<p>যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কা দূর হয়ে যাওয়ায় সারা বিশ্বের পুঁজিবাজারে আবার গতি আসছে। বিশ্ব পুঁজিবাজার গত সপ্তাহে বেশ চাঙ্গা ছিল। আগের মাসে পুঁজিবাজারের অবস্থা ভালো ছিল না। সূচক ছিল নিম্নমুখী। এই ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিবাচক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব আছে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার কমছে এবং মানুষও কেনাকাটায় ব্যয় করছে।</p> <p>মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক গত সপ্তাহে ৩.৯ শতাংশ বেড়েছে। শুক্রবার অর্থাৎ সপ্তাহের শেষ দিনে সূচক বেড়েছে ০.২ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে টানা চার সপ্তাহ পর এই সূচক পতনের ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছে।</p> <p>জুলাই মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। ফলে ফেডের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী সেপ্টেম্বর মাসে যে সুদহার কমছে, তা এখন এক রকম পরিষ্কার। সব মিলিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আছে। দেশটির অর্থনীতি নিয়ে এমন আশাবাদ তৈরি হওয়ায় বৈশ্বিক পুঁজিবাজারের পালেও হাওয়া লেগেছে।</p> <p>ফিন্যানশিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন অর্থনীতির চাঙ্গাভাব এবং নীতি সুদহার হ্রাসের সম্ভাবনা জোরালো হওয়ার প্রভাব পড়েছে এশিয়ার পুঁজিবাজারে। জাপানের পুঁজিবাজারের সূচকগুলো গতকাল ২.৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রযুক্তি ও শিল্প খাতের কম্পানিগুলোর নিক্কেই সূচক ২২৫ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশ বেড়েছে। সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, হংকং, তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়ায়ও শেয়ারের দাম বেড়েছে।</p> <p>বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সূচকগুলো উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বৃহস্পতিবার এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক বেড়েছে ১.৬ শতাংশ; এ নিয়ে টানা ছয় দিন সূচকটি ঊর্ধ্বমুখী ছিল। বিষয়টিকে মার্কিন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের আরেক সূচক ডাও ইন্ডাস্ট্রিয়াল গত বৃহস্পতিবার ৫৫৪ পয়েন্ট বা ১.৪ শতাংশ বেড়েছে। গত মাসে ব্যাপক দরপতনের পর এনভিডিয়া ও অন্যান্য বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে বৃহস্পতিবার নাসডাক কম্পোজিট সূচক ২.৩ শতাংশ বেড়েছে।</p> <p>মার্কিন শ্রম বিভাগের তথ্যানুসারে জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি ছিল ২.৯ শতাংশ; ২০২১ সালের মার্চ মাসের পর এই প্রথম তা ৩ শতাংশের নিচে নেমে এলো। জুন মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৩ শতাংশ। জুলাইয়ে এই ধারা বজায় রাখলে সামনে মূল্যস্ফীতির চাপ আরো কমবে।</p> <p>ফেডের পূর্ব ভাষ্য অনুসারে, তারা যদি নিশ্চিতভাবে এই লক্ষণ দেখে যে মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের ঘরে নেমে আসছে, তাহলে নীতি সুদহার কমানো হবে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের গতিও কমে এসেছে। এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত টানা চার মাস বেকারত্বের হার বেড়েছে। জুলাই মাসে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৪.৩ শতাংশ। ফলে বাজারে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে অর্থনীতির গতি কমতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে নীতি সুদহার কমানোর চাপ তৈরি হচ্ছে। সূত্র : ফিন্যানশিয়াল টাইমস</p> <p> </p>