ঢাকা, শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫
৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৩ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫
৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৩ মহররম ১৪৪৭
বাংলাদেশ রেলওয়ে

মির্জা আজমের আশীর্বাদে তমা ম্যাক্সের লুটপাট

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
মির্জা আজমের আশীর্বাদে তমা ম্যাক্সের লুটপাট

পতিত আওয়ামী লীগ আমলের ১৬ বছরে দেশের রেল খাতে মেগাপ্রকল্পগুলোর কাজ বাগিয়ে নিত আলোচিত দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। তমা কনস্ট্রাকশনের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। আওয়ামী লীগের প্রভাব কাজে লাগিয়ে তাঁরা রেলের কমপক্ষে ৪০ হাজার কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নেন। রেল ভবনের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দিয়ে তাঁরা গড়েছিলেন দুর্ভেদ্য চক্র।

দুটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নেপথ্যে থাকতেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। তমা কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে মির্জা আজমের ঘনিষ্ঠতা এখনো রেল ভবনে আলোচনায় আছে। তবে মানিক গ্রেপ্তার এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ম্যাক্সের গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে।
তাঁর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত চলছে। 
বাংলাদেশ রেলওয়ের সাবেক মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব থাকা সমীচীন নয়। কিন্তু এটা স্বীকার করতেই হবে, আমাদের দেশে বেশ কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবে দরপত্রে কারসাজি করেও কাজ দেওয়া হয়। রেলে এককভাবে কোনো একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বেশি কাজ দেওয়ার ব্যাপারটি একদিনে গড়ে ওঠেনি।
এই সংস্কৃতি ভাঙতে প্রথম দরকার ক্ষমতাসীনদের সদিচ্ছা। 
বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এই দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনায় উন্নয়ন প্রকল্প ছক-ডিপিপি তৈরি করত। পরে তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবদের দিয়ে অনুমোদন করিয়ে নিত। আওয়ামী লীগ আমলে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মুজিবুল হক, নুরুল ইসলাম সুজন, জিল্লুল হাকিমের বাসভবন ও দপ্তরে সরাসরি ঢুকে পড়তেন তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আতাউর রহমান মানিক। ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরও তাতে পিছিয়ে ছিলেন না।
কাজ পাওয়ার যোগ্যতা বেশি বোঝাতে বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ বাগিয়ে নিত দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। জানা গেছে, বড় বড় প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে নেওয়ার পর সেগুলোর মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো হতো তাঁদের গড়ে তোলা চক্রের মাধ্যমে। তাতে আপত্তি তুললে রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই বিপদে পড়তেন। প্রকল্প কর্মকর্তাদেরও বদলি করা হতো। তবে যেসব কর্মকর্তা তাল মেলাতেন তাঁদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হতো। গাড়িবিলাসসহ অন্যান্য বাড়তি সুবিধা পেলে কর্মকর্তাদের বেশির ভাগ অবশ্য ভীষণ খুশি হতেন। বাগিয়ে নেওয়া প্রকল্পের টাকার বড় অংশ ঠিকাদারি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানির নামে ভুয়া এলসি খুলে বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে এই দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এদের বেশ কিছু প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হয়নি। বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়া প্রকল্প নেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। দেশে বহু প্রকল্পে সম্ভাব্যতা যাচাই করার পরও ব্যয় সঠিকভাবে প্রাক্কলন করা হয় না। এ ক্ষেত্রে রেলে প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে এভাবে বেশ কিছু প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। গত আওয়ামী লীগ আমলে এটা করা হয়েছে। এটা প্রকাশ্য দুর্নীতি। আসলে সম্ভাব্যতা যাচাই না করে লুটপাটের অবাধ সুযোগ তৈরি করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প বরাদ্দের ৭০-৭৫ শতাংশ অর্থই লোপাট করা হয়েছে। তমা ও ম্যাক্স এই দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বেশি অর্থের কাজ নেওয়ার বিষয়টি প্রশ্নবোধক। 
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে যৌথভাবে কাজ করেছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন জোগাতেই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল। প্রকল্প নেওয়ার আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হয়। কিন্তু এ প্রকল্পে তা করা হয়নি। ২০১০ সালে প্রকল্প নেওয়া হয়। ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ১০১ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত দফায় দফায় বাড়িয়ে প্রকল্প ব্যয় ঠেকে দুই হাজার ৩৫ কোটি টাকায়। ২০১৩ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে কাজ শেষ করা হয় ২০১৮ সালে। এই সময়ের মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ তিন দফা বাড়ানো হয়। ব্যয় বাড়ানো হয় ৯৩৪ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পে দেড় হাজার কোটিরও বেশি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। পাবনার ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদার ছিল ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। নিয়ম থাকলেও এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। এই প্রকল্পও নেওয়া হয় ২০১০ সালে। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৮৩ কোটি টাকা। পরে তিনবার মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো হয়। শেষ পর্যন্ত ব্যয় দাঁড়ায় এক হাজার ৭১৫ কোটি টাকায়। কাজটি পাঁচ বছরে শেষ করার কথা ছিল। মেয়াদ তিন বছর বাড়িয়ে ২০১৮ সাল পর্যন্ত করা হয়। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ২০১৬ সালে ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত ওই ব্যয় বাড়িয়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা করা হয়। প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের কাজ নিয়েছিল তমা ও ম্যাক্স। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প ছিল এটি। এই সুযোগে দফায় দফায় ব্যয় বাড়াতে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন। জানা গেছে, রেলে তমা ও ম্যাক্সের অলিখিত প্রতিনিধিরা ব্যয় বাড়ানোর প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে শেষ করতে তৎপর থাকতেন।
লাকসাম-আখাউড়া ডুয়াল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পেরও কাজ পেয়েছিল তমা ও ম্যাক্স। এই প্রকল্পে এ প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে দরপত্র প্রক্রিয়ায় কারসাজিসহ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে দেড় বছর অনুসন্ধান করে। ২০১৫ সালে প্রকল্পের কার্যাদেশ পেয়েছিল দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের জুনে। তিন দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। ব্যয় বেড়ে যায় প্রায় হাজার কোটি টাকা। ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৭২ কিলোমিটার ডুয়াল গেজ ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণের এ প্রকল্প অনুমোদন হয়। ২০১৫ সালে তমা ও ম্যাক্সকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের জুনে। বর্ধিত মেয়াদ অনুযায়ী ২০২৩ সালের জুনে কাজ শেষ দেখানো হয়। প্রকল্পে মাটি ভরাটেই ৯০০ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় পাঁচ লাখ ৮৮ হাজার ঘনমিটার মাটি দেওয়ার কথা ছিল। পরে তা বাড়িয়ে করা হয় ১১ লাখ ঘনমিটার। প্রথমে প্রতি ঘনমিটারের দর ২৮০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও পরে তা বাড়িয়ে করা হয় ৬৫০ টাকা। শুরুতে এ ক্ষেত্রে ব্যয় ১৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ধরা হলেও পরে বাড়িয়ে করা হয় প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়াতে রাজি না হওয়ায় একাধিক প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করে তমা ও ম্যাক্সের নিয়োজিত সন্ত্রাসীরা।
ছিল মির্জা আজমের আশীর্বাদ : জানা গেছে, ঠিকাদার আতাউর রহমান মানিক আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের হাত ধরে দেশের বড় ধনী ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক বনে যান। মুলত মির্জা আজমের আশীর্বাদেই রেলে বড় বড় কাজ বাগিয়ে নেন মানিক। সাবেক সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গেও মানিকের উপস্থিতিতে একাধিক বৈঠক করেন আজম। আতাউর রহমান মানিক নোয়াখালীতে ‘তমা মানিক’ নামেই পরিচিত। তমার কাজের একটি অংশ মির্জা আজমও পেতেন। আগে আওয়ামী লীগ না করলেও মানিক এক পর্যায়ে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীকে বন্ধু বানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদও বাগিয়ে নিয়েছিলেন। গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে নোয়াখালী-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে অল্প ভোটের ব্যবধানে সাবেক এমপি মোরশেদ আলমের কাছে হেরে যান মানিক। নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার বারগাঁও ইউনিয়নে তাঁর পৈতৃক বাড়ি। তবে ভোট পাওয়ার জন্য সেনবাগ উপজেলা শহরে দৃষ্টিনন্দন বাড়ি তৈরি করে সেখান থেকে তিনি দলীয় কর্মকাণ্ড চালাতেন। সেখানে প্রায় ১০ একর জায়গায় ‘ড্রিম পার্ক’ গড়ে তোলেন। অতীতে খেলোয়াড় বা ক্রীড়া সংগঠক না থাকলেও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতিও নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।
সেই আজম পলাতক : জামালপুর-৩ আসনের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এখন পলাতক। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জামালপুর-৩ আসন থেকে টানা সাতবার এমপি হন। তমা কংক্রিট লিমিটেড ও ময়মনসিংহে ভালুকা ডেইরি ফার্মে তাঁর মালিকানা রয়েছে। জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামিম বলেন, মির্জা আজম টেন্ডারবাজি, জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে ছিলেন বেপরোয়া। 
ম্যাক্স চেয়ারম্যান অভিযুক্ত : প্রায় ২৮ কোটি টাকার ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে দুদক। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন। তিনি ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডেরও চেয়ারম্যান। দুদকের অনুসন্ধান দল প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছে, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকার পরও রেলের প্রকল্পে এককভাবেই ৩০ হাজার কোটি টাকার কাজ পেয়েছে ম্যাক্স গ্রুপের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। দুদক অনুসন্ধানী দলের কাছে দোহাজারী-কক্সবাজার, কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ ও আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নথিপত্র রয়েছে। প্রাপ্ত কাগজপত্রের প্রাথমিক পর্যালোচনা করে সংস্থাটি বলেছে, প্রায় ৬২৮ কোটি টাকার কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ঠিকাদারের কাছে ১০ বছরে একই প্রকৃতির ২০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের দুটি চুক্তি, যার মূল্যমান ৩০০ কোটি টাকা এবং যেকোনো তিন বছরে ৩০০ কোটি টাকার বার্ষিক টার্নওভার অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছিল। এসব যোগ্যতা না থাকার পরও প্রকল্পের কাজ পায় ম্যাক্স। এভাবে যোগ্যতা না থাকার পরও অন্যান্য প্রকল্পেরও কাজ পায় প্রতিষ্ঠানটি। দুদকের অনুসন্ধান দলের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে, প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের মালিকানাধীন ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে ‘অনৈতিকভাবে’ কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। দুদক সূত্র জানায়, রেলে অবৈধভাবে কাজ পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে আরো তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জামায়াতের সমাবেশ আজ

১০ লাখের বেশি লোক সমাগমের লক্ষ্য

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
১০ লাখের বেশি লোক সমাগমের লক্ষ্য

দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আজ শনিবার আয়োজন করতে যাচ্ছে তাদের জাতীয় সমাবেশ। এবারই প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সর্ববৃহৎ জনসমাগমের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে দলটি। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে নানামুখী প্রস্তুতি।

সমাবেশ শুরু হবে দুপুর ২টায়।

তবে সকাল ১০টা থেকেই থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশ উপলক্ষে প্রায় ১০ হাজার বাস, বিশেষ ট্রেন ও লঞ্চে আসবেন নেতাকর্মীরা। ১০ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম আশা করছে দলটি।

এ জন্য তিনটি বিশেষ ট্রেন রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করবে, রেল কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে এর অনুমোদন দিয়েছে।

দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানিয়েছেন, বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে সমাবেশে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবার ও আহতরাও থাকবেন সম্মানিত অতিথি হিসেবে।

সমাবেশের মূল লক্ষ্য ৭ দফা দাবি জনসমক্ষে উপস্থাপন ও আদায়ের অঙ্গীকার।

এই দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছেঅবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের নিশ্চয়তায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠা, সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এবং এক কোটিরও বেশি প্রবাসী ভোটারকে ভোটাধিকার প্রদান।

জাতীয় সমাবেশ সফল করতে কাজ করছে একটি মূল বাস্তবায়ন কমিটি এবং অধীন আটটি উপকমিটি। দেশের সর্বত্র পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন, ভ্রাম্যমাণ মাইক এবং সাংস্কৃতিক দল নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে। গান, নাটিকা আর স্লোগানে সমাবেশের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নগর থেকে গ্রামান্তরে।

সমাবেশস্থলে থাকবে কড়া নিরাপত্তা।

২০টি নির্দিষ্ট পয়েন্টে প্রায় ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্বে থাকবেন, যাঁদের জন্য থাকছে আলাদা ইউনিফর্ম। ঢাকার বাইরে থেকে আসা মানুষের গাড়ি রাখার জন্য ১৫টি আলাদা পার্কিং জোন নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

অতিথিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে থাকবে ১৫টি মেডিক্যাল বুথ, প্রতিটিতে দুজন এমবিবিএস চিকিৎসক, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও অ্যাম্বুল্যান্স সুবিধা।

বৃহৎ জনসমাগমের দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হবে ড্রোন ও ক্যামেরা, যা প্রদর্শিত হবে এলইডি স্ক্রিনে এবং একযোগে প্রচারিত হবে ফেসবুক ও ইউটিউবেও।

এর আগে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে সারা দেশ থেকে ঢাকামুখী হবেন লাখো মানুষ। তিনি নগরবাসীর কাছে সম্ভাব্য যানজট ও ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা

পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বিএনপি

ভোটের অনুপাত (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চায় না বিএনপি। দলটি সংসদের নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চেয়ে আসছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আগামীর সংলাপে আবার যথারীতি তাদের আগের এ অবস্থানই তারা তুলে ধরবে। এ অবস্থায় ঐকমত্য কমিশন নিজেরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে উচ্চকক্ষ বাতিলের প্রস্তাব করলে, সেটার বিরোধিতা করবে না দলটি।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠক সূত্র জানায়, বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে ৩১ দফার আলোকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেই অঙ্গীকার রক্ষা করবে।

অর্থাৎ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে উচ্চকক্ষ গঠন করবে; মানে দলীয় অঙ্গীকার থেকে সরে যাবে না বিএনপি।

সর্বশেষ ঐকমত্য কমিশনার বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, আমরা সেই জায়গাতেই আছি। আমাদের ৩১ দফার ভিত্তিতে আমরা যে আইডিয়া নিয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে বলেছিলাম, সেটি হলোযাঁরা দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজন, যাঁদের জাতি গঠনে অবদান আছে এবং যাঁরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, তাঁদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার অবদান যেন জাতি গঠনের কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়। জাতি যাতে সমৃদ্ধ হয়, সেই আইডিয়া থেকেই আমরা এই প্রস্তাবটি রেখেছিলাম।

সেখানে আমরা উচ্চকক্ষে ১০০টি আসন রাখার জন্য বলেছিলাম।

এর আগে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হয়। কিন্তু নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে একমত হতে পারেনি দলগুলো। পরে গত সপ্তাহের সোমবার ঐকমত্য কমিশন ৬৪ জেলা এবং ১২ সিটি করপোরেশন থেকে একজন করে নির্বাচিত সদস্য নিয়ে উচ্চকক্ষ গঠনের বিকল্প প্রস্তাব করলেও তা সরাসরি নাকচ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল।

পরদিন মঙ্গলবার কমিশনের সংলাপে বিএনপিসহ পাঁচটি দল প্রস্তাব করে, সংসদের নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হবে।

অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপিসহ ২১টি দল ভোটের অনুপাতে (পিআর) উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে। কয়েকটি দল এমনও প্রস্তাব করেছে, উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে সে ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষেরই দরকার নেই।

দীর্ঘ আলোচনায়ও সদস্যরা কিভাবে নির্বাচিত হবেনএ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য না হওয়ায় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাবই বাদ যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।

এমন পরিস্থিতিতে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী সপ্তাহে সংলাপে উচ্চকক্ষের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কমিশন মনে করে, সমাজে বিরাজমান বৈচিত্র্যকে প্রতিনিধিত্ব করতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রয়োজন রয়েছে।

অন্যদিকে বিদ্যমান সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলো একমত। তবে সংসদের উচ্চকক্ষের মতো নারী সংসদ সদস্যদের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও একমত হতে পারেনি দলগুলো।

কমিশনের প্রথম প্রস্তাব ছিল, সংসদের আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৪০০ করা হবে। ১০০ আসনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে শুধু নারীরা প্রার্থী হবেন। এতে ঐকমত্য না হওয়ায় গত সোমবার কমিশন প্রস্তাব করে ২৫টির বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেএমন দলগুলো অন্তত এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী দেবে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল এ প্রস্তাব নাকচ করে। বিএনপি আগের মতোই জানায়, নারী আসন ১০০ করতে একমত হলেও নির্বাচন হতে হবে বিদ্যমান পদ্ধতিতে অর্থাৎ কোনো দলের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের আসন সংখ্যার অনুপাতে।

জামায়াত জানায়, পিআর (ভোটের অনুপাতে) পদ্ধতিতে আসন বণ্টন হলে তারা আসন বৃদ্ধিতে রাজি। এনসিপি নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের নতুন ফর্মুলা দেয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংসদে নারী সদস্যদের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নেতারা অভিমত দেন, তাঁরা নারীর ক্ষমতা ও প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর পক্ষে। এর ধারাবাহিকতায় বর্তমানে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনসংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপি নতুন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা ১০০টির মধ্যে ৫০টি নারী আসন সংরক্ষিত চাইবে। আর বাস্তবতার নিরিখে ধাপে ধাপে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন চাইবে। এর অংশ হিসেবে আগামী নির্বাচনে ৩০০ সংসদ সদস্যের মধ্যে ৫ শতাংশ, অর্থাৎ ১৫টি আসনে সরাসরি নির্বাচন এবং পরবর্তী নির্বাচন অর্থাৎ চতুর্দশ সংসদ নির্বাচনে ১০% মানে ৩০টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দলটি তাদের মধ্যে ক্ষমতার কিছু ভারসাম্য আনতে রাজি আছে। তবে এমন ভারসাম্য চায় না, যেখানে সরকার প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে না।

স্থায়ী কমিটি মনে করে, সার্বিক বিবেচনায় রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। বিএনপি নেতারা অভিমত দেন, যদি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যাপক বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে সংসদীয় গণতন্ত্র তেমন অর্থবহ থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা না থাকলে, সেটা অকার্যকর হয়ে পড়বে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির একজন সদস্য বলেন, আগামীতে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার কিংবা সংসদীয় সরকারযে পদ্ধতিই করা হোক, সরকারপ্রধানকে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে হবে। তবে আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা নিয়ে আগামীতে আরো আলোচনা হবে।

মন্তব্য
সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা

গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. আশরাফুল হুদা বলেছেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা ছিল। তিনি আরো দাবি করেন, জুলাই চেতনা নস্যাৎ করে পতিত প্রধানমন্ত্রীকে পুনর্বাসন ও জাতীয় নির্বাচন পেছানোর একটি চক্রান্ত চলছে, গোপালগঞ্জের ঘটনা তারই অংশ।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক আইজিপি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর থাকলে গোপালগঞ্জের মতো এত বড় ঘটনা ঘটত না।

গোয়েন্দা ব্যর্থতাই এই ঘটনার জন্য দায়ী। তিনি আরো বলেন, পুলিশের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না থাকলে এবং যথাযথভাবে কাজ করতে দিলে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।

সোহাগ হত্যা প্রসঙ্গে আশরাফুল হুদা বলেন, শহরের কেন্দ্রস্থলে হত্যাকাণ্ড ঘটে যাওয়ার পর পুলিশের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। দুই দিন পর বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়, এটা দুঃখজনক।

এখানে কোনো গাফিলতি থাকলে তারও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, বলেন তিনি।

মব ভায়োলেন্স প্রসঙ্গে সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সব সময় ভুক্তভোগীরাই মব ভায়োলেন্স করে না, অনেক সময় রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যও এটি সংঘটিত হয়। কেউ কেউ পরিকল্পিতভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা মব সন্ত্রাস বৃদ্ধির প্রধান কারণএ বিষয়ের ওপর অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের হারিয়ে বিজয়ী হয় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের বিতার্কিক দল।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, মব সন্ত্রাস জাতীয় জীবনে এক নতুন আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। দেশটা যেন মবের মুল্লুকে পরিণত হচ্ছে। এটি গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে কলঙ্কিত করছে। সমাজের ক্যান্সার হিসেবে এই সংস্কৃতি বন্ধ করা না গেলে জনজীবনে আতঙ্ক আরো বাড়বে।

মন্তব্য
মার্কিন কূটনীতিকদের প্রতি ট্রাম্প

অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না

অন্য দেশের পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য না করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মার্কিন দূতাবাসগুলোতে তারবার্তা পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তারবার্তায় বলা হয়েছে, কোনো দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয়নি, এই নিয়ে কোনো দেশের মার্কিন দূতাবাস বা রাষ্ট্রদূত যেন মন্তব্য না করেন। গত ১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছে এই তারবার্তা।

এতে বলা হয়েছে, এখন থেকে কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে সেই দেশের মার্কিন দূতাবাস কিংবা ওয়াশিংটন থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হবে না।

নির্বাচনে বিজয়ী পক্ষকে অভিনন্দন জানানো এবং যথাযথ সময়ে বিজয়ী পক্ষের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মার্কিন স্বার্থ নিয়ে আলোচনা শুরুর দিকে মনোযোগ দেওয়া হবে।

তারবার্তায় আরো বলা হয়েছে, কোনো দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয়নি, বৈধ হয়েছে কি হয়নি, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলোকে সমুন্নত রাখতে পেরেছে কি পারেনিএসব নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসে কর্মরত কূটনীতিকরা আগ বাড়িয়ে মন্তব্য তো করবেনই না, এমনকি কোনো পক্ষ প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তা এড়িয়ে যেতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

তারবার্তায় বলা হয়, অবশ্য কোনো দেশের নির্বাচন বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যদি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত স্পষ্ট ও বাধ্যতামূলক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট থাকে, তাহলে এই নির্দেশনার ব্যতিক্রম ঘটবে; তবু সে ক্ষেত্রে ওই দেশের মার্কিন দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত বা কর্মরত মার্কিন কূটনীতিকরা কোনো মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া জানাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত মুখপাত্ররা প্রতিক্রিয়া জানাবেন।

তারবার্তায় আরো বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তার নিজের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো দৃঢ়ভাবে ধরে রেখেছে এবং তা উদযাপনও করছে। অন্যান্য দেশও একই পথ বেছে নিয়েছে। আমাদের প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবে বলেছেন, যেকোনো দেশ, যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট, সেই দেশের সঙ্গে তিনি মার্কিন অংশীদারি বিস্তারের পক্ষে। সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ