ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ মহররম ১৪৪৭
হেফাজতের সমাবেশ

তাণ্ডবের মাস্টারমাইন্ড বেনজীর ও জিয়াউল

  • ► আবারও আলোচনায় ‘অপারেশন সিকিউর শাপলা’
  • ► ১৩ বছর পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি
  • ► যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুলসংখ্যক হতাহতের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
তাণ্ডবের মাস্টারমাইন্ড বেনজীর ও জিয়াউল

কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ২০১৩ সালের ৫ মের মহাসমাবেশে যৌথ বাহিনীর রাতের অভিযান অপারেশন সিকিউর শাপলা আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন হেফাজত নেতারা। তাঁরা বলছেন, ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় রাতের অন্ধকারে কার্যত গণহত্যা চালানো হয়েছিল। ওই ঘটনার প্রধান দুই কুশীলব ছিলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান।

এ বিষয়ে সংগঠনের পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকেও একাধিক মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বেনজীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর প্রকাশের পর দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানের মধ্যেই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। অন্যদিকে সরকার পতনের পর বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার হন জিয়া।

তিনি বর্তমানে রিমান্ডে আছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সেই রাতে শাপলা চত্বরে যে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তাতে যৌথভাবে কুশীলব ছিলেন বেনজীর ও জিয়া। মতিঝিলকে কেন্দ্র করে চারপাশের এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। ভোর ৫টার দিকে পুরো এলাকা খালি হয়ে যায়।

তার আগে সেখানে সৃষ্ট গণহত্যার ঘটনায় নিহতদের মরদেহ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগও তুলেছিলেন হেফাজত নেতারা। সে সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার ছিলেন বেনজীর আহমেদ।

২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে সারা দেশে সহিংসতায় ২৮ জন নিহতের কথা বলেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে হেফাজতের পক্ষ থেকে পুলিশের এই দাবি বরাবরই নাকচ করা হয়। তাদের দাবি, ওই রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।

হেফাজত নেতারা বলেছেন, হেফাজতের ওই কর্মসূচি ভণ্ডুল করার জন্য সেই সময় র‌্যাবের এডিজি অপারেশন কর্নেল জিয়াউল আহসান এবং ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে সব সড়কবাতি নিভিয়ে দিয়ে হেফাজত নেতাকর্মীদের ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। এই ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১০ হাজার নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কিমিটির যুগ্ম মহাসচিব এবং ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচিতে আমরা নির্মম পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলাম। দেশে-বিদেশে সবাই সে সময় তা দেখেছে। এ ঘটনার নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা নেই। এই নির্মম গণহত্যার জন্য আমরা ১৩ বছর যাবৎ বিচার চেয়ে আসছি। কিন্তু বিচার করবে তো দূরের কথা বরং তৎকালীন সরকার বিভিন্ন মামলা দিয়ে হেফাজতের নেতাকর্মীদের চেপে ধরেছিল। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডে আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকেও ব্যক্তি উদ্যোগে মামলা করা হবে।

বেনজীর ও জিয়ার নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে মন্তব্য করে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, তাঁরা এই ঘটনার অন্যতম খলনায়ক। তাঁরা অপরাধী, তাঁরা হত্যাকারী। তাই সেই হিসাবে তাঁদের বিচার অবশ্যই চাই। মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালে মামলা করা যায় কি না, এসব আইনগত বিষয় আলাপ-আলোচনা করে আইনজীবীদের পরামর্শ নিয়ে প্রস্তুতি চলছে।

এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন বলেন, শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচিতে তৎকালীন সরকারের নির্যাতনে যাঁরা শহীদ হয়েছেন আমরা অতিদ্রুত তাঁদের নাম উল্লেখ করে মামলা করব। হেফাজত ইসলামের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে এ মামলা করা হবে। এ জন্য আমরা আইনজীবীদের সঙ্গেও কথা বলছি। খুব শিগগির এ মামলা করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলেমদের হত্যাকাণ্ডে সরাসরি যারা অংশগ্রহণ করেছে, যাদের নির্দেশে করেছে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই, যাতে অন্য কেউ নীতির প্রশ্নে গুলি চালিয়ে হত্যা করার সাহস না পায়।

হেফাজতের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব কালের কণ্ঠকে বলেন, মোটাদাগে তখনকার আইজিপি শহীদুল হকসহ বেনজীর আহমেদ ও জিয়াউল আহসান সরাসরি আমাদের নেতাকর্মী হত্যার সঙ্গে জড়িত। এই পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ মদদে ৫ মে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা তখন নিজেদের এতটাই প্রতাপশালী মনে করতেন যে তাঁদের কাছে দেশ ও জাতি নিরাপদ ছিল না। তাঁদের এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে তা দৃষ্টান্তমূলক হয়ে থাকে। আমরা তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।

হেফাজতে ইসলামের সহকারী মহাসচিব জাকারিয়া নোমান কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা এই ঘটনার জন্য মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হবে।

এদিকে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মীর ইদ্রিস কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে র‌্যাব-পুলিশ পরিকল্পিত নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে যেসব হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনা ঘটিয়েছে সেগুলোর প্রতিটি ঘটনার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।

১৯৮৮ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়া বেনজীর আহমেদকে দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী আইজিপি, যাঁর বক্তব্য ও বিবৃতিতে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রতি সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ ছিল প্রায় নিয়মিত ঘটনা। বিরোধী দলগুলো প্রায়ই অভিযোগ করে যে ২০১৮ সালের নির্বাচনে পুলিশ বাহিনীকে সরকারি দলের স্বার্থে ব্যবহার করেছিলেন বেনজীর আহমেদ। এ ছাড়া গত এক দশকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার সময় বিরোধী দল দমনে নানা পদক্ষেপ নিয়েও বারবার আলোচনায় আসেন তিনি।

অন্যদিকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ ও নিধন, আড়ি পাতার যন্ত্র পেগাসাস সফটওয়্যার ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে করা আবেদনে এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ। এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ