আমাদের জরিপ অনুসন্ধানে সর্বশেষ প্রশ্ন ছিল—ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কী করা উচিত?
এ প্রশ্নের উত্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ওপরই জোর দিয়েছেন সর্বাধিক মানুষ।
ন্যায়বিচারের জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন ৪৮.৬ শতাংশ মানুষ। স্বাধীন ও উপযুক্ত বিচারব্যবস্থার কথা বলেছেন ২২.১%; প্রশাসনের জবাবদিহির কথা বলেছেন ৭.৯%; পুলিশের জবাবদিহির কথা বলেছেন ৬.৬% আর সব কটির কথা বলেছেন ১৪.৯ শতাংশ মানুষ।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতও প্রায় একই রকম।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের মতে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য তিন পর্যায়ে জোর দিতে হবে। প্রথমত—ভীতিকর পরিবেশ থেকে সমাজকে মুক্ত করতে হবে। সেটা করতে হলে মূলত আইনের শাসন এবং সার্বিকভাবে রাজনৈতিক সুশাসন খুব প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত—নিরাপত্তার সেবাটাকে আরো কার্যকর করা প্রয়োজন। সেখানে জটিলতা, ব্যয়বহুলতা, সেবার মানসিকতার অভাব, সচেতনতার ঘাটতি—এগুলো দূর করা উচিত। তৃতীয়ত—যে সমস্যাগুলো সহজে সমাধানযোগ্য সেগুলোসহ (কিন্তু ক্যাপিটাল ক্রাইম কিংবা ধর্ষণের মতো অপরাধগুলো নয়) বিয়ে নিয়ে, সীমানা নিয়ে বিরোধ, ঝগড়া-বিবাদ—এগুলো নিষ্পত্তির জন্য এডিআর বা সালিসি ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যেতে পারে।
সৈয়দ আবুল মকসুদের মতে, সামাজিক নিরাপত্তা কিংবা ন্যায়বিচারের জন্য আইনের শাসন জরুরি। সমাজে আইনের শাসন থাকলে মানুষ নিরাপত্তাহীন বোধ করবে না।
আইনের শাসন থাকলে রাষ্ট্রের কর্মচারী, জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য। সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন, প্রয়োজন জননিরাপত্তার প্রশ্নে সব দল-মত-আদর্শের ঐকমত্য। আপাতত কাজটা কঠিন। কিন্তু কাজটা যদি সবাই মিলে না করেন তাহলে সামাজিক শান্তি স্থাপন, নিরাপত্তাবোধ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে না।