<p>একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটার স্থানান্তর কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে। কমিশন সচিবালয় থেকে ১১ জুন থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, আবাসস্থল পরিবর্তন বা অন্য কোনো কারণে ভোটার স্থানান্তরের যেসব আবেদন জমা রয়েছে, সেগুলো ৩১ আগস্টের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।</p> <p>ইসি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আসনভিত্তিক ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুতের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩০০ নির্বাচনী এলাকায় পাঠানো হবে। আগামী ১০ অক্টোবরে মধ্যে সর্বশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকার সিডি অনুযায়ী ছবিসহ ও ছবি ছাড়া ভোটার তালিকা মুদ্রণ হবে। এ অবস্থায় নতুন করে ভোটার স্থানান্তর হলে তালিকার ক্রমিকে সমস্যা সৃষ্টি হবে। তবে যেহেতু ভোটার তালিকা সংশোধন একটি চলমান প্রক্রিয়া, সেহেতু কেউ ভোটার স্থানান্তর বিষয়ে আবেদন করলে তা গ্রহণ করতে ইসি সরাসরি নিষেধ করেনি।</p> <p>এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, যৌক্তিক কারণ ছাড়া আপাতত ভোটার স্থানান্তর করা হবে না। কেননা জাতীয় নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুতের কাজ চলছে। তবে যে কেউ চাইলে তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার হতে পারবে।</p> <p>এদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে গত ১৬ আগস্টই বলা হয়েছে যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের  প্রস্তুতিমূলক কাজের ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে গেছে। ওই দিন ইসির সভা শেষে ইসি সচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘৩০ অক্টোবর থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। এই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ যা যা করা দরকার, আমরা করছি। নির্বাচনী সামগ্রী সরবরাহের জন্য আমরা  ইতিমধ্যে কার্যাদেশও দিয়েছি।’</p> <p>গতকাল ইসি সচিব বলেন, ভোটকেন্দ্রের তালিকাও প্রস্তুত। ১৫ সেপ্টেম্বর এই তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। এরপর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বড় ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজ আর নেই বললেই চলে।</p> <p>জানা যায়, শুধু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়, এর পরপরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা নির্বাচনের মালপত্রও একই সঙ্গে কেনা হচ্ছে। এর মধ্যে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে সিল, গালা, কালি ও কলম কেনা হচ্ছে ২২ কোটি ৩৯ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকার। লাল সিলিং গালা কেনা হচ্ছে ১৭ হাজার ৪৪০ কেজি। সেল্ফ ইনকিং স্ট্যাম্প প্যাড কেনা হচ্ছে ছয় লাখ ১৯ হাজার ৫০০টি। আরো কেনা হচ্ছে অফিশিয়াল সিল পাঁচ লাখ ৭৮ হাজার, মার্কিং সিল ১১ লাখ ৫৬ হাজার,  ব্রাশ সিল ৮৭ হাজার ১০০, অমোচনীয় কালির কলম ছয় লাখ ৬৫ হাজার এবং ব্যালট বাক্সের সিল লক ৩৪ লাখ ৪০ হাজার।</p> <p>সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আরো জানান, ভোটকেন্দ্রের তালিকাও প্রস্তুত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজের মধ্যে নির্বাচনী ম্যানুয়াল ছাপানোর কাজ এখনো বাকি রয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে কোনো পরিবর্তন এলে সে অনুযায়ী ম্যানুয়াল ছাড়া হবে। আর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর ছাপা হবে কয়েক রকমের ফরম।</p>