<p>মেক্সিকোর দক্ষিণ উপকূলে ৮.২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় সিয়াপেস প্রদেশে। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতো এই ভূমিকম্পকে গত এক শতকের মধ্যে মেক্সিকোর সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প হিসেবে অভিহিত করেছেন।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য মতে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ‘প্যাসিফিক’ এলাকায়। এই এলাকাটি সিয়াপেস প্রদেশের উপকূলীয় তোনালা শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ৭০ কিলোমিটার। ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন (আফটার শক) হয় অন্তত ১২ বার; এগুলো সর্বোচ্চ ৫.৭ মাত্রার ছিল।</p> <p>বিবিসির খবরে বলা হয়, ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওক্সাকা ও সিয়াপেস প্রদেশ। ওক্সাকা প্রদেশের গভর্নর আলেজান্দ্রো মুরাত জানান, সেখানে মোট ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন মারা গেছে জুচিতান শহরে।</p> <p>এ ছাড়া সাতজনের মৃত্যু হয়েছে সিয়াপেস প্রদেশে। তাবাসকো প্রদেশে মারা গেছে দুই শিশু। একজনের মৃত্যু হয়েছে গুয়াতেমালায়। ওক্সাকা ও সিয়াপেস প্রদেশের বেশ কয়েকটি ভবন ধসে গেছে। এর মধ্যে স্থানীয় একটি হাসপাতালও আছে। ভূমিকম্পের পর মেক্সিকোসহ আশপাশের কয়েকটি দেশ—এল সালভাদর, গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস ও কোস্টারিকায় সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। পরে সেই সতর্কতা প্রত্যাহার করে নেয় ‘দ্য প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার’ (পিটিডাব্লিওসি)।</p> <p>মেক্সিকোর গত ১০০ বছরের মধ্যে এই ভূমিকম্পকে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতো। তিনি বলেন, দেশের পাঁচ কোটি মানুষ এই ভূমিকম্প অনুভব করেছে।</p> <p>ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে রাজধানী মেক্সিকো সিটির দূরত্ব প্রায় এক হাজার কিলোমিটার। কিন্তু সেখানেও তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের স্থায়িত্ব ছিল এক মিনিটের বেশি। এ সময় শহরের প্রায় সব মানুষ ভবন ছেড়ে সড়কে নেমে আসে। ক্রিস্টিয়ান রদ্রিগেস নামের এক ট্যাক্সিচালক বলেন, ‘আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম। হঠাৎ সবকিছু কাঁপতে শুরু করে। আমার গাড়িও এপাশ-ওপাশ কাত হয়ে যাচ্ছিল।’</p> <p>ভূমিকম্পের পর মেক্সিকোর ১১টি প্রদেশের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় সিয়াপেস প্রদেশে। ভূমিকম্পের পর অনেক শহরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু পরে তা ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।</p> <p>উল্লেখ্য, মেক্সিকোতে এর আগে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে ১৯৮৫ সালে। ৮.১ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তবে এবার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।</p>