আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রভাবশালী এমপি এ কে এম শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে টানা তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকার সময় দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর তিনি দেশ ছেড়ে পালালেও এসব সম্পদের খবর আগেই জানিয়েছিলেন সদ্য বিলুপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী। বিদেশ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জে সওজের জমি দখল করে প্রয়াত বড় ভাইয়ের নামে পার্ক তৈরি, অনুসারীদের দিয়ে দখলের অভিযোগও আছে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন টেন্ডার থেকে কমিশন, ব্যাবসায়িক জোন থেকে টাকার ভাগ নেওয়ার বিষয়টি ছিল ওপেন সিক্রেট।
সাবেক এমপির দুর্নীতি
দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ শামীম ওসমানের
রাশেদুল ইসলাম রাজু, নারায়ণগঞ্জ

বিদেশে সম্পদ
ঘনিষ্ঠজনরা জানান, শামীম ওসমানের অনেক আগে থেকেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যবসা ছিল। সেখানে আজমান প্রদেশে বাংলাদেশিদের একটি বড় স্টক লটের ব্যবসা ছিল শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান ও শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুর। আজমানে টিটুর ডুপ্লেক্স বাড়ির বিষয়টি আগেই প্রকাশ পেয়েছিল। আজমান ছাড়াও শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মজনু আহমেদের ছিল দ্বৈত নাগরিকত্ব।
সেলিনা হায়াত আইভীর মন্তব্য
২০২২ সালের ৭ মার্চ শহরের শেখ রাসেল পার্কে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে শামীম ওসমানকে উদ্দেশ করে আইভী বলেছিলেন, যিনি নিজের মুখেই বলেছেন তোলারাম কলেজে টাকার জন্য ফরম পূরণ করতে পারেননি, আজ উনি কোটি কোটি টাকার মালিক। আবার অন্যের দিকে চোখ তোলেন। শামীম ওসমানের ১৬-১৭টি কার্গো জাহাজ আছে জানিয়ে মেয়র আইভী প্রশ্ন তোলেন, ‘উনি কিভাবে রাতারাতি ওই শিপের মালিক হলেন, কিভাবে উনি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন?’ শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে আরো বলেছিলেন, তিনি (শামীম) যখন-তখন দেশ ছেড়ে চলে যান। শত শত কোটি টাকা পাচার করেছেন দুবাই ও মালয়েশিয়াতে। বাড়িঘর সব জায়গায় করেছেন আবার চলে যাবেন।
দেশে সম্পদ
২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামা অনুযায়ী, দেশে তাঁর বর্তমানে মোট পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলো হলো—মেসার্স জেডএন করপোরেশন, জেডএন শিপিং লাইনস লিমিটেড, মাইশা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, খান ব্রাদার্স ইনফোটেক ও উইসজম নিটিং মিলস। এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ নিজের দোকান ও অন্যান্য খাত থেকে শামীম ওসমান ও তাঁর পরিবারের বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ৯০ লাখ টাকা। তবে ১০ বছর আগে তাঁর কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান না থাকলেও বিভিন্ন খাত থেকে তাঁর পরিবারের বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল প্রায় ৫৫ লাখ টাকা।
এ ছাড়া ২০২৪ সালে শেয়ারের সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক থেকে জামানত সুদ থেকে তাঁর পরিবারের বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ৪৮ লাখ টাকা। কিন্তু ২০১৪ সালে শেয়ারের সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক থেকে জামানত হিসেবে শামীম ওসমানের কোনো আয় ছিল না। অন্যদিকে স্ত্রীর আয় ছিল মাত্র ৯২ হাজার ১৫০ টাকা।
২০২৪ সালে বিভিন্ন ব্যাংকে তিনিসহ তাঁর পরিবারের নামে জমা ছিল দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা। পাশাপাশি শামীম ওসমানসহ তাঁর পরিবারের নামে প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা এফডিআর ছিল। কিন্তু ১০ বছর আগে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁদের জমা করা অর্থের পরিমাণ ছিল মাত্র দুই লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
২০২৪ সালের হলফনামায় শামীম ওসমানের সোনারগাঁয়ের বারদীতে তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ১২৩ শতাংশ কৃষিজমি, ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের পূর্বাচলে রাজউকের ১০ কাঠার প্লট এবং ১৬ শতাংশ জমির ওপর ৭৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের দোতলা আবাসিক বাড়ি দেখান। আর ১০ বছর আগে শামীম ওসমান নিজের নামে শুধু ১০ শতাংশ এবং ১৬ শতাংশ জমির ওপর নিজ নামে একটি দোতলা বাড়ি ছিল।
এলজিইডি, গণপূর্ত, শিক্ষা প্রকৌশল
বিভিন্ন উন্নয়নকাজের টেন্ডারগুলো শামীম ওসমান এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর ভয়ে কেউ টেন্ডার ড্রপ করতে পারত না। কে কোন কাজ করবে তা তিনি রাইফেল ক্লাবে বসে নির্ধারণ করে দিতেন। তিনি সব কাজে ৫ থেকে ৭ শতাংশ কমিশন আগে থেকেই নিয়ে নিতেন। নিজের নির্বাচনী এলাকার কোনো কাজ শামীম ওসমানের পছন্দের বাইরের কেউ পায়নি।
সরকারি জমি দখলের অভিযোগ
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লা স্টেডিয়ামের বিপরীত পাশে কুতুবপুর এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) মালিকানাধীন ১.৪৪ একর জমি দখলে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্ক (নম পার্ক)। এই পার্কটি মূলত তাঁর সেকেন্ড ইন কমান্ড মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামের আস্তানা হিসেবে পরিচিত ছিল।
বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল ও প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের আয়
তাঁর নির্বাচনী অঞ্চল সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা এলাকার বিভিন্ন শিল্প-কারখানা থেকে শামীম ওসমানের মোটা অঙ্কের টাকা আয় হতো। সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত আদমজী ইপিজেডের অর্ধশতাধিক পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত শামীম ওসমানের অনুসারীরা। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি অংশই পরিচালনা করতেন সিদ্ধিরগঞ্জে শামীম ওসমানের সেকেন্ড ইন কমান্ড যুবলীগের আহ্বায়ক ও নাসিকের সাবেক ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি। যিনি দুদকের করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ও মানি লন্ডারিং মামলায় কারাবরণ করেন। এ ছাড়া শামীম ওসমানের ছত্রচ্ছায়ায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি ইয়াসিন মিয়া, যুবলীগের লিটন ওরফে গুজা লিটন, সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মণ্ডল, বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর পরিষদ নেতা আক্তার হোসেন ওরফে পানি আক্তার আদমজী ইপিজেড নিয়ন্ত্রণ করতেন। এই ইপিজেডে মালপত্র সাপ্লাই, ঝুট নামানো, ওয়েস্টেজ মালপত্র নামানোর ক্ষেত্রে মাসে অন্তত ১০ কোটি টাকা আয়ের একটি অংশ নিতেন শামীম ওসমান। সেখান থেকে ছেলে অয়ন ওসমান ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের দেওয়া হতো বাকি টাকা।
ইপিজেড বাদেও সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত পদ্মা ও মেঘনা ডিপো নিয়ন্ত্রণ করতেন শামীম ওসমানের আরেক আস্থাভাজন আশরাফ হোসেন। পাশাপাশি বিভিন্ন পোশাক কারখানায় শামীম ওসমানের অনুসারীদের একক আধিপত্য ছিল। এ ছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন শামীম ওসমানের শ্যালক জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু।
ফতুল্লা বিসিক এলাকায় পোশাক কারখানাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতেন ছাত্রলীগ নেতা কাউসার আহমেদ, লালপুর এলাকার জুয়েল, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান হোসেন শুভ, কুতুবপুর এলাকার ইমরান হোসেন লিমনসহ ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী, যাঁরা প্রত্যেকেই শামীম ওসমানপুত্র অয়ন ওসমানের অনুসারী। শুধু বিসিক থেকেই শামীম ওসমানের স্ত্রী লিপি ওসমান এবং অয়ন ওসমানের নামে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আসত।
নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলির ইন্টারনেট ব্যবসা ছিল অয়ন ওসমানের মালিকানাধীন জেডএন ইন্টারন্যাশনালের। এর বাইরে কেউ স্থানীয়ভাবে নেট চালাতে পারত না। কেউ চালাতে গেলে তাদের মোটা অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো।
অন্য আসনেও প্রভাব খাটাতেন
নিজের নির্বাচনী আসনের বাইরেও প্রভাব খাটাতেন শামীম ওসমান। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের এমপি ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কিন্তু খোকা এমপি থাকলেও সোনারগাঁয়ের বালু ব্যবসা, উন্নয়নকাজের টেন্ডার ছিল শামীম ওসমানের দখলে। অয়ন ওসমানের বন্ধু সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ রনি এক দশকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তিনিও নিয়মিত ওসমানদের কমিশন দিতেন।
সোনারগাঁয়ের বালু ব্যবসা ছিল পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া সেখানকার ইউনিয়ন পরিষদের কাজেও শামীম ওসমান ও তাঁর স্ত্রী লিপি ওসমান নানাভাবে হস্তক্ষেপ করতেন।
সম্পর্কিত খবর

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদ
সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীদের অংশগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার দুপুরে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মিটফোর্ড হাসপাতালে গিয়ে শেষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর ১টার দিকে ধানমণ্ডির আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ল্যাবে উপস্থিত হয়ে ১০ মিনিট অবস্থান করেন। এরপর তাঁরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে যান।
এ সময় হাসপাতাল ও আশপাশে থাকা বিএনপির ব্যানার ছিঁড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় কয়েকজনকে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিসংবলিত ব্যানার পদদলিত করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার পর অনেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীর ছদ্মবেশে রাজপথে সক্রিয় হচ্ছে। কেউ কেউ আবার বিএনপির প্ল্যাটফর্মে ঢুকে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে।
রাজনৈতিক পরিচয় : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্ষোভের বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া ‘আইডিয়াল কলেজ শিক্ষার্থী’ ইয়ামিনকে তাঁর সহপাঠীরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। আগেও তাঁকে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।
নেপথ্যে রাজনৈতিক হিসাব : রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. দিলারা চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটি রাজনৈতিক দলগুলোর ভিত নষ্ট করার একটি অপচেষ্টা। এর ফলে আবারও ১/১১-এর মতো সংকট সৃষ্টি হতে পারে। রাজনৈতিক দলে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ বাড়ছে। সোহাগ, যিনি আগে হাজি সেলিমের সঙ্গে ছিলেন, এখন বিএনপির কর্মী। বিএনপি যদি নিজেকে রক্ষা করতে চায়, তাহলে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদারের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে ডিএমপি উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওই মিছিলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের উপস্থিতির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে নিষিদ্ধ যেকোনো দলের কার্যক্রম রুখে দিতে পুলিশ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। এর আগেও রাজধানীতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে যারা ঝটিকা মিছিল করেছে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এই বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখব।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলীল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা গুপ্ত রাজনীতি করে এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায় তারা জল ঘোলা করতে এমন কর্মকাণ্ড করছে। তারা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারমান তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তিমূলক ভিডিও করেছে। তাদের ব্যানার পদদলিত করে আগুন জ্বালিয়েছে। যারা স্বৈরাচারের আমলে তাদের লুঙ্গির নিচে ছিল, তারাই এখন ঘোলা জলে মাছ শিকার করা চেষ্টা করছে। জনগণের কাছে তাদের অবস্থান না থাকার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পেছনে থেকে গুপ্ত হামলা করার চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, “পুলিশের তদন্তে এসেছে ‘ব্যাবসায়িক দ্বন্দ্ব’ থেকে সোহাগ হত্যাকাণ্ড। এর পরও আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে শোক জানিয়েছি, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। একই সঙ্গে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জোর দাবিও জানিয়েছি।”

বড় ধরনের সহিংস অপরাধের সংখ্যা বাড়েনি : প্রেস উইং
১০ মাসে ৩৫৫৪ খুন, ৪১০৫ ধর্ষণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ১০ মাসে (২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত) দেশে তিন হাজার ৫৫৪ জন খুনের ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে ডাকাতি হয়েছে ৬১০টি, দস্যুতা এক হাজার ৫২৬টি, দাঙ্গা ৯৭টি, ধর্ষণ চার হাজার ১০৫টি, এসিড নিক্ষেপ পাঁচটি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১২ হাজার ৭২৬টি, অপহরণ ৮১৯টি, সিঁধেল চুরি দুই হাজার ৩০৪টি, চুরি সাত হাজার ৩১০টি এবং এই সময়ে রুজুকৃত মামলার সংখ্যা এক লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৫টি।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ১০ মাসের অপরাধ পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এসব পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে।
অপরাধ পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে দেশে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৩৬৭টি, খুন হয়েছে এক হাজার ৯৩৩টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৭৪৪টি। এ সময় নারী নির্যাতন ছয় হাজার ১৪৪টি এবং শিশু নির্যাতনের দুই হাজার ১৫৯টি ঘটনা ঘটেছে।
এর আগের বছর ২০২৪ সালে ডাকাতি হয়েছিল ৪৯০টি, খুন চার হাজার ১১৪টি, ধর্ষণ চার হাজার ৩৯৪টি, নারী নির্যাতন ১০ হাজার ১৯৮টি এবং শিশু নির্যাতন দুই হাজার ৯৬৪টি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছর দেশে অপরাধের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরে জনমনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছর বড় ধরনের অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে—এমন দাবি সঠিক নয়। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ মাসে বড় ধরনের অপরাধের প্রবণতা স্থিতিশীল রয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, পরিসংখ্যানে বড় ধরনের অপরাধের দ্রুত বাড়ার কোনো লক্ষণ নেই। বাস্তবে বেশির ভাগ গুরুতর অপরাধের হার কমছে বা একই পর্যায়ে রয়েছে।
প্রেস উইং নাগরিকদের প্রতি সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ওপর আস্থা রাখতে হবে। কারণ অপরাধের হার মোটামুটি স্থিতিশীল, যাতে বোঝা যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

মা-সন্তানসহ ৫ জেলায় সাতজনকে হত্যা
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

ময়মনসিংহের ভালুকায় দুই সন্তানসহ মাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জে শিশুকে হত্যা করে ঘরে লুকিয়ে রেখেছে সত্মা। এ নিয়ে দেশের পাঁচ জেলায় সাতজনকে খুন করা হয়েছে। আর তিন জেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চারজনের লাশ।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) : পৌর এলাকার পনাশাইল রোডে এক ভাড়া বাসায় মা ও দুই সন্তানকে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলো নেত্রকোনার কেন্দুয়ার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ময়না বেগম (২৫), মেয়ে রাইসা (৭) ও ছেলে নীরব (২)।
স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম এখানে ভাড়া থেকে ভালুকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। রবিবার রাত ৮টার সময় তিনি কর্মস্থলে যান এবং গতকাল সকালে ফিরে বাসার বারান্দার দরজা তালাবদ্ধ দেখেন।
রফিকুলের ভাই নজরুল ইসলাম একই বাসায় পাশাপাশি কক্ষে থাকেন। নিজ এলাকার একটি হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামি নজরুল ভালুকায় অটো চালাতেন। ঘটনার পর থেকে তিনি নিরুদ্দেশ, তাঁর মোবাইল ফোনটিও বন্ধ।
সিরাজগঞ্জ : কামারখন্দ উপজেলায় সাত বছর বয়সী এক কন্যাশিশুকে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে ঘরে লুকিয়ে রেখে এক সত্মা পালিয়ে যান। রবিবার রাত ১০টার দিকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ওই রাতেই সত্মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত শিশু হাজেরা খাতুন উপজেলার কুটিরচর এলাকার হারুনার রশিদের মেয়ে। শিশুটির দাদি মনোয়ারা খাতুন জানান, রবিবার দুপুরে শিশু হাজেরা স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এদিকে সিরাজগঞ্জ সদর ও তাড়াশ উপজেলা থেকে গতকাল সকালে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সদরে উদ্ধার হওয়া আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। সদর থানার এসআই শফিউল আলম জানান, তাঁর মাথা ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন আছে।
অন্যদিকে তাড়াশে নিহত সেলুনকর্মী শান্ত (২০) ঈশ্বরপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে। তাড়াশ থানার ওসি জিয়াউর রহমান জানান, সকালে নিজ ঘর থেকে শান্তর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান জানান, আহাদুলের সঙ্গে প্রতিবেশী মনহর আলী ও তাঁর চার ছেলে আলমগীর, অনিক, নির্ঝর ও বাবুর জমিসংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তার জেরেই ওরা ঢাকা থেকে এসে হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
চট্টগ্রাম : পতেঙ্গা থানার কাটগড় এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে ছুরিকাঘাতে ফেরদৌসী আক্তার নামের এক নারী খুন হয়েছেন। রবিবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফেরদৌসী এলাকার লোকমান হোসেনের স্ত্রী। নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে ফেরদৌসীর দেবর তাঁর ঘাড়, পিঠ ও পেটে ছুরিকাঘাত করে।
নিহতের ভাই মামুন খান বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমার বোনকে তাঁর স্বামী, শাশুড়ি পরিবারের লোকেরা নির্যাতন করে আসছিল। আমরা একটি সিসিটিভির ফুটেজে দেখেছি, লোকমানের বড় ভাই সোলেমান ও ছোট ভাই রনির হাতে ছুরি। আমরা খুনিদের বিচার চাই।’
ঘটনার পর ফেরদৌসীর স্বামী লোকমানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। শ্বশুরবাড়ির বাকি লোকজন পলাতক।
বারহাট্টা (নেত্রকোনা) : জমিসংক্রান্ত বিরোধে আহাদুল মিয়া (২৬) নামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল দুপুরে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে রবিবার রাতে উপজেলার বাউশী ইউনিয়নের শাসনউড়া গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। আহাদুল মিয়া ওই গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে।
নরসিংদী : এক মাদক কারবারির বাড়ি থেকে সাজিদ হোসেন (২২) নামে এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের বাগহাটা টেকপাড়া গ্রামে দুলালের বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, নিহত যুবকের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। আবার যার বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে তারাও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তবে নিহতর পরিবারের অভিযোগ, মাদক ব্যবসায়ী দুলালের বাড়িতে নির্যাতন করে সাজিদকে হত্যা করা হয়েছে।
পাবনা : পুকুরে ভাসমান অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে শহরের লাইব্রেরি বাজার এলাকার কলাবাগান কলোনির মিঠুর পুকুর থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত যুবকের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে আনুমানিক বয়স হবে ৪০ বছর।
গাজীপুর : নিখোঁজের ছয় দিন পর এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকেলে মহানগরীর ধীরাশ্রম এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নাবিলা কানিজ সাবা ধীরাশ্রমের দাখিনখান এলাকার নাসির মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার শিশুটি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান না পেয়ে রাতে শিশুটির মা খাদিজা বেগম সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। গতকাল বাড়ির পাশে ঝোপের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে স্থানীয়রা বস্তাটির সন্ধান পায়। বস্তা খুলে সাবার গলিত লাশ পাওয়া যায়।

ফাঁকিবাজদের আতঙ্ক আয়কর গোয়েন্দা
হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন ১৮৩ ভিআইপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

যাত্রা শুরুর মাত্র সাত মাসের মধ্যেই কর ফাঁকিবাজদের আতঙ্ক হয়ে উঠেছে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। এ সময় ১৮৩ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এক হাজার ৮৭৪ কোটি টাকার কর ফাঁকি উদঘাটন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ১১৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বাকি টাকা আদায়ের প্রচেষ্টাও চলছে বলে জানা গেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, এক হাজার ৭৮৮টি বিভিন্ন শ্রেণির ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি ও অর্থপাচার মামলা তদন্ত করছে আয়কর গোয়েন্দা। এঁদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, অভিনেতা-অভিনেত্রী, ডাক্তার, আইনজীবী, প্রকৌশলী, শিক্ষক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব পর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি রয়েছেন। এনবিআরের অধীন ৪১টি কর অঞ্চল ও দেশের ৬৪ জেলার করদাতারাও এ কার্যক্রমের আওতায় রয়েছেন।
এয়ার টিকিট সিন্ডিকেট, পরিবহন ব্যবসায়ী, শেয়ারবাজার, আমদানি ও মজুদকারী, চালান জালিয়াতকারী, জুয়াড়ি, ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির পাশাপাশি কমেছে জনদুর্ভোগ।
আয়কর গোয়েন্দার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি। তবে কর্মচারী নিয়োগ ও ভাড়া অফিসে স্থানান্তরের পর মূল কার্যক্রম চালু হয়েছিল ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর।
কর প্রশাসনে দক্ষ গোয়েন্দা গঠন, কর ফাঁকি, অর্থপাচার, বিভিন্ন আর্থিক অপরাধ শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, রাজস্ব পুনরুদ্ধার করা, স্বচ্ছতা-জবাবদিহি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, কর ফাঁকির তদন্তে অর্থের উৎস যাচাই করা ও দায়িত্বশীল অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে যৌথ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে এই বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
জানা গেছে, বিশেষায়িত এই গোয়েন্দা ইউনিট অল্প সময়ের ব্যবধানে সফলতা দেখালেও তার নেই প্রয়োজনীয় জনবল ও স্থায়ী অফিস ভবন। শুরুতে এনবিআর ভবনে অস্থায়ী কার্যালয় থাকলেও পরে ভাড়া করা অফিসে যাবতীয় কাজ করছে রাজস্ব ফাঁকি ঠেকিয়ে দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি।
জানতে চাইলে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কমিশনার মো. আবদুর রকিব কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আয়কর গোয়েন্দা অল্প সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই ইউনিটের সদস্যসংখ্যা কম হলেও তাঁরা মেধাবী ও পরিশ্রমী। তাঁদের কাজের প্রতি একাগ্রতা থাকায় আমরা সামগ্রিকভাবে ভালো করতে পারছি। তবে জনবল সংকট, প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট পেলে এই ইউনিট দেশের জন্য আরো অনেক কিছু করতে পারবে। আমরা চাই দেশে একটি নতুন কর সংস্কৃতি। যেখানে কেউ কর ফাঁকি দিতে পারবেন না।’
জানা গেছে, ভবিষ্যতে এই ইউনিটের জন্য ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনের চিন্তা করা হচ্ছে। কর ফাঁকি-অর্থপাচার রোধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক, প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। এ ছাড়া কর ফাঁকিবাজদের ডেটাবেইস তৈরি, নিয়মিত তল্লাশি-জব্দকরণ অভিযান পরিচালনা, কর নেটের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কাজও করবে এই ইউনিট।