ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

হার না-মানা মা ও ছেলে

পিন্টু রঞ্জন অর্ক
পিন্টু রঞ্জন অর্ক
শেয়ার
হার না-মানা মা ও ছেলে
আরো অনেক দূর যেতে চান হার না-মানা এই মা-ছেলে। ছবি : লুৎফর রহমান

১৪ অক্টোবর। দুই চোখের পাতা এক করতে পারেননি সেলিনা বেগম। রাতভর বিছানায় ছটফট করেছেন। সকাল হতেই অপেক্ষা—কখন ছেলের এইচএসসির ফল জানা যাবে।

প্রহর যেন ফুরাচ্ছিলই না। একটু পর পর ছোট ছেলেকে বলছিলেন, ‘আবার একটু ওয়েবসাইটে ঢুকে দ্যাখ না, সোহানের রেজাল্ট দিছে কি না।’

হার না-মানা মা ও ছেলেসকাল ১১টার দিকে ছোট ছেলে চিৎকার করে বলল, ‘মা, ভাইয়া পাস করছে! ৪.৪২ পাইছে।’

শোনামাত্র সব শক্তি দিয়ে যেন বিছানা থেকে উঠে গেলেন সোহান! মায়ের বুকে মাথা রেখে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলেন, ‘আম্মু, তোমার আশা পূরণ হইছে।

আমি পাস করেছি!’

খুশিতে মায়ের চোখে জল এসে গেছে। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘অনেক খুশি হইছি রে, বাপ!’

সন্তানের সাফল্যে যেকোনো মা খুশি। তবে সেলিনা হোসেনের খুশির আরো কারণ রয়েছে। পাস-ফেল দূরে থাক, ছেলে পরীক্ষায় বসার অনুমতি পাবে কি না, তা নিয়েই তো অনিশ্চয়তায় ছিলেন!

 

কেন এই অনিশ্চয়তা

২০০৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর।

মহান বিজয় দিবসে পাবনার সুজানগরে সেলিনা-শাহজাহান দম্পতির ঘরেও আনন্দ বয়ে যায়। বিয়ের আট বছর পর সেলিনার কোলে এসেছে শিশু, যিনি আজকের এই সোহানুর রহমান সোহান।

নবজাতক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ল। চিকিৎসক জানালেন, শিশুটি জন্ডিসে ভুগছে। রেডিওথেরাপি দিতে হবে।

সাত দিন বয়সী শিশুটিকে সে যাত্রায় পাঁচ দিন থাকতে হয়েছিল হাসপাতালে।

একসময় শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি এলেন সেলিনা। দেখতে দেখেতে এক বছর পার হয়ে গেল, কিন্তু সোহান অন্য শিশুদের মতো স্বাভাবিক নড়াচড়া করতে পারেন না। এমনকি বসতেও সমস্যা।

সোহানকে ঢাকায় নিয়ে এলেন মা-বাবা। চিকিৎসকরা জানালেন, ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছে সোহান। ও যে বেঁচে আছে—এটাই বেশি! ভবিষ্যতে কথা বলতে বা লোকজন চিনতেও সমস্যা হতে পারে। এ সমস্যা দীর্ঘদিন চলতে পারে, হয়তো সারা জীবন। সেলিনা হাল ছাড়ার পাত্রী নন। ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়ামও চালিয়ে গেলেন।

 

হাঁটতে শেখা

মায়ের পরিশ্রম বৃথা যায়নি। বছর দুয়েকের মাথায় প্রথম বসতে পারলেন শিশু সোহান। এবার দাঁড় করানোর চেষ্টা। উঠানে গলাসমান গর্ত খুঁড়ে সেখানে ছেলেকে দাঁড় করিয়ে রাখতেন। তা ছাড়া ঘর থেকে উঠান পর্যন্ত একটা বাঁশ বেঁধে দিলেন সেলিনা। এটা ধরে সোহানকে দাঁড় করানোর ও হাঁটানোর চর্চা করাতে থাকলেন। একসময় শুধু বাঁশটা ধরিয়ে দিলেই হতো। সোহান উঠান পর্যন্ত পৌঁছে যেতেন। সাড়ে চার বছর বয়সে পুরোপুরি হাঁটতে শিখলেন শিশু সোহান।

এরপর ছেলেকে ভর্তি করিয়ে দিলেন একটা মাদরাসায়। সেলিনা ছেলেকে নিয়ে রিকশায় যেতেন। ক্লাসরুমে বসিয়ে বারান্দায় অপেক্ষা করতেন। মাঝেমধ্যে গিয়ে দেখেও আসতেন। ক্লাস শেষে আবার ফিরতেন। ঝড়-বৃষ্টিতেও থামতেন না। সাত মাসের মাথায় শাহজাহান আলী বদলি হলেন ঢাকায়। সেলিনার ঠিকানাও হলো রাজধানী। প্রথমে ব্লু-বার্ড কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করালেন। দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে সোহানের ঠিকানা হলো আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পিএসসিতে জিপিএ ৫ এলো।

 

হঠাৎ একদিন

পারতপক্ষে ছেলেকে চোখের আড়াল করেন না সেলিনা। ২০১৭ সাল। সোহান তখন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সেদিন ছিল সেলিনার ছোট ছেলেটার পিএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন। সোহান বললেন, ‘মা, তুমি ওকে দিয়ে আসো। আমি একা একাই থাকতে পারব।’

ছোট ছেলেকে নিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলেন সেলিনা। পরে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে খবর পেলেন, ‘দরজার সঙ্গে ধাক্কা লেগে সোহান মাথা ঘুরে পড়ে গেছে।’ তড়িঘড়ি করে বাড়ি ফিরে দেখলেন, ছেলেটা রীতিমতো কাঁপছে। কথাও জড়িয়ে যাচ্ছে। ঘাড় সোজা করে বসতে কিংবা দাঁড়াতে পারছে না। চিকিৎসক বললেন, ‘অপারেশনে সাফল্যের সম্ভাবনা ক্ষীণ। ছেলেটা সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। হাত-পায়ে ওর শক্তি সামান্য। ওকে নিয়ে অনেক ভুগতে হবে আপনাকে!’

 

অদম্য সোহান

সেই দুর্ঘটনার পর থেকে আর নিজে নিজে দাঁড়াতে পারলেন না সোহান। সব কিছুতে অন্যের ওপর নির্ভরতা। সেলিনার কষ্ট বাড়ল। বললেন, ‘কারো সাহায্য ছাড়া এক কদমও এগোতে পারে না। ক্লাসে নিয়ে বসিয়ে দিয়ে আসতাম। ছুটির পর রিকশা-গাড়ি পাওয়া যেত না। ফুটপাতের রেলিং ধরে মা-ছেলে দাঁড়িয়ে থাকতাম। কী যে কঠিন দিন গেছে আমাদের!’ 

নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগ বেছে নিলেন সোহান। পড়াশোনায় বরাবরই তুখোড়। বাঁ হাতে লেখেন। অন্যদের তুলনায় গতি কম। সুযোগ থাকা সত্ত্ব্বেও কোনো পরীক্ষায়ই শ্রুতিলেখক নেননি। এভাবে এসএসসিতেও জিপিএ ৫ পেয়েছেন।

 

সেই চ্যালেঞ্জে জিতেছেন

ছেলেকে নিয়ে লড়তে গিয়ে অনেকের অযাচিত মন্তব্যের শিকার হয়েছেন সেলিনা। তাঁর যুদ্ধ দেখে অনেকেই বলত, ‘আর পড়ানোর দরকার নেই।’ এমনকি একদিন স্কুলের এক শিক্ষকও সোহানকে বলেছিলেন, ‘এত কষ্ট করে পড়ালেখা করে এই সার্টিফিকেট দিয়ে তুমি কী করবে?’ শুনে খুব মন খারাপ হয়েছিল তাঁর।

এসএসসির পর সোহান ভর্তি হয়েছিলেন নির্ঝর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে। টেস্ট পরীক্ষার সময়ও বিপত্তির মুখে পড়েন। বন্ধুদের পাশে বসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। টেস্ট পরীক্ষার সময় একদিন স্যার ওর বেঞ্চে বসা বন্ধুটিকে সরিয়ে দিলেন। বললেন, ‘ফাইনালে তোমাকে একা পরীক্ষা দিতে হবে। এখন থেকে প্র্যাকটিস করো।’ এই ঘটনায় ভড়কে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন সোহান। 

কয়েক দিন পর সেলিনাকে ডেকে নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলল, ‘এখান থেকে আপনার ছেলে পরীক্ষা দিতে পারবে না। অন্য কলেজ থেকে ফরম ফিলাপ করান।’ শুনে চোখে অন্ধকার দেখলেন সেলিনা—‘এত কষ্ট করে ছেলেটা এত দূর এলো!’

সেলিনা অনেকের দ্বারে ঘুরলেন। শিক্ষা বোর্ডেও গেলেন। অনুনয়-বিনয় করে বললেন, ‘ছেলেটা হয়তো এ প্লাস পাবে না, কিন্তু গ্যারান্টি দিচ্ছি সে ফেল করবে না।’ একেবারে শেষ দিন ফরম পূরণের অনুমতি পেলেন। তারপর সোহান যা দেখালেন, রীতিমতো চমক!

সেলিনার একদিন
এসএসসি পাসের আগেই বিয়ে হয়ে যায় সেলিনার। স্বামী শাহজাহান আলী পুলিশের কনস্টেবল। এখন তাঁদের দুই সন্তান-সোহান ও রোহান। রোহান পড়ে একাদশ শ্রেণিতে। ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘুম ভাঙে সেলিনার। ঘরদোর পরিষ্কার করে সকালের নাশতা রেডি করেন। এরপর সোহানকে ডেকে তোলেন। বাথরুমে নিয়ে বসিয়ে দিয়ে আসেন। তারপর এনে পড়ার টেবিলে বসান। ৮টা নাগাদ সবাই মিলে নাশতা খেতে বসেন। সোহানকে বিছানায়, নয়তো চেয়ারে বসিয়ে দুপুরের রান্নার আয়োজন করেন। এক ফাঁকে সোহানকে স্নান করান। দুপুরে খাওয়ার পর তাকে আবার বিছানায় দিয়ে আসেন। বিকেলে আবার পড়তে বসে সোহান। পড়াশোনা শেষে রাতে কিছুক্ষণ মোবাইলে ঘাটাঘাটি করে। রাতের খাবার শেষে বিছানায় নিয়ে আবার ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে আসেন মা।

যেন থাকে দুধেভাতে
মায়ের পর সোহান সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ তাঁর মামা ইমদাদুল হক, বন্ধু এবং শিক্ষকদের কাছে। বললেন, ‘মামা সাহস যুগিয়েছেন। স্যারেরা বাসায় এসে পড়িয়েছেন। মাশরাফি, হাসনাতের মতো বন্ধুরা না থাকলে আমার পড়াশোনাটা স্বপ্নই থেকে যেত।’ 
মাশরাফি হক নূর তৃতীয় শ্রেণি থেকেই সোহানের সহপাঠী। তিনি বললেন, ‘ক্লাসে নোট নিতে ওর একটু দেরি হয়। আমি পরে খাতায় তুলে দিই। কোনো কিছু না বুঝলে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখি।’ সোহানের কলেজ শিক্ষক সোলায়মান আলম বললেন, ‘অদম্য সোহান আমাদের সবার জন্যই অনুপ্রেরণা। অনেকদূর যাবে সে।’ 
এখন সেই ‘অনেকদূর’ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সোহান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান তিনি। বললেন, ‘রসায়ন কিংবা গণিতে পড়ার ইচ্ছা আমার।’ 
ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের কবিতার ঈশ্বরী পাটনীর মতো সেলিনার বেগমেরও চাওয়া-‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’। বললেন, ‘আমি তো আর চিরকাল থাকব না। সোহান পড়াশোনা করে স্বাবলম্বী হোক-এটাই চাই।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলে কোথায় থাকবে ছেলে, কিভাবে-এটাই এখন মায়ের চিন্তার ব্যাপার। ছেলেকে একলা ছাড়তে চান না তিনি।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঘরে ঘরে জ্বর, আতঙ্ক ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ঘরে ঘরে জ্বর, আতঙ্ক ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নিয়ে

রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ টানা তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। ফার্মেসির ওষুধে জ্বর না কমায় তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। ফারুক জানান, প্রথমে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন, পরে তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানও জ্বরে ভুগতে শুরু করে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের বহির্বিভাগে কথা হয় ফারুক আহমেদের সঙ্গে।

এ সময় সেখানে আরো অন্তত চারজনকে তাদের পরিবারের সদস্যদের জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কথা বলতে শোনা যায়।

চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন ও বাতাসে আর্দ্রতার ওঠানামার কারণে ভাইরাসজনিত জ্বর বাড়ছে। শিশুসহ সব বয়সী মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং চিকিৎসকের চেম্বারে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

বেশির ভাগ রোগীর শরীরে কাঁপুনি, গায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা, বমি, হাত-পায়ের গিরায় ব্যথা, ঠাণ্ডা, সর্দি ও নাক দিয়ে পানি পড়ার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।

সোমবার ও মঙ্গলবার রাজধানীর ডিএনসিসি হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি শিশু এখন জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, একসঙ্গে বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। সাধারণ ভাইরাল জ্বরের পাশাপাশি ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও রোটা ভাইরাসও বাড়ছে।

উপসর্গে মিল থাকায় অনেকেই বুঝে উঠতে পারে না যে আসলে কোনটিতে আক্রান্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। জ্বর, বমি বা পাতলা পায়খানার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে ডেঙ্গু ও কভিড পরীক্ষাও করাতে হবে। সময়মতো রোগ নির্ণয় হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

রাজধানীর শিশু হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ বি এম মাহফুজ হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, এখন ভাইরাল জ্বরের মৌসুম চলছে। পাশাপাশি চলছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মৌসুমও। বেশির ভাগ রোগী তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, শরীরে র‌্যাশএসব উপসর্গ নিয়ে আসছে। অনেকের ডেঙ্গুর উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষায় ধরা পড়ছে না।

 

জ্বর কেন হয়?

চিকিৎসকরা বলছেন, জ্বর নিজে কোনো রোগ নয়, এটি একটি উপসর্গ বা সতর্কবার্তা। সাধারণ ঠাণ্ডা বা সর্দিকাশির পাশাপাশি ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণে জ্বর হতে পারে। করোনাভাইরাস, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়াএসব রোগের প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর। টিকা নেওয়া, টিউমার, ফোড়া, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, প্রস্রাবের সংক্রমণ, পিরিয়ড বা মানসিক চাপ থেকেও জ্বর হতে পারে।

ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, বাইরের প্রচণ্ড গরম থেকে ফিরে অনেকেই এসির নিচে চলে যায় বা ঠাণ্ডা পানি পান করে। এই গরম-ঠাণ্ডার তারতম্য থেকেই জ্বর-সর্দি হতে পারে। প্রতিটি পরিবারেই এখন মৌসুমি জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় টাইফয়েড ও পানিবাহিত রোগও বেড়েছে।

ডা. লেলিন আরো বলেন, এসব জ্বর সাধারণত প্যারাসিটামল খেলেই সেরে যায়। অ্যান্টিবায়োটিকের দরকার পড়ে না। তবে জ্বর যদি সপ্তাহখানেকের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

সাধারণ জ্বর কিভাবে বুঝব?

বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ফজলে রাব্বি চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, আগে কভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে কাশি, গন্ধ না পাওয়া, শ্বাসকষ্ট দেখা যেত। এখন অনেক কভিড রোগীও গায়ে ব্যথা ও মাথাব্যথার উপসর্গ নিয়ে আসছে। তাই পরীক্ষা ছাড়া রোগ নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ডা. ফজলে রাব্বি আরো বলেন, ডেঙ্গুতে সাধারণত মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানা হয়। অন্যদিকে চিকুনগুনিয়ায় গায়ে বেশি ব্যথা, বিশেষ করে জয়েন্টে ব্যথা ও দ্রুত র‌্যাশ দেখা দেয়। সাধারণ ভাইরাল জ্বরে হালকা গায়ে ব্যথা ও সর্দিকাশি হয় এবং তা চার দিনের মধ্যে সেরে যায়। চার দিনের বেশি জ্বর থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

মন্তব্য

জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর

রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই কার্যালয়ের কক্ষে ভাঙচুর চালান।

সূত্র জানায়, হামলার শুরুতে তাঁরা প্রথমে ওই কার্যালয়ে তালা লাগান। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করা হয়।

২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। হামলাকারীদের অভিযোগ, দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেওয়ার কথা বলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজনকে তিন-চারবার ঘোরানো হয়েছে। টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েছিল গতকাল। 

তবে রাতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর জানান, টাকা না পেয়ে আহতরা ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে তালা লাগিয়ে দেন।

ফাউন্ডেশনের একজন কর্মচারী খারাপ আচরণ করলে সেখানে ভাঙচুর করা হয় বলে আহতদের কয়েকজন জানিয়েছেন।

ভাঙচুরের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অনেক চেয়ার এলোমেলো পড়ে আছে। পানির ফিল্টার ও তিনটি দরজার গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। মেঝেতে কাচের টুকরা ছড়িয়েছিটিয়ে আছে।

গত বছর আন্দোলনে গিয়ে আহত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন জানিয়ে মামুন হোসেন নামের একজন বলেন, আমার মাথার ভেতরে গুলি, ১১ মাস যাবৎ চিকিৎসাধীন। আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কী? তো কিসের জুলাই ফাউন্ডেশন?

সাভার সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহত নাজমুল হোসেন বলেন, দ্বিতীয় ধাপের টাকার জন্য সাত মাস ধরে ঘুরছি। টাকা দেওয়া হচ্ছে না। জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও বারবার ডেট দিয়ে আমাদের টাকা দিচ্ছেন না।

জানতে চাইলে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর বলেন, জুলাই আহতদের অনেকে এখনো মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন।

তাঁদের রাগের একটা প্রেক্ষাপট আছে। তাঁদের বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই। তাঁরা ভেঙেছেন, তাঁরা উত্তেজিত, অবসাদগ্রস্ত। তাঁরা ভবিষ্যতে কী করবেন, সেটি নিয়ে হতাশার মধ্যে আছেন। সে কারণে তাঁরা হয়তো ভাঙচুর করেছেন।

এই ফাউন্ডেশনে সাত কোটি টাকা আছে জানিয়ে কামাল আকবর বলেন, ধারাবাহিকভাবে আহত ও শহীদ পরিবারগুলোকে অনুদান দেওয়ার চেষ্টা করছি। তা ছাড়া আহতদের তালিকা থেকে ৩৯ জন ভুয়া আহতকে বাদ দিতে এবং শহীদদের তালিকা থেকে চারজনের নাম বাদ দিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

মন্তব্য
প্রধান নির্বাচন কমিশনার

নির্বাচনের তারিখ আমি নিজেই জানি না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নির্বাচনের তারিখ আমি নিজেই জানি না

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এখনো জানেন না। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। পরে বিকেলে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ডেমোক্রেসি (আরএফডি) আয়োজিত ফল উৎসব ও সাংবাদিক অ্যাকসেস কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানেও তিনি একই কথা বলেন।

এ ছাড়া সিইসি সাংবাদিকদের জানান, আগামী নির্বাচনে ভোটের প্রচারে এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

এ ছাড়া গত তিনটি বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক গ্রহণযোগ্য বলে সাফাই গেয়েছিলেন, সেসব পক্ষপাতদুষ্ট পর্যবেক্ষককে এবার অনুমোদন দেওয়া হবে না। নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রচারে এআইয়ের অপব্যবহারও রোধ করতে চায়।

নির্বাচন ভবনে কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টার সাক্ষাৎ শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, মিসইউজ অব এআই আমাদের জন্যও হুমকি। এ বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা।

কারণ কানাডার গত বছরের নির্বাচনেও তাদের এটা মোকাবেলা করতে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা তাদের পরামর্শ চেয়েছি। এ বিষয়ে আমরাও বেশ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। আশা করি, বিভিন্ন দেশের মতো কানাডার পূর্ণ সহায়তা পাব।
আমরা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কনফিডেন্ট।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, এ পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন সেক্টরে যে প্রস্তুতি নিয়েছি, আগামী নির্বাচনে আমরা ঠিকমতো ডেলিভার করতে পারব কি না সে বিষয়গুলো জানতে চেয়েছেন তাঁরা। আমাদের প্রস্তুতির বিষয়টা বিস্তারিত জানিয়েছি। বিশেষ করে দেশজুড়ে ভোটার সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করতে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছি। ভোটার সচেতনতা ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ, এজেন্টদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক কাজে কানাডা পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে।

সিইসি বলেন, কানাডা আমাদের সহায়তার জন্য প্রস্তুত এবং আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে। তারা চায় যে ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ইলেকশন যেন হয়। আমাদের ভোটার নিবন্ধনে নারীদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে, পার্বত্য এলাকায় ভোটার সচেতনতামূলক কাজের বিষয়ে জানতে চেয়েছে। আমাদের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছি।

নির্বাচন কবে বা ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা বিষয়ে কানাডার হাইকমিশনার জানতে চেয়েছেন কি নাসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, উনি জানতে চেয়েছেন ভোটের স্পেসিফিক ডেট হয়েছে কি না। আমি বলেছি নো। সময়সীমা নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি। সময়সীমা সম্পর্কে আপনারা যা জানেন, আমিও তাই জানি। যেদিন ভোট হবে, তার দুই মাস আগে আমি জানিয়ে দেব।

নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবজারভার হিসেবে কাজ করার জন্য জিজ্ঞেস করেছি। নীতিমালাও প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। ইইউকে বলা হয়েছে, আগেই যেন জানিয়ে রাখা হয়। তাদের ২৮টি দেশের অবজারভারকে সমন্বয় করে পাঠাতে হবে, এ জন্য আগেভাগে স্বাগত জানিয়েছি।

পক্ষপাতদুষ্ট বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অনুমোদন দেওয়া হবে না বলেও জানান সিইসি। তিনি বলেন, গত তিনটি নির্বাচনকে যাঁরা সার্টিফিকেট দিয়েছেন তাঁদের (অনুমোদন) দেব কেন? যেসব পর্যবেক্ষক গত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন খুব সুন্দর হয়েছে বলে সার্টিফিকেট দিয়েছেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলেছেন, তাঁদের কি আমাদের নেওয়া উচিত? আমরা দেখে-শুনেই নেব। যাঁরা অভিজ্ঞ, ডিপেন্ডেবল, রিলায়েবল এবং বিভিন্ন দেশে নির্বাচন অবজার্ভ করেছেন, তাঁদের নেব। তিনটি নির্বাচনকে যাঁরা সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তাঁদের কোনোমতেই নেওয়া হবে না।

বিকেলে আরএফইডির অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, আমরা বারবার প্রমাণ করেছি; ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পেরেছিলাম। এবারও পারব ইনশাআল্লাহ। আমাদের প্রশাসন, পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বলব, মানুষের শ্রদ্ধা পুনরুদ্ধারের এটিই সময়। ভাবমূর্তি রক্ষা ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ এখন এসেছে।

সিইসি বলেন, ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে কমপক্ষে দুই মাস আগেই সব কিছু জানিয়ে দেওয়া হবে, কোন দিন ভোট, কোন দিন মনোনয়নএসবসহ।

গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে সিইসি বলেন, আমরা আজকে যা কিছু করছি, তা আপনাদের মাধ্যমেই দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে আজকে আলাপের সময় দেখি উনি (কানাডার হাইকমিশনার) সব জানেনভোটার রেজিস্ট্রেশন, ইউএনডিপির সহযোগিতা, ক্যামেরা, ল্যাপটপ সব কিছু। তার মানে আমাদের সংবাদগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। এ জন্য আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সংবাদ পরিবেশনের সময় একটু সচেতন থাকবেন। দেখেছি অনেক সময় ভেতরে পজিটিভ রিপোর্ট থাকলেও হেডলাইন বা স্ক্রলে নেগেটিভ বার্তা থাকে। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়, মন খারাপ হয়। দয়া করে শিরোনাম, ক্যাপশন এমন দিন, যাতে মানুষ পজিটিভ বার্তা বুঝতে পারে।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন সাংবাদিকদের সরাসরি অংশগ্রহণে বিভিন্ন ওয়্যারনেস রেইজিং ক্যাম্পেইন চালু করবে। আমরা সাংবাদিকদের পার্টনার করে কাজ করতে চাই। সচেতনতামূলক প্রচারে আপনাদের যুক্ত করব। ২০১৮ সালের মতো অভিযোগ আর যেন না ওঠে। প্রশাসন, পুলিশ, প্রিজাইডিং অফিসার, সব কর্মকর্তাকে বলব, এটা ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের সময়। আরএফইডির সভাপতি কাজী এমাদ উদ্দীনের (জেবেল) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

মন্তব্য
মিডিয়াকে হুমকি

ক্র্যাব, অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ক্র্যাব, অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের উদ্বেগ

জুলাই আন্দোলনের এক নেতা কর্তৃক মিডিয়াকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) ও অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স।

অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের সভাপতি হাসান শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহেল গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। গণমাধ্যমের কোনো প্রতিবেদনে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকার পাওয়ার জন্য দেশে প্রেস কাউন্সিল ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। হুমকি বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিসর সংকুচিত করা যাবে না।

অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত মত প্রকাশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হুমকি কিংবা ভয় দেখানোর চেষ্টা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংবিধান প্রদত্ত অধিকার লঙ্ঘনের শামিল, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এর আগে গত সোমবার ক্র্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল এবং সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ এক বিবৃতিতে বলেন, মিডিয়াকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা জুলাইয়ের চেতনার সঙ্গে মানানসই নয়। যেসব কারণে জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, তার অন্যতম ছিল মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।

মিডিয়াকে হুমকি দেওয়া সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে সহায়ক নয়।

বিবৃতিতে ক্র্যাব নেতারা বলেন, মিডিয়ার ভূমিকায় কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকারের জন্য প্রেস কাউন্সিল রয়েছে। প্রচলিত আইনের বিধি অনুযায়ী আদালতেও যাওয়া যায়। কিন্তু এই হুমকি দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশের প্রতিবন্ধক বলে আমরা মনে করি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ