‘জিন্সগুলো মা-বাবা থেকে সন্তানদের কাছে চলে আসে, প্রায়ই চুলের রং, ব্যক্তিত্ব এমনকি চোখের রঙের মতো বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে। আমার জিন্স নীল।
আমেরিকান ইগলের বিপণন দলের মতে, প্রচারণা, যার শিরোনাম ‘সিডনি সুইনির দুর্দান্ত জিন্স আছে—কেবল ডেনিম এবং আত্মবিশ্বাসের উদযাপন। তাঁর জিন্স। তাঁর গল্প।’
কিন্তু সুইনির জিন্স নিয়ে বিতর্ক মোটেও কম নয়।
অনেকে অনলাইন প্রচারণাকে জাতিগত বিশুদ্ধতা এবং আদর্শ জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের প্রতি নাৎসি যুগের আবেশকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ করেছে। নিউইয়র্ক পোস্টের মতে, কেউ কেউ এটিকে ‘নাৎসি প্রচারণা’ বলে সমালোচনা করেছে, আবার কেউ কেউ এটিকে ‘ডানপন্থীদের কাছে কুকুরের হুইসল’ বলে অভিহিত করেছে।
অবশ্যই সুইনিকে এরই মধ্যে একজন অতিডানপন্থী প্রণয়ী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁর অতীতের বিতর্কের মধ্যে রয়েছে মাগা (মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন)-সংলগ্ন একটি পারিবারিক পার্টি, ব্লু লাইভস ম্যাটার ভক্তদের সঙ্গে ছবি তোলা এবং জুন মাসে সাবানের একটি ভিডিও।
ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের যোগাযোগপ্রধান স্টিভেন চিউং এই বিতর্ককে ‘ঘন’ ও ‘মৌলিক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘সংস্কৃতির উগ্রতা বাতিল করুন। এই বিকৃত, মৌলিক ও ঘন উদারপন্থী চিন্তা-ভাবনাই আমেরিকানরা ২০২৪ সালে যেভাবে ভোট দিয়েছিল, তার একটি বড় কারণ।

হঠাৎ বন্ধ ফ্লাইট এক্সপার্ট বিপুল ক্ষতির শঙ্কায় গ্রাহক-এজেন্সি
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের অন্যতম টিকিট বুকিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’-এর ওয়েবসাইট হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে হাজারো গ্রাহক ও টিকিট বিক্রেতা এজেন্সি। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে ফ্লাইট এক্সপার্টের অফিসে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্তরা সেখানে ভিড় করেছেন।
এজেন্সিগুলোর দাবি, অগ্রিম টিকিট বাবদ কোটি কোটি টাকা পরিশোধ করা হলেও এখন টিকিট বা অর্থ কিছুই পাচ্ছেন না তাঁরা। ফ্লাইট এক্সপার্টের হেড অব কমার্শিয়াল সাঈদ আহমেদ অভিযোগ করেছেন, প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে কাউকে না জানিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান বিন রশিদ দেশ ছেড়েছেন।
অন্যদিকে সালমান বিন রশিদ হোয়াটসঅ্যাপে দাবি করেন, দুটি মধ্যস্থতাকারী এজেন্সির সঙ্গে জটিলতা ও প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তার ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ কারণে তিনি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
জানা গেছে, ফ্লাইট এক্সপার্ট সরাসরি এয়ারলাইনস থেকে টিকিট না নিয়ে মধ্যস্থতাকারী এজেন্সির মাধ্যমে কাজ করত।

চট্টগ্রামে বাসায় ঢুকে ব্যবসায়ীকে গুলি
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার উত্তর মোহরা এলাকায় বাসায় ঢুকে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। ওই ব্যবসায়ীর নাম মো. ইউনুস। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
ব্যবসায়ী ইউনুস নদী থেকে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ড্রেজারের (খননযন্ত্র) ব্যবসা করেন।
চান্দগাঁও থানার ওসি মো. আফতাব উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ব্যবসায়ী ইউনুস নিজের বাসায়ই ছিলেন। হঠাৎ কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাসায় ঢুকে তাঁকে চার থেকে পাঁচটি গুলি করে।
ওসি আফতাব আরো জানান, এ ঘটনায় ব্যবসায়ী ইউনুসের পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর থেকে কর্ণফুলী নদীর বালু ব্যবসার দ্বন্দ্ব নিয়ে কারাবন্দি সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের অনুসারীদের হাতে গত ২৯ মার্চ রাতে নগরীর বাকলিয়ায় জোড়া খুনসহ চট্টগ্রামে একাধিক হত্যাকাণ্ড ও সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।