গত দুই দিনে ২০ দলীয় জোটের শরিকসহ প্রায় ৮০০ প্রার্থীকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে বিএনপি। প্রতিটি আসনের একাধিক প্রার্থী রাখায় মনোনয়নের চিঠি নিয়ে রয়েছে অসন্তোষও। তবে নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবে আসনগুলোয় একাধিক প্রার্থী রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। তাই ধানের শীষের চূড়ান্ত প্রার্থী কে হচ্ছেন তা ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত জানা যাচ্ছে না।
বিএনপির মনোনয়ন চিঠি পেলেন আট শতাধিক
শফিক সাফি ও শওকত আলী

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গত সোমবার দুপুর থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত মনোনীত প্রার্থীদের কাছে চিঠি বিতরণ করেছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবারও দুপুরের পর শুরু হয়ে এই কার্যক্রম চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। গতকাল দ্বিতীয় দিনে প্রায় ২০০ মনোনয়নপ্রত্যাশীকে চিঠি দেওয়া হয়।
এই চিঠি প্রদানের কাজ চলাকালে বিকেলে গুলশান কার্যালয় থেকে ঠাকুরগাঁও নিজের নির্বাচনী এলাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে প্রায় ৮০০-র মতো মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের নিজ নিজ দল থেকে মনোনয়ন দিচ্ছে। বাছাই হয়ে যাওয়ার পরে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন বণ্টনের বিষয়টি ঠিক ঠিক করা হবে।
২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্ট শরিকদের কত আসন ছাড়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সঠিক ফিগার বলা যাচ্ছে না। তবে ৬০ এর বেশি হবে না। এর মধ্যে জাতীয় যুক্তফ্রন্টের শরিকদের বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের এই মুখপাত্র বলেন, এখন তাঁরা তাঁদের দল থেকে মনোনয়ন দিচ্ছেন। পরে এটা আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
২০ দলীয় জোটের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, বিজেপি, খেলাফত মজলিস, এলডিপি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, এনপিপি, লেবার পার্টি, সাম্যবাদী দলকে কিছু আসন ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি।
গতকাল যাঁরা মনোনয়নের চিঠি পেলেন : ঢাকার বিভিন্ন আসনে গতকাল যাঁরা মনোনয়নের চিঠি নিয়েছেন তাঁরা হলেন খন্দকার আবু আশফাক ও ফাহিমা হোসেন জুগলি (ঢাকা-১), আমানউল্লাহ আমান ও সাবেরা আমান (ঢাকা-২), গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নিপুন রায় চৌধুরী (ঢাকা-৩), সালাহউদ্দিন আহমেদ ও তানভীর আহমেদ রবিন (ঢাকা-৪), নবী উল্লাহ নবী (ঢাকা-৫), কাজী আবুল বাসার ও সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন (ঢাকা-৬), এম এ কাউয়ূম ও শামীম আরা বেগম (ঢাকা-১১), সাইফুল ইসলাম নীরব ও আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার (ঢাকা-১২), আব্দুস সালাম ও আতাউর রহমান ঢালী (ঢাকা-১৩), এম এ সিদ্দিকী সাজু ও আমিনুল হক (ঢাকা-১৪), আহসান উল্লাহ হাসান ও মোয়াজ্জেম হোসেন (ঢাকা-১৬), মে. জে. (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী ও ফরহাদ হোসেন ডোনার (ঢাকা-১৭), এস এম জাহাঙ্গীর (ঢাকা-১৮) ও দেওয়ান সালাউদ্দিন আহমেদ (ঢাকা-১৯), ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান (ঢাকা-২০)।
এ ছাড়া অন্যান্য আসনে গতকাল মনোনয়নের চিঠিপ্রাপ্তরা হলেন ওহিদুল ইসলাম বিশ্বাস (চুয়াডাঙ্গা-১), রফিকুল ইসলাম শিকদার (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-৬), বেগম খালেদা জিয়া ও আবদুল আউয়াল মিন্টু (ফেনী-১), ভিপি জয়নাল ও জিয়া উদ্দিন মাস্টার (ফেনী-২), আবদুল আউয়াল মিন্টু, আব্দুল লতিফ জনি ও আকবর হোসেন (ফেনী-৩), তৈমুর আলম খন্দকার, কাজী মনিরুজ্জামান ও শাহ আলম, (নারায়ণগঞ্জ-১) মাহমুদুর রহমান সুমন ও নজরুল ইসলাম আজাদ (নারায়ণগঞ্জ-২), খন্দকার আবু জাফর ও আজাহারুল ইসলাম মান্নান (নারায়ণগঞ্জ-৩), মোহাম্মদ মামুন মাহমুদ ও মোহাম্মদ শাহ আলম (নারায়ণগঞ্জ-৪), মাকসুদুর আলম খন্দকার মোর্শেদ (নারায়ণগঞ্জ-৫) শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (মুন্সীগঞ্জ-১), মিজানুর রহমান সিনহা, মঈনুল ইসলাম শান্ত ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম (মুন্সীগঞ্জ-২), আব্দুল হাই (মুন্সীগঞ্জ-৩) ও খায়রুল কবির খোকন (নরসিংদী-১), সানা উল্লাহ মিয়া, আকরাম হোসেন ও মঞ্জুর এলাহী (নরসিংদী-৩), শাখাওয়াত হোসেন বকুল (নরসিংদী-৪), মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ও এ কে নেছার উদ্দিন (নরসিংদী-৫), মনিরুল হক চৌধুরী (কুমিল্লা-১০), মোসা. সাবিরা সুলতানা, অ্যাডভোকেট মাওলানা ইসহাক (যশোর-২), মো. আতাউর রহমান আতা (মানিকগঞ্জ-৩), মনির খান, আমিরুজ্জামান খান শিমুল (ঝিনাইদহ-৩) সাইফুল ইসলাম ফিরোজ (ঝিনাইদহ-৪)।
মোহাম্মদ রেজাউল করিম খান ও খালেদা সাইফুল্লাহ সোহেল (কিশোরগঞ্জ-১), মোহাম্মদ শহীদুজ্জামান (কিশোরগঞ্জ-২), শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল ও মাহমুদুর রহমান উজ্জ্বল (কিশোরগঞ্জ-৫), শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর (ফরিদপুর-১), শহিদুল ইসলাম বাবুল (ফরিদপুর-২), শাহরিয়া ইসলাম শায়লা (ফরিদপুর-৪), এমরান সালেহ প্রিন্স ও সালমান ওমর রুবেল (ময়মনসিংহ-১), শাহ শহীদ সারওয়ার (ময়মনসিংহ-২), আহম্মেদ তায়েবুর রহমান ওরফে হিরণ ও ডক্টর মোহাম্মদ আবদুস সেলিম (ময়মনসিংহ-৩), আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ (ময়মনসিংহ-৪), শাহ নূরুল কবির শাহীন (ময়মনসিংহ-৮), ইয়াসের খান চৌধুরী (ময়মনসিংহ-৯), মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান (ময়মনসিংহ-১০)।
চট্টগ্রামের কামাল উদ্দীন আহমেদ, মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ইউসুফ ও নুরুল আমিন (চট্টগ্রাম-১), মো. শওকত আলী নূর (চট্টগ্রাম-৭), আবু সুফিয়ান (চট্টগ্রাম-৮), মোশাররফ হোসেন দীপ্তি (চট্টগ্রাম ১০), মোহাম্মদ এনামুল হক (চট্টগ্রাম-১২), মুস্তাফিজুর রহমান (চট্টগ্রাম-১৩)।
খন্দকার আবদুল মোক্তাদীর (সিলেট-১), শরীফ আহমেদ চৌধুরী ও আব্দুল কাইয়ূম (সিলেট-৩), কামরুজ্জামান কামরুল ও আনিসুল হক (সুনামগঞ্জ-১), দেওয়ান জয়নুল জাকেরিন (সুনামগঞ্জ-৪), নাসির উদ্দীন আহমদ (মৌলভীবাজার-১) ও নাসের রহমান (মৌলভীবাজার-৩)।
শাহিদা রফিক ও কে এম মজিবুল হক (কুমিল্লা-৩), অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস (কুমিল্লা-৫), হাজি আমিনুর রশিদ ইয়াসিন (কুমিল্লা-৬), কর্নেল আনোয়ারুল আজীম (কুমিল্লা-৯)। এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত ও মো. আব্দুল কাইয়ুম (জামালপুর-১), মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা (জামালপুর-৩), ফরিদুর কবির তালুকদার শামীম (জামালপুর-৪), সিরাজুল হক (জামালপুর-৫)। ফরিদা ইয়াসমিন (কুষ্টিয়া-২), অধ্যাপক সোহরাব উদ্দীন (কুষ্টিয়া-৩), সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি ও নুরুল ইসলাম আনসার প্রামাণিক (কুষ্টিয়া-৪)। তৌফিকুল ইসলাম ও ইঞ্জিনিয়ার খালেদ মাহমুদ শ্যামল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩)। এ বি এম আবদুল বারি ও আশরাফ উদ্দীন খান (নেত্রকোনা-২), রফিকুল ইসলাম হিলালি (নেত্রকোনা-৩), আবু তাহের তালুকদার ও রাবেয়া খাতুন (নেত্রকোনা-৫)। লুত্ফর রহমান মতিন, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল হালিম মিয়া (টাঙ্গাইল-৪), নুর মোহাম্মদ খান ও গৌতম চক্রবর্তী (টাঙ্গাইল-৬), সাইদুর রহমান (টাঙ্গাইল-৭), সুকৃতি কুমার মণ্ডল (যশোর-৪), শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক (চাঁদপুর-৩), এম এ মতিন ও ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক (চাঁদপুর-৫)। রমেশ দত্ত (রাজশাহী-৬), সিরাজুল ইসলাম সর্দার (পাবনা-৪), ফরিদ উজ জামান ফরহাদ (নড়াইল-২), মোহাম্মদ হযরত আলী (শেরপুর-১), মাহমুদুল হক রুবেল (শেরপুর-৩), রওশন আরা খাতুন (গাইবান্ধা-৩), জন গোমেজ (নাটোর-৪), ডা. কে এম বাবর ও সিরাজুল ইসলাম (গোপালগঞ্জ-২), এস এম আফজাল হোসেন (গোপালগঞ্জ-৩), হারুনুর রশিদ (লক্ষ্মীপুর-২), মোহাম্মদ শাহবুদ্দীন সাবু (লক্ষ্মীপুর-৩), আসলাম মিয়া (রাজবাড়ী-১), কাজী আক্তারুজ্জামান জুয়েল (নীলফামারী-২)।
প্রয়াত নেতাদের স্ত্রী-সন্তানদের মধ্যে যাঁরা চিঠি পেলেন : প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ছেলে এম নাসের রহমান (মৌলভীবাজার-৩), প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ ইসলাম অমিত (যশোর-১), প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ারের ছেলে খোন্দকার আখতার হামিদ ডাবলু (মানিকগঞ্জ-২), প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান (গাজীপুর-৩), প্রয়াত শামসুল ইসলাম খানের ছেলে মাইনুল ইসলাম শান্ত (মানিকগঞ্জ-১), প্রয়াত হারুনার রশীদ খান মুন্নুর মেয়ে আফরোজা খান রীতা (মানিকগঞ্জ-৩), প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার আখতার হামিদ সিদ্দিকীর ছেলে পারভেজ হামিদ সিদ্দিকী (নওগাঁও-৩), প্রয়াত মোজাহের আলী প্রধানের ছেলে মাসুদ রানা ও প্রয়াত আবদুল আলীমের ছেলে ফয়সল আলীম (জয়পুরহাট-১), প্রয়াত নুরুল হুদার ছেলে তানভীর হুদা (চাঁদপুর-২), প্রয়াত কাজী আনোয়ার হোসেনের ছেলে কাজী নাজমুল হোসেন তাপস (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-৫) ও প্রয়াত ফজলুর রহমানের সহধর্মিণী অধ্যাপিকা কামরুন্নাহার শিরিন (নাটোর-১)।
জোটের প্রার্থীরা কে কোথায় : ২০ দলীয় জোটে থাকা দলগুলোকে তার সঠিক সংখ্যা বিএনপি মহাসচিব বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন গতকালের সংবাদ সম্মেলনে। তবে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ (ভোলা-১), এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ (নড়াইল-২), সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ (নারায়ণগঞ্জ-৫), কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (চট্টগ্রাম-৫), এলডিপির অলি আহমেদ (চট্টগ্রাম-১৪), রেদোয়ান আহমেদ (কুমিল্লা-৭), সাহাদাত হোসেন সেলিম (লক্ষ্মীপুর-১), জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর শাহিনুর পাশা (সুনামগঞ্জ-৩), সৈয়দ মহিউদ্দিন ইকরাম (কুমিল্লা-৬), মো. ওয়াক্কাস (যশোর-৫), রেজাউল করীম (খুলনা-৪), লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান (পিরোজপুর-২), জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার (পিরোজপুর-১), টিআই ফজলে রাব্বী (গাইবান্ধা-৩), এস এম এম আলম (চাঁদপুর-৩), আহসান হাবিব লিংকন (কুষ্টিয়া-২), সেলিম মাস্টার (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-৪), ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আব্দুর রকিব (সিলেট-৬) ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়নের জন্য প্রত্যয়নের চিঠি নিয়েছেন।
সংস্কারপন্থী যাঁরা চিঠি নিয়েছেন : এক-এগারোর সময়ে বিএনপির সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত এমন ১৩ জনকে বিভিন্ন আসনের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত করেছে বিএনপি। এঁরা হলেন আবু হেনা (রাজশাহী-৪), আলমগীর কবির (নওগাঁ-৬), জহির উদ্দিন স্বপন (বরিশাল-১), সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল (নরসিংদী-৪), শহীদুল হক জামাল (বরিশাল-২), শহিদুল হক তালুকদার (পটুয়াখালী-২), আতাউর রহমান আঙ্গুর (নারায়ণগঞ্জ-৫), ইলেন ভুট্টো (ঝালকাঠি- ২), নাজির হোসেন (সুনামগঞ্জ-২), জিয়াউল হক মোল্লা (বগুড়া-৪), জি এম সিরাজ (বগুড়া-৫), মফিকুল হাসান তৃপ্তি (যশোর-১), আবু ইউসুফ খলিলুর রহমান (জয়পুরহাট-২)।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী প্রাথমিক মনোনয়নের ক্ষেত্রে এক আসনে একাধিক প্রার্থীকে প্রত্যয়ন দেওয়ার সুযোগ থাকলেও প্রতীক বরাদ্দের আগে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়নের চূড়ান্ত তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। সেখানে যাঁদের নাম থাকবে, কেবল তাঁরাই শেষ পর্যন্ত ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ আজ ২৮ নভেম্বর। আর প্রত্যাহার করা যাবে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
গুলশান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ : এদিকে একই আসনে একাদিক প্রার্থী প্রত্যয়নের চিঠি পাওয়া এবং মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার কারণে গুলশানে বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। গাইবান্ধা-২ আসনে দলের পরীক্ষিত নেতাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে গণপদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়ে কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ করে এক নেতার অনুসারীরা।
সম্পর্কিত খবর

মোদি ও শেহবাজ শরিফের শোক
- বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যালয়ের শোক
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। একই ঘটনায় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারও শোক প্রকাশ করেছেন।
নরেন্দ্র মোদি এক্স বার্তায় লিখেছেন, ‘ঢাকায় একটি মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত ও দুঃখিত বোধ করছি। নিহতদের মধ্যে অনেকেই তরুণ শিক্ষার্থী।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক বার্তায় লিখেছেন, ‘ঢাকার মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত।
এদিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এক্স বার্তায় লিখেছেন, ‘ঢাকায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর বিমানবাহিনীর একটি বিমান দুর্ঘটনায় মূল্যবান প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। নিহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
এদিকে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক জানিয়েছে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিনিধিদল। গতকাল এক শোকবার্তায় ইইউ প্রতিনিধিদল বলেছে, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এ দুর্ঘটনায় নিহত, তাদের পরিবারবর্গ এবং ক্ষতিগ্রস্ত সবার প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
বার্তায় আরো উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের হৃদয় শোকাহত—আমরা নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যালয় গতকাল এক ফেসবুক বার্তায় বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা
সরকারি চাকরিতে জুলাই যোদ্ধাদের কোটা থাকছে না
বিশেষ প্রতিনিধি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও আহতদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা রাখা হবে না বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গৃহীত কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
জুলাই যোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারকে সরকারিভাবে ফ্ল্যাট দেওয়া এবং সরকারি চাকরিতে তাদের জন্য কোটা রাখা হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাঁদের পুনর্বাসনের কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুসারে মন্ত্রণালয় যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
তিনি আরো বলেন, ‘পুনর্বাসন নানাভাবে হতে পারে। তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্যতা অনুযায়ী তিনি যেভাবে পুনর্বাসিত হতে চান সেভাবে করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সমকক্ষ করা হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওইভাবে (সমকক্ষ) কেউ দেখছে না। আমরাও দেখছি না। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা পেতে ৩০ থেকে ৩৫ বছর লেগেছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা চূড়ান্তকরণ, আহতদের চিকিৎসা ব্যয় এবং তাঁদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তাসহ পুনর্বাসন করার উদ্দেশ্যে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ২৮ এপ্রিল ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ গঠন করা হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের জুলাই শহীদ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে সরকার ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর মাধ্যমে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী মোট ৮৪৪ জন শহীদের তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গেজেট আকারে প্রকাশ করে।
আহত হওয়ার ধরন অনুসারে জুলাই যোদ্ধাদের তিনটি শ্রেণিভুক্ত করে ৪৯৩ জনকে ‘ক’ শ্রেণিতে, ৯০৮ জনকে ‘খ’ শ্রেণিতে এবং এক হাজার ৬৪২ জনকে ‘গ’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। সম্প্র্রতি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ‘ক’ শ্রেণির ১১৪ জন, ‘খ’ শ্রেণির ২১৩ জন এবং ‘গ’ শ্রেণির এক হাজার ৪৪২ জন, মোট এক হাজার ৭৬৯ জনের তালিকা পাওয়া গেছে, যা যাচাই-বাছাই শেষে শিগগিরই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ
একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান না থাকার প্রস্তাবে বিএনপির আপত্তি
- বিমান দুর্ঘটনার খবরে সংলাপ মুলতবি, আজ আবার বসবে
নিজস্ব প্রতিবেদক

একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা থাকার প্রশ্নে একমত হলেও প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি থাকার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। তবে গুরুত্বপূর্ণ ওই তিনটি পদে একই ব্যক্তির থাকার বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপে সম্মত নয় বিএনপি।
এই ইস্যুতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আর সংবিধানের মূলনীতি নিয়ে আলোচনাকালে কমিশনের প্রস্তাবে বিএনপি সমর্থন জানালেও ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ (সিপিবি) বাম প্রগতিশীল দলগুলো।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের ১৬তম দিনে এসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়। দুপুরের খাবার বিরতির পর বিমান দুর্ঘটনার খবর পৌঁছলে শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর সংলাপ মুলতবি করা হয়।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া।
সংলাপের সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। আমি, আপনি ও আমরা সবাই যে জায়গায় উপনীত হয়েছি, তার সাফল্য ও ব্যর্থতা সবকিছুর ঊর্ধ্বে হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। একটা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলাম আমরা।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘৫৩ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি।
সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত সংবিধানের চার মূলনীতি বাতিল করে সংস্কার কমিশন নতুন প্রস্তাব করেছিল, আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। আবার নতুন করে প্রস্তাব এনেছেন, যার মধ্যে চার মূলনীতি নাকচ করা হয়েছে। তাই আমরা আপত্তি জানিয়েছি। এ ক্ষেত্রে সমাধান হিসেবে বলেছি, প্রস্তাবটি হতে পারে, ‘সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির সঙ্গে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি’ উল্লেখিত হবে। অন্যথায় এটা গ্রহণ করা যাবে না।” সিপিবি ক্ষমতায় গেলে একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান থাকবেন না বলে জানান তিনি।
এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তাঁর দল মনে করে, দলীয় প্রধানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি উন্মুক্ত থাকা দরকার। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কোনো দলের সংসদীয় কমিটি যদি মনে করে যে তারা দলীয় প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবে, তাহলে গণতান্ত্রিক এ প্রক্রিয়ার সুযোগ বন্ধ করা ঠিক হবে না। প্রধানমন্ত্রী এবং তার সঙ্গে সংসদ নেতার ভূমিকাটা প্রায় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, এই দুই ক্ষেত্রে একত্রে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সংসদ নেতা থাকতে কোনো অসুবিধা নেই।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গণতন্ত্রে কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হলে তাঁকে অপশন হিসেবে রাজনৈতিক দলের প্রধানের পদটা ছাড়তে হবে, এ রকম কোনো চর্চা সাধারণত দেখা যায় না। এটা (দলীয় পদ) তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার।’
সংলাপ শেষে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘এক ব্যক্তি যাতে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন সে বিষয়ে সংবিধানে নীতি প্রণয়ন করার প্রস্তাবকে আমরা সমর্থন জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি হলে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দলীয়করণ কিভাবে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা আমরা অতীতে বহুবার দেখেছি।’
তিনি বলেন, বিএনপি উপস্থাপিত ৩১ দফার চতুর্থ পয়েন্টে আইনসভা, মন্ত্রিসভা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, তার সঙ্গে এই প্রস্তাব সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
বিমান দুর্ঘটনায় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ মুলতবি : রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনের পরবর্তী অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ শোকবার্তা পাঠ করেন। এরপর নিহত সদস্যের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয় এবং তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। কমিশনের সভায় উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় আবারও এই সংলাপ বসবে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে গোপালগঞ্জে তিনজনের মরদেহ উত্তোলন
- নিরীহরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় : বিএনপি
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

আদালতের নির্দেশে গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে গোপালগঞ্জ পৌর কবরস্থান থেকে ইমন তালুকদার ও রমজান কাজীর লাশ এবং টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী থেকে সোহেল কাজীর লাশ উত্তোলন করা হয়।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান বলেন, নিহতের ঘটনায় মামলার বাদীরা গত রবিবার আদালতে নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনের আবেদন করলে আদালত লাশ উত্তোলনের আদেশ দেন। পরবর্তী সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সী ও রন্টি পোদ্দারের উপস্থিতিতে নিহত রমজান কাজী, ইমন তালুকদারের লাশ গোপালগঞ্জের গেটপাড়া পৌর কবরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়।
এদিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মারুফ দস্তগির সোহেল রানা মোল্লার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করে। পরে তিনটি লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। এ ছাড়া অন্য দুজনের মধ্যে দীপ্ত সাহার মরদেহ সৎকার ও রমজান মুন্সীর মরদেহের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করা হয়।
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবান : গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাকর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় কোনো নিরীহ শান্তিপ্রিয় নাগরিক যাতে হয়রানি না হয়, সেদিকে প্রশাসনের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে জেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, গত বুধবার গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা বা থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপি তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। আগামীতে যেকোনো নিবন্ধিত বৈধ রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ ও মিটিং-মিছিলে যাতে কোনো অপশক্তি কোনো প্রকার আক্রমণ বা বাধার সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য জেলা প্রশাসকসহ সব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ রইল।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন সমাবেশ শুরুর আগে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত অঙ্গসহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এনসিপির সমাবেশ পণ্ড করতে সকাল থেকে গোপালগঞ্জ শহরে আসার সব সড়কের পাশে থাকা গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে। সেই সঙ্গে কর্তব্যরত সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের মারপিট, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে জনমনে ভীতির সৃষ্টি করে। এ ছাড়া সরকারি স্থাপনায় হামলা, ও ভাঙচুর করে এবং গোপালগঞ্জ জেলা সদরে থাকা বিএনপি নেতাদের বেশ কয়েকটি তোরণ ভাঙচুর করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট কাজী আবুল খায়ের, বিএনপি নেতা ডা. কে এম বাবর, অ্যাডভোকেট তৌফিকুল ইসলামসহ বিএনপি ও সহযোয়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।