জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘বর্তমান সময়ে আমাদের নিয়ে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে, তাই আমাদের আরো সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।’
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর পূর্বাচলের সী শেল রিসোর্টে ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত এক ‘প্রীতি সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘এবার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের মানুষের আর যাওয়ার জায়গা নেই। তাই ভোগ নয়, মানুষের সেবা করার জন্যই আমাদের মনকে সব সময় প্রস্তুত রাখতে হবে।
গোটা জাতিকে আমাদের ধারণ করতে হবে। নিজেদের সব কাজের ব্যাপারে পরিশ্রমী ও সৎ থাকতে হবে এবং প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে হবে। আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় পাওয়া যাবে না।’
ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সাবেক নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, ‘আপনারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন।
যে যেখানে থাকুন না কেন আমাদের দ্বিন কায়েমে নিরলস পরিশ্রম করতে হবে। জামায়াতের প্রতি মানুষের ভালোবাসার যে জায়গা তৈরি হয়েছে তা ধারণ করতে হবে। কোনোভাবে যেন নষ্ট না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।’
প্রীতি সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুকের সভাপতিত্বে এবং ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি আনিসুর রহমান ও সেক্রেটারি রেজাউল করীম শাকিলের সঞ্চালনায় প্রীতি সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করীম, সিলেট মহানগরের আমির ফখরুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগরীর আমির অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত ও সালাউদ্দিন আইয়ূবী, সাবেক কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম শাহিনসহ ঢাকা মহানগরী উত্তরের সাবেক সভাপতিরা।
১৫ বছরে যারা গুম-খুন করেছে, তাদের ক্ষমা করব না
এদিকে আমাদের যশোর অফিস জানায়, সন্ধ্যায় শহরের চাঁচড়ায় আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়েছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে জাতপাত, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে শিশু, তরুণ, বৃদ্ধ সবাই অংশ নিয়েছে। তারা গুলির সামনে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছিল মুক্তির জন্য। সেই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তারা জাতীয় বীর। তাদের জন্য আমরা গর্বিত।
’
ডা. শফিকুর বলেন বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে নির্দিষ্ট কোনো দল, ধর্মের লোক অংশ নেয়নি। সেই সময় এক অভূতপূর্ব জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল। সেই ঐক্য ধরে রেখে দেশ গড়তে হবে। কেউ যেন এই ঐক্য নষ্ট করতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা জাতপাত, ধর্মবৈষম্য দেখতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘যারা একনাগাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে লুণ্ঠন, হত্যা, গুম করেছেন, আমরা তাদের ক্ষমা করব না। অধ্যাপক গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে তারা হত্যা করেছে। দেশপ্রেমিকদের রুখতে তারা জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ তাদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। এই জন্য শুকরিয়া আদায় করুন।’