ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

অধ্যাদেশ বাতিল চেয়ে তিন দিনের ‘কলমবিরতি’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
অধ্যাদেশ বাতিল চেয়ে তিন দিনের ‘কলমবিরতি’
কার্যালয়ের সামনে গতকাল গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।ছবি : কালের কণ্ঠ

পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদনকে পাশ কাটিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দুই ভাগ করার পর তিন দিনের কলমবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। এনবিআরের অধীন সব দপ্তরে একযোগে এই কর্মসূচি পালিত হবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, রপ্তানি কার্যক্রম ও আসন্ন জাতীয় বাজেটের কার্যক্রম এর আওতার বাইরে থাকবে। এই কর্মসূচির অর্থ হলো এই সময়ে তাঁরা কোনো দাপ্তারিক কাজ করবেন না।

ফলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে রাজস্ব আয়ে।

গতকাল মঙ্গলবার এনবিআর ভবনের সামনে বিসিএস আয়কর-কাস্টমস ও এনবিআরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে গঠিত এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এই ঘোষণা দিয়েছে। বলা হয়েছে, বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং বৃহস্পতিবার ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। দেশের সব কর অঞ্চল, ভ্যাট কমিশনারেট, কাস্টমস স্টেশনসহ এনবিআরের সব দপ্তরে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

সোমবার রাতে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রেখে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ-এর গেজেট জারি করা হয়েছে। এরপর ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এনবিআর সংস্কারে নিশিরাতের অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করেছে ঐক্য পরিষদ।

তারা জানতে চায়, পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ না করে কার স্বার্থ রক্ষায় গোপন রাখা হয়েছে, কমিটির সুপারিশ মোতাবেক অধ্যাদেশ না করে কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, পাঁচ দশকের পুরনো রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাকে বিলুপ্ত করে দেওয়া হলেও অংশীজন হিসেবে সুধীসমাজ, ব্যবসায়ী, চেম্বার, অর্থনীতিবিদ, জনগণকারো সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি কেন, অধ্যাদেশ করতে ছুটির দিনে মিটিং, অন্ধকারে ভেটিং, মধ্যরাতে ভেটিংসর্ষের মধ্যে ভূত না থাকলে এত নাটকীয়তা কেন, ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্টের দোসর আমলাচক্রের ষড়যন্ত্র ও দখলদারির শেষ কোথায়?

বাজেট প্রস্তুতির চূড়ান্ত সময়ে রাজস্ব আদায়ে ধস নামিয়ে অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো রাজস্বনীতি পৃথক করার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু তারা রাজস্বকাঠামো বিক্ষিপ্ত করে আমলাদের হাতে তুলে দিতে বলেছিল কি না প্রশ্ন ঐক্য পরিষদের। এতে রাজস্ব আদায় গতিশীল ও বাণিজ্যবান্ধব হবেএমন ভাবনার পেছনের যুক্তি জানতে চায় তারা।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এক হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এর কিছুক্ষণ আগে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ভবন থেকে বের হয়ে গাড়িতে চড়েন।

তখন সমস্বরে ভুয়া ভুয়া স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে এনবিআর চত্বর।

তিন দিনের কলমবিরতির ফলে রাজস্ব আদায়ে কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান কালের কণ্ঠকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমাকে অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানিয়েছেন সব কিছু ঠিক আছে। ঐক্য পরিষদের ব্যানার থেকে কর্মসূচি ঘোষণা হয়েছেএ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ঐক্য পরিষদ নামে কোনো সংগঠন আছে কি না আমার জানা নেই। কর্মকর্তাদের যে উষ্মা ও প্রশ্ন ছিল, তার জবাব তাঁরা পেয়েছেন। এ ধরনের কোনো কিছু আমার জানা নেই। এখন মে-জুন মাসে যাঁরা দায়িত্বশীল কর্মকর্তা তাঁরা এ ধরনের কর্মসূচি দেবেন বলে আমার বিশ্বাসও হয় না। এটা হওয়ার কথা নয়।

এর আগে এনবিআরকে ভেঙে গত ১৭ এপ্রিল খসড়া অধ্যাদেশে অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। বাকি প্রক্রিয়া শেষ করে তা দ্রুত জারি হওয়ার কথা থাকলেও অধ্যাদেশের খসড়া অনলাইনে এলে তা দেখে আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। এই দুই ক্যাডারের কর্মকর্তারা এটি বাতিলের দাবি জানান।

পরে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারদের অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানায়। ধীরে ধীরে অ্যাসোসিয়েশনের কিছু নেতা সরকারের বিশেষ আনুকূল্য ও সুবিধা পাওয়ার লোভে দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে স্রোতের বিপরীতে যাত্রা করেন বলে অভিযোগ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের।

অবিশ্বাসের দেয়াল মজবুত আকার ধারণ করলে অ্যাসেসিয়েশনকে পাশ কাটিয়ে এনবিআরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সোমবার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ গঠন করেন। পূর্বনির্ধারিত অবস্থান ধর্মঘট থেকেই গতকাল কলমবিরতির ঘোষণা আসে। জানা গেছে, দুই ক্যাডারের অ্যাসোসিয়েশন ভেঙে নতুন কমিটি ঘোষণার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে কমিটিতে থাকা অনেক সদস্যই পদত্যাগ করেছেন।

রাজস্ব বাড়াতে এনবিআর বিভক্ত : বিশেষ প্রতিনিধি জানান, দেশের রাজস্ব ভিত্তি প্রসারিত করতে এবং কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠন করা হয়েছে, এমন তথ্য জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

গতকাল বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার একটি বৃহৎ কাঠামোগত সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে। এনবিআর বিলুপ্ত করে, এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি পৃথক সংস্থা রাজস্বনীতি বিভাগ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।

এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হলো করনীতি তৈরি করে কর প্রশাসন থেকে আলাদা করা, যাতে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়, স্বার্থের সংঘাত কমে এবং দেশের করের পরিধি সম্প্রসারিত হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, এনবিআরের বেশ কিছু পুরনো সমস্যা রয়েছে :

স্বার্থের সংঘাত : একই ছাতার নিচে নীতি তৈরির পাশাপাশি তা বাস্তবায়ন করা করনীতির দুর্বলতা এবং ব্যাপক অনিয়ম সৃষ্টি করেছে।

অদক্ষ রাজস্ব সংগ্রহ : দ্বৈত কর্তব্যের কারণে করনীতি তৈরি এবং প্রতিষ্ঠানগত সক্ষমতা তৈরির ওপর মনোযোগ কমে গেছে। এর ফলে করের পরিধি সংকীর্ণ হয়ে রাজস্ব সংগ্রহ অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

দুর্বল শাসনব্যবস্থা : এনবিআর নানা ধরনের প্রশাসনিক জটিলতা, বিনিয়োগে সহায়তার অভাব এবং কাঠামোগত সমস্যায় জর্জরিত।

প্রশাসনিক জটিলতা : এখনকার ব্যবস্থায় রাজস্ব বোর্ডের প্রধান একই অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগেরও প্রধান। এতে নানা জট ও কাজের ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।

নৈতিক অবক্ষয় ও অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা : বর্তমান সংস্কার কার্যক্রম কিছু অভিজ্ঞ কর এবং কাস্টমস কর্মকর্তার মধ্যে মাঝেমধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে। তাঁদের আশঙ্কা হচ্ছে, সম্ভবত তাঁদের উপেক্ষা করা হচ্ছে অথবা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

কাজের সুস্পষ্ট ভাগ : রাজস্বনীতি বিভাগ করের আইন বানানো, করের হার ঠিক করা এবং আন্তর্জাতিক করের চুক্তিগুলো দেখবে। অন্যদিকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ ভালোভাবে কর আদায়, হিসাব পরীক্ষা এবং নিয়মকানুন মেনে চলার বিষয়টি তদারক করবে।

আরো ভালো কাজ ও প্রশাসন : প্রতিটি বিভাগ যদি তাদের আসল কাজের ওপর মনোযোগ দেয়, তাহলে এই পরিবর্তনের ফলে কাজের মান বাড়বে, স্বার্থের সংঘাত কমবে এবং প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম আরো স্বচ্ছ হবে।

আরো বড় করের আওতা ও শক্তিশালী সরাসরি কর আদায় : এই সংস্কারের মাধ্যমে বেশিসংখ্যক মানুষ করের আওতায় আসবে, পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরতা কমবে এবং সরাসরি কর আদায়ের ক্ষমতা বাড়বে।

উন্নত এবং আরো উন্নয়নমুখী নীতি : একটি আলাদা নীতি বিভাগ ভবিষ্যতের কথা ভেবে এবং বাস্তব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করের পরিকল্পনা করতে পারবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ