মুসলিম স্মৃতিধন্য ভেনিসের ন্যাচরাল হিস্টোরি মিউজিয়াম ভবন
কয়েক শ বছর আগে যখন ভেনিস ইউরোপের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছিল, তখন তা ছিল একটি অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মিলনকেন্দ্র। বিশেষত মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে তার ছিল জোরালো সম্পর্ক। ভেনিসিয়ান বণিক যেমন নীল নদ থেকে ইস্তাম্বুল এবং সেখান থেকে আজারবাইজান পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বের বিস্তৃত অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য বিস্তার করেছিল। তেমন মুসলিম বণিকদের পদচারণে মুখর হয়েছিল ভেনিস।
বিজ্ঞাপন
ভেনিসের বাজারেও যে মুসলিম বণিকদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল। ১৪৯৪ সালে মিলানিজ ধর্মযাজক পিয়েত্রো ক্যাসোলা ভেনিসের বাজার দেখে যে বিস্ময়কর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তা থেকে স্থানীয় বাজারে মুসলিম বিশ্বে উৎপদিত পণ্য ও মুসলিম ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘কে গণনা করতে পারে এত সুন্দর সজ্জিত দোকানগুলোকে—যেগুলো মনোহর পণ্যের গুদাম বলেই মনে হয়। দীর্ঘ কাপড়সহ দেয়ালে ঝোলানো পর্দা, হাতে বোনা কাপড়, সব ধরনের কার্পেট, সিল্ক, মসলা, মুদি পণ্য, ওষুধ ও সুন্দর মোম। ’ ক্যাসোলার যে পণ্যগুলো দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন সেগুলো মূলত ভূ-মধ্য সাগরের মুসলিম দেশগুলো থেকে মুসলিম বণিকরা সে দেশের বাজারে উপস্থিত করেছিল। ‘ভেনিসের ন্যাচরাল হিস্টোরি মিউজিয়াম’ ভবনটি ভেনিসে মুসলিম ব্যবসায়ীদের ঐতিহাসিক উপস্থিতির সাক্ষ্য বহন করে। ১৩ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত ভবনটি ১৬২১ খ্রিস্টাব্দে তুর্কি ব্যবসায়ীদের আবাসিক ভবন ও গুদামঘর হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সমকালীন ভেনিসিয়ান শিল্পচিত্র, অঙ্কন, ছাপা বইসহ প্রায় সব শিল্পকর্মে মুসলিম বিশ্ব ও তার শিল্পকর্ম দ্বারা প্রভাবিত ছিল। ভেনিসের জাদুঘরগুলো সেই সোনালি সময়ের বহু নিদর্শন বহন করছে।
তথ্যসূত্র : এশিয়ান আর্ট নিউজ পেপার ডটকম ও ১০০১ মুসলিম ইনভেনশন