৯০ দিন, মানে তিন মাস। অনেক দীর্ঘ সময়। তিন মাসে পৃথিবীতে অনেক কিছু করা যায়। অনেক উত্থান-পতন ঘটে।
বিশেষ লেখা
৯০ দিনে কেন নির্বাচন করা সম্ভব নয়?
বিশেষ প্রতিনিধি

স্বৈরাচারের পতনের পর বাংলাদেশে প্রথম নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয় ১৯৯০ সালে। ৯ বছরের স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
এক. কালো আইন বাতিল : মাত্র সাত দিনের মধ্যে তিনি বিশেষ ক্ষমতা আইন, প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনসের বিতর্কিত ধারাসহ অন্তত পাঁচটি নিবর্তনমূলক আইন অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাতিল করেন।
দুই. বিচার বিভাগ পৃথককরণ : একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে তিনি বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করেন। এ ক্ষেত্রে তিনি আদালতের একটি মামলার রায়কে সামনে নিয়ে এসে কাজটি সম্পন্ন করেন।
তিন. প্রশাসনিক সংস্কার : দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করেন।
চার. নির্বাচন কমিশন সংস্কার ও পুনর্গঠন : নির্বাচন কমিশন সংস্কার এবং পুনর্গঠন ছিল সেই সময় একটি বড় দাবি। এই কাজটি সম্পন্ন করতে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় লাগে মাত্র এক মাস। এই এক মাসের মধ্যে কয়েকটি আইন পরিবর্তন করা হয়। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। নতুন নির্বাচন আচরণবিধি প্রণয়ন করা হয়। বিচারপতি আব্দুর রউফের নেতৃত্বে একটি যোগ্য কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
পাঁচ. এরশাদকে গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু : বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব গ্রহণ করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে গ্রেপ্তার করেন এবং তাঁকে গৃহবন্দি অবস্থায় রাখা হয়। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলার বিচার শুরু হয়।
ছয়. স্বৈরাচারের সহযোগীদের গ্রেপ্তার এবং বিচার শুরু : একই সময়ে তিনি এরশাদের ৯ বছরের শাসনব্যবস্থায় যারা দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের বিচার শুরু করেন। বেশ কয়েকজন স্বৈরাচারের দোসরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনেন।
সাত. এরশাদের দুর্নীতি তদন্তে তদন্ত কমিশন গঠন : এই সময়ের মধ্যে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ বিচারপতি আহসান উদ্দীনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেন। সেই তদন্ত কমিশন এরশাদের দুর্নীতি সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আমরা যদি বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের তিন মাসের শাসনব্যবস্থা পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখব এই তিন মাস সময়ের মধ্যে তিনি বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন তিনটি কাজ সমান্তরালে একসঙ্গে করেছেন। একটির পর আরেকটি বা একটির সঙ্গে আরেকটির কোনো সম্পর্ক ছিল না। ৯০ দিনের মধ্যে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ ৪৭ দিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অর্থাৎ প্রতি এক দিন অন্তর তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ এই ৯০ দিনে মাত্র একবার বিদেশ সফর করেছিলেন। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ তাঁর তিন মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যতগুলো কাজ করেছেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ১০ মাসে কি তার অর্ধেক পরিমাণ কাজ করেছে? বিচারপতি সাহাবুদ্দীন পুরোপুরি নজর দিয়েছিলেন জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ওপর। এ কারণে তিনি বিদেশ সফর বা অন্য কোনো অযাচিত কাজে মনোনিবেশ না করে নির্বাচন, সংস্কার এবং এরশাদের বিচারের বিষয়ে মনোনিবেশ করেছিলেন। সফলও হয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশে দ্বিতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে। ১৯৯৬ সালের ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা ছিলেন আজকের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকারও ৯০ দিনের মধ্যে কতগুলো কঠিন ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করে দেশকে নির্বাচনের পথে নিয়ে যায়।
এবার দেখা যাক বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কী কী কাজ করেছিল।
এক. সেনা বিদ্রোহ দমন : নির্বাচনের তিন মাস সময়ের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইতিহাসে সবচেয়ে সফলভাবে একটি সেনা বিদ্রোহ দমন করেছিল। ওই সময় তৎকালীন জেনারেল নাসিমের নেতৃত্বে একটি সেনা বিদ্রোহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাসকে সরানোর জন্য। কিন্তু বিচারপতি হাবিবুর রহমানের দূরদর্শিতায় সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয় এবং নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেওয়া হয়। ওই সময় বিচারপতি হাবিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে একটি অসাধারণ ভাষণ দিয়েছিলেন।
দুই. নির্বাচন কমিশন সংস্কার : ওই সময় বিচারপতি হাবিবুর রহমান নির্বাচন কমিশন নতুন করে সংস্কার করেন। আবু হেনার নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় এবং নির্বাচনের বেশ কিছু আইন সংস্কার করা হয়। হাবিবুর রহমানই প্রথম নির্বাচন কমিশনকে পৃথক করেন এবং নির্বাচন আইনের জবাবদিহির মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনব্যবস্থার পথ উন্মুক্ত করে দেন।
তিন. ভোটার তালিকা সংশোধন : ওই তিন মাস সময়ের মধ্যে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি নতুন ভোটার তালিকা তৈরি করে। অতীতে ভোটার তালিকার ভুলত্রুটি, বিচ্যুতি ইত্যাদি দূর করে তিনি একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য ভোটার তালিকা তৈরি করেন।
চার. প্রশাসন সংস্কার : ওই সময় বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করেন এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা তৈরি করেন। মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সচিব পর্যায় পর্যন্ত সব রদবদল করা হয় মাত্র ১৫ দিন সময়ের মধ্যে।
পাঁচ. পুলিশ প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল : বিচারপতি হাবিবুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণ করে এক মাসেরও কম সময়ে পুলিশ প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করেন এবং পুলিশকে নিরপেক্ষ অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। ওই তিন মাস সময়ে বিচারপতি হাবিবুর রহমান একবারও বিদেশ সফর করেননি। তিনি তাঁর পুরো মনোযোগ দিয়েছিলেন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে। ওই সময়ে তিনি যতগুলো ঝুঁকিপূর্ণ এবং কঠিন কাজ করেছিলেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ১০ মাসেও তা করতে পারেনি।
২০০১ সালে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত হয় তৃতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং দ্রুত কাজের জন্য ব্যাপকভাবে আলোচিত ও প্রশংসিত হয়। লতিফুর রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান হিসেবে শপথগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে ১৩ জন সচিবকে বদলি করেন। শপথ অনুষ্ঠানে চা পান করতে করতে সচিবরা তাঁদের বদলি বা ওএসডির খবর জানতে পারেন।
এবার দেখা যাক বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কী কী কাজ করেছিল।
এক. প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল : সাত দিনের মধ্যে তিনি মাঠ প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল ঘটিয়েছিলেন এবং মাঠ প্রশাসনকে একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে নিয়ে এসেছিলেন।
দুই. আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীতে ব্যাপক পরিবর্তন : দুই সপ্তাহ সময়ের মধ্যে তিনি পুলিশ প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিলেন এবং একটি নিরপেক্ষ পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নির্বাচন যেন সম্ভব হয়, তা নিশ্চিত করেছিলেন।
তিন. অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার : ওই সময়ে বিচারপতি লতিফুর রহমান সরকারের সবচেয়ে সাহসী ও আলোচিত কাজ ছিল মাত্র এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে তিনি অবৈধ অস্ত্রমুক্ত করতে পেরেছিলেন। এমনকি ফেনীর জয়নাল হাজারীসহ আওয়ামী লীগের সময়ের বিভিন্ন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও অস্ত্রধারীকে তিনি আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের প্রবল প্রতিবাদ সত্ত্বেও তিনি পিছপা হননি এবং কঠোরভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন, যা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। এই তিন মাস সময়ে তিনি মাত্র একবার বিদেশ সফরে গিয়েছিলেন জরুরি প্রয়োজনে। লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে মনে করা হয় সবচেয়ে করিতকর্মা এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি অনুকরণীয় সরকার।
এ তো গেল বাংলাদেশের তিনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজের ফিরিস্তি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বা যুদ্ধোত্তর সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়েছিল। কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদই তিন মাসের বেশি ছিল না। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের এই পদ্ধতি দেখে পাকিস্তানও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। সেখানেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিন মাসের মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করে। কাজেই রাষ্ট্র সংস্কার, বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা এবং নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করার জন্য ৯০ দিন অনেক দীর্ঘ সময়। তাহলে ড. ইউনূসের নেতৃতে অন্তর্বর্তী সরকার কেন সময়ক্ষেপণ করছে? কিসের আশায় তাঁরা নির্বাচন নিয়ে একটি ধূম্রজাল সৃষ্টি করছেন। এই প্রশ্ন এখন জনগণের।
সম্পর্কিত খবর

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদ
সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীদের অংশগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার দুপুরে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মিটফোর্ড হাসপাতালে গিয়ে শেষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর ১টার দিকে ধানমণ্ডির আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ল্যাবে উপস্থিত হয়ে ১০ মিনিট অবস্থান করেন। এরপর তাঁরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে যান।
এ সময় হাসপাতাল ও আশপাশে থাকা বিএনপির ব্যানার ছিঁড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় কয়েকজনকে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিসংবলিত ব্যানার পদদলিত করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার পর অনেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীর ছদ্মবেশে রাজপথে সক্রিয় হচ্ছে। কেউ কেউ আবার বিএনপির প্ল্যাটফর্মে ঢুকে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে।
রাজনৈতিক পরিচয় : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্ষোভের বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া ‘আইডিয়াল কলেজ শিক্ষার্থী’ ইয়ামিনকে তাঁর সহপাঠীরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। আগেও তাঁকে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।
নেপথ্যে রাজনৈতিক হিসাব : রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. দিলারা চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটি রাজনৈতিক দলগুলোর ভিত নষ্ট করার একটি অপচেষ্টা। এর ফলে আবারও ১/১১-এর মতো সংকট সৃষ্টি হতে পারে। রাজনৈতিক দলে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ বাড়ছে। সোহাগ, যিনি আগে হাজি সেলিমের সঙ্গে ছিলেন, এখন বিএনপির কর্মী। বিএনপি যদি নিজেকে রক্ষা করতে চায়, তাহলে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদারের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে ডিএমপি উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওই মিছিলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের উপস্থিতির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে নিষিদ্ধ যেকোনো দলের কার্যক্রম রুখে দিতে পুলিশ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। এর আগেও রাজধানীতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে যারা ঝটিকা মিছিল করেছে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এই বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখব।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলীল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা গুপ্ত রাজনীতি করে এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায় তারা জল ঘোলা করতে এমন কর্মকাণ্ড করছে। তারা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারমান তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তিমূলক ভিডিও করেছে। তাদের ব্যানার পদদলিত করে আগুন জ্বালিয়েছে। যারা স্বৈরাচারের আমলে তাদের লুঙ্গির নিচে ছিল, তারাই এখন ঘোলা জলে মাছ শিকার করা চেষ্টা করছে। জনগণের কাছে তাদের অবস্থান না থাকার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পেছনে থেকে গুপ্ত হামলা করার চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, “পুলিশের তদন্তে এসেছে ‘ব্যাবসায়িক দ্বন্দ্ব’ থেকে সোহাগ হত্যাকাণ্ড। এর পরও আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে শোক জানিয়েছি, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। একই সঙ্গে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জোর দাবিও জানিয়েছি।”

বড় ধরনের সহিংস অপরাধের সংখ্যা বাড়েনি : প্রেস উইং
১০ মাসে ৩৫৫৪ খুন, ৪১০৫ ধর্ষণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ১০ মাসে (২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত) দেশে তিন হাজার ৫৫৪ জন খুনের ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে ডাকাতি হয়েছে ৬১০টি, দস্যুতা এক হাজার ৫২৬টি, দাঙ্গা ৯৭টি, ধর্ষণ চার হাজার ১০৫টি, এসিড নিক্ষেপ পাঁচটি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১২ হাজার ৭২৬টি, অপহরণ ৮১৯টি, সিঁধেল চুরি দুই হাজার ৩০৪টি, চুরি সাত হাজার ৩১০টি এবং এই সময়ে রুজুকৃত মামলার সংখ্যা এক লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৫টি।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ১০ মাসের অপরাধ পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এসব পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে।
অপরাধ পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে দেশে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৩৬৭টি, খুন হয়েছে এক হাজার ৯৩৩টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৭৪৪টি। এ সময় নারী নির্যাতন ছয় হাজার ১৪৪টি এবং শিশু নির্যাতনের দুই হাজার ১৫৯টি ঘটনা ঘটেছে।
এর আগের বছর ২০২৪ সালে ডাকাতি হয়েছিল ৪৯০টি, খুন চার হাজার ১১৪টি, ধর্ষণ চার হাজার ৩৯৪টি, নারী নির্যাতন ১০ হাজার ১৯৮টি এবং শিশু নির্যাতন দুই হাজার ৯৬৪টি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছর দেশে অপরাধের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরে জনমনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছর বড় ধরনের অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে—এমন দাবি সঠিক নয়। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ মাসে বড় ধরনের অপরাধের প্রবণতা স্থিতিশীল রয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, পরিসংখ্যানে বড় ধরনের অপরাধের দ্রুত বাড়ার কোনো লক্ষণ নেই। বাস্তবে বেশির ভাগ গুরুতর অপরাধের হার কমছে বা একই পর্যায়ে রয়েছে।
প্রেস উইং নাগরিকদের প্রতি সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ওপর আস্থা রাখতে হবে। কারণ অপরাধের হার মোটামুটি স্থিতিশীল, যাতে বোঝা যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

মা-সন্তানসহ ৫ জেলায় সাতজনকে হত্যা
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

ময়মনসিংহের ভালুকায় দুই সন্তানসহ মাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জে শিশুকে হত্যা করে ঘরে লুকিয়ে রেখেছে সত্মা। এ নিয়ে দেশের পাঁচ জেলায় সাতজনকে খুন করা হয়েছে। আর তিন জেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চারজনের লাশ।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) : পৌর এলাকার পনাশাইল রোডে এক ভাড়া বাসায় মা ও দুই সন্তানকে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলো নেত্রকোনার কেন্দুয়ার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ময়না বেগম (২৫), মেয়ে রাইসা (৭) ও ছেলে নীরব (২)।
স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম এখানে ভাড়া থেকে ভালুকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। রবিবার রাত ৮টার সময় তিনি কর্মস্থলে যান এবং গতকাল সকালে ফিরে বাসার বারান্দার দরজা তালাবদ্ধ দেখেন।
রফিকুলের ভাই নজরুল ইসলাম একই বাসায় পাশাপাশি কক্ষে থাকেন। নিজ এলাকার একটি হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামি নজরুল ভালুকায় অটো চালাতেন। ঘটনার পর থেকে তিনি নিরুদ্দেশ, তাঁর মোবাইল ফোনটিও বন্ধ।
সিরাজগঞ্জ : কামারখন্দ উপজেলায় সাত বছর বয়সী এক কন্যাশিশুকে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে ঘরে লুকিয়ে রেখে এক সত্মা পালিয়ে যান। রবিবার রাত ১০টার দিকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ওই রাতেই সত্মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত শিশু হাজেরা খাতুন উপজেলার কুটিরচর এলাকার হারুনার রশিদের মেয়ে। শিশুটির দাদি মনোয়ারা খাতুন জানান, রবিবার দুপুরে শিশু হাজেরা স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এদিকে সিরাজগঞ্জ সদর ও তাড়াশ উপজেলা থেকে গতকাল সকালে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সদরে উদ্ধার হওয়া আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। সদর থানার এসআই শফিউল আলম জানান, তাঁর মাথা ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন আছে।
অন্যদিকে তাড়াশে নিহত সেলুনকর্মী শান্ত (২০) ঈশ্বরপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে। তাড়াশ থানার ওসি জিয়াউর রহমান জানান, সকালে নিজ ঘর থেকে শান্তর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান জানান, আহাদুলের সঙ্গে প্রতিবেশী মনহর আলী ও তাঁর চার ছেলে আলমগীর, অনিক, নির্ঝর ও বাবুর জমিসংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তার জেরেই ওরা ঢাকা থেকে এসে হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
চট্টগ্রাম : পতেঙ্গা থানার কাটগড় এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে ছুরিকাঘাতে ফেরদৌসী আক্তার নামের এক নারী খুন হয়েছেন। রবিবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফেরদৌসী এলাকার লোকমান হোসেনের স্ত্রী। নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে ফেরদৌসীর দেবর তাঁর ঘাড়, পিঠ ও পেটে ছুরিকাঘাত করে।
নিহতের ভাই মামুন খান বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমার বোনকে তাঁর স্বামী, শাশুড়ি পরিবারের লোকেরা নির্যাতন করে আসছিল। আমরা একটি সিসিটিভির ফুটেজে দেখেছি, লোকমানের বড় ভাই সোলেমান ও ছোট ভাই রনির হাতে ছুরি। আমরা খুনিদের বিচার চাই।’
ঘটনার পর ফেরদৌসীর স্বামী লোকমানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। শ্বশুরবাড়ির বাকি লোকজন পলাতক।
বারহাট্টা (নেত্রকোনা) : জমিসংক্রান্ত বিরোধে আহাদুল মিয়া (২৬) নামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল দুপুরে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে রবিবার রাতে উপজেলার বাউশী ইউনিয়নের শাসনউড়া গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। আহাদুল মিয়া ওই গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে।
নরসিংদী : এক মাদক কারবারির বাড়ি থেকে সাজিদ হোসেন (২২) নামে এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের বাগহাটা টেকপাড়া গ্রামে দুলালের বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, নিহত যুবকের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। আবার যার বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে তারাও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তবে নিহতর পরিবারের অভিযোগ, মাদক ব্যবসায়ী দুলালের বাড়িতে নির্যাতন করে সাজিদকে হত্যা করা হয়েছে।
পাবনা : পুকুরে ভাসমান অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে শহরের লাইব্রেরি বাজার এলাকার কলাবাগান কলোনির মিঠুর পুকুর থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত যুবকের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে আনুমানিক বয়স হবে ৪০ বছর।
গাজীপুর : নিখোঁজের ছয় দিন পর এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকেলে মহানগরীর ধীরাশ্রম এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নাবিলা কানিজ সাবা ধীরাশ্রমের দাখিনখান এলাকার নাসির মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার শিশুটি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান না পেয়ে রাতে শিশুটির মা খাদিজা বেগম সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। গতকাল বাড়ির পাশে ঝোপের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে স্থানীয়রা বস্তাটির সন্ধান পায়। বস্তা খুলে সাবার গলিত লাশ পাওয়া যায়।

ফাঁকিবাজদের আতঙ্ক আয়কর গোয়েন্দা
হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন ১৮৩ ভিআইপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

যাত্রা শুরুর মাত্র সাত মাসের মধ্যেই কর ফাঁকিবাজদের আতঙ্ক হয়ে উঠেছে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। এ সময় ১৮৩ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এক হাজার ৮৭৪ কোটি টাকার কর ফাঁকি উদঘাটন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ১১৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বাকি টাকা আদায়ের প্রচেষ্টাও চলছে বলে জানা গেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, এক হাজার ৭৮৮টি বিভিন্ন শ্রেণির ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি ও অর্থপাচার মামলা তদন্ত করছে আয়কর গোয়েন্দা। এঁদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, অভিনেতা-অভিনেত্রী, ডাক্তার, আইনজীবী, প্রকৌশলী, শিক্ষক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব পর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি রয়েছেন। এনবিআরের অধীন ৪১টি কর অঞ্চল ও দেশের ৬৪ জেলার করদাতারাও এ কার্যক্রমের আওতায় রয়েছেন।
এয়ার টিকিট সিন্ডিকেট, পরিবহন ব্যবসায়ী, শেয়ারবাজার, আমদানি ও মজুদকারী, চালান জালিয়াতকারী, জুয়াড়ি, ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির পাশাপাশি কমেছে জনদুর্ভোগ।
আয়কর গোয়েন্দার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি। তবে কর্মচারী নিয়োগ ও ভাড়া অফিসে স্থানান্তরের পর মূল কার্যক্রম চালু হয়েছিল ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর।
কর প্রশাসনে দক্ষ গোয়েন্দা গঠন, কর ফাঁকি, অর্থপাচার, বিভিন্ন আর্থিক অপরাধ শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, রাজস্ব পুনরুদ্ধার করা, স্বচ্ছতা-জবাবদিহি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, কর ফাঁকির তদন্তে অর্থের উৎস যাচাই করা ও দায়িত্বশীল অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে যৌথ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে এই বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
জানা গেছে, বিশেষায়িত এই গোয়েন্দা ইউনিট অল্প সময়ের ব্যবধানে সফলতা দেখালেও তার নেই প্রয়োজনীয় জনবল ও স্থায়ী অফিস ভবন। শুরুতে এনবিআর ভবনে অস্থায়ী কার্যালয় থাকলেও পরে ভাড়া করা অফিসে যাবতীয় কাজ করছে রাজস্ব ফাঁকি ঠেকিয়ে দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি।
জানতে চাইলে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কমিশনার মো. আবদুর রকিব কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আয়কর গোয়েন্দা অল্প সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই ইউনিটের সদস্যসংখ্যা কম হলেও তাঁরা মেধাবী ও পরিশ্রমী। তাঁদের কাজের প্রতি একাগ্রতা থাকায় আমরা সামগ্রিকভাবে ভালো করতে পারছি। তবে জনবল সংকট, প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট পেলে এই ইউনিট দেশের জন্য আরো অনেক কিছু করতে পারবে। আমরা চাই দেশে একটি নতুন কর সংস্কৃতি। যেখানে কেউ কর ফাঁকি দিতে পারবেন না।’
জানা গেছে, ভবিষ্যতে এই ইউনিটের জন্য ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনের চিন্তা করা হচ্ছে। কর ফাঁকি-অর্থপাচার রোধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক, প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। এ ছাড়া কর ফাঁকিবাজদের ডেটাবেইস তৈরি, নিয়মিত তল্লাশি-জব্দকরণ অভিযান পরিচালনা, কর নেটের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কাজও করবে এই ইউনিট।