<p>ফুলের সৌরভ কিংবা রূপ নয়, এর পাতার সৌন্দর্যও মুগ্ধ করার মতো। কামিনীপাতার অসাধারণ বিন্যাস সৌন্দর্য সৃষ্টিতে আনে ভিন্নমাত্রা। আর তাই ব্যাপক হারে বেড়েছে কামিনীর পাতার ব্যবহার। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে কামিনীপাতার চাষ। বিয়ের বাড়ি সাজাতে, গুণীজনদের বরণ ও শ্রদ্ধা জানাতে, জন্মদিনের অনুষ্ঠান, পূজা-পার্বণ, জাতীয় দিবস, সভা-সমিতি ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফুলের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়ে থাকে কামিনীর ডাল-পাতা। আর এই চাহিদার ফলেই বাণিজ্যিকভাবে কামিনীগাছ চাষ শুরু করেছেন উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের ঠাকুরপুরপাড়ার মৃত মোবারক হোসেনের ছেলে মহিদুর রহমান ও নজরুল মণ্ডলের ছেলে কাজল।</p> <p>কামিনীগাছ চাষি মহিদুর রহমান বলেন, ‘কামিনীর ফুল নয়, শুধু ডাল-পাতা বিক্রির জন্য বাণিজ্যিকভাবে এই চাষ শুরু করেছি। তাঁরা দুজন মিলে দুই বিঘা জমিতে গত বছরের এপ্রিলে চাষ শুরু করেন। এসব গাছের বয়স মাত্র ৯ মাস। চারা কেনা থেকে শুরু করে রোপণ ও পরিচর্যায় মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। এরই মধ্যে গাছের অগ্রভাগের ডাল-পাতা কেটে স্থানীয়ভাবে বিক্রি করা শুরু হয়েছে। ছোট গোছা ২০-২৫ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। বছরে গাছ থেকে কয়েকবার ডাল-পাতা সংগ্রহ করা যায়। এসব ডাল-পাতা ফুল ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন ফুল মার্কেটে সরবরাহ করে থাকেন।</p> <p>দামুড়হুদা বাজারের হাবিব ফুল ঘরের ফুল ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন লিটন বলেন, ‘কামিনীপাতার সৌন্দর্য মুগ্ধ করার মতো। শাখা-প্রশাখায় ঠাসবুননে ছোট চিরসবুজ পাতাগুলো বেশ দৃষ্টিনন্দন। এর শাখা-প্রশাখা বেশ শক্ত। পুষ্পস্তবক তৈরি ও বিয়ের সজ্জায় কামিনীপাতার ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়াও ফুলের তোড়া, ফুলদানি, গাড়ি, গেট, মঞ্চ, বাসরঘর ইত্যাদি সাজানোসহ নানা ডেকোরেশনের কাজে কামিনীর ডাল-পাতা ব্যবহার করা হয়।</p> <p>উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কামিনী ফুল ও তার বাহারি ডাল-পাতার গুরুত্ব আছে। কামিনী ফুল দ্রুত ঝরে যায় বলে এর বাণিজ্যিক ব্যবহার কম। তবে গাছের ডাল-পাতা বাহারি বলে এর চাহিদা রয়েছে। কামিনীগাছ সব ধরনের মাটিতেই হয়ে থাকে। কামিনীর বীজ থেকে তৈরি চারা ও গুটি কলমের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা যায়। একটা প্রাপ্তবয়স্ক গাছ থেকে বছরে দুই-তিনবার ডাল-পাতা সংগ্রহ করা যায়।’</p>