বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে থাকা সদস্যদের মধ্যে যাঁরা বিভিন্ন সংস্থায় ডেপুটেশনে কর্মরত আছেন, তাঁদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তে কোনো সেনা সদস্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেনা সদর। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল (স্টাফ কর্নেল) মো. শফিকুল ইসলাম।
সেনা সদরের ব্রিফিং
গুমে সেনা সদস্যের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা
- নির্দেশনা পেলে সেনাবাহিনী নির্বাচনে সহায়তা করতে প্রস্তুত
- মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী তৎপর
নিজস্ব প্রতিবেদক

গুমের সঙ্গে সেনা সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়ে কর্নেল শফিকুল বলেন, সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সদস্য ডেপুটেশনে যেসব সংস্থায় থাকেন, সেই সংস্থাগুলো আমাদের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এ ছাড়া কিছু কিছু সেনা সদস্য যাঁরা ডেপুটেশনে ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, যদি কেউ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে সহযোগিতা চান, তাহলে আমরা যথাযথভাবে সহযোগিতা করব।
নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল জানান, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি।
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় অস্ত্র লুটের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে, তার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ (প্রায় ৯ হাজার) এরই মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ নির্বাচনের আগেই উদ্ধার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে ৪০০ জনেরও বেশি কিশোর গ্যাং সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী । গত মাসেও ৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অলিতে-গলিতে সেনাবাহিনী সব সময় থাকতে পারে না। তবে কোনো ঘটনার তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ত্বরিত গতিতে উপস্থিত হয়ে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসছি। একই সঙ্গে ঘটনার পরবর্তী গ্রেপ্তার ও তদন্ত করার মাধ্যমে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সেনাবাহিনীর হটলাইন নম্বরে ফোন করে না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হটলাইন নম্বরগুলোয় বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পেয়ে থাকি। তার মধ্যে বেশির ভাগ জমিজমা, টাকা-পয়সা সংক্রান্ত অভিযোগ আসে। সব ধরনের অভিযোগই আমরা গ্রহণ করে থাকি এবং যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।’
সম্প্রতি কেএনএফের জন্য চট্টগ্রামে পোশাক তৈরির বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পোশাক যেগুলো পাওয়া গেছে সেগুলোর বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে। এর পেছনে যার নাম গণমাধ্যমে এসেছে, সে এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। গ্রেপ্তার হলে আমরা আরো বিস্তারিত জানতে পারব এবং আপনাদের জানাতে পারব।’
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের অভিযোগ, আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের যুদ্ধ করার জন্য বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী প্রশিক্ষণসহ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে, এ বিষয়ে কর্নেল শফিকুল বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য আমার জানা নেই। তবে পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো এ ধরনের প্রশিক্ষণে জড়িত ছিল না, এখনো জড়িত নেই।’
বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন অফিস খুলছে, সেনাবাহিনী এই অফিস সমর্থন করে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটি একটি রাষ্ট্রীয় বিষয়, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণকারীরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমরা মনে করি।’
এ ছাড়া গতকাল বান্দরবানের রুমায় অপারেশনের বিষয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, কেএনএফ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে এবং ভোরের দিকে দুজন কেএনএফ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া অভিযানে তিনটি এসএমজি, দুটি রাইফেল ও ৩৬৪টি অ্যামোনিশন পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে কিছু সামরিক সরঞ্জাম ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এটি বড় একটি সফল অভিযান। এ ছাড়া কেএনএফের ভয়ে আগে যেসব বম পরিবার ভয়ে তাদের বসতভিটা ছেড়ে চলে গিয়েছিল, পুনরায় তাদের ১৩৮ জন গত সপ্তাহে ফেরত এসেছে।
মব ভায়োলেন্স নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কঠোর হুঁশিয়ারি থাকলেও একের পর এক ঘটনা ঘটছেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেকোনো মব ভায়োলেন্স কোনোভাবেই প্রত্যাশিত না, অপ্রত্যাশিত। এ ধরনের ঘটনার প্রতি আমরা সোচ্চার আছি। পটিয়ার ঘটনায় দেখেছেন সেনাবাহিনী ত্বরিত গতিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এ ছাড়া কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ছিল, সেটা সেনাবাহিনী যাওয়ার পর মুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের যে দুর্ভোগ দেখেন, মবের সঙ্গে কিন্তু দুর্ভোগের একটা কানেকশন আছে। দুর্ভোগ থেকে রেহায় পেতে তাই দ্রুত অবরোধমুক্ত করি। ভবিষ্যতে আমাদের এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে, যেকোনো ধরনের মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
এ সময় গত দুই সপ্তাহে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার, অভিযান সম্পর্কে বর্ণনা দেন এই সেনা কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গত দুই সপ্তাহে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫৬২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাতসহ অন্যান্য অপরাধী রয়েছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত সেনাবাহিনী ১৫ হাজার ৬৪৬ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছে।
এই সেনা কর্মকর্তা আরো জানান, চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ৫৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ৯৯০ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এ সময় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫৬২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ২৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ১০০ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৬৯২টি অবৈধ অস্ত্র ও দুই লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫৬২ জনকে এবং এ পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ৬৪৬ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনী গত ২১ জুন খুলনা জেলার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বুলবুলকে তাঁর চারজন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে। অভিযানে একটি অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় পিস্তল, একটি শটগান এবং দুই রাউন্ড অ্যামোনিশন উদ্ধার করা হয়। সন্ত্রাসী বুলবুল ‘বুলবুল গ্রুপ’ নামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের নেতা।
গত ২৯-৩০ জুন মীরহাজিরবাগ আল আমীন সন্ত্রাসী গ্রুপের দুজন সক্রিয় সদস্য আনিছ ও হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ অভিযানে তিনটি বিদেশি পিস্তল, একটি বিদেশি রিভলভার, তিনটি ম্যাগাজিন ও ১১ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম আরো বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে গত দুই সপ্তাহে ৪৫ জন মাদক ব্যবসায়ী এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচ হাজার ৫২১ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী মাদকের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে সফল অভিযান পরিচালনা করে। এ ছাড়া গত ১৭ জুন টঙ্গী মাজার বস্তি এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসা ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ২৪ জন এবং গত ২৬ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অভিযান পরিচালনা করে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান চলমান থাকার কথা জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ‘অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।
মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।’
গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।’

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।
মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮’-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।
গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।
অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।
তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।
সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
বরগুনা প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।